Part 19
[25:21]
যারা
আমার সাক্ষাৎ আশা করে না, তারা
বলে, আমাদের কাছে
ফেরেশতা অবতীর্ণ
করা হল না কেন? অথবা
আমরা আমাদের পালনকর্তাকে
দেখি না কেন? তারা
নিজেদের অন্তরে
অহংকার পোষণ করে
এবং গুরুতর অবাধ্যতায় মেতে
উঠেছে।
[25:22]
যেদিন
তারা ফেরেশতাদেরকে দেখবে, সেদিন অপরাধীদের
জন্যে কোন সুসংবাদ
থাকবে না এবং তারা
বলবে, কোন বাধা যদি তা আটকে রাখত।
[25:23]
আমি
তাদের কৃতকর্মের
প্রতি মনোনিবেশ
করব, অতঃপর সেগুলোকে
বিক্ষিপ্ত ধুলিকণারূপে
করে দেব।
[25:24]
সেদিন
জান্নাতীদের বাসস্থান হবে উত্তম এবং
বিশ্রামস্থল হবে
মনোরম।
[25:25]
সেদিন
আকাশ মেঘমালাসহ
বিদীর্ণ হবে এবং
সেদিন ফেরেশতাদের
নামিয়ে দেয়া
হবে,
[25:26]
সেদিন
সত্যিকার রাজত্ব
হবে দয়াময়
আল্লাহর এবং কাফেরদের
পক্ষে দিনটি হবে
কঠিন।
[25:27]
জালেম
সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে
বলবে, হায় আফসোস!
আমি যদি রসূলের
সাথে পথ অবলম্বন
করতাম।
[25:28]
হায়
আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে
গ্রহণ না করতাম।
[25:29]
আমার
কাছে উপদেশ আসার
পর সে আমাকে
তা থেকে বিভ্রান্ত
করেছিল। শয়তান
মানুষকে বিপদকালে
ধোঁকা দেয়।
[25:30]
রসূল
বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার
সম্প্রদায় এই
কোরআনকে প্রলাপ
সাব্যস্ত করেছে।
[25:31]
এমনিভাবে
প্রত্যেক নবীর
জন্যে আমি অপরাধীদের
মধ্য থেকে শত্রু
করেছি। আপনার
জন্যে আপনার পালনকর্তা
পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে
যথেষ্ট।
[25:32]
সত্য
প্রত্যাখানকারীরা
বলে, তাঁর প্রতি
সমগ্র কোরআন একদফায়
অবতীর্ণ হল না
কেন? আমি এমনিভাবে
অবতীর্ণ করেছি এবং ক্রমে ক্রমে
আবৃত্তি করেছি
আপনার অন্তকরণকে
মজবুত করার জন্যে।
[25:33]
তারা
আপনার কাছে কোন
সমস্যা উপস্থাপিত
করলেই আমি আপনাকে
তার সঠিক জওয়াব
ও সুন্দর ব্যাখ্যা
দান করি।
[25:34]
যাদেরকে
মুখ থুবড়ে পড়ে
থাকা অবস্থায়
জাহান্নামের দিকে
একত্রিত করা হবে, তাদেরই
স্থান হবে নিকৃষ্ট
এবং তারাই পথভ্রষ্ট।
[25:35]
আমি
তো মূসাকে কিতাব
দিয়েছি এবং তাঁর
সাথে তাঁর ভ্রাতা
হারুনকে সাহায্যকারী
করেছি।
[25:36]
অতঃপর
আমি বলেছি, তোমরা
সেই সম্প্রদায়ের
কাছে যাও, যারা
আমার আয়াতসমূহকে
মিথ্যা অভিহিত
করেছে। অতঃপর
আমি তাদেরকে
সমূলে ধ্বংস করে
দিয়েছি।
[25:37]
নূহের
সম্প্রদায় যখন
রসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ
করল, তখন আমি তাদেরকে
নিমজ্জত করলাম
এবং তাদেরকে মানবমন্ডলীর জন্যে নিদর্শন
করে দিলাম। জালেমদের
জন্যে আমি যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি প্রস্তুত
করে রেখেছি।
[25:38]
আমি
ধ্বংস করেছি আদ, সামুদ, কপবাসী
এবং তাদের মধ্যবর্তী
অনেক সম্প্রদায়কে।
[25:39]
আমি
প্রত্যেকের জন্যেই দৃষ্টান্ত বর্ণনা
করেছি এবং প্রত্যেককেই
সম্পুর্ণরূপে
ধ্বংস করেছি।
[25:40]
তারা
তো সেই জনপদের
উপর দিয়েই যাতায়াত করে, যার ওপর
বর্ষিত হয়েছে
মন্দ বৃষ্টি। তবে কি
তারা তা প্রত্যক্ষ
করে না? বরং তারা
পুনরুজ্জীবনের
আশঙ্কা করে না।
[25:41]
তারা
যখন আপনাকে দেখে, তখন আপনাকে কেবল বিদ্রুপের
পাত্ররূপে গ্রহণ
করে, বলে, এ-ই কি
সে যাকে আল্লাহ
‘রসূল’ করে প্রেরণ
করেছেন?
[25:42]
সে
তো আমাদেরকে আমাদের উপাস্যগণের কাছ
থেকে সরিয়েই দিত, যদি আমরা
তাদেরকে আঁকড়ে
ধরে না থাকতাম। তারা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ
করবে, তখন জানতে
পারবে কে অধিক
পথভ্রষ্ট।
[25:43]
আপনি
কি তাকে দেখেন
না, যে তারা
প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে
গ্রহণ করে? তবুও
কি আপনি তার যিম্মাদার
হবেন?
[25:44]
আপনি
কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে
অথবা বোঝে ? তারা
তো চতুস্পদ জন্তুর
মত; বরং আরও পথভ্রান্ত
[25:45]
তুমি
কি তোমার পালনকর্তাকে
দেখ না, তিনি
কিভাবে ছায়াকে
বিলম্বিত করেন? তিনি
ইচ্ছা করলে একে
স্থির রাখতে পারতেন। এরপর
আমি সূর্যকে করেছি
এর নির্দেশক।
[25:46]
অতঃপর
আমি একে নিজের
দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে
আনি।
[25:47]
তিনিই
তো তোমাদের জন্যে রাত্রিকে করেছেন
আবরণ, নিদ্রাকে
বিশ্রাম এবং দিনকে
করেছেন বাইরে গমনের
জন্যে।
[25:48]
তিনিই
স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে বাতাসকে
সুসংবাদবাহীরূপে
প্রেরণ করেন। এবং আমি
আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে
পানি বর্ষণ করি।
[25:49]
তদ্দ্বারা
মৃত ভূভাগকে সঞ্জীবিত করার
জন্যে এবং আমার
সৃষ্ট জীবজন্তু
ও অনেক মানুষের
তৃষ্ণা নিবারণের জন্যে।
[25:50]
এবং
আমি তা তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে
বিতরণ করি, যাতে
তারা স্মরণ করে। কিন্তু
অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে
না।
[25:51]
আমি
ইচ্ছা করলে প্রত্যেক
জনপদে একজন
ভয় প্রদর্শনকারী
প্রেরণ করতে পারতাম।
[25:52]
অতএব
আপনি কাফেরদের
আনুগত্য করবেন
না এবং তাদের সাথে
এর সাহায্যে কঠোর
সংগ্রাম করুন।
[25:53]
তিনিই
সমান্তরালে দুই
সমুদ্র প্রবাহিত
করেছেন, এটি মিষ্ট, তৃষ্ণা
নিবারক ও এটি লোনা, বিস্বাদ; উভয়ের
মাঝখানে রেখেছেন
একটি অন্তরায়, একটি
দুর্ভেদ্য আড়াল।
[25:54]
তিনিই
পানি থেকে সৃষ্টি
করেছেন মানবকে, অতঃপর
তাকে রক্তগত, বংশ ও
বৈবাহিক সম্পর্কশীল
করেছেন। তোমার
পালনকর্তা সবকিছু করতে সক্ষম।
[25:55]
তারা
এবাদত করে আল্লাহর পরিবর্তে এমন
কিছুর, যা তাদের উপকার
করতে পারে না এবং
ক্ষতিও করতে পারে
না। কাফের
তো তার পালনকর্তার
প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শনকারী।
[25:56]
আমি
আপনাকে সুসংবাদ
ও সতর্ককারীরূপেই
প্রেরণ করেছি।
[25:57]
বলুন, আমি তোমাদের
কাছে এর কোন বিনিময় চাই না, কিন্তু
যে ইচ্ছা করে, সে তার
পালনকর্তার পথ
অবলম্বন করুক।
[25:58]
আপনি
সেই চিরঞ্জীবের
উপর ভরসা করুন, যার মৃত্যু
নেই এবং তাঁর প্রশংসাসহ
পবিত্রতা ঘোষণা
করুন। তিনি বান্দার গোনাহ সম্পর্কে
যথেষ্ট খবরদার।
[25:59]
তিনি
নভোমন্ডল, ভূমন্ডল
ও এতদুভয়ের
অন্তর্বর্তী সবকিছু
ছয়দিনে সৃস্টি
করেছেন, অতঃপর আরশে
সমাসীন হয়েছেন। তিনি
পরম দয়াময়। তাঁর
সম্পর্কে যিনি
অবগত, তাকে জিজ্ঞেস
কর।
[25:60]
তাদেরকে
যখন বলা হয়, দয়াময়কে
সেজদা কর, তখন তারা
বলে, দয়াময় আবার
কে? তুমি কাউকে
সেজদা করার আদেশ করলেই কি আমরা
সেজদা করব? এতে তাদের
পলায়নপরতাই বৃদ্ধি
পায়। [ Sajdah ]
[25:61]
কল্যাণময়
তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র
সৃষ্টি করেছেন
এবং তাতে রেখেছেন
সূর্য ও দীপ্তিময়
চন্দ্র।
[25:62]
যারা
অনুসন্ধানপ্রিয়
অথবা যারা কৃতজ্ঞতাপ্রিয়
তাদের জন্যে তিনি
রাত্রি ও দিবস
সৃষ্টি করেছেন পরিবর্তনশীলরূপে।
[25:63]
রহমান-এর
বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে
চলাফেরা করে এবং
তাদের সাথে যখন
মুর্খরা কথা বলতে
থাকে, তখন তারা
বলে, সালাম।
[25:64]
এবং
যারা রাত্রি যাপন
করে পালনকর্তার
উদ্দেশ্যে সেজদাবনত
হয়ে ও দন্ডায়মান
হয়ে;
[25:65]
এবং
যারা বলে, হে আমার পালনকর্তা, আমাদের
কাছথেকে জাহান্নামের
শাস্তি হটিয়ে
দাও। নিশ্চয়
এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ;
[25:66]
বসবাস
ও অবস্থানস্থল
হিসেবে তা কত নিকৃষ্ট জায়গা।
[25:67]
এবং
তারা যখন ব্যয়
করে, তখন অযথা
ব্যয় করে না কৃপণতাও
করে না এবং তাদের
পন্থা হয় এতদুভয়ের
মধ্যবর্তী।
[25:68]
এবং
যারা আল্লাহর সাথে
অন্য উপাস্যের
এবাদত করে না, আল্লাহ
যার হত্যা অবৈধ
করেছেন, সঙ্গত কারণ
ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং
ব্যভিচার করে না। যারা
একাজ করে, তারা
শাস্তির সম্মুখীন
হবে।
[25:69]
কেয়ামতের
দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং
তথায় লাঞ্ছিত
অবস্থায় চিরকাল
বসবাস করবে।
[25:70]
কিন্তু
যারা তওবা করে
বিশ্বাস স্থাপন
করে এবং সৎকর্ম
করে, আল্লাহ তাদের
গোনাহকে পুন্য
দ্বারা পরিবর্তত
করে এবং দেবেন। আল্লাহ
ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[25:71]
যে
তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান
আল্লাহর দিকে ফিরে
আসে।
[25:72]
এবং
যারা মিথ্যা কাজে
যোগদান করে না
এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের
সম্মুখীন হয়, তখন মান
রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।
[25:73]
এবং
যাদেরকে তাদের
পালনকর্তার আয়াতসমূহ বোঝানো
হলে তাতে অন্ধ
ও বধির সদৃশ আচরণ
করে না।
[25:74]
এবং
যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের
স্ত্রীদের পক্ষ
থেকে এবং আমাদের
সন্তানের পক্ষ
থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা
দান কর এবং আমাদেরকে
মুত্তাকীদের জন্যে
আদর্শস্বরূপ কর।
[25:75]
তাদেরকে
তাদের সবরের প্রতিদানে জান্নাতে কক্ষ
দেয়া হবে এবং
তাদেরকে তথায়
দোয়া ও সালাম
সহকারে অভ্যর্থনা
করা হবে।
[25:76]
তথায়
তারা চিরকাল বসবাস
করবে। অবস্থানস্থল
ও বাসস্থান হিসেবে
তা কত উত্তম।
[25:77]
বলুন, আমার
পালনকর্তা পরওয়া করেন না যদি তোমরা
তাঁকে না ডাক। তোমরা
মিথ্যা বলেছ। অতএব
সত্বর নেমে আসবে অনিবার্য শাস্তি।
26 Ash-Shu‘arâ’
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[26:1]
ত্বা, সীন, মীম।
[26:2]
এগুলো
সুস্পষ্ট কিতাবের
আয়াত।
[26:3]
তারা
বিশ্বাস করে না
বলে আপনি হয়তো
মর্মব্যথায় আত্নঘাতী
হবেন।
[26:4]
আমি
যদি ইচ্ছা করি, তবে আকাশ থেকে তাদের কাছে
কোন নিদর্শন নাযিল
করতে পারি। অতঃপর
তারা এর সামনে
নত হয়ে যাবে।
[26:5]
যখনই
তাদের কাছে রহমান
এর কোন নতুন
উপদেশ আসে, তখনই
তারা তা থেকে মুখ
ফিরিয়ে নেয়।
[26:6]
অতএব
তারা তো মিথ্যারোপ করেছেই; সুতরাং
যে বিষয় নিয়ে
তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ
করত, তার যথার্থ
স্বরূপ শীঘ্রই
তাদের কাছে পৌছবে।
[26:7]
তারা
কি ভুপৃষ্ঠের প্রতি দৃষ্টিপাত করে
না? আমি তাতে সর্বপ্রকার
বিশেষ-বস্তু কত
উদগত করেছি।
[26:8]
নিশ্চয়
এতে নিদর্শন আছে, কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাসী নয়।
[26:9]
আপনার
পালনকর্তা তো পরাক্রমশালী
পরম দয়ালু।
[26:10]
যখন
আপনার পালনকর্তা
মূসাকে ডেকে
বললেনঃ তুমি পাপিষ্ঠ
সম্প্রদায়ের
নিকট যাও;
[26:11]
ফেরাউনের
সম্প্রদায়ের
নিকট; তারা কি ভয়
করে না?
[26:12]
সে
বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমার
আশংকা হচ্ছে যে, তারা
আমাকে মিথ্যাবাদী
বলে দেবে।
[26:13]
এবং
আমার মন হতবল হয়ে
পড়ে এবং আমার
জিহবা অচল হয়ে
যায়। সুতরাং
হারুনের কাছে বার্তা
প্রেরণ করুন।
[26:14]
আমার
বিরুদ্ধে তাদের
অভিযোগ আছে। অতএব
আমি আশংকা করি
যে, তারা আমাকে
হত্যা করবে।
[26:15]
আল্লাহ
বলেন, কখনই নয় তোমরা উভয়ে যাও আমার
নিদর্শনাবলী নিয়ে। আমি তোমাদের
সাথে থেকে শোনব।
[26:16]
অতএব
তোমরা ফেরআউনের
কাছে যাও এবং বল, আমরা
বিশ্বজগতের পালনকর্তার
রসূল।
[26:17]
যাতে
তুমি বনী-ইসরাঈলকে
আমাদের সাথে
যেতে দাও।
[26:18]
ফেরাউন
বলল, আমরা কি তোমাকে শিশু অবস্থায়
আমাদের মধ্যে লালন-পালন
করিনি? এবং তুমি আমাদের
মধ্যে জীবনের বহু বছর কাটিয়েছ।
[26:19]
তুমি
সেই-তোমরা অপরাধ
যা করবার করেছ। তুমি
হলে কৃতঘ্ন।
[26:20]
মূসা
বলল, আমি সে অপরাধ
তখন করেছি, যখন আমি
ভ্রান্ত ছিলাম।
[26:21]
অতঃপর
আমি ভীত হয়ে তোমাদের কাছ থেকে পলায়ন
করলাম। এরপর
আমার পালনকর্তা
আমাকে প্রজ্ঞা
দান করেছেন এবং
আমাকে পয়গম্বর
করেছেন।
[26:22]
আমার
প্রতি তোমার যে
অনুগ্রহের কথা বলছ, তা এই
যে, তুমি বনী-ইসলাঈলকে
গোলাম বানিয়ে
রেখেছ।
[26:23]
ফেরাউন
বলল, বিশ্বজগতের পালনকর্তা আবার
কি?
[26:24]
মূসা
বলল, তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল
ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী
সবকিছুর পালনকর্তা
যদি তোমরা বিশ্বাসী
হও।
[26:25]
ফেরাউন
তার পরিষদবর্গকে
বলল, তোমরা কি শুনছ
না?
[26:26]
মূসা
বলল, তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং
তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও
পালনকর্তা।
[26:27]
ফেরাউন
বলল, তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের
রসূলটি নিশ্চয়ই
বদ্ধ পাগল।
[26:28]
মূসা
বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী
সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা
বোঝ।
[26:29]
ফেরাউন
বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে
উপাস্যরূপে গ্রহণ
কর তবে আমি অবশ্যই
তোমাকে কারাগারে
নিক্ষেপ করব।
[26:30]
মূসা
বলল, আমি তোমার
কাছে কোন স্পষ্ট
বিষয় নিয়ে আগমন
করলেও কি?
[26:31]
ফেরাউন
বলল, তুমি সত্যবাদী
হলে তা উপস্থিত
কর।
[26:32]
অতঃপর
তিনি লাঠি নিক্ষেপ
করলে মুহূর্তের
মধ্যে তা সুস্পষ্ট
অজগর হয়ে গেল।
[26:33]
আর
তিনি তার হাত বের
করলেন, তৎক্ষণাৎ
তা দর্শকদের কাছে
সুশুভ্র প্রতিভাত
হলো।
[26:34]
ফেরাউন
তার পরিষদবর্গকে
বলল, নিশ্চয় এ
একজন সুদক্ষ জাদুকর।
[26:35]
সে
তার জাদু বলে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে
বহিস্কার করতে
চায়। অতএব তোমাদের
মত কি?
[26:36]
তারা
বলল, তাকে ও তার
ভাইকে কিছু
অবকাশ দিন এবং
শহরে শহরে ঘোষক
প্রেরণ করুন।
[26:37]
তারা
যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ
জাদুকর কে উপস্থিত
করে।
[26:38]
অতঃপর
এক নির্দিষ্ট দিনে জাদুকরদেরকে
একত্রিত করা হল।
[26:39]
এবং
জনগণের মধ্যে ঘোষণা
করা হল, তোমরাও
সমবেত হও।
[26:40]
যাতে
আমরা জাদুকরদের
অনুসরণ করতে
পারি-যদি তারাই
বিজয়ী হয়।
[26:41]
যখন
যাদুকররা আগমণ
করল, তখন ফেরআউনকে
বলল, যদি আমরা বিজয়ী
হই, তবে আমরা পুরস্কার
পাব তো?
[26:42]
ফেরাউন
বলল, হঁ্যা এবং
তখন তোমরা
আমার নৈকট্যশীলদের
অন্তর্ভুক্ত হবে।
[26:43]
মূসা
(আঃ) তাদেরকে বললেন, নিক্ষেপ
কর তোমরা যা নিক্ষেপ
করবে।
[26:44]
অতঃপর
তারা তাদের রশি
ও লাঠি নিক্ষেপ
করল এবং বলল, ফেরাউনের
ইযযতের কসম, আমরাই
বিজয়ী হব।
[26:45]
অতঃপর
মূসা তাঁর লাঠি
নিক্ষেপ করল, হঠাৎ তা তাদের অলীক
কীর্তিগুলোকে
গ্রাস করতে লাগল।
[26:46]
তখন
জাদুকররা সেজদায়
নত হয়ে গেল।
[26:47]
তারা
বলল, আমরা রাব্বুল আলামীনের প্রতি
বিশ্বাস স্থাপন
করলাম।
[26:48]
যিনি
মূসা ও হারুনের
রব।
[26:49]
ফেরাউন
বলল, আমার অনুমতি
দানের পূর্বেই
তোমরা কি তাকে
মেনে নিলে? নিশ্চয়
সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদেরকে
জাদু শিক্ষা
দিয়েছে। শীঘ্রই
তোমরা পরিণাম জানতে
পারবে। আমি অবশ্যই
তোমাদের হাত ও
পা বিপরীত
দিক থেকে কর্তন
করব। এবং তোমাদের
সবাইকে শূলে চড়াব।
[26:50]
তারা
বলল, কোন ক্ষতি
নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার
কাছে প্রত্যাবর্তন
করব।
[26:51]
আমরা
আশা করি, আমাদের পালনকর্তা আমাদের
ক্রটি-বিচ্যুতি
মার্জনা করবেন। কারণ, আমরা
বিশ্বাস স্থাপনকারীদের
মধ্যে অগ্রণী।
[26:52]
আমি
মূসাকে আদেশ করলাম
যে, আমার বান্দাদেরকে
নিয়ে রাত্রিযোগে
বের হয়ে যাও, নিশ্চয়
তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।
[26:53]
অতঃপর
ফেরাউন শহরে শহরে সংগ্রাহকদেরকে
প্রেরণ করল,
[26:54]
নিশ্চয়
এরা (বনী-ইসরাঈলরা) ক্ষুদ্র একটি
দল।
[26:55]
এবং
তারা আমাদের ক্রোধের উদ্রেক করেছে।
[26:56]
এবং
আমরা সবাই সদা
শংকিত।
[26:57]
অতঃপর
আমি ফেরআউনের দলকে
তাদের বাগ-বাগিচা
ও ঝর্ণাসমূহ থেকে
বহিষ্কার করলাম।
[26:58]
এবং
ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।
[26:59]
এরূপই
হয়েছিল এবং বনী-ইসলাঈলকে
করে দিলাম এসবের
মালিক।
[26:60]
অতঃপর
সুর্যোদয়ের সময়
তারা তাদের
পশ্চাদ্ধাবন করল।
[26:61]
যখন
উভয় দল পরস্পরকে
দেখল, তখন মূসার
সঙ্গীরা বলল, আমরা
যে ধরা পড়ে গেলাম।
[26:62]
মূসা
বলল, কখনই নয়, আমার
সাথে আছেন আমার
পালনকর্তা। তিনি
আমাকে পথ বলে দেবেন।
[26:63]
অতঃপর
আমি মূসাকে আদেশ
করলাম, তোমার লাঠি
দ্বারা সমূদ্রকে
আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ
হয়ে গেল এবং প্রত্যেক
ভাগ বিশাল
পর্বতসদৃশ হয়ে
গেল।
[26:64]
আমি
সেথায় অপর দলকে
পৌঁছিয়ে দিলাম।
[26:65]
এবং
মূসা ও তাঁর সংগীদের সবাইকে বাঁচিয়ে
দিলাম।
[26:66]
অতঃপর
অপর দলটিকে নিমজ্জত কললাম।
[26:67]
নিশ্চয়
এতে একটি নিদর্শন
আছে এবং তাদের
অধিকাংশই বিশ্বাসী
ছিল না।
[26:68]
আপনার
পালনকর্তা অবশ্যই পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:69]
আর
তাদেরকে ইব্রাহীমের বৃত্তান্ত শুনিয়ে
দিন।
[26:70]
যখন
তাঁর পিতাকে এবং
তাঁর সম্প্রদায়কে
বললেন, তোমরা কিসের
এবাদত কর?
[26:71]
তারা
বলল, আমরা প্রতিমার
পূজা করি এবং
সারাদিন এদেরকেই
নিষ্ঠার সাথে আঁকড়ে
থাকি।
[26:72]
ইব্রাহীম
(আঃ) বললেন, তোমরা যখন আহবান কর, তখন তারা
শোনে কি?
[26:73]
অথবা
তারা কি তোমাদের
উপকার কিংবা
ক্ষতি করতে পারে?
[26:74]
তারা
বললঃ না, তবে আমরা
আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে
পেয়েছি, তারা
এরূপই করত।
[26:75]
ইব্রাহীম
বললেন, তোমরা কি তাদের সম্পর্কে
ভেবে দেখেছ, যাদের
পূজা করে আসছ।
[26:76]
তোমরা
এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষেরা
?
[26:77]
বিশ্বপালনকর্তা
ব্যতীত তারা সবাই আমার শত্রু।
[26:78]
যিনি
আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর
তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন
করেন,
[26:79]
যিনি
আমাকে আহার এবং
পানীয় দান করেন,
[26:80]
যখন
আমি রোগাক্রান্ত
হই, তখন তিনিই
আরোগ্য দান করেন।
[26:81]
যিনি
আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর
পুনর্জীবন দান
করবেন।
[26:82]
আমি
আশা করি তিনিই
বিচারের দিনে
আমার ক্রটি-বিচ্যুতি
মাফ করবেন।
[26:83]
হে আমার পালনকর্তা, আমাকে
প্রজ্ঞা দান কর
এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের
অন্তর্ভুক্ত কর
[26:84]
এবং
আমাকে পরবর্তীদের
মধ্যে সত্যভাষী
কর।
[26:85]
এবং
আমাকে নেয়ামত
উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত
কর।
[26:86]
এবং
আমার পিতাকে ক্ষমা
কর। সে তো পথভ্রষ্টদের
অন্যতম।
[26:87]
এবং
পূনরুত্থান দিবসে
আমাকে লাঞ্ছিত
করো না,
[26:88]
যে
দিবসে ধন-সম্পদ
ও সন্তান সন্ততি
কোন উপকারে আসবে
না;
[26:89]
কিন্তু
যে সুস্থ অন্তর
নিয়ে আল্লাহর
কাছে আসবে।
[26:90]
জান্নাত
আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা
হবে।
[26:91]
এবং
বিপথগামীদের সামনে উম্মোচিত করা
হবে জাহান্নাম।
[26:92]
তাদেরকে
বলা হবেঃ তারা
কোথায়, তোমরা যাদের
পূজা করতে।
[26:93]
আল্লাহর
পরিবর্তে? তারা
কি তোমাদের
সাহায্য করতে পারে, অথবা
তারা প্রতিশোধ
নিতে পারে?
[26:94]
অতঃপর
তাদেরকে এবং পথভ্রষ্টদেরকে
আধোমুখি করে নিক্ষেপ
করা হবে জাহান্নামে।
[26:95]
এবং
ইবলীস বাহিনীর
সকলকে।
[26:96]
তারা
তথায় কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়ে বলবেঃ
[26:97]
আল্লাহর
কসম, আমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে
লিপ্ত ছিলাম।
[26:98]
যখন
আমরা তোমাদেরকে বিশ্ব-পালনকর্তার
সমতুল্য গন্য করতাম।
[26:99]
আমাদেরকে
দুষ্টকর্মীরাই
গোমরাহ করেছিল।
[26:100]
অতএব
আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।
[26:101]
এবং
কোন সহৃদয় বন্ধু
ও নেই।
[26:102]
হায়, যদি কোনরুপে
আমরা পৃথিবীতে
প্রত্যাবর্তনের
সুযোগ পেতাম, তবে আমরা
বিশ্বাস স্থাপনকারী
হয়ে যেতাম।
[26:103]
নিশ্চয়, এতে নিদর্শন
আছে এবং তাদের
অধিকাংশই বিশ্বাসী
নয়।
[26:104]
আপনার
পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:105]
নূহের
সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যারোপ করেছে।
[26:106]
যখন
তাদের ভ্রাতা নূহ
তাদেরকে বললেন, তোমাদের
কি ভয় নেই?
[26:107]
আমি
তোমাদের জন্য বিশ্বস্ত বার্তাবাহক।
[26:108]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:109]
আমি
তোমাদের কাছে এর
জন্য কোন প্রতিদান
চাই না, আমার প্রতিদান
তো বিশ্ব-পালনকর্তাই
দেবেন।
[26:110]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:111]
তারা
বলল, আমরা কি তোমাকে
মেনে নেব যখন
তোমার অনুসরণ করছে
ইতরজনেরা?
[26:112]
নূহ
বললেন, তারা কি কাজ
করছে, তা জানা আমার
কি দরকার?
[26:113]
তাদের
হিসাব নেয়া আমার পালনকর্তারই
কাজ; যদি তোমরা
বুঝতে!
[26:114]
আমি
মুমিনগণকে তাড়িয়ে
দেয়ার লোক নই।
[26:115]
আমি
তো শুধু একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
[26:116]
তারা
বলল, হে নূহ যদি
তুমি বিরত না
হও, তবে তুমি নিশ্চিতই
প্রস্তরাঘাতে
নিহত হবে।
[26:117]
নূহ
বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমার
সম্প্রদায় তো
আমাকে মিথ্যাবাদী
বলছে।
[26:118]
অতএব, আমার
ও তাদের মধ্যে
কোন ফয়সালা
করে দিন এবং আমাকে
ও আমার সংগী মুমিনগণকে
রক্ষা করুন।
[26:119]
অতঃপর
আমি তাঁকে ও তাঁর সঙ্গিগণকে বোঝাই
করা নৌকায় রক্ষা
করলাম।
[26:120]
এরপর
অবশিষ্ট সবাইকে
নিমজ্জত করলাম।
[26:121]
নিশ্চয়
এতে নিদর্শন আছে
এবং তাদের
অধিকাংশই বিশ্বাসী
নয়।
[26:122]
নিশ্চয়
আপনার পালনকর্তা
প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:123]
আদ
সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[26:124]
তখন
তাদের ভাই হুদ
তাদেরকে বললেনঃ
তোমাদের কি ভয়
নেই?
[26:125]
আমি
তোমাদের বিশ্বস্ত
রসূল।
[26:126]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:127]
আমি
তোমাদের কাছে এর
জন্যে প্রতিদান
চাই না। আমার
প্রতিদান তো পালনকর্তা
দেবেন।
[26:128]
তোমরা
কি প্রতিটি উচ্চস্থানে অযথা নিদর্শন
নির্মান করছ?
[26:129]
এবং
বড় বড় প্রাসাদ
নির্মাণ করছ, যেন তোমরা
চিরকাল থাকবে?
[26:130]
যখন
তোমরা আঘাত হান, তখন জালেম ও নিষ্ঠুরের মত
আঘাত হান।
[26:131]
অতএব, আল্লাহকে
ভয় কর এবং আমার অনুগত্য
কর।
[26:132]
ভয়
কর তাঁকে, যিনি
তোমাদেরকে সেসব বস্তু দিয়েছেন, যা তোমরা
জান।
[26:133]
তোমাদেরকে
দিয়েছেন চতুষ্পদ জন্তু ও পুত্র-সন্তান,
[26:134]
এবং
উদ্যান ও ঝরণা।
[26:135]
আমি
তোমাদের জন্যে
মহাদিবসের শাস্তি আশংকা
করি।
[26:136]
তারা
বলল, তুমি উপদেশ
দাও অথবা উপদেশ
নাই দাও, উভয়ই
আমাদের জন্যে সমান।
[26:137]
এসব
কথাবার্তা পূর্ববর্তী লোকদের অভ্যাস
বৈ নয়।
[26:138]
আমরা
শাস্তিপ্রাপ্ত
হব না।
[26:139]
অতএব, তারা
তাঁকে মিথ্যাবাদী বলতে লাগল এবং
আমি তাদেরকে নিপাত
করে দিলাম। এতে অবশ্যই
নিদর্শন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাসী নয়।
[26:140]
এবং
আপনার পালনকর্তা, তিনি
তো প্রবল
পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:141]
সামুদ
সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[26:142]
যখন
তাদের ভাই সালেহ, তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয়
কর না?
[26:143]
আমি
তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[26:144]
অতএব, আল্লাহকে
ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:145]
আমি
এর জন্যে তোমাদের
কাছে কোন প্রতিদান
চাই না। আমার
প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই
দেবেন।
[26:146]
তোমাদেরকে
কি এ জগতের ভোগ-বিলাসের মধ্যে
নিরাপদে রেখে দেয়া
হবে?
[26:147]
উদ্যানসমূহের
মধ্যে এবং ঝরণাসমূহের মধ্যে
?
[26:148]
শস্যক্ষেত্রের
মধ্যে এবং মঞ্জুরিত খেজুর
বাগানের মধ্যে
?
[26:149]
তোমরা
পাহাড় কেটে জাঁক
জমকের গৃহ নির্মাণ
করছ।
[26:150]
সুতরাং
তোমরা আল্লাহকে
ভয় কর এবং আমার
অনুগত্য কর।
[26:151]
এবং
সীমালংঘনকারীদের
আদেশ মান্য
কর না;
[26:152]
যারা
পৃথিবীতে অনর্থ
সৃষ্টি করে এবং
শান্তি স্থাপন
করে না;
[26:153]
তারা
বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্থুরেদ
একজন।
[26:154]
তুমি
তো আমাদের মতই
একজন মানুষ বৈ নও। সুতরাং
যদি তুমি সত্যবাদী
হও, তবে কোন নিদর্শন
উপস্থিত কর।
[26:155]
সালেহ
বললেন এই উষ্ট্রী, এর জন্যে আছে পানি
পানের পালা এবং
তোমাদের জন্যে
আছে পানি পানের
পালা নির্দিষ্ট এক-এক দিনের।
[26:156]
তোমরা
একে কোন কষ্ট দিও
না। তাহলে
তোমাদেরকে মহাদিবসের
আযাব পাকড়াও করবে।
[26:157]
তারা
তাকে বধ করল ফলে, তারা অনুতপ্ত হয়ে
গেল।
[26:158]
এরপর
আযাব তাদেরকে পাকড়াও করল। নিশ্চয়
এতে নিদর্শন আছে। কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাসী নয়।
[26:159]
আপনার
পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:160]
লূতের
সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[26:161]
যখন
তাদের ভাই লূত
তাদেরকে বললেন, তোমরা
কি ভয় কর না ?
[26:162]
আমি
তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[26:163]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:164]
আমি
এর জন্যে তোমাদের
কাছে কোন প্রতিদান
চাই না। আমার
প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তা
দেবেন।
[26:165]
সারা
জাহানের মানুষের
মধ্যে তোমরাই
কি পুরূষদের সাথে
কুকর্ম কর?
[26:166]
এবং
তোমাদের পালনকর্তা
তোমাদের জন্যে
যে স্ত্রীগনকে
সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে
বর্জন কর? বরং তোমরা
সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।
[26:167]
তারা
বলল, হে লূত, তুমি
যদি বিরত না
হও, তবে অবশ্যই
তোমাকে বহিস্কৃত
করা হবে।
[26:168]
লূত
বললেন, আমি তোমাদের
এই কাজকে
ঘৃণা করি।
[26:169]
হে
আমার পালনকর্তা, আমাকে
এবং আমার পরিবারবর্গকে
তারা যা করে, তা থেকে
রক্ষা কর।
[26:170]
অতঃপর
আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে
রক্ষা করলাম।
[26:171]
এক
বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের
অন্তর্ভুক্ত।
[26:172]
এরপর
অন্যদেরকে নিপাত
করলাম।
[26:173]
তাদের
উপর এক বিশেষ বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। ভীতি-প্রদর্শিত
দের জন্যে এই বৃষ্টি
ছিল কত নিকৃষ্ট।
[26:174]
নিশ্চয়ই
এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাসী নয়।
[26:175]
নিশ্চয়ই
আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:176]
বনের
অধিবাসীরা পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[26:177]
যখন
শো’আয়ব তাদের
কে বললেন, তোমরা
কি ভয় কর না?
[26:178]
আমি
তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[26:179]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:180]
আমি
তোমাদের কাছে এর
জন্য কোন প্রতিদান
চাই না। আমার
প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই
দেবেন।
[26:181]
মাপ
পূর্ণ কর এবং যারা
পরিমাপে কম দেয়, তাদের
অন্তর্ভুক্ত হয়ো
না।
[26:182]
সোজা
দাঁড়ি-পাল্লায়
ওজন কর।
[26:183]
মানুষকে
তাদের বস্তু কম
দিও না এবং পৃথিবীতে
অনর্থ সৃষ্টি করে
ফিরো না।
[26:184]
ভয়
কর তাঁকে, যিনি
তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তী
লোক-সম্প্রদায়কে
সৃষ্টি করেছেন।
[26:185]
তারা
বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্তদের
অন্যতম।
[26:186]
তুমি
আমাদের মত মানুষ
বৈ তো নও। আমাদের
ধারণা-তুমি মিথ্যাবাদীদের
অন্তর্ভুক্ত।
[26:187]
অতএব, যদি সত্যবাদী
হও, তবে আকাশের
কোন টুকরো আমাদের
উপর ফেলে দাও।
[26:188]
শো’আয়ব
বললেন, তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে
আমার পালনকর্তা
ভালরূপে অবহিত।
[26:189]
অতঃপর
তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে দিল। ফলে তাদেরকে
মেঘাচ্ছন্ন দিবসের
আযাব পাকড়াও করল। নিশ্চয়
সেটা ছিল এক মহাদিবসের আযাব।
[26:190]
নিশ্চয়
এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাস করে না।
[26:191]
নিশ্চয়
আপনার পালনকর্তা
প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:192]
এই
কোরআন তো বিশ্ব-জাহানের পালনকর্তার নিকট
থেকে অবতীর্ণ।
[26:193]
বিশ্বস্ত
ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছে।
[26:194]
আপনার
অন্তরে, যাতে আপনি
ভীতি প্রদর্শণকারীদের
অন্তর্ভুক্ত হন,
[26:195]
সুস্পষ্ট
আরবী ভাষায়।
[26:196]
নিশ্চয়
এর উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।
[26:197]
তাদের
জন্যে এটা কি নিদর্শন নয় যে, বনী-ইসরাঈলের
আলেমগণ এটা অবগত
আছে?
[26:198]
যদি
আমি একে কোন ভিন্নভাষীর প্রতি অবতীর্ণ
করতাম,
[26:199]
অতঃপর
তিনি তা তাদের
কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা
তাতে বিশ্বাস স্থাপন
করত না।
[26:200]
এমনিভাবে
আমি গোনাহগারদের অন্তরে অবিশ্বাস
সঞ্চার করেছি।
[26:201]
তারা
এর প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন করবে
না, যে পর্যন্ত
প্রত্যক্ষ না করে
মর্মন্তুদ আযাব।
[26:202]
অতঃপর
তা আকস্মিকভাবে
তাদের কাছে
এসে পড়বে, তারা
তা বুঝতে ও পারবে
না।
[26:203]
তখন
তারা বলবে, আমরা
কি অবকাশ পাব না?
[26:204]
তারা
কি আমার শাস্তি
দ্রুত কামনা
করে?
[26:205]
আপনি
ভেবে দেখুন তো, যদি আমি তাদেরকে বছরের
পর বছর ভোগ-বিলাস
করতে দেই,
[26:206]
অতঃপর
যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া
হত, তা তাদের কাছে
এসে পড়ে।
[26:207]
তখন
তাদের ভোগ বিলাস
তা তাদের কি কোন
উপকারে আসবে?
[26:208]
আমি
কোন জনপদ ধ্বংস
করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায়
যে, তারা সতর্ককারী
ছিল।
[26:209]
স্মরণ
করানোর জন্যে, এবং আমার কাজ অন্যায়াচরণ
নয়।
[26:210]
এই
কোরআন শয়তানরা
অবতীর্ণ করেনি।
[26:211]
তারা
এ কাজের উপযুক্ত
নয় এবং তারা
এর সামর্থ?ও রাখে
না।
[26:212]
তাদেরকে
তো শ্রবণের জায়গা থেকে দূরে রাখা
রয়েছে।
[26:213]
অতএব, আপনি
আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান
করবেন না। করলে
শাস্তিতে পতিত
হবেন।
[26:214]
আপনি
নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।
[26:215]
এবং
আপনার অনুসারী
মুমিনদের প্রতি সদয় হোন।
[26:216]
যদি
তারা আপনার অবাধ্য
করে, তবে বলে দিন, তোমরা
যা কর, তা থেকে আমি
মুক্ত।
[26:217]
আপনি
ভরসা করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর
উপর,
[26:218]
যিনি
আপনাকে দেখেন যখন
আপনি নামাযে
দন্ডায়মান হন,
[26:219]
এবং
নামাযীদের সাথে
উঠাবসা করেন।
[26:220]
নিশ্চয়
তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
[26:221]
আমি
আপনাকে বলব কি
কার নিকট শয়তানরা
অবতরণ করে?
[26:222]
তারা
অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, গোনাহগারের
উপর।
[26:223]
তারা
শ্রুত কথা এনে
দেয় এবং তাদের
অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
[26:224]
বিভ্রান্ত
লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে।
[26:225]
তুমি
কি দেখ না যে, তারা
প্রতি ময়দানেই
উদভ্রান্ত হয়ে
ফিরে?
[26:226]
এবং
এমন কথা বলে, যা তারা
করে না।
[26:227]
তবে
তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন
করে ও সৎকর্ম
করে এবং আল্লাহ
কে খুব স্মরণ করে
এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ
গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা
শীঘ্রই জানতে পারবে
তাদের গন্তব্যস্থল
কিরূপ।
27 An-Naml
শুরু করছি
আল্লাহর নামে যিনি
পরম করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[27:1]
ত্বা-সীন; এগুলো
আল-কোরআনের আয়াত এবং আয়াত
সুস্পষ্ট কিতাবের।
[27:2]
মুমিনদের
জন্যে পথ নির্দেশ
ও সুসংবাদ।
[27:3]
যারা
নামায কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং
পরকালে নিশ্চিত
বিশ্বাস করে।
[27:4]
যারা
পরকালে বিশ্বাস
করে না, আমি তাদের
দৃষ্টিতে তাদের
কর্মকান্ডকে সুশোভিত
করে দিয়েছি। অতএব, তারা উদভ্রান্ত হয়ে
ঘুরে বেড়ায়।
[27:5]
তাদের
জন্যেই রয়েছে
মন্দ শাস্তি
এবং তারাই পরকালে
অধিক ক্ষতিগ্রস্ত।
[27:6]
এবং
আপনাকে কোরআন প্রদত্ত হচ্ছে প্রজ্ঞাময়, জ্ঞানময়
আল্লাহর কাছ থেকে।
[27:7]
যখন
মূসা তাঁর পরিবারবর্গকে বললেনঃ আমি অগ্নি
দেখেছি, এখন আমি সেখান
থেকে তোমাদের জন্যে
কোন খবর আনতে পারব অথবা তোমাদের
জন্যে জ্বলন্ত
অঙ্গার নিয়ে আসতে
পারব যাতে তোমরা
আগুন পোহাতে পার।
[27:8]
অতঃপর
যখন তিনি আগুনের
কাছে আসলেন
তখন আওয়াজ হল
ধন্য তিনি, যিনি
আগুনের স্থানে
আছেন এবং যারা
আগুনের আশেপাশে
আছেন। বিশ্ব
জাহানের পালনকর্তা
আল্লাহ পবিত্র
ও মহিমান্বিত।
[27:9]
হে
মূসা, আমি আল্লাহ, প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
[27:10]
আপনি
নিক্ষেপ করুন আপনার
লাঠি। অতঃপর
যখন তিনি তাকে
সর্পের ন্যায়
ছুটাছুটি করতে
দেখলেন, তখন তিনি বিপরীত
দিকে ছুটতে
লাগলেন এবং পেছন
ফিরেও দেখলেন না। হে মূসা, ভয় করবেন
না। আমি যে রয়েছি, আমার
কাছে পয়গম্বরগণ
ভয় করেন না।
[27:11]
তবে
যে বাড়াবাