Part 13
[12:53]
আমি
নিজেকে নির্দোষ
বলি না। নিশ্চয় মানুষের
মন মন্দ কর্মপ্রবণ
কিন্তু সে নয়-আমার
পালনকর্তা যার
প্রতি অনুগ্রহ
করেন। নিশ্চয়
আমার পালনকর্তা
ক্ষমাশীল, দয়ালু।
[12:54]
বাদশাহ
বললঃ তাকে আমার
কাছে নিয়ে
এসো। আমি তাকে
নিজের বিশ্বস্ত
সহচর করে রাখব। অতঃপর
যখন তার সাথে মতবিনিময় করল, তখন বললঃ
নিশ্চয়ই আপনি
আমার কাছে আজ থেকে
বিশ্বস্ত হিসাবে মর্যাদার স্থান
লাভ করেছেন।
[12:55]
ইউসুফ
বললঃ আমাকে দেশের ধন-ভান্ডারে নিযুক্ত
করুন। আমি বিশ্বস্ত
রক্ষক ও অধিক জ্ঞানবান।
[12:56]
এমনিভাবে
আমি ইউসুফকে সে
দেশের বুকে
প্রতিষ্ঠা দান
করেছি। সে তথায়
যেখানে ইচ্ছা স্থান
করে নিতে পারত। আমি স্বীয় রহমত যাকে
ইচ্ছা পৌছে দেই
এবং আমি পূণ্যবানদের
প্রতিদান বিনষ্ট
করি না।
[12:57]
এবং
ঐ লোকদের জন্য
পরকালে প্রতিদান
উত্তম যারা ঈমান
এনেছে ও সতর্কতা
অবলম্বন করে।
[12:58]
ইউসুফের
ভ্রাতারা আগমন
করল, অতঃপর তার
কাছে উপস্থিত হল। সে তাদেরকে
চিনল এবং তারা
তাকে চিনল না।
[12:59]
এবং
সে যখন তাদেরকে
তাদের রসদ প্রস্তুত করে
দিল, তখন সে বললঃ
তোমাদের বৈমাত্রেয়
ভাইকে আমার কাছে
নিয়ে এসো। তোমরা কি দেখ না
যে, আমি পুরা মাপ
দেই এবং মেহমানদেরকে
উত্তম সমাদার করি?
[12:60]
অতঃপর
যদি তাকে আমার
কাছে না আন, তবে আমার
কাছে তোমাদের কোন
বরাদ্ধ নেই এবং
তোমরা আমার কাছে
আসতে পারবে না।
[12:61]
তারা
বললঃ আমরা তার
সম্পর্কে তার পিতাকে সম্মত
করার চেষ্টা করব
এবং আমাদেরকে একাজ
করতেই হবে।
[12:62]
এবং
সে ভৃত্যদেরকে
বললঃ তাদের পণ্যমূল্য তাদের
রসদ-পত্রের মধ্যে
রেখে দাও-সম্ভবতঃ
তারা গৃহে পৌঁছে
তা বুঝতে পারবে, সম্ভবতঃ
তারা পুনর্বার
আসবে।
[12:63]
তারা
যখন তাদের পিতার
কাছে ফিরে এল
তখন বললঃ হে আমাদের
পিতা, আমাদের জন্যে
খাদ্য শস্যের বরাদ্দ
নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অতএব
আপনি আমাদের ভাইকে
আমাদের সাথে প্রেরণ
করুন; যাতে আমরা
খাদ্য শস্যের
বরাদ্দ আনতে পারি
এবং আমরা অবশ্যই
তার পুরোপুরি হেফাযত
করব।
[12:64]
বললেন, আমি তার
সম্পর্কে তোমাদেরকে কি
সেরূপ বিশ্বাস
করব, যেমন ইতিপূর্বে
তার ভাই সম্পর্কে
বিশ্বাস করেছিলাম? অতএব
আল্লাহ উত্তম হেফাযতকারী
এবং তিনিই সর্বাধিক
দয়ালু।
[12:65]
এবং
যখন তারা আসবাবপত্র
খুলল, তখন দেখতে
পেল যে, তাদেরকে তাদের
পন্যমুল্য ফেরত
দেয়া হয়েছে। তারা
বললঃ হে আমাদের
পিতা, আমরা আর কি
চাইতে পারি। এই আমাদের
প্রদত্ত পন্যমূল্য, আমাদেরকে ফেরত দেয়া হয়েছে। এখন আমরা
আবার আমাদের পরিবারবর্গের
জন্যে রসদ আনব
এবং আমাদের ভাইয়ের দেখাশোনা
করব এবং এক এক উটের
বরাদ্দ খাদ্যশস্য
আমরা অতিরিক্ত
আনব। ঐ বরাদ্দ সহজ।
[12:66]
বললেন, তাকে
ততক্ষণ তোমাদের সাথে পাঠাব না, যতক্ষণ
তোমরা আমাকে আল্লাহর
নামে অঙ্গীকার
না দাও যে, তাকে অবশ্যই আমার কাছে
পৌঁছে দেবে; কিন্তু
যদি তোমরা সবাই
একান্তই অসহায়
না হয়ে যাও। অতঃপর
যখন সবাই তাঁকে
অঙ্গীকার দিল, তখন তিনি
বললেনঃ আমাদের
মধ্যে যা কথাবার্তা
হলো সে ব্যাপারে
আল্লাহই মধ্যস্থ
রইলেন।
[12:67]
ইয়াকুব
বললেনঃ হে আমার
বৎসগণ! সবাই একই প্রবেশদ্বার
দিয়ে যেয়ো না, বরং পৃথক
পৃথক দরজা দিয়ে
প্রবেশ করো। আল্লাহর কোন বিধান
থেকে আমি তোমাদেরকে
রক্ষা করতে পারি
না। নির্দেশ আল্লাহরই চলে। তাঁরই
উপর আমি ভরসা করি
এবং তাঁরই উপর
ভরসা করা উচিত
ভরসাকারীদের।
[12:68]
তারা
যখন পিতার কথামত
প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর
বিধানের বিরুদ্ধে
তা তাদের বাঁচাতে
পারল না। কিন্তু
ইয়াকুবের সিদ্ধান্তে তাঁর
মনের একটি বাসনা
ছিল, যা তিনি পূর্ণ
করেছেন। এবং তিনি
তো আমার শেখানো
বিষয় অবগত ছিলেন। কিন্তু
অনেক মানুষ অবগত
নয়।
[12:69]
যখন
তারা ইউসুফের কাছে
উপস্থিত হল, তখন সে
আপন ভ্রাতাকে নিজের
কাছে রাখল। বললঃ
নিশ্চই আমি তোমার
সহোদর। অতএব তাদের কৃতকর্মের
জন্যে দুঃখ করো
না।
[12:70]
অতঃপর
যখন ইউসুফ তাদের
রসদপত্র প্রস্তুত
করে দিল, তখন পানপাত্র
আপন ভাইয়ের রসদের
মধ্যে রেখে দিল। অতঃপর
একজন ঘোষক ডেকে
বললঃ হে কাফেলার
লোকজন, তোমরা অবশ্যই
চোর।
[12:71]
তারা
ওদের দিকে মুখ
করে বললঃ তোমাদের
কি হারিয়েছে?
