Part 17
21 Al-Anbiyâ’
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[21:1]
মানুষের
হিসাব-কিতাবের
সময় নিকটবর্তী; অথচ তারা
বেখবর হয়ে মুখ
ফিরিয়ে নিচ্ছে।
[21:2]
তাদের
কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে যখনই
কোন নতুন উপদেশ
আসে, তারা তা খেলার
ছলে শ্রবণ করে।
[21:3]
তাদের
অন্তর থাকে খেলায়
মত্ত। জালেমরা
গোপনে পরামর্শ
করে, সে তো তোমাদেরই
মত একজন মানুষ; এমতাবস্থায়
দেখে শুনে তোমরা
তার যাদুর কবলে
কেন পড়?
[21:4]
পয়গম্বর
বললেনঃ নভোমন্ডল
ও ভুমন্ডলের
কথাই আমার পালনকর্তা
জানেন। তিনি
সবকিছু শোনেন, সবকিছু
জানেন।
[21:5]
এছাড়া
তারা আরও বলেঃ
অলীক স্বপ্ন; না সে
মিথ্যা উদ্ভাবন
করেছে, না সে একজন
কবি। অতএব সে
আমাদের কাছে কোন নিদর্শন আনয়ন
করুক, যেমন নিদর্শন
সহ আগমন করেছিলেন
পূর্ববর্তীগন।
[21:6]
তাদের
পূর্বে যেসব জনপদ
আমি ধবংস করে
দিয়েছি, তারা
বিশ্বাস স্থাপন
করেনি; এখন এরা কি
বিশ্বাস স্থাপন
করবে?
[21:7]
আপনার
পূর্বে আমি মানুষই প্রেরণ করেছি, যাদের
কাছে আমি ওহী পাঠাতাম। অতএব
তোমরা যদি না জান
তবে যারা স্মরণ
রাখে তাদেরকে জিজ্ঞেস
কর।
[21:8]
আমি
তাদেরকে এমন দেহ
বিশিষ্ট করিনি
যে, তারা খাদ্য
ভক্ষণ করত না এবং
তারা চিরস্থায়ীও
ছিল না।
[21:9]
অতঃপর
আমি তাদেরকে দেয়া
আমার প্রতিশ্রুতি
পূর্ণ করলাম সুতরাং
তাদেরকে এবং যাদেরকে
ইচ্ছা বাঁচিয়ে
দিলাম এবং ধবংস করে ছিলাম
সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে।
[21:10]
আমি
তোমাদের প্রতি
একটি কিতাব অবর্তীর্ণ করেছি; এতে তোমাদের
জন্যে উপদেশ রয়েছে। তোমরা
কি বোঝ না?
[21:11]
আমি
কত জনপদের ধ্বংস
সাধন করেছি
যার অধিবাসীরা
ছিল পাপী এবং তাদের
পর সৃষ্টি করেছি
অন্য জাতি।
[21:12]
অতঃপর
যখন তারা আমার
আযাবের কথা টের
পেল, তখনই তারা
সেখান থেকে পলায়ন
করতে লাগল।
[21:13]
পলায়ন
করো না এবং ফিরে
এস, যেখানে তোমরা
বিলাসিতায় মত্ত
ছিলে ও তোমাদের
আবাসগৃহে; সম্ভবত; কেউ তোমাদের জিজ্ঞেস করবে।
[21:14]
তারা
বললঃ হায়, দুর্ভোগ আমাদের, আমরা
অবশ্যই পাপী ছিলাম।
[21:15]
তাদের
এই আর্তনাদ সব
সময় ছিল, শেষ পর্যন্ত
আমি তাদেরকে করে
দিলাম যেন কর্তিত
শস্য ও নির্বাপিত
অগ্নি।
[21:16]
আকাশ
পৃথিবী এতদুভয়ের
মধ্যে যা আছে, তা আমি
ক্রীড়াচ্ছলে
সৃষ্টি করিনি।
[21:17]
আমি
যদি ক্রীড়া উপকরণ
সৃষ্টি করতে
চাইতাম, তবে আমি আমার
কাছে যা আছে তা
দ্বারাই তা করতাম, যদি আমাকে
করতে হত।
[21:18]
বরং
আমি সত্যকে মিথ্যার
উপর নিক্ষেপ
করি, অতঃপর সত্য
মিথ্যার মস্তক
চুর্ণ-বিচূর্ণ
করে দেয়, অতঃপর
মিথ্যা তৎক্ষণাৎ নিশ্চিহ্ন
হয়ে যায়। তোমরা
যা বলছ, তার জন্যে
তোমাদের দুর্ভোগ।
[21:19]
নভোমন্ডল
ও ভুমন্ডলে যারা
আছে, তারা তাঁরই। আর যারা
তাঁর সান্নিধ্যে
আছে তারা তাঁর
ইবাদতে অহংকার
করে না এবং অলসতাও করে না।
[21:20]
তারা
রাত্রিদিন তাঁর
পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা
করে এবং ক্লান্ত
হয় না।
[21:21]
তারা
কি মৃত্তিকা দ্বারা
তৈরী উপাস্য
গ্রহণ করেছে, যে তারা
তাদেরকে জীবিত
করবে?
[21:22]
যদি
নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে আল্লাহ ব্যতীত
অন্যান্য উপাস্য
থাকত, তবে উভয়ের
ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব
তারা যা বলে, তা থেকে
আরশের অধিপতি আল্লাহ
পবিত্র।
[21:23]
তিনি
যা করেন, তৎসম্পর্কে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন
না এবং তাদেরকে
জিজ্ঞেস করা হবে।
[21:24]
তারা
কি আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য
গ্রহণ করেছে? বলুন, তোমরা
তোমাদের প্রমাণ
আন। এটাই আমার সঙ্গীদের কথা
এবং এটাই আমার
পুর্ববর্তীদের
কথা। বরং তাদের
অধিকাংশই সত্য
জানে না; অতএব
তারা টালবাহানা
করে।
[21:25]
আপনার
পূর্বে আমি যে
রাসূলই প্রেরণ
করেছি, তাকে এ আদেশই
প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত
অন্য কোন উপাস্য
নেই। সুতরাং
আমারই এবাদত কর।
[21:26]
তারা
বললঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ
করেছে। তাঁর
জন্য কখনও ইহা
যোগ্য নয়; বরং তারা
তো তাঁর সম্মানিত বান্দা।
[21:27]
তারা
আগে বেড়ে কথা
বলতে পারে না এবং তারা তাঁর
আদেশেই কাজ করে।
[21:28]
তাদের
সম্মুখে ও পশ্চাতে
যা আছে, তা তিনি
জানেন। তারা
শুধু তাদের জন্যে
সুপারিশ করে, যাদের
প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং
তারা তাঁর ভয়ে
ভীত।
[21:29]
তাদের
মধ্যে যে বলে যে, তিনি ব্যতীত আমিই উপাস্য, তাকে
আমি জাহান্নামের
শাস্তি দেব। আমি জালেমদেরকে
এভাবেই প্রতিফল
দিয়ে থাকি।
[21:30]
কাফেররা
কি ভেবে দেখে না
যে, আকাশমন্ডলী
ও পৃথিবীর মুখ
বন্ধ ছিল, অতঃপর
আমি উভয়কে খুলে
দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি
থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও
কি তারা বিশ্বাস
স্থাপন করবে না?
[21:31]
আমি
পৃথিবীতে ভারী
বোঝা রেখে দিয়েছি যাতে
তাদেরকে নিয়ে
পৃথিবী ঝুঁকে না
পড়ে এবং তাতে
প্রশস্ত পথ রেখেছি, যাতে
তারা পথ প্রাপ্ত
হয়।
[21:32]
আমি
আকাশকে সুরক্ষিত
ছাদ করেছি; অথচ তারা
আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী
থেকে মুখ ফিরিয়ে
রাখে।
[21:33]
তিনিই
সৃষ্টি করেছেন
রাত্রি ও দিন এবং
সূর্য ও চন্দ্র। সবাই
আপন আপন কক্ষপথে
বিচরণ করে।
[21:34]
আপনার
পূর্বেও কোন মানুষকে
আমি অনন্ত
জীবন দান করিনি। সুতরাং
আপনার মৃত্যু হলে
তারা কি চিরঞ্জীব
হবে?
[21:35]
প্রত্যেককে
মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে
হবে। আমি তোমাদেরকে
মন্দ ও ভাল দ্বারা
পরীক্ষা করে থাকি
এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত
হবে।
[21:36]
কাফেররা
যখন আপনাকে দেখে
তখন আপনার
সাথে ঠাট্টা করা
ছাড়া তাদের আর
কোন কাজ থাকে না, একি সেই
ব্যক্তি, যে তোমাদের দেব-দেবীদের
সমালোচনা করে? এবং তারাই
তো রহমান’ এর আলোচনায়
অস্বীকার করে।
[21:37]
সৃষ্টিগত
ভাবে মানুষ ত্বরাপ্রবণ, আমি সত্তরই
তোমাদেরকে আমার
নিদর্শনাবলী দেখাব। অতএব
আমাকে শীঘ্র করতে বলো না।
[21:38]
এবং
তারা বলেঃ যদি
তোমরা সত্যবাদী
হও তবে এই ওয়াদা
কবে পুর্ণ হবে?
[21:39]
যদি
কাফেররা ঐ সময়টি
জানত, যখন তারা তাদের
সম্মুখ ও পৃষ্ঠদেশ
থেকে অগ্নি প্রতিরোধ
করতে পারবে না
এবং তারা সাহায্য
প্রাপ্ত হবে না।
[21:40]
বরং
তা আসবে তাদের
উপর অতর্কিত ভাবে, অতঃপর তাদেরকে
তা হতবুদ্ধি করে
দেবে, তখন তারা তা
রোধ করতেও পারবে
না এবং তাদেরকে
অবকাশও দেয়া হবে
না।
[21:41]
আপনার
পূর্বেও অনেক রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ
করা হয়েছে। অতঃপর
যে বিষয়ে তারা
ঠাট্টা করত তা
উল্টো ঠাট্টাকারীদের
উপরই আপতিত হয়েছে।
[21:42]
বলুনঃ
‘রহমান’ থেকে
কে তোমাদেরকে
হেফাযত করবে রাত্রে
ও দিনে। বরং তারা
তাদের পালনকর্তার
স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।
[21:43]
তবে
কি আমি ব্যতীত
তাদের এমন দেব-দেবী আছে যারা
তাদেরকে রক্ষা
করবে? তারা তো নিজেদেরই
সাহায্য করতে সক্ষম
নয় এবং তারা
আমার মোকাবেলায়
সাহায্যকারীও
পাবে না।
[21:44]
বরং
আমি তাদেরকে এবং
তাদের বাপ-দাদাকে
ভোগসম্বার দিয়েছিলাম, এমনকি
তাদের আয়ুস্কালও
দীর্ঘ হয়েছিল। তারা কি দেখে না যে, আমি তাদের
দেশকে চতুর্দিক
থেকে হ্রাস করে
আনছি। এরপরও
কি তারা বিজয়ী
হবে?
[21:45]
বলুনঃ
আমি তো কেবল ওহীর মাধ্যমেই তোমাদেরকে
সতর্ক করি, কিন্তু
বধিরদেরকে যখন
সতর্ক করা হয়, তখন তারা
সে সতর্কবাণী
শোনে না।
[21:46]
আপনার
পালনকর্তার আযাবের কিছুমাত্রও তাদেরকে
স্পর্শ করলে তারা
বলতে থাকবে, হায়
আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা অবশ্যই পাপী ছিলাম।
[21:47]
আমি
কেয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের
মানদন্ড স্থাপন
করব। সুতরাং
কারও প্রতি জুলুম
হবে না। যদি কোন
আমল সরিষার
দানা পরিমাণও হয়, আমি তা
উপস্থিত করব এবং
হিসাব গ্রহণের
জন্যে আমিই যথেষ্ট।
[21:48]
আমি
মূসা ও হারুণকে
দান করেছিলাম
মীমাংসাকারী গ্রন্থ, আলো ও
উপদেশ, আল্লাহ ভীরুদের
জন্যে
[21:49]
যারা
না দেখেই তাদের পালনকর্তাকে
ভয় করে এবং কেয়ামতের
ভয়ে শঙ্কিত।
[21:50]
এবং
এটা একটা বরকতময়
উপদেশ, যা আমি নাযিল
করেছি। অতএব
তোমরা কি একে অস্বীকার
কর?
[21:51]
আর, আমি ইতিপূর্বে
ইব্রাহীমকে তার সৎপন্থা
দান করেছিলাম এবং
আমি তার সম্পর্কে
সম্যক পরিজ্ঞাত
ও ছিলাম।
[21:52]
যখন
তিনি তাঁর পিতা
ও তাঁর সম্প্রদায়কে
বললেনঃ এই মূর্তিগুলো
কী, যাদের তোমরা
পূজারী হয়ে বসে
আছ।
[21:53]
তারা
বললঃ আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে এদের
পুজা করতে দেখেছি।
[21:54]
তিনি
বললেনঃ তোমরা প্রকাশ্য গোমরাহীতে আছ
এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও।
[21:55]
তারা
বললঃ তুমি কি আমাদের
কাছে সত্যসহ
আগমন করেছ, না তুমি
কৌতুক করছ?
[21:56]
তিনি
বললেনঃ না, তিনিই
তোমাদের পালনকর্তা
যিনি নভোমন্ডল
ও ভুমন্ডলের পালনকর্তা, যিনি
এগুলো সৃষ্টি করেছেন; এবং আমি এই বিষয়েরই
সাক্ষ্যদাতা।
[21:57]
আল্লাহর
কসম, যখন তোমরা
পৃষ্ঠ প্রদর্শন
করে চলে যাবে, তখন আমি
তোমাদের মূর্তিগুলোর
ব্যাপারে একটা
ব্যবস্থা অবলম্বন করব।
[21:58]
অতঃপর
তিনি সেগুলোকে চূর্ণ-বিচুর্ণ
করে দিলেন ওদের
প্রধানটি ব্যতীতঃ
যাতে তারা তাঁর
কাছে প্রত্যাবর্তন
করে।
[21:59]
তারা
বললঃ আমাদের উপাস্যদের সাথে এরূপ ব্যবহার
কে করল? সে তো নিশ্চয়ই
কোন জালিম।
[21:60]
কতক
লোকে বললঃ আমরা
এক যুবককে তাদের সম্পর্কে
বিরূপ আলোচনা করতে
শুনেছি; তাকে ইব্রাহীম
বলা হয়।
[21:61]
তারা
বললঃ তাকে জনসমক্ষে উপস্থিত কর, যাতে
তারা দেখে।
[21:62]
তারা
বললঃ হে ইব্রাহীম
তুমিই কি আমাদের
উপাস্যদের সাথে
এরূপ ব্যবহার করেছ?
[21:63]
তিনি
বললেনঃ না এদের
এই প্রধানই
তো একাজ করেছে। অতএব
তাদেরকে জিজ্ঞেস
কর, যদি তারা কথা
বলতে পারে।
[21:64]
অতঃপর
মনে মনে চিন্তা
করল এবং বললঃ
লোক সকল; তোমরাই
বে ইনসাফ।
[21:65]
অতঃপর
তারা ঝুঁকে গেল
মস্তক নত করে, তুমি
তো জান যে, এরা কথা
বলে না
[21:66]
তিনি
বললেনঃ তোমরা কি
আল্লাহর পরিবর্তে
এমন কিছুর এবাদত
কর, যা তোমাদের
কোন উপকার ও করতে
পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না ?
[21:67]
ধিক
তোমাদের জন্যে
এবং তোমরা আল্লাহ ব্যতীত
যাদেরই এবাদত কর, ওদের
জন্যে। তোমরা
কি বোঝ না?
[21:68]
তারা
বললঃ একে পুড়িয়ে
দাও এবং তোমাদের
উপাস্যদের সাহায্য
কর, যদি তোমরা
কিছু করতে চাও।
[21:69]
আমি
বললামঃ হে অগ্নি, তুমি ইব্রাহীমের উপর
শীতল ও নিরাপদ
হয়ে যাও।
[21:70]
তারা
ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে ফন্দি আঁটতে চাইল, অতঃপর
আমি তাদেরকেই সর্বাধিক
ক্ষতিগ্রস্থ করে
দিলাম।
[21:71]
আমি
তাঁকে ও লূতকে
উদ্ধার করে সেই দেশে পৌঁছিয়ে
দিলাম, যেখানে আমি
বিশ্বের জন্যে
কল্যাণ রেখেছি।
[21:72]
আমি
তাকে দান করলাম
ইসহাক ও পুরস্কার
স্বরূপ দিলাম ইয়াকুব
এবং প্রত্যেককেই
সৎকর্ম পরায়ণ
করলাম।
[21:73]
আমি
তাঁদেরকে নেতা
করলাম। তাঁরা আমার নির্দেশ
অনুসারে পথ প্রদর্শন
করতেন। আমি তাঁদের
প্রতি ওহী নাযিল করলাম সৎকর্ম
করার, নামায কায়েম
করার এবং যাকাত
দান করার। তাঁরা
আমার এবাদতে ব্যাপৃত ছিল।
[21:74]
এবং
আমি লূতকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান
এবং তাঁকে ঐ জনপদ
থেকে উদ্ধার করেছিলাম, যারা
নোংরা কাজে লিপ্ত ছিল। তারা মন্দ
ও নাফরমান সম্প্রদায়
ছিল।
[21:75]
আমি
তাকে আমার অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত
করেছিলাম। সে ছিল
সৎকর্মশীলদের
একজন।
[21:76]
এবং
স্মরণ করুন নূহকে; যখন তিনি এর পূর্বে
আহবান করেছিলেন। তখন আমি
তাঁর দোয়া কবুল
করেছিলাম, অতঃপর
তাঁকে ও তাঁর
পরিবারবর্গকে
মহা সংকট থেকে
উদ্ধার করেছিলাম।
[21:77]
এবং
আমি তাঁকে ঐ সম্প্রদায়ের বিপক্ষে সাহায্য
করেছিলাম, যারা
আমার নিদর্শনাবলীকে
অস্বীকার করেছিল। নিশ্চয়, তারা
ছিল এক মন্দ সম্প্রদায়। অতঃপর
আমি তাদের সবাইকে
নিমজ্জত করেছিলাম।
[21:78]
এবং
স্মরণ করুন দাউদ
ও সুলায়মানকে, যখন তাঁরা
শস্যক্ষেত্র সম্পর্কে
বিচার করেছিলেন। তাতে
রাত্রিকালে কিছু লোকের মেষ
ঢুকে পড়েছিল। তাদের
বিচার আমার সম্মুখে
ছিল।
[21:79]
অতঃপর
আমি সুলায়মানকে
সে ফায়সালা
বুঝিয়ে দিয়েছিলাম
এবং আমি উভয়কে
প্রজ্ঞা ও জ্ঞান
দিয়েছিলাম। আমি পর্বত ও পক্ষীসমূহকে
দাউদের অনুগত করে
দিয়েছিলাম; তারা
আমার পবিত্রতা
ও মহিমা ঘোষণা
করত। এই সমস্ত
আমিই করেছিলাম।
[21:80]
আমি
তাঁকে তোমাদের
জন্যে বর্ম নির্মান শিক্ষা
দিয়েছিলাম, যাতে
তা যুদ্ধে তোমাদেরকে
রক্ষা করে। অতএব
তোমরা কি কৃতজ্ঞ
হবে?
[21:81]
এবং
সুলায়মানের অধীন
করে দিয়েছিলাম
প্রবল বায়ুকে; তা তাঁর
আদেশে প্রবাহিত
হত ঐ দেশের দিকে, যেখানে
আমি কল্যাণ
দান করেছি। আমি সব
বিষয়েই সম্যক
অবগত রয়েছি।
[21:82]
এবং
অধীন করেছি শয়তানদের কতককে, যারা তার জন্যে
ডুবুরীর কাজ করত
এবং এ ছাড়া অন্য
আরও অনেক কাজ করত। আমি তাদেরকে নিয়ন্ত্রন
করে রাখতাম।
[21:83]
এবং
স্মরণ করুন আইয়্যুবের কথা, যখন তিনি তাঁর
পালনকর্তাকে আহবান
করে বলেছিলেনঃ
আমি দুঃখকষ্টে
পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের
চাইতেও সর্বশ্রেষ্ট
দয়াবান।
[21:84]
অতঃপর
আমি তাঁর আহবানে
সাড়া দিলাম
এবং তাঁর দুঃখকষ্ট
দূর করে দিলাম
এবং তাঁর পরিবরাবর্গ
ফিরিয়ে দিলাম, আর তাদের সাথে তাদের
সমপরিমাণ আরও দিলাম
আমার পক্ষ থেকে
কৃপাবশতঃ আর এটা
এবাদত কারীদের
জন্যে উপদেশ স্বরূপ।
[21:85]
এবং
ইসমাঈল, ই’দ্রীস ও যুলকিফলের কথা
স্মরণ করুন, তাঁরা
প্রত্যেকেই ছিলেন
সবরকারী।
[21:86]
আমি
তাঁদেরকে আমার রহমাতপ্রাপ্তদের
অন্তর্ভূক্ত করেছিলাম। তাঁরা
ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ।
[21:87]
এবং
মাছওয়ালার কথা
স্মরণ করুন তিনি ক্রুদ্ধ
হয়ে চলে গিয়েছিলেন, অতঃপর
মনে করেছিলেন যে, আমি তাঁকে
ধৃত করতে পারব
না। অতঃপর তিনি
অন্ধকারের মধ্যে
আহবান করলেনঃ তুমি
ব্যতীত কোন উপাস্য
নেই; তুমি নির্দোষ
আমি গুনাহগার।
[21:88]
অতঃপর
আমি তাঁর আহবানে
সাড়া দিলাম
এবং তাঁকে দুশ্চিন্তা
থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনি
ভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে
থাকি।
[21:89]
এবং
যাকারিয়ার কথা
স্মরণ করুন, যখন সে
তার পালনকর্তাকে
আহবান করেছিল; হে আমার
পালনকর্তা আমাকে
একা রেখো না। তুমি
তো উত্তম ওয়ারিস।
[21:90]
অতঃপর
আমি তার দোয়া
কবুল করেছিলাম, তাকে
দান করেছিলাম ইয়াহইয়া
এবং তার জন্যে
তার স্ত্রীকে প্রসব
যোগ্য করেছিলাম। তারা
সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে
পড়ত, তারা আশা ও
ভীতি সহকারে আমাকে
ডাকত এবং তারা
ছিল আমার কাছে
বিনীত।
[21:91]
এবং
সেই নারীর কথা
আলোচনা করুন, যে তার
কামপ্রবৃত্তিকে
বশে রেখেছিল, অতঃপর
আমি তার মধ্যে
আমার রূহ ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং
তাকে তার পুত্রকে
বিশ্ববাসীর জন্য
নিদর্শন করেছিলাম।
[21:92]
তারা
সকলেই তোমাদের
ধর্মের; একই ধর্মে
তো বিশ্বাসী সবাই
এবং আমিই তোমাদের
পালনকর্তা, অতএব
আমার বন্দেগী কর।
[21:93]
এবং
মানুষ তাদের কার্যকলাপ দ্বারা পারস্পরিক
বিষয়ে ভেদ সৃষ্টি
করেছে। প্রত্যেকেই
আমার কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।
[21:94]
অতঃপর
যে বিশ্বাসী অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন
করে, তার প্রচেষ্টা
অস্বীকৃত হবে না
এবং আমি তা লিপিবদ্ধ
করে রাখি।
[21:95]
যেসব
জনপদকে আমি ধ্বংস
করে দিয়েছি, তার অধিবাসীদের
ফিরে না আসা অবধারিত।
[21:96]
যে
পর্যন্ত না ইয়াজুজ
ও মাজুজকে বন্ধন
মুক্ত করে দেয়া
হবে এবং তারা প্রত্যেক
উচ্চভুমি থেকে
দ্রুত ছুটে আসবে।
[21:97]
আমোঘ
প্রতিশ্রুত সময় নিকটবর্তী হলে
কাফেরদের চক্ষু
উচ্চে স্থির হয়ে
যাবে; হায় আমাদের
দূর্ভাগ্য, আমরা
এ বিষয়ে বেখবর
ছিলাম; বরং আমরা গোনাহগরই
ছিলাম।
[21:98]
তোমরা
এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের পুজা
কর, সেগুলো দোযখের
ইন্ধন। তোমরাই
তাতে প্রবেশ করবে।
[21:99]
এই
মূর্তিরা যদি উপাস্য
হত, তবে জাহান্নামে
প্রবেশ করত না। প্রত্যেকেই
তাতে চিরস্থায়ী
হয়ে পড়ে থাকবে।
[21:100]
তারা
সেখানে চীৎকার করবে এবং সেখানে তারা কিছুই
শুনতে পাবে না।
[21:101]
যাদের
জন্য প্রথম থেকেই
আমার পক্ষ থেকে
কল্যাণ নির্ধারিত
হয়েছে তারা দোযখ
থেকে দূরে থাকবে।
[21:102]
তারা
তার ক্ষীণতম শব্দও
শুনবে না এবং
তারা তাদের মনের
বাসনা অনুযায়ী
চিরকাল বসবাস করবে।
[21:103]
মহা
ত্রাস তাদেরকে
চিন্তান্বিত করবে না এবং ফেরেশতারা
তাদেরকে অভ্যর্থনা
করবেঃ আজ তোমাদের
দিন, যে দিনের ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া
হয়েছিল।
[21:104]
সেদিন
আমি আকাশকে
গুটিয়ে নেব, যেমন
গুটানো হয় লিখিত
কাগজপত্র। যেভাবে
আমি প্রথমবার সৃষ্টি
করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি
করব। আমার ওয়াদা
নিশ্চিত, আমাকে
তা পূর্ণ করতেই
হবে।
[21:105]
আমি
উপদেশের পর যবুরে
লিখে দিয়েছি
যে, আমার সৎকর্মপরায়ণ
বান্দাগণ অবশেষে
পৃথিবীর অধিকারী
হবে।
[21:106]
এতে
এবাদতকারী সম্প্রদায়ের জন্যে পর্যাপ্ত
বিষয়বস্তু আছে।
[21:107]
আমি
আপনাকে বিশ্ববাসীর
জন্যে রহমত
স্বরূপই প্রেরণ
করেছি।
[21:108]
বলুনঃ
আমাকে তো এ আদেশই
দেয়া হয়েছে
যে, তোমাদের উপাস্য
একমাত্র উপাস্য। সুতরাংতোমরা
কি আজ্ঞাবহ হবে?
[21:109]
অতঃপর
যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দিনঃ
আমি তোমাদেরকে
পরিস্কার ভাবে
সতর্ক করেছি এবং
আমি জানি না, তোমাদেরকে
যে ওয়াদা দেয়া
হয়েছে, তা নিকটবর্তী
না দূরবর্তী।
[21:110]
তিনি
জানেন, যে কথা সশব্দে
বল এবং যে
কথা তোমরা গোপন
কর।
[21:111]
আমি
জানি না সম্ভবতঃ
বিলম্বের মধ্যে তোমাদের
জন্যে একটি পরীক্ষা
এবং এক সময় পর্যন্ত
ভোগ করার সুযোগ।
[21:112]
পয়গাম্বর
বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি
ন্যায়ানুগ ফয়সালা
করে দিন। আমাদের
পালনকর্তা তো দয়াময়, তোমরা
যা বলছ, সে বিষয়ে
আমরা তাঁর কাছেই
সাহায্য প্রার্থনা
করি।
22 Al-Hajj
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[22:1]
হে
লোক সকল! তোমাদের পালনকর্তাকে
ভয় কর। নিশ্চয়
কেয়ামতের প্রকম্পন
একটি ভয়ংকর ব্যাপার।
[22:2]
যেদিন
তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন প্রত্যেক
স্তন্যধাত্রী
তার দুধের শিশুকে
বিস্মৃত হবে এবং
প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত
করবে এবং মানুষকে
তুমি দেখবে মাতাল; অথচ তারা
মাতাল নয় বস্তুতঃ আল্লাহর
আযাব সুকঠিন।
[22:3]
কতক
মানুষ অজ্ঞানতাবশতঃ
আল্লাহ সম্পêেক বিতর্ক
করে এবং প্রত্যেক
অবাধ্য শয়তানের
অনুসরণ করে।
[22:4]
শয়তান
সম্পর্কে লিখে
দেয়া হয়েছে
যে, যে কেউ তার
সাথী হবে, সে তাকে
বিভ্রান্ত করবে
এবং দোযখের আযাবের
দিকে পরিচালিত
করবে।
[22:5]
হে
লোকসকল! যদি তোমরা পুনরুত্থানের
ব্যাপারে সন্দিগ্ধ
হও, তবে (ভেবে দেখ-)
আমি তোমাদেরকে
মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছি। এরপর
বীর্য থেকে, এরপর
জমাট রক্ত থেকে, এরপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট
ও অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট
মাংসপিন্ড থেকে, তোমাদের
কাছে ব্যক্ত করার জন্যে। আর আমি
এক নির্দিষ্ট কালের
জন্যে মাতৃগর্ভে
যা ইচ্ছা রেখে
দেই, এরপর আমি তোমাদেরকে
শিশু অবস্থায়
বের করি; তারপর
যাতে তোমরা যৌবনে
পদার্পণ কর। তোমাদের মধ্যে
কেউ কেউ মৃত্যুমুখে
পতিত হয় এবং তোমাদের
মধ্যে কাউকে নিষ্কর্মা বয়স পর্যন্ত
পৌছানো হয়, যাতে
সে জানার পর জ্ঞাত
বিষয় সম্পর্কে
সজ্ঞান থাকে না। তুমি ভূমিকে
পতিত দেখতে পাও, অতঃপর
আমি যখন তাতে বৃষ্টি
বর্ষণ করি, তখন তা সতেজ ও স্ফীত হয়ে
যায় এবং সর্বপ্রকার
সুদৃশ্য উদ্ভিদ
উৎপন্ন করে।
[22:6]
এগুলো
এ কারণে যে, আল্লাহ
সত্য এবং তিনি
মৃতকে জীবিত করেন
এবং তিনি সবকিছুর
উপর ক্ষমতাবান।
[22:7]
এবং
এ কারণে যে, কেয়ামত অবশ্যম্ভাবী, এতে সন্দেহ
নেই এবং এ কারণে
যে, কবরে যারা
আছে, আল্লাহ তাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন।
[22:8]
কতক
মানুষ জ্ঞান; প্রমাণ
ও উজ্জ্বল কিতাব
ছাড়াই আল্লাহ
সম্পর্কে বিতর্ক
করে।
[22:9]
সে
পার্শ্ব পরিবর্তন
করে বিতর্ক
করে, যাতে আল্লাহর
পথ থেকে বিভ্রান্ত
করে দেয়। তার জন্যে
দুনিয়াতে লাঞ্ছনা আছে এবং
কেয়ামতের দিন
আমি তাকে দহন-যন্ত্রণা
আস্বাদন করাব।
[22:10]
এটা
তোমার দুই হাতের
কর্মের কারণে, আল্লাহ
বান্দাদের প্রতি
জুলুম করেন না।
[22:11]
মানুষের
মধ্যে কেউ কেউ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে
জড়িত হয়ে আল্লাহর
এবাদত করে। যদি সে
কল্যাণ প্রাপ্ত
হয়, তবে এবাদতের
উপর কায়েম থাকে
এবং যদি কোন পরীক্ষায়
পড়ে, তবে পূর্বাবস্থায়
ফিরে যায়। সে ইহকালে
ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত। এটাই
প্রকাশ্য ক্ষতি
[22:12]
সে
আল্লাহর পরিবর্তে
এমন কিছুকে
ডাকে, যে তার অপকার
করতে পারে না এবং
উপকারও করতে পারে
না। এটাই চরম পথভ্রষ্টতা।
[22:13]
সে
এমন কিছুকে ডাকে, যার অপকার উপকারের আগে পৌছে। কত মন্দ
এই বন্ধু এবং কত
মন্দ এই সঙ্গী।
[22:14]
যারা
বিশ্বাস স্থাপন
করে ও সৎকর্ম সম্পাদন
করে, আল্লাহ তাদেরকে
জান্নাতে দাখিল
করবেন, যার তলদেশ
দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ
প্রবাহিত হয়। আল্লাহ
যা ইচ্ছা তাই করেন।
[22:15]
সে
ধারণা করে যে, আল্লাহ
কখনই ইহকালে
ও পরকালে রাসূলকে
সাহায্য করবেন
না, সে একটি রশি
আকাশ পর্যন্ত ঝুলিয়ে নিক; এরপর কেটে
দিক; অতঃপর দেখুক
তার এই কৌশল তার
আক্রোশ দূর করে
কিনা।
[22:16]
এমনিভাবে
আমি সুস্পষ্ট আয়াত রূপে কোরআন নাযিল
করেছি এবং আল্লাহ-ই
যাকে ইচ্ছা হেদায়েত
করেন।
[22:17]
যারা
মুসলমান, যারা
ইহুদী, সাবেয়ী, খ্রীষ্টান, অগ্নিপুজক
এবং যারা মুশরেক, কেয়ামতের
দিন আল্লাহ অবশ্যই তাদের মধ্যে ফায়সালা
করে দেবেন। সবকিছুই
আল্লাহর দৃষ্টির
সামনে।
[22:18]
তুমি
কি দেখনি যে, আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু
আছে নভোমন্ডলে, যা কিছু
আছে ভুমন্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি
পর্বতরাজি বৃক্ষলতা, জীবজন্তু
এবং অনেক মানুষ। আবার
অনেকের উপর অবধারিত হয়েছে
শাস্তি। আল্লাহ
যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত
করেন, তাকে কেউ সম্মান
দিতে পারে না। আল্লাহ
যা ইচ্ছা তাই করেন
[ Sajdah ]
[22:19]
এই
দুই বাদী বিবাদী, তারা তাদের পালনকর্তা
সম্পর্কে বিতর্ক
করে। অতএব যারা
কাফের, তাদের জন্যে
আগুনের পোশাক
তৈরী করা হয়েছে। তাদের
মাথার উপর ফুটন্ত
পানি ঢেলে দেয়া
হবে।
[22:20]
ফলে
তাদের পেটে যা
আছে, তা এবং চর্ম গলে বের হয়ে
যাবে।
[22:21]
তাদের
জন্যে আছে লোহার হাতুড়ি।
[22:22]
তারা
যখনই যন্ত্রনায়
অতিষ্ঠ হয়ে
জাহান্নাম থেকে
বের হতে চাইবে, তখনই
তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে
দেয়া হবে। বলা হবেঃ দহন শাস্তি
আস্বাদন কর।
[22:23]
নিশ্চয়
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ
তাদেরকে দাখিল
করবেন উদ্যান সমূহে, যার তলদেশ
দিয়ে নির্ঝরিণীসমূহ
প্রবাহিত হবে। তাদেরকে
তথায় স্বর্ণ-কংকন
ও মুক্তা দ্বারা
অলংকৃত করা হবে
এবং তথায় তাদের
পোশাক হবে রেশমী।
[22:24]
তারা
পথপ্রদর্শিত হয়েছিল সৎবাক্যের
দিকে এবং পরিচালিত
হয়েছিল প্রশংসিত
আল্লাহর পথপানে।
[22:25]
যারা
কুফর করে ও আল্লাহর
পথে বাধা সৃষ্টি
করে এবং সেই মসজিদে
হারাম থেকে বাধা
দেয়, যাকে আমি প্রস্তুত
করেছি স্থানীয়
ও বহিরাগত সকল
মানুষের জন্যে
সমভাবে এবং যে
মসজিদে হারামে
অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী
কাজ করার ইচছা
করে, আমি তাদেরকে
যন্ত্রানাদায়ক
শাস্তি আস্বাদন করাব।
[22:26]
যখন
আমি ইব্রাহীমকে বায়তুল্লাহর
স্থান ঠিক করে
দিয়েছিলাম যে, আমার
সাথে কাউকে শরীক
করো না এবং আমার গৃহকে পবিত্র
রাখ তাওয়াফকারীদের
জন্যে, নামাযে দন্ডায়মানদের
জন্যে এবং রকু সেজদাকারীদের
জন্যে।
[22:27]
এবং
মানুষের মধ্যে
হজ্বের জন্যে
ঘোষণা প্রচার কর। তারা
তোমার কাছে আসবে
পায়ে হেঁটে এবং
সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের
পিঠে সওয়ার হয়ে
দূর-দূরান্ত থেকে।
[22:28]
যাতে
তারা তাদের কল্যাণের স্থান পর্যন্ত
পৌছে এবং নির্দিষ্ট
দিনগুলোতে আল্লাহর
নাম স্মরণ করে
তাঁর দেয়া চতুস্পদ জন্তু
যবেহ করার সময়। অতঃপর
তোমরা তা থেকে
আহার কর এবং দুঃস্থ-অভাবগ্রস্থকে
আহার করাও।
[22:29]
এরপর
তারা যেন দৈহিক
ময়লা দূর করে দেয়, তাদের
মানত পূর্ণ করে
এবং এই সুসংরক্ষিত
গৃহের তাওয়াফ
করে।
[22:30]
এটা
শ্রবণযোগ্য। আর কেউ আল্লাহর সম্মানযোগ্য
বিধানাবলীর প্রতি
সম্মান প্রদর্শন
করলে পালনকর্তার
নিকট তা তার জন্যে
উত্তম। উল্লেখিত
ব্যতিক্রমগুলো
ছাড়া তোমাদের
জন্যে চতুস্পদ
জন্তু হালাল
করা হয়েছে। সুতরাং
তোমরা মূর্তিদের
অপবিত্রতা থেকে
বেঁচে থাক এবং
মিথ্যা কথন থেকে
দূরে সরে থাক;
[22:31]
আল্লাহর
দিকে একনিষ্ট হয়ে, তাঁর
সাথে শরীক না করে; এবং যে
কেউ আল্লাহর সাথে
শরীক করল; সে যেন
আকাশ থেকে ছিটকে পড়ল, অতঃপর
মৃতভোজী পাখী তাকে
ছোঁ মেরে নিয়ে
গেল অথবা বাতাস
তাকে উড়িয়ে
নিয়ে কোন দূরবর্তী
স্থানে নিক্ষেপ
করল।
[22:32]
এটা
শ্রবণযোগ্য কেউ
আল্লাহর নামযুক্ত
বস্তুসমুহের প্রতি
সম্মান প্রদর্শন
করলে তা তো তার
হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত।
[22:33]
চতুস্পদ
জন্তুসমূহের মধ্যে তোমাদের জন্যে
নির্দিষ্টকাল
পর্যন্ত উপকার
রয়েছে। অতঃপর
এগুলোকে পৌছাতে
হবে মুক্ত
গৃহ পর্যন্ত।
[22:34]
আমি
প্রত্যেক উম্মতের
জন্যে কোরবানী
নির্ধারণ করেছি, যাতে
তারা আল্লাহর দেয়া
চতুস্পদ জন্তু
যবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ
করে। অতএব তোমাদের
আল্লাহ তো একমাত্র
আল্লাহ সুতরাং
তাঁরই আজ্ঞাধীন
থাক এবং বিনয়ীগণকে
সুসংবাদ দাও;
[22:35]
যাদের
অন্তর আল্লাহর
নাম স্মরণ করা হলে ভীত হয়
এবং যারা তাদের
বিপদাপদে ধৈর্য্যধারণ
করে এবং যারা নামায
কায়েম করে ও
আমি যা দিয়েছি, তা থেকে
ব্যয় করে।
[22:36]
এবং
কা’বার জন্যে
উৎসর্গীকৃত উটকে আমি তোমাদের
জন্যে আল্লাহর
অন্যতম নিদর্শন
করেছি। এতে তোমাদের
জন্যে মঙ্গল রয়েছে। সুতরাং
সারিবদ্ধভাবে
বাঁধা অবস্থায়
তাদের যবেহ করার
সময় তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ কর। অতঃপর
যখন তারা কাত হয়ে
পড়ে যায় তখন
তা থেকে তোমরা
আহার কর এবং আহার
করাও যে কিছু যাচ্ঞা
করে না তাকে এবং
যে যাচ্ঞা করে
তাকে। এমনিভাবে
আমি এগুলোকে
তোমাদের বশীভূত
করে দিয়েছি, যাতে
তোমরা কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ কর।
[22:37]
এগুলোর
গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু
পৌঁছে তাঁর কাছে
তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে
তিনি এগুলোকে
তোমাদের বশ করে
দিয়েছেন, যাতে
তোমরা আল্লাহর
মহত্ত্ব ঘোষণা
কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের
পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং
সৎকর্মশীলদের
সুসংবাদ শুনিয়ে
দিন।
[22:38]
আল্লাহ
মুমিনদের থেকে শত্রুদেরকে হটিয়ে
দেবেন। আল্লাহ
কোন বিশ্বাসঘাতক
অকৃতজ্ঞকে পছন্দ
করেন না।
[22:39]
যুদ্ধে
অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যাদের
সাথে কাফেররা যুদ্ধ
করে; কারণ তাদের
প্রতি অত্যাচার
করা হয়েছে। আল্লাহ তাদেরকে
সাহায্য করতে অবশ্যই
সক্ষম।
[22:40]
যাদেরকে
তাদের ঘর-বাড়ী
থেকে অন্যায়ভাবে
বহিস্কার করা হয়েছে
শুধু এই অপরাধে
যে, তারা বলে আমাদের
পালনকর্তা আল্লাহ। আল্লাহ
যদি মানবজাতির
একদলকে অপর দল
দ্বারা প্রতিহত
না করতেন, তবে (খ্রীষ্টানদের)
নির্ঝন গির্জা, এবাদত
খানা, (ইহুদীদের)
উপাসনালয় এবং
মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে
আল্লাহর নাম অধিক
স্মরণ করা হয়। আল্লাহ
নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা
আল্লাহর সাহায্য
করে। নিশ্চয়ই
আল্লাহ পরাক্রমশালী
শক্তিধর।
[22:41]
তারা
এমন লোক যাদেরকে
আমি পৃথিবীতে
শক্তি-সামর্থ? দান করলে
তারা নামায কায়েম
করবে, যাকাত দেবে
এবং সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ
করবে। প্রত্যেক
কর্মের পরিণাম
আল্লাহর এখতিয়ারভূক্ত।
[22:42]
তারা
যদি আপনাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে তাদের
পূর্বে মিথ্যাবাদী
বলেছে কওমে নূহ, আদ, সামুদ,
[22:43]
ইব্রাহীম
ও লূতের সম্প্রদায়ও।
[22:44]
এবং
মাদইয়ানের অধিবাসীরা
এবং মিথ্যাবাদী
বলা হয়েছিল মূসাকেও। অতঃপর
আমি কাফেরদেরকে
সুযোগ দিয়েছিলাম
এরপর তাদেরকে
পাকড়াও করেছিলাম
অতএব কি ভীষণ ছিল
আমাকে অস্বীকৃতির
পরিণাম।
[22:45]
আমি
কত জনপদ ধ্বংস
করেছি এমতাবস্থায়
যে, তারা ছিল গোনাহগার। এই সব
জনপদ এখন ধ্বংসস্তুপে
পরিণত হয়েছে এবং কত কূপ পরিত্যক্ত
হয়েছে ও কত সুদৃঢ়
প্রাসাদ ধ্বংস
হয়েছে।
[22:46]
তারা
কি এই উদ্দেশ্যে
দেশ ভ্রমণ
করেনি, যাতে তারা
সমঝদার হৃদয় ও
শ্রবণ শক্তি সম্পন্ন
কর্ণের অধিকারী
হতে পারে? বস্তুতঃ
চক্ষু তো অন্ধ
হয় না, কিন্তু বক্ষ
স্থিত অন্তরই অন্ধ
হয়।
[22:47]
তারা
আপনাকে আযাব ত্বরান্বিত করতে বলে। অথচ আল্লাহ
কখনও তাঁর ওয়াদা
ভঙ্গ করেন না। আপনার
পালনকর্তার কাছে একদিন তোমাদের
গণনার এক হাজার
বছরের সমান।
[22:48]
এবং
আমি কত জনপদকে
অবকাশ দিয়েছি
এমতাবস্থায় যে, তারা
গোনাহগার ছিল। এরপর
তাদেরকে পাকড়াও
করেছি এবং আমার কাছেই প্রত্যাবর্তন
করতে হবে।
[22:49]
বলুনঃ
হে লোক সকল! আমি
তো তোমাদের
জন্যে স্পষ্ট ভাষায়
সতর্ককারী।
[22:50]
সুতরাং
যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের
জন্যে আছে পাপ
মার্জনা এবং সম্মানজনক
রুযী।
[22:51]
এবং
যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার জন্যে
চেষ্টা করে, তারাই
দোযখের অধিবাসী।
[22:52]
আমি
আপনার পূর্বে যে
সমস্ত রাসূল
ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা
যখনই কিছু কল্পনা
করেছে, তখনই শয়তান
তাদের কল্পনায়
কিছু মিশ্রণ করে
দিয়েছে। অতঃপর
আল্লাহ দূর করে
দেন শয়তান যা
মিশ্রণ করে। এরপর
আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে
সু-প্রতিষ্ঠিত
করেন এবং আল্লাহ
জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।
[22:53]
এ
কারণে যে, শয়তান
যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ
করে দেন, তাদের
জন্যে, যাদের অন্তরে
রোগ আছে এবং যারা পাষাণহৃদয়। গোনাহগাররা
দূরবর্তী বিরোধিতায়
লিপ্ত আছে।
[22:54]
এবং
এ কারণেও যে, যাদেরকে জ্ঞানদান করা
হয়েছে; তারা যেন জানে
যে এটা আপনার পালনকর্তার
পক্ষ থেকে সত্য; অতঃপর
তারা যেন এতে বিশ্বাস
স্তাপন করে এবং
তাদের অন্তর যেন
এর প্রতি বিজয়ী হয়। আল্লাহই
বিশ্বাস স্থাপনকারীকে
সরল পথ প্রদর্শন
করেন।
[22:55]
কাফেররা
সর্বদাই সন্দেহ
পোষন করবে যে
পর্যন্ত না তাদের
কাছে আকস্মিকভাবে
কেয়ামত এসে পড়ে
অথবা এসে পড়ে তাদের কাছে এমন
দিবসের শাস্তি
যা থেকে রক্ষার
উপায় নেই।
[22:56]
রাজত্ব
সেদিন আল্লাহরই; তিনিই তাদের বিচার করবেন। অতএব
যারা বিশ্বাস স্থাপন
করে এবং সৎকর্ম
সম্পাদন করে তারা নেয়ামত পূর্ণ
কাননে থাকবে।
[22:57]
এবং
যারা কুফরি করে
এবং আমার আয়াত
সমূহকে মিথ্যা
বলে তাদের জন্যে
লাঞ্ছনাকর শাস্তি
রয়েছে।
[22:58]
যারা
আল্লাহর পথে গৃহ
ত্যাগ করেছে, এরপর
নিহত হয়েছে অথবা
মরে গেছে; আল্লাহ
তাদেরকে অবশ্যই
উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন এবং
আল্লাহ সর্বোৎকৃষ্ট রিযিক
দাতা।
[22:59]
তাদেরকে
অবশ্যই এমন এক
স্থানে পৌছাবেন, যাকে
তারা পছন্দ করবে
এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, সহনশীল।
[22:60]
এ
তো শুনলে, যে ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে
নিপীড়ন পরিমাণে
প্রতিশোধ গ্রহণ
করে এবং পুনরায়
সে নিপীড়িত হয়, আল্লাহ
অবশ্যই তাকে সাহায্য
করবেন। নিশ্চয়
আল্লাহ মার্জনাকারী
ক্ষমাশীল।
[22:61]
এটা
এ জন্যে যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিনের
মধ্যে এবং দিনকে
রাত্রির মধ্য দাখিল
করে দেন এবং আল্লাহ
সবকিছু শোনেন, দেখেন।
[22:62]
এটা
এ কারণেও যে, আল্লাহই সত্য; আর তাঁর পরিবর্তে
তারা যাকে ডাকে, তা অসত্য
এবং আল্লাহই সবার
উচ্চে, মহান।
[22:63]
তুমি
কি দেখ না যে, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি
বর্ষণ করেন, অতঃপর
ভূপৃষ্ট সবুজ-শ্যামল
হয়ে উঠে। নিশ্চয়
আল্লাহ সুক্ষদর্শী, সর্ববিষয়ে
খবরদার।
[22:64]
নভোমন্ডল
ও ভুপৃষ্ঠে যা
কিছু আছে, সব তাঁরই
এবং আল্লাহই অভাবমুক্ত
প্রশংসার অধিকারী।
[22:65]
তুমি
কি দেখ না যে, ভূপৃষ্টে যা আছে এবং সমুদ্রে
চলমান নৌকা তৎসমুদয়কে আল্লাহ
নিজ আদেশে তোমাদের
অধীন করে দিয়েছেন
এবং তিনি আকাশ
স্থির রাখেন, যাতে
তাঁর আদেশ ব্যতীত
ভূপৃষ্টে পতিত
না হয়। নিশ্চয়
আল্লাহ মানুষের
প্রতি করুণাশীল, দয়াবান।
[22:66]
তিনিই
তোমাদেরকে জীবিত
করেছেন, অতঃপর তিনিই
তোমাদেরকে মৃত্যুদান
করবেন ও পুনরায়
জীবিত করবেন। নিশ্চয়
মানুষ বড় অকৃতজ্ঞ।
[22:67]
আমি
প্রত্যেক উম্মতের
জন্যে এবাদতের
একটি নিয়ম-কানুন
নির্ধারণ করে দিয়েছি, যা তারা
পালন করে। অতএব
তারা যেন এ
ব্যাপারে আপনার
সাথে বিতর্ক না
করে। আপনি তাদেরকে
পালনকর্তার দিকে
আহবান করুন। নিশ্চয়
আপনি সরল পথেই
আছেন।
[22:68]
তারা
যদি আপনার সাথে
বিতর্ক করে, তবে বলে
দিন, তোমরা যা কর, সে সর্ম্পকে
আল্লাহ অধিক জ্ঞাত।
[22:69]
তোমরা
যে বিষয়ে মতবিরোধ
করছ, আল্লাহ কিয়ামতের
দিন সেই বিষয়ে
তোমাদের মধ্যে
ফায়সালা করবেন।
[22:70]
তুমি
কি জান না যে, আল্লাহ জানেন যা কিছু
আকাশে ও ভুমন্ডলে
আছে এসব কিতাবে
লিখিত আছে। এটা আল্লাহর
কাছে সহজ।
[22:71]
তারা
আল্লাহর পরিবর্তে
এমন কিছুর
পূজা করে, যার কোন
সনদ নাযিল করা
হয়নি এবং সে সম্পর্কে
তাদের কোন জ্ঞান নেই। বস্তুতঃ
জালেমদের কোন সাহায্যকারী
নেই।
[22:72]
যখন
তাদের কাছে আমার
সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি
করা হয়, তখন তুমি
কাফেরদের চোখে
মুখে অসন্তোষের
লক্ষণ প্রত্যক্ষ
করতে পারবে। যারা
তাদের কাছে আমার
আয়াত সমূহ পাঠ
করে, তারা তাদের প্রতি মার মুখো
হয়ে উঠে। বলুন, আমি কি
তোমাদেরকে তদপেক্ষা
মন্দ কিছুর সংবাদ দেব? তা আগুন; আল্লাহ
কাফেরদেরকে এর
ওয়াদা দিয়েছেন। এটা কতই
না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।
[22:73]
হে
লোক সকল! একটি উপমা
বর্ণনা করা হলো, অতএব
তোমরা তা মনোযোগ
দিয়ে শোন; তোমরা
আল্লাহর পরিবর্তে
যাদের পূজা কর, তারা কখনও
একটি মাছি সৃষ্টি
করতে পারবে না, যদিও
তারা সকলে একত্রিত
হয়। আর মাছি যদি তাদের
কাছ থেকে কোন কিছু
ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা
তার কাছ থেকে তা
উদ্ধার করতে
পারবে না, প্রার্থনাকারী
ও যার কাছে প্রার্থনা
করা হয়, উভয়েই
শক্তিহীন।
[22:74]
তারা
আল্লাহর যথাযোগ্য
মর্যাদা বোঝেনি। নিশ্চয়
আল্লাহ শক্তিধর, মহাপরাক্রমশীল।
[22:75]
আল্লাহ
ফেরেশতা ও মানুষের
মধ্য থেকে রাসূল
মনোনীত করেন। আল্লাহ
সর্বশ্রোতা, সর্ব
দ্রষ্টা!
[22:76]
তিনি
জানেন যা তাদের
সামনে আছে এবং যা পশ্চাতে
আছে এবং সবকিছু
আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তিত
হবে।
[22:77]
হে
মুমিনগণ! তোমরা
রুকু কর, সেজদা
কর, তোমাদের পালনকর্তার
এবাদত কর এবং সৎকাজ সম্পাদন
কর, যাতে তোমরা
সফলকাম হতে পার। [ Sajdah ]
[22:78]
তোমরা
আল্লাহর জন্যে
শ্রম স্বীকার
কর যেভাবে শ্রম
স্বীকার করা উচিত। তিনি
তোমাদেরকে পছন্দ
করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে
তোমাদের উপর কোন
সংকীর্ণতা রাখেননি। তোমরা
তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে
কায়েম থাক। তিনিই
তোমাদের নাম মুসলমান
রেখেছেন পূর্বেও
এবং এই কোরআনেও, যাতে
রসূল তোমাদের জন্যে
সাক্ষ্যদাতা এবং
তোমরা সাক্ষ্যদাতা
হও মানবমন্ডলির
জন্যে। সুতরাং
তোমরা নামায কায়েম
কর, যাকাত দাও
এবং আল্লাহকে শক্তভাবে ধারণ
কর। তিনিই তোমাদের
মালিক। অতএব
তিনি কত উত্তম
মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।