[12:72]
তারা
বললঃ আমরা বাদশাহর পানপাত্র হারিয়েছি
এবং যে কেউ এটা
এনে দেবে সে এক
উটের বোঝা পরিমাণ
মাল পাবে এবং আমি
এর যামিন।
[12:73]
তারা
বললঃ আল্লাহর কসম, তোমরা তো জান, আমরা অনর্থ
ঘটাতে এদেশে আসিনি
এবং আমরা কখনও
চোর ছিলাম না।
[12:74]
তারা
বললঃ যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও, তবে যে, চুরি
করেছে তার কি শাস্তি?
[12:75]
তারা
বললঃ এর শাস্তি
এই যে, যার রসদপত্র
থেকে তা পাওয়া
যাবে, এর প্রতিদানে
সে দাসত্বে যাবে। আমরা যালেমদেরকে এভাবেই
শাস্তি দেই।
[12:76]
অতঃপর
ইউসুফ আপন ভাইদের
থলের পূর্বে
তাদের থলে তল্লাশী
শুরু করলেন। অবশেষে
সেই পাত্র আপন
ভাইয়ের থলের মধ্য থেকে বের করলেন। এমনিভাবে
আমি ইউসুফকে কৌশল
শিক্ষা দিয়েছিলাম। সে বাদশাহর
আইনে আপন ভাইকে
কখনও দাসত্বে দিতে
পারত না, কিু? আল্লাহ
যদি ইচ্ছা করেন। আমি যাকে ইচ্ছা, মর্যাদায়
উন্নীত করি এবং
প্রত্যেক জ্ঞানীর
উপরে আছে অধিকতর
এক জ্ঞানীজন।
[12:77]
তারা
বলতে লাগলঃ যদি
সে চুরি করে থাকে, তবে তার
এক ভাইও ইতিপূর্বে
চুরি করেছিল। তখন ইউসুফ
প্রকৃত ব্যাপার নিজের মনে রাখলেন
এবং তাদেরকে জানালেন
না। মনে মনে বললেনঃ
তোমরা লোক হিসাবে নিতান্ত মন্দ
এবং আল্লাহ খুব
জ্ঞাত রয়েছেন, যা তোমরা
বর্ণনা করছ;
[12:78]
তারা
বলতে লাগলঃ হে
আযীয, তার পিতা
আছেন, যিনি খুবই
বৃদ্ধ বয়স্ক। সুতরাং
আপনি আমাদের একজনকে
তার বদলে রেখে দিন। আমরা আপনাকে
অনুগ্রহশীল ব্যক্তিদের
একজন দেখতে পাচ্ছি।
[12:79]
তিনি
বললেনঃ যার কাছে
আমরা আমাদের
মাল পেয়েছি, তাকে
ছাড়া আর কাউকে
গ্রেফতার করা থেকে
আল্লাহ আমাদের
রক্ষা করুন। তা হলে
তো আমরা নিশ্চিতই
অন্যায়কারী হয়ে
যাব।
[12:80]
অতঃপর
যখন তারা তাঁর
কাছ থেকে নিরাশ
হয়ে গেল, তখন পরামর্শের
জন্যে এখানে বসল। তাদের
জ্যেষ্ঠ ভাই বললঃ
তোমরা কি জান
না যে, পিতা তোমাদের
কাছ থেকে আল্লাহর
নামে অঙ্গীকার
নিয়েছেন এবং পূর্বে ইউসুফের ব্যাপারেও
তোমরা অন্যায়
করেছো? অতএব আমি তো
কিছুতেই এদেশ ত্যাগ
করব না, যে পর্যন্ত
না পিতা আমাকে
আদেশ দেন অথবা
আল্লাহ আমার পক্ষে
কোন ব্যবস্থা করে দেন। তিনিই
সর্বোত্তম ব্যবস্থাপক।
[12:81]
তোমরা
তোমাদের পিতার
কাছে ফিরে যাও এবং বলঃ পিতা
আপনার ছেলে চুরি
করেছে। আমরা
তাই বলে দিলাম, যা আমাদের
জানা ছিল এবং
অদৃশ্য বিষয়ের
প্রতি আমাদের লক্ষ্য
ছিল না।
[12:82]
জিজ্ঞেস
করুন ঐ জনপদের লোকদেরকে যেখানে
আমরা ছিলাম এবং
ঐ কাফেলাকে, যাদের
সাথে আমরা এসেছি। নিশ্চিতই আমরা সত্য বলছি।
[12:83]
তিনি
বললেনঃ কিছুই না, তোমরা মনগড়া একটি কথা
নিয়েই এসেছ। এখন ধৈর্য্যধারণই
উত্তম। সম্ভবতঃ
আল্লাহ তাদের সবাইকে একসঙ্গে
আমার কাছে নিয়ে
আসবেন তিনি সুবিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
[12:84]
এবং
তাদের দিক থেকে
তিনি মুখ ফিরিয়ে
নিলেন এবং বললেনঃ
হায় আফসোস ইউসুফের
জন্যে। এবং দুঃখে
তাঁর চক্ষুদ্বয় সাদা হয়ে গেল। এবং অসহনীয়
মনস্তাপে তিনি
ছিলেন ক্লিষ্ট।
[12:85]
তারা
বলতে লাগলঃ আল্লাহর
কসম আপনি তো
ইউসুফের স্মরণ
থেকে নিবৃত হবেন
না, যে পর্যন্ত
মরণপন্ন না হয়ে
যান কিংবা
মৃতবরণ না করেন
[12:86]
তিনি
বললেনঃ আমি তো
আমার দুঃখ ও অস্থিরতা আল্লাহর
সমীপেই নিবেদন
করছি এবং আল্লাহর
পক্ষ থেকে আমি
যা জানি, তা তোমরা জান না।
[12:87]
বৎসগণ! যাও, ইউসুফ
ও তার ভাইকে তালাশ কর এবং আল্লাহর
রহমত থেকে নিরাশ
হয়ো না। নিশ্চয়
আল্লাহর রহমত থেকে
কাফের সম্প্রদায়, ব্যতীত
অন্য কেউ নিরাশ
হয় না।
[12:88]
অতঃপর
যখন তারা ইউসুফের
কাছে পৌঁছল
তখন বললঃ হে আযীয, আমরা
ও আমাদের পরিবারবর্গ
কষ্টের সম্মুখীন
হয়ে পড়েছি এবং আমরা অপর্যাপ্ত
পুঁজি নিয়ে এসেছি। অতএব
আপনি আমাদের পুরোপুরি
বরাদ্দ দিন এবং আমাদের কে
দান করুন। আল্লাহ
দাতাদেরকে প্রতিদান
দিয়ে থাকেন।
[12:89]
ইউসুফ
বললেনঃ তোমাদের
জানা আছে কি, যা তোমরা
ইউসুফ ও তার ভাইয়ের
সাথে করেছ, যখন তোমরা
অপরিণামদর্শী
ছিলে?
[12:90]
তারা
বলল, তবে কি তুমিই
ইউসুফ! বললেনঃ
আমিই ইউসুফ এবং
এ হল আমার সহোদর
ভাই। আল্লাহ
আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। নিশ্চয়
যে তাকওয়া অবলম্বন
করে এবং সবর করে, আল্লাহ
এহেন সৎকর্মশীলদের প্রতিদান বিনষ্ট
করেন না।
[12:91]
তারা
বললঃ আল্লাহর কসম, আমাদের চাইতে আল্লাহ
তোমাকে পছন্দ করেছেন
এবং আমরা অবশ্যই
অপরাধী ছিলাম।
[12:92]
বললেন, আজ তোমাদের
বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আল্লাহ
তোমাদের কে ক্ষমা
করুন। তিনি সব
মেহেরবানদের চাইতে
অধিক মেহেরবান।
[12:93]
তোমরা
আমার এ জামাটি
নিয়ে যাও। এটি আমার
পিতার মুখমন্ডলের
উপর রেখে দিও, এতে তাঁর
দৃষ্টি শক্তি ফিরে
আসবে। আর তোমাদের
পরিবারবর্গের
সবাইকে আমার কাছে
নিয়ে এস।
[12:94]
যখন
কাফেলা রওয়ানা
হল, তখন তাদের
পিতা বললেনঃ যদি
তোমরা আমাকে অপ্রকৃতিস্থ
না বল, তবে বলিঃ আমি নিশ্চিতরূপেই
ইউসুফের গন্ধ পাচ্ছি।
[12:95]
লোকেরা
বললঃ আল্লাহর কসম, আপনি তো সেই পুরানো
ভ্রান্তিতেই পড়ে
আছেন।
[12:96]
অতঃপর
যখন সুসংবাদদাতা
পৌঁছল, সে জামাটি
তাঁর মুখে রাখল। অমনি
তিনি দৃষ্টি শক্তি
ফিরে পেলেন। বললেনঃ
আমি কি তোমাদেরকে
বলিনি যে, আমি আল্লাহর
পক্ষ থেকে যা জানি
তোমরা তা জান না?
[12:97]
তারা
বললঃ পিতা আমাদের
অপরাধ ক্ষমা
করান। নিশ্চয়
আমরা অপরাধী ছিলাম।
[12:98]
বললেন, সত্বরই
আমি পালনকর্তার কাছে তোমাদের
জন্য ক্ষমা চাইব। নিশ্চয়
তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালূ।
[12:99]
অতঃপর
যখন তারা ইউসুফের
কাছে পৌঁছল, তখন ইউসুফ
পিতা-মাতাকে নিজের
কাছে জায়গা দিলেন
এবং বললেনঃ আল্লাহ
চাহেন তো শান্তি
চিত্তে মিসরে প্রবেশ
করুন।
[12:100]
এবং
তিনি পিতা-মাতাকে সিংহাসনের উপর
বসালেন এবং তারা
সবাই তাঁর সামনে
সেজদাবনত হল। তিনি
বললেনঃ পিতা এ হচ্ছে আমার ইতিপূর্বেকার
স্বপ্নের বর্ণনা
আমার পালনকর্তা
একে সত্যে পরিণত
করেছেন এবং তিনি
আমার প্রতি অনুগ্রহ
করেছেন। আমাকে
জেল থেকে বের করেছেন
এবং আপনাদেরকে
গ্রাম থেকে
নিয়ে এসেছেন, শয়তান
আমার ও আমার ভাইদের
মধ্যে কলহ সৃষ্টি
করে দেয়ার পর। আমার পালনকর্তা
যা চান, কৌশলে সম্পন্ন
করেন। নিশ্চয়
তিনি বিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
[12:101]
হে
পালনকর্তা আপনি
আমাকে রাষ্ট্রক্ষমতাও
দান করেছেন এবং
আমাকে বিভিন্ন
তাৎপর্য সহ
ব্যাখ্যা করার
বিদ্যা শিখিয়ে
দিয়েছেন। হে নভোমন্ডল
ও ভূ-মন্ডলের স্রষ্টা, আপনিই
আমার কার্যনির্বাহী ইহকাল ও পরকালে। আমাকে
ইসলামের উপর মৃত্যুদান
করুন এবং আমাকে
স্বজনদের সাথে
মিলিত করুন।
[12:102]
এগুলো
অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরণ করি। আপনি
তাদের কাছে ছিলেন
না, যখন তারা স্বীয়
কাজ সাব্যস্ত করছিল এবং চক্রান্ত
করছিল।
[12:103]
আপনি
যতই চান, অধিকাংশ
লোক বিশ্বাসকারী
নয়।
[12:104]
আপনি
এর জন্যে তাদের
কাছে কোন বিনিময়
চান না। এটা তো
সারা বিশ্বের জন্যে
উপদেশ বৈ নয়।
[12:105]
অনেক
নিদর্শন রয়েছে
নভোমন্ডলে ও ভু-মন্ডলে যেগুলোর
উপর দিয়ে তারা
পথ অতিক্রম করে
এবং তারা এসবের
দিকে মনোনিবেশ
করে না।
[12:106]
অনেক
মানুষ আল্লাহর
প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন করে, কিন্তু
সাথে সাথে শিরকও
করে।
[12:107]
তারা
কি নির্ভীক হয়ে
গেছে এ বিষয়ে
যে, আল্লাহর আযাবের
কোন বিপদ তাদেরকে
আবৃত করে ফেলবে
অথবা তাদের কাছে হঠাৎ কেয়ামত
এসে যাবে, অথচ তারা
টেরও পাবে না?
[12:108]
বলে
দিনঃ এই আমার পথ। আমি আল্লাহর দিকে
বুঝে সুঝে দাওয়াত
দেই আমি এবং আমার
অনুসারীরা। আল্লাহ
পবিত্র। আমি অংশীবাদীদের
অন্তর্ভুক্ত নই।
[12:109]
আপনার
পূর্বে আমি যতজনকে
রসূল করে পাঠিয়েছি, তারা
সবাই পুরুষই ছিল
জনপদবাসীদের মধ্য
থেকে। আমি তাঁদের
কাছে ওহী প্রেরণ
করতাম। তারা
কি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ
করে না, যাতে দেখে
নিত কিরূপ পরিণতি হয়েছে তাদের
যারা পূর্বে ছিল
? সংযমকারীদের
জন্যে পরকালের
আবাসই উত্তম। তারা
কি এখনও বোঝে
না?
[12:110]
এমনকি
যখন পয়গম্বরগণ
নৈরাশ্যে পতিত হয়ে যেতেন, এমনকি
এরূপ ধারণা করতে
শুরু করতেন যে, তাদের
অনুমান বুঝি মিথ্যায় পরিণত
হওয়ার উপক্রম
হয়েছিল, তখন তাদের
কাছে আমার সাহায্য
পৌছে। অতঃপর আমি যাদের চেয়েছি
তারা উদ্ধার পেয়েছে। আমার
শাস্তি অপরাধী
সম্প্রদায় থেকে
প্রতিহত হয় না।
[12:111]
তাদের
কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে প্রচুর
শিক্ষণীয় বিষয়, এটা কোন
মনগড়া কথা নয়, কিন্তু
যারা বিশ্বাস
স্থাপন করে তাদের
জন্যে পূর্বেকার
কালামের সমর্থন
এবং প্রত্যেক বস্তুর বিবরণ রহমত ও হেদায়েত।
13 Ar-Raad
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[13:1]
আলিফ-লাম-মীম-রা; এগুলো কিতাবের আয়াত। যা কিছু
আপনার পালনকর্তার
পক্ষ থেকে অবতীর্ণ
হয়েছে, তা সত্য। কিন্তু অধিকাংশ
মানুষ এতে বিশ্বাস
করে না।
[13:2]
আল্লাহ, যিনি
উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন
আকাশমন্ডলীকে
স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা
সেগুলো দেখ। অতঃপর
তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত
হয়েছেন। এবং সূর্য
ও চন্দ্রকে কর্মে
নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময়
মোতাবেক আবর্তন
করে। তিনি সকল
বিষয় পরিচালনা
করেন, নিদর্শনসমূহ
প্রকাশ করেন, যাতে
তোমরা স্বীয় পালনকর্তার
সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে
নিশ্চিত বিশ্বাসী
হও।
[13:3]
তিনিই
ভুমন্ডলকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে
পাহাড় পর্বত ও
নদ-নদী স্থাপন
করেছেন এবং প্রত্যেক
ফলের মধ্যে দু’দু প্রকার
সৃষ্টি করে রেখেছেন। তিনি
দিনকে রাত্রি দ্বারা
আবৃত করেন। এতে তাদের জন্যে নিদর্শণ
রয়েছে, যারা চিন্তা
করে।
[13:4]
এবং
যমিনে বিভিন্ন
শস্য ক্ষেত্র
রয়েছে-একটি অপরটির
সাথে সংলগ্ন এবং
আঙ্গুরের বাগান
আছে আর শস্য ও খজ্জêুর রয়েছে-একটির
মূল অপরটির সাথে
মিলিত এবং কতক
মিলিত নয়। এগুলো
কে একই পানি
দ্বারা সেচ করা
হয়। আর আমি
স্বাদে একটিকে
অপরটির চাইতে উৎকৃষ্টতর করে
দেই। এগুলোর
মধ্যে নিদর্শণ
রয়েছে তাদের জন্য
যারা চিন্তা ভাবনা
করে।
[13:5]
যদি
আপনি বিস্ময়ের
বিষয় চান, তবে তাদের
একথা বিস্ময়কর
যে, আমরা যখন মাটি
হয়ে যাব, তখনও
কি নতুন ভাবে সৃজিত হব? এরাই স্বীয়
পালনকর্তার সত্তায়
অবিশ্বাসী হয়ে
গেছে, এদের গর্দানেই লৌহ-শৃংখল পড়বে
এবং এরাই দোযখী
এরা তাতে চিরকাল
থাকবে।
[13:6]
এরা
আপনার কাছে মঙ্গলের পরিবর্তে দ্রুত
অমঙ্গল কামনা করে। তাদের
পূর্বে অনুরূপ
অনেক শাস্তিপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী অতিক্রান্ত
হয়েছে। আপনার
পালনকর্তা মানুষকে
তাদের অন্যায়
সত্বেও ক্ষমা
করেন এবং আপনার
পালনকর্তা কঠিন
শাস্তিদাতা ও বটে।
[13:7]
কাফেররা
বলেঃ তাঁর প্রতি
তাঁর পালনকর্তার
পক্ষ থেকে কোন
নিদর্শন অবতীর্ণ
হল না কেন? আপনার
কাজ তো ভয় প্রদর্শন করাই এবং প্রত্যেক
সম্প্রদায়ের
জন্যে পথপ্রদর্শক
হয়েছে।
[13:8]
আল্লাহ
জানেন প্রত্যেক
নারী যা গর্ভধারণ
করে এবং গর্ভাশয়ে
যা সঙ্কুচিত ও
বর্ধিত হয়। এবং তাঁর
কাছে প্রত্যেক বস্তুরই একটা
পরিমাণ রয়েছে।
[13:9]
তিনি
সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত, মহোত্তম, সর্বোচ্চ
মর্যাদাবান।
[13:10]
তোমাদের
মধ্যে কেউ গোপনে
কথা বলুক বা
তা সশব্দে প্রকাশ
করুক, রাতের অন্ধকারে
সে আত্নগোপন করুক
বা প্রকাশ্য দিবালোকে বিচরণ
করুক, সবাই তাঁর
নিকট সমান।
[13:11]
তাঁর
পক্ষ থেকে অনুসরণকারী রয়েছে তাদের
অগ্রে এবং পশ্চাতে, আল্লাহর
নির্দেশে তারা
ওদের হেফাযত করে। আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা
পরিবর্তন করেন
না, যে পর্যন্ত
না তারা তাদের
নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ
যখন কোন জাতির
উপর বিপদ চান, তখন তা
রদ হওয়ার নয়
এবং তিনি ব্যতীত
তাদের কোন সাহায্যকারী
নেই।
[13:12]
তিনিই
তোমাদেরকে বিদ্যুৎ দেখান ভয়ের
জন্যে এবং আশার
জন্যে এবং উক্ষিত
করেন ঘন মেঘমালা।
[13:13]
তাঁর
প্রশংসা পাঠ করে
বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে। তিনি
বজ্রপাত করেন, অতঃপর
যাকে ইচছা, তাকে
তা দ্বারা আঘাত করেন; তথাপি তারা
আল্লাহ সম্পর্কে
বিতন্ডা করে, অথচ তিনি
মহাশক্তিশালী।
[13:14]
সত্যের
আহবান একমাত্র
তাঁরই এবং তাকে
ছাড়া যাদেরকে
ডাকে, তারা তাদের
কোন কাজে আসে না; ওদের
দৃষ্টান্ত সেরূপ, যেমন কেউ দু’ হাত পানির
দিকে প্রসারিত
করে যাতে পানি
তার মুখে পৌঁছে যায়। অথচ পানি
কোন সময় পৌঁছাবে
না। কাফেরদের
যত আহবান তার সবই
পথভ্রষ্টতা।
[13:15]
আল্লাহকে
সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে
আছে ইচ্ছায় অথবা
অনিচ্ছায় এবং
তাদের প্রতিচ্ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায়। [ Sajdah ]
[13:16]
জিজ্ঞেস
করুন নভোমন্ডল
ও ভুমন্ডলের
পালনকর্তা কে? বলে দিনঃ
আল্লাহ! বলুনঃ
তবে কি তোমরা আল্লাহ
ব্যতীত এমন অভিভাবক স্থির
করেছ, যারা নিজেদের
ভাল-মন্দের ও মালিক
নয়? বলুনঃ অন্ধ চক্ষুষ্মান কি
সমান হয়? অথবা
কোথাও কি অন্ধকার
ও আলো সমান হয়। তবে কি
তারা আল্লাহর
জন্য এমন অংশীদার
স্থির করেছে যে, তারা
কিছু সৃষ্টি করেছে, যেমন
সৃষ্টি করেছেন
আল্লাহ? অতঃপর তাদের
সৃষ্টি এরূপ বিভ্রান্তি
ঘটিয়েছে? বলুনঃ
আল্লাহই প্রত্যেক
বস্তুর স্রষ্টা
এবং তিনি একক, পরাক্রমশালী।
[13:17]
তিনি
আকাশ থেকে পানি
বর্ষণ করেন। অতঃপর
স্রোতধারা প্রবাহিত
হতে থাকে নিজ নিজ
পরিমাণ অনুযায়ী। অতঃপর স্রোতধারা স্ফীত
ফেনারাশি উপরে
নিয়ে আসে। এবং অলঙ্কার
অথবা তৈজসপত্রের
জন্যে যে বস্তুকে
আগুনে উত্তপ্ত
করে, তাতেও তেমনি
ফেনারাশি থাকে। এমনি
ভাবে আল্লাহ সত্য
ও অসত্যের দৃষ্টান্ত
প্রদান করেন। অতএব, ফেনা
তো শুকিয়ে খতম
হয়ে যায় এবং
যা মানুষের
উপকারে আসে, তা জমিতে
অবশিষ্ট থাকে। আল্লাহ
এমনিভাবে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন।
[13:18]
যারা
পালনকর্তার আদেশ
পালন করে, তাদের
জন্য উত্তম প্রতিদান
রয়েছে এবং যারা
আদেশ পালন করে
না, যদি তাদের কাছে জগতের সবকিছু
থাকে এবং তার সাথে
তার সমপরিমাণ আরও
থাকে, তবে সবই নিজেদের মুক্তিপণ স্বরূপ
দিয়ে দেবে। তাদের
জন্যে রয়েছে কঠোর
হিসাব। তাদের
আবাস হবে জাহান্নাম। সেটা
কতইনা নিকৃষ্ট
অবস্থান।
[13:19]
যে
ব্যক্তি জানে যে, যা কিছু পালনকর্তার পক্ষ
থেকে আপনার প্রতি
অবর্তীর্ণ হয়েছে
তা সত্য সে কি ঐ
ব্যক্তির সমান, যে অন্ধ? তারাই
বোঝে, যারা বোধশক্তি
সম্পন্ন।
[13:20]
এরা
এমন লোক, যারা
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি
পূর্ণ করে এবং
অঙ্গীকার ভঙ্গ
করে না।
[13:21]
এবং
যারা বজায় রাখে
ঐ সম্পর্ক, যা বজায়
রাখতে আল্লাহ আদেশ
দিয়েছেন এবং স্বীয়
পালনকর্তাকে ভয়
করে এবং কঠোর
হিসাবের আশঙ্কা
রাখে।
[13:22]
এবং
যারা স্বীয় পালনকর্তার সন্তুষ্টির জন্যে
সবর করে, নামায
প্রতিষ্টা করে
আর আমি তাদেরকে
যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্য
ব্যয় করে এবং
যারা মন্দের বিপরীতে
ভাল করে, তাদের
জন্যে রয়েছে
পরকালের গৃহ।
[13:23]
তা
হচ্ছে বসবাসের
বাগান। তাতে তারা প্রবেশ করবে
এবং তাদের সৎকর্মশীল বাপ-দাদা, স্বামী-স্ত্রী
ও সন্তানেরা। ফেরেশতারা তাদের
কাছে আসবে প্রত্যেক
দরজা দিয়ে।
[13:24]
বলবেঃ
তোমাদের সবরের
কারণে তোমাদের
উপর শান্তি বর্ষিত
হোক। আর তোমাদের
এ পরিণাম-গৃহ কতই
না চমৎকার।
[13:25]
এবং
যারা আল্লাহর অঙ্গীকারকে দৃঢ় ও পাকা-পোক্ত
করার পর তা ভঙ্গ
করে, আল্লাহ যে, সম্পর্ক
বজায় রাখতে আদেশ করেছেন, তা ছিন্ন
করে এবং পৃথিবীতে
অশান্তি সৃষ্টি
করে, ওরা ঐ সমস্ত
লোক যাদের জন্যে রয়েছে
অভিসম্পাত এবং
ওদের জন্যে রয়েছে
কঠিন আযাব।
[13:26]
আল্লাহ
যার জন্যে ইচ্ছা
রুযী প্রশস্ত
করেন এবং সংকুচিত
করেন। তারা পার্থিব
জীবনের প্রতি মুগ্ধ। পার্থিবজীবন পরকালের সামনে
অতি সামান্য সম্পদ
বৈ নয়।
[13:27]
কাফেররা
বলেঃ তাঁর প্রতি
তাঁর পালনকর্তার
পক্ষ থেকে কোন
নিদর্শন কেন অবতীর্ণ
হলো না? বলে দিন, আল্লাহ
যাকে ইচ্ছা
পথভ্রষ্ট করেন
এবং যে, মনোনিবেশ
করে, তাকে নিজের
দিকে পথপ্রদর্শন
করেন।
[13:28]
যারা
বিশ্বাস স্থাপন
করে এবং তাদের
অন্তর আল্লাহর
যিকির দ্বারা শান্তি
লাভ করে; জেনে
রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর
সমূহ শান্তি পায়।
[13:29]
যারা
বিশ্বাস স্থাপন
করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন
করে, তাদের জন্যে
রয়েছে সুসংবাদ
এবং মনোরম প্রত্যাবর্তণস্থল।
[13:30]
এমনিভাবে
আমি আপনাকে একটি উম্মতের মধ্যে
প্রেরণ করেছি। তাদের
পূর্বে অনেক উম্মত
অতিক্রান্ত হয়েছে। যাতে আপনি তাদেরকে
ঐ নির্দেশ শুনিয়ে
দেন, যা আমি আপনার
কাছে প্রেরণ করেছি। তথাপি তারা দয়াময়কে
অস্বীকার করে। বলুনঃ
তিনিই আমার পালনকর্তা। তিনি
ব্যতীত কারও উপাসনা নাই। আমি তাঁর
উপরই ভরসা করেছি
এবং তাঁর দিকেই
আমার প্রত্যাবর্তণ।
[13:31]
যদি
কোন কোরআন এমন
হত, যার সাহায্যে
পাহাড় চলমান হয়
অথবা যমীন খন্ডিত
হয় অথবা মৃতরা
কথা বলে, তবে কি
হত? বরং সব কাজ
তো আল্লাহর হাতে। ঈমানদাররা
কি এ ব্যাপারে
নিশ্চিত নয় যে, যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে সব
মানুষকে সৎপথে পরিচালিত
করতেন? কাফেররা তাদের
কৃতকর্মের কারণে সব সময়
আঘাত পেতে থাকবে
অথবা তাদের গৃহের
নিকটবর্তী স্থানে
আঘাত নেমে আসবে, যে, পর্যন্ত আল্লাহর
ওয়াদা না আসে। নিশ্চয়
আল্লাহ ওয়াদার
খেলাফ করেন না।
[13:32]
আপনার
পূর্বে কত রাসূলের
সাথে ঠাট্টা
করা হয়েছে। অতঃপর
আমি কাফেরদেরকে
কিছু অবকাশ দিয়েছি। , এর পর
তাদেরকে পাকড়াও
করেছি। অতএব
কেমন ছিল আমার
শাস্তি।
[13:33]
ওরা
প্রত্যেকেই কি
মাথার উপর স্ব স্ব কৃতকর্ম
নিয়ে দন্ডায়মান
নয়? এবং তারা আল্লাহর
জন্য অংশীদার সাব্যস্ত করে। বলুন; নাম বল
অথবা খবর দাও পৃথিবীর
এমন কিছু জিনিস
সম্পর্কে যা তিনি
জানেন না? অথবা
অসার কথাবার্তা
বলছ? বরং সুশোভিত
করা হয়েছে কাফেরদের
জন্যে তাদের প্রতারণাকে এবং
তাদেরকে সৎপথ থেকে বাধা
দান করা হয়েছে। আল্লাহ
যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার কোন পথ
প্রদর্শক নেই।
[13:34]
দুনিয়ার
জীবনেই এদের জন্য রয়েছে আযাব এবং
অতি অবশ্য আখেরাতের
জীবন কঠোরতম। আল্লাহর
কবল থেকে তাদের
কোন রক্ষাকারী
নেই।
[13:35]
পরহেযগারদের
জন্যে প্রতিশ্রুত জান্নাতের অবস্থা
এই যে, তার নিম্নে
নির্ঝরিণীসমূহ
প্রবাহিত হয়। তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং
ছায়াও। এটা তাদের
প্রতিদান, যারা
সাবধান হয়েছে
এবং কাফেরদের প্রতিফল অগ্নি।
[13:36]
এবং
যাদেরকে আমি গ্রন্থ দিয়েছি, তারা
আপনার প্রতি যা
অবতীর্ণ হয়েছে, তজ্জন্যে
আনন্দিত হয় এবং
কোন কোন দল এর
কোন কোন বিষয়
অস্বীকার করে। বলুন, আমাকে
এরূপ আদেশই দেয়া
হয়েছে যে, আমি আল্লাহর এবাদত
করি। এবং তাঁর
সাথে অংশীদার না
করি। আমি তাঁর
দিকেই দাওয়াত
দেই এবং তাঁর
কাছেই আমার প্রত্যাবর্তন।
[13:37]
এমনিভাবেই
আমি এ কোরআনকে
আরবী ভাষায়
নির্দেশরূপে অবতীর্ণ
করেছি। যদি আপনি
তাদের প্রবৃত্তির
অনুসরণ করেন আপনার কাছে জ্ঞান পৌঁছার
পর, তবে আল্লাহর
কবল থেকে আপনার
না কোন সাহায্যকারী
আছে এবং না কোন
রক্ষাকারী।
[13:38]
আপনার
পূর্বে আমি অনেক
রসূল প্রেরণ
করেছি এবং তাঁদেরকে
পত্নী ও সন্তান-সন্ততি
দিয়েছি। কোন রসূলের
এমন সাধ্য ছিল না যে আল্লাহর
নির্দেশ ছাড়া
কোন নিদর্শন উপস্থিত
করে। প্রত্যেকটি
ওয়াদা লিখিত
আছে।
[13:39]
আল্লাহ
যা ইচ্ছা মিটিয়ে
দেন এবং বহাল
রাখেন এবং মূলগ্রন্থ
তাঁর কাছেই রয়েছে।
[13:40]
আমি
তাদের সাথে যে
ওয়াদা করেছি, তার কোন
একটি যদি আপনাকে
দেখিয়ে দেই কিংবা
আপনাকে উঠিয়ে
নেই, তাতে কি আপনার দায়িত্ব
তো পৌছে দেয়া
এবং আমার দায়িত্ব
হিসাব নেয়া।
[13:41]
তারা
কি দেখে না যে, আমি তাদের দেশকে চতুর্দিক
থেকে সমানে সঙ্কুচিত
করে আসছি? আল্লাহ
নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশকে পশ্চাতে
নিক্ষেপকারী কেউ
নেই। তিনি দ্রুত
হিসাব গ্রহণ করেন।
[13:42]
তাদের
পূর্বে যারা ছিল, তারা চক্রান্ত করেছে। আর সকল
চক্রান্ত তো আল্লাহর
হাতেই আছে। তিনি
জানেন প্রত্যেক ব্যক্তি যা কিছু
করে। কাফেররা
জেনে নেবে যে, পর জীবনের
আবাসস্থল কাদের
জন্য রয়েছে।
[13:43]
কাফেররা
বলেঃ আপনি প্রেরিত ব্যক্তি নন। বলে দিন, আমার
ও তোমাদের মধ্যে
প্রকৃষ্ট সাক্ষী
হচ্ছেন আল্লাহ
এবং ঐ ব্যক্তি, যার কাছে
গ্রন্থের জ্ঞান
আছে।
14 Ibrahim
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[14:1]
আলিফ-লাম-রা; এটি একটি
গ্রন্থ, যা আমি আপনার
প্রতি নাযিল করেছি-যাতে
আপনি মানুষকে অন্ধকার
থেকে আলোর দিকে
বের করে আনেন-পরাক্রান্ত, প্রশংসার
যোগ্য পালনকর্তার
নির্দেশে তাঁরই
পথের দিকে।
[14:2]
তিনি
আল্লাহ; যিনি নভোমন্ডল
ও ভূ-মন্ডলের
সবকিছুর মালিক। কাফেরদের
জন্যে বিপদ রয়েছে, কঠোর
আযাব;
[14:3]
যারা
পরকালের চাইতে
পার্থিব জীবনকে
পছন্দ করে; আল্লাহর
পথে বাধা দান করে
এবং তাতে বক্রতা
অন্বেষণ করে, তারা পথ ভুলে দূরে পড়ে
আছে।
[14:4]
আমি
সব পয়গম্বরকেই
তাদের স্বজাতির
ভাষাভাষী করেই
প্রেরণ করেছি, যাতে
তাদেরকে পরিষ্কার
বোঝাতে পারে। অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, পথঃভ্রষ্ট
করেন এবং যাকে
ইচ্ছা সৎপথ
প্রদর্শন করেন। তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।
[14:5]
আমি
মূসাকে নিদর্শনাবলী
সহ প্রেরণ
করেছিলাম যে, স্বজাতিকে
অন্ধকার থেকে আলোর
দিকে আনয়ন এবং
তাদেরকে আল্লাহর
দিনসমূহ স্মরণ
করান। নিশ্চয়
এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল
কৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী
রয়েছে।
[14:6]
যখন
মূসা স্বজাতিকে
বললেনঃ তোমাদের
প্রতি আল্লাহর
অনুগ্রহ স্মরণ
কর যখন তিনি তোমাদেরকে
ফেরাউনের সম্প্রদায়ের
কবল থেকে মুক্তি
দেন। তারা তোমাদেরকে
অত্যন্ত নিকৃষ্ট
ধরনের শাস্তি দিত, তোমাদের ছেলেদেরকে
হত্যা করত এবং
তোমাদের মেয়েদেরকে
জীবিত রাখত। এবং এতে তোমাদের পালনকর্তার
পক্ষ থেকে বিরাট
পরীক্ষা হয়েছিল।
[14:7]
যখন
তোমাদের পালনকর্তা
ঘোষণা করলেন
যে, যদি কৃতজ্ঞতা
স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে
আরও দেব এবং যদি
অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই
আমার শাস্তি হবে
কঠোর।
[14:8]
এবং
মূসা বললেনঃ তোমরা
এবং পৃথিবীর
সবাই যদি কুফরী
কর, তথাপি আল্লাহ
অমুখাপেক্ষী, যাবতীয়
গুনের আধার।
[14:9]
তোমাদের
কাছে কি তোমাদের পূর্ববর্তী কওমে
নূহ, আদ ও সামুদের
এবং তাদের পরবর্তীদের
খবর পৌছেনি? তাদের বিষয়ে আল্লাহ
ছাড়া আর কেউ জানে
না। তাদের কাছে
তাদের পয়গম্বর
প্রমানাদি নিয়ে আগমন করেন। অতঃপর
তারা নিজেদের হাত
নিজেদের মুখে রেখে
দিয়েছে এবং বলেছে, যা কিছু সহ তোমাদেরকে
প্রেরণ করা হয়েছে, আমরা
তা মানি না এবং
যে পথের দিকে তোমরা আমাদেরকে দাওয়াত
দাও, সে সম্পর্কে
আমাদের মনে সন্দেহ
আছে, যা আমাদেরকে উৎকন্ঠায়
ফেলে রেখেছে।
[14:10]
তাদের
পয়গম্বরগণ বলেছিলেনঃ আল্লাহ সম্পর্কে
কি সন্দেহ আছে, যিনি
নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের
স্রষ্টা? তিনি তোমাদেরকে আহবান
করেন যাতে তোমাদের
কিছু গুনাহ ক্ষমা
করেন এবং নির্দিষ্ট
মেয়াদ পর্যন্ত
তোমাদের সময় দেন। তারা
বলতঃ তোমরা তো
আমাদের মতই মানুষ!
তোমরা আমাদেরকে ঐ উপাস্য থেকে
বিরত রাখতে চাও, যার এবাদত
আমাদের পিতৃপুরুষগণ
করত। অতএব তোমরা কোন সুস্পষ্ট
প্রমাণ আনয়ন কর।
[14:11]
তাদের
পয়গম্বর তাদেরকে
বলেনঃ আমারাও
তোমাদের মত মানুষ, কিন্তু
আল্লাহ বান্দাদের
মধ্য থেকে যার
উপরে ইচ্ছা, অনুগ্রহ
করেন। আল্লাহর
নির্দেশ ব্যতীত
তোমাদের কাছে প্রমাণ
নিয়ে আসা আমাদের
কাজ নয়; ঈমানদারদের
আল্লাহর উপর ভরসা
করা চাই।
[14:12]
আমাদের
আল্লাহর উপর ভরসা
না করার কি
কারণ থাকতে পারে, অথচ তিনি
আমাদেরকে আমাদের
পথ বলে দিয়েছেন। তোমরা আমাদেরকে যে পীড়ন
করেছ, তজ্জন্যে
আমরা সবর করব। ভরসাকারিগণের
আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত।
[14:13]
কাফেররা
পয়গম্বরগণকে
বলেছিলঃ আমরা
তোমাদেরকে দেশ
থেকে বের করে দেব
অথবা তোমরা আমাদের
ধর্মে ফিরে আসবে। তখন তাদের কাছে তাদের
পালনকর্তা ওহী
প্রেরণ করলেন যে, আমি জালিমদেরকে
অবশ্যই ধ্বংস করে দেব।
[14:14]
তাদের
পর তোমাদেরকে দেশে
আবাদ করব। এটা ঐ
ব্যক্তি পায়, যে আমার
সামনে দন্ডায়মান
হওয়াকে এবং আমার
আযাবের ওয়াদাকে
ভয় করে।
[14:15]
পয়গম্বরগণ
ফয়সালা চাইতে লাগলেন এবং প্রত্যেক
অবাধ্য, হঠকারী ব্যর্থ
কাম হল।
[14:16]
তার
পেছনে দোযখ রয়েছে। তাতে পূঁজ মিশানো পানি
পান করানো হবে।
[14:17]
ঢোক
গিলে তা পান করবে। এবং গলার ভিতরে প্রবেশ
করতে পারবে না। প্রতি
দিক থেকে তার কাছে
মৃত্যু আগমন করবে
এবং সে মরবে
না। তার পশ্চাতেও
রয়েছে কঠোর আযাব।
[14:18]
যারা
স্বীয় পালনকর্তার
সত্তার অবিশ্বাসী
তাদের অবস্থা এই
যে, তাদের কর্মসমূহ
ছাইভস্মের মত যার
উপর দিয়ে প্রবল বাতাস বয়ে যায়
ধূলিঝড়ের দিন। তাদের
উপার্জনের কোন
অংশই তাদের করতলগত
হবে না। এটাই দুরবর্তী
পথভ্রষ্টতা।
[14:19]
তুমি
কি দেখনি যে, আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভুমন্ডল
যথাবিধি সৃষ্টি
করেছেন? যদি তিনি ইচ্ছা
করেন, তবে তোমাদেরকে বিলুপ্তিতে নিয়ে
যাবেন এবং নতুন
সৃষ্টি আনয়ন করবেন।
[14:20]
এটা
আল্লাহর পক্ষে
মোটেই কঠিন নয়।
[14:21]
সবাই
আল্লাহর সামনে
দন্ডায়মান হবে এবং দুর্বলেরা
বড়দেরকে বলবেঃ
আমরা তো তোমাদের
অনুসারী ছিলাম-অতএব, তোমরা আল্লাহর আযাব
থেকে আমাদেরকে
কিছুমাত্র রক্ষা
করবে কি? তারা
বলবেঃ যদি আল্লাহ আমাদেরকে সৎপথ দেখাতেন, তবে আমরা
অবশ্যই তোমাদের
কে সৎপথ দেখাতাম। এখন তো
আমাদের ধৈর্য্যচ্যুত
হই কিংবা সবর করি-সবই
আমাদের জন্যে সমান
আমাদের রেহাই নেই।
[14:22]
যখন
সব কাজের ফায়সলা
হয়ে যাবে, তখন শয়তান
বলবেঃ নিশ্চয়
আল্লাহ তোমাদেরকে
সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন
এবং আমি তোমাদের
সাথে ওয়াদা করেছি, অতঃপর
তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের
উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু
এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে
ডেকেছি, অতঃপর তোমরা
আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব
তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না
এবং নিজেদেরকেই
ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে
সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও
আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী
নও। ইতোপূর্বে
তোমরা আমাকে যে
আল্লাহর শরীক করেছিলে, আমি তা
অস্বীকার করি। নিশ্চয় যারা জালেম তাদের
জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি।
[14:23]
এবং
যারা বিশ্বাস স্থাপণ
করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন
করে তাদেরকে এমন
উদ্যানে প্রবেশ
করানো হবে, যার পাদদেশ
দিয়ে নির্ঝরিনী
সমূহ প্রবাহিত
হবে তারা তাতে
পালনকর্তার নির্দেশে
অনন্তকাল থাকবে। যেখানে তাদের
সম্ভাষণ হবে সালাম।
[14:24]
তুমি
কি লক্ষ্য কর না, আল্লাহ তা’আলা কেমন উপমা
বর্ণনা করেছেনঃ
পবিত্র বাক্য হলো
পবিত্র বৃক্ষের
মত। তার শিকড় মজবুত এবং শাখা
আকাশে উত্থিত।
[14:25]
সে
পালনকর্তার নির্দেশে
অহরহ ফল দান
করে। আল্লাহ
মানুষের জন্যে
দৃষ্টান্ত বর্ণণা
করেন-যাতে তারা
চিন্তা-ভাবনা করে।
[14:26]
এবং
নোংরা বাক্যের
উদাহরণ হলো নোংরা বৃক্ষ। একে মাটির
উপর থেকে উপড়ে
নেয়া হয়েছে। এর কোন
স্থিতি নেই।
[14:27]
আল্লাহ
তা’আলা মুমিনদেরকে মজবুত বাক্য দ্বারা
মজবুত করেন। পার্থিবজীবনে
এবং পরকালে। এবং আল্লাহ
জালেমদেরকে পথভ্রষ্ট করেন। আল্লাহ
যা ইচ্ছা, তা করেন।
[14:28]
তুমি
কি তাদের কে দেখনি, যারা আল্লাহর নেয়ামতকে
কুফরে পরিণত করেছে
এবং স্ব-জাতিকে
সম্মুখীন করেছে
ধ্বংসের আলয়ে।
[14:29]
দোযখের? তারা
তাতে প্রবেশ করবে সেটা কতই না মন্দ
আবাস।
[14:30]
এবং
তারা আল্লাহর জন্যে
সমকক্ষ স্থির
করেছে, যাতে তারা
তার পথ থেকে বিচ্যুত
করে দেয়। বলুনঃ
মজা উপভোগ করে
নাও। অতঃপর
তোমাদেরকে অগ্নির
দিকেই ফিরে যেতে
হবে।
[14:31]
আমার
বান্দাদেরকে বলে
দিন যারা বিশ্বাস
স্থাপন করেছে, তারা
নামায কায়েম রাখুক
এবং আমার দেয়া
রিযিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয়
করুক ঐদিন আসার
আগে, যেদিন কোন
বেচা কেনা নেই
এবং বন্ধুত্বও নেই।
[14:32]
তিনিই
আল্লাহ, যিনি নভোমন্ডল
ও ভুমন্ডল সৃজন
করেছেন এবং আকাশ
থেকে পানি বর্ষণ
করে অতঃপর তা দ্বারা
তোমাদের জন্যে
ফলের রিযিক উৎপন্ন করেছেন
এবং নৌকাকে তোমাদের
আজ্ঞাবহ করেছেন, যাতে
তাঁর আদেশে
সমুদ্রে চলা ফেরা
করে এবং নদ-নদীকে
তোমাদের সেবায়
নিয়োজিত করেছেন।
[14:33]
এবং
তোমাদের সেবায়
নিয়োজিত করেছেন সূর্যকে
এবং চন্দ্রকে সর্বদা
এক নিয়মে এবং
রাত্রি ও দিবাকে
তোমাদের কাজে লাগিয়েছেন।
[14:34]
যে
সকল বস্তু তোমরা
চেয়েছ, তার প্রত্যেকটি
থেকেই তিনি তোমাদেরকে
দিয়েছেন। যদি আল্লাহর
নেয়ামত গণনা কর, তবে গুণে
শেষ করতে পারবে
না। নিশ্চয় মানুষ
অত্যন্ত অন্যায়কারী, অকৃতজ্ঞ।
[14:35]
যখন
ইব্রাহীম বললেনঃ
হে পালনকর্তা, এ শহরকে
শান্তিময় করে
দিন এবং আমাকে
ও আমার সন্তান
সন্ততিকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে
রাখুন।
[14:36]
হে
পালনকর্তা, এরা অনেক মানুষকে বিপথগামী
করেছে। অতএব
যে আমার অনুসরণ
করে, সে আমার এবং
কেউ আমার অবাধ্যতা
করলে নিশ্চয় আপনি
ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[14:37]
হে
আমাদের পালনকর্তা, আমি নিজের এক সন্তানকে
তোমার পবিত্র গৃহের
সন্নিকটে চাষাবাদহীন
উপত্যকায় আবাদ করেছি; হে আমাদের
পালনকর্তা, যাতে
তারা নামায কায়েম
রাখে। অতঃপর
আপনি কিছু লোকের অন্তরকে
তাদের প্রতি আকৃষ্ট
করুন এবং তাদেরকে
ফলাদি দ্বারা রুযী
দান করুন, সম্ভবতঃ
তারা কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করবে
[14:38]
হে
আমাদের পালনকর্তা, আপনি
তো জানেন
আমরা যা কিছু গোপনে
করি এবং যা কিছু
প্রকাশ্য করি। আল্লাহর
কাছে পৃথিবীতে ও আকাশে কোন কিছুই
গোপন নয়।
[14:39]
সমস্ত
প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আমাকে এই বার্ধক্যে
ইসমাঈল ও ইসহাক
দান করেছেন নিশ্চয়
আমার পালনকর্তা
দোয়া শ্রবণ
করেন।
[14:40]
হে
আমার পালনকর্তা, আমাকে নামায কায়েমকারী
করুন এবং আমার
সন্তানদের মধ্যে
থেকেও। হে আমাদের
পালনকর্তা, এবং কবুল
করুন আমাদের দোয়া।
[14:41]
হে
আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার
পিতা-মাতাকে এবং
সব মুমিনকে ক্ষমা
করুন, যেদিন হিসাব
কায়েম হবে।
[14:42]
জালেমরা
যা করে, সে সম্পর্কে আল্লাহকে কখনও
বেখবর মনে করো
না তাদেরকে তো
ঐ দিন পর্যন্ত
অবকাশ দিয়ে রেখেছেন, যেদিন
চক্ষুসমূহ বিস্ফোরিত
হবে।
[14:43]
তারা
মস্তক উপরে তুলে ভীত-বিহবল চিত্তে
দৌড়াতে থাকবে। তাদের
দিকে তাদের দৃষ্টি
ফিরে আসবে না এবং তাদের অন্তর উড়ে
যাবে।
[14:44]
মানুষকে
ঐ দিনের ভয় প্রদর্শন করুন, যেদিন তাদের
কাছে আযাব আসবে। তখন জালেমরা
বলবেঃ হে আমাদের
পালনকর্তা, আমাদেরকে
সামান্য মেয়াদ
পর্যন্ত সময় দিন, যাতে
আমরা আপনার আহবানে
সাড়া দিতে এবং পয়গম্বরগণের
অনুসরণ করতে পারি। তোমরা
কি ইতোপূর্বে কসম
খেতে না যে, তোমাদেরকে দুনিয়া থেকে
যেতে হবে না?
[14:45]
তোমরা
তাদের বাসভূমিতেই
বসবাস করতে, যারা
নিজেদের উপর জুলুম
করেছে এবং তোমাদের
জানা হয়ে গিয়েছিল
যে, আমি তাদের
সাথে কিরূপ ব্যবহার
করেছি এবং আমি
তোমাদেরকে ওদের
সব কাহিনীই বর্ণনা করেছি।
[14:46]
তারা
নিজেদের মধ্যে
ভীষণ চক্রান্ত
করে নিয়েছে এবং
আল্লাহর সামনে
রক্ষিত আছে তাদের
কু-চক্রান্ত। তাদের কুটকৌশল পাহাড়
টলিয়ে দেয়ার
মত হবে না।
[14:47]
অতএব
আল্লাহর প্রতি
ধারণা করো না যে, তিনি রসূলগণের
সাথে কৃত ওয়াদা
ভঙ্গ করবেন নিশ্চয়
আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ
গ্রহণকারী।
[14:48]
যেদিন
পরিবর্তিত করা
হবে এ পৃথিবীকে
অন্য পৃথিবীতে
এবং পরিবর্তিত
করা হবে আকাশ সমূহকে
এবং লোকেরা পরাক্রমশালী
এবং আল্লাহর সামনে
পেশ হবে।
[14:49]
তুমি
ঐদিন পাপীদেরকে
পরস্পরে শৃংখলা
বদ্ধ দেখবে।
[14:50]
তাদের
জামা হবে দাহ্য
আলকাতরার এবং তাদের মুখমন্ডলকে
আগুন আচ্ছন্ন করে
ফেলবে।
[14:51]
যাতে
আল্লাহ প্রত্যেককে
তার কৃতকর্মের
প্রতিদান দেন। নিশ্চয়
আল্লাহ দ্রুত হিসাব
গ্রহণকারী।
[14:52]
এটা
মানুষের একটি সংবাদনামা এবং যাতে এতদ্বারা
ভীত হয় এবং যাতে
জেনে নেয় যে, উপাস্য
তিনিই-একক; এবং যাতে বুদ্ধিমানরা
চিন্তা-ভাবনা করে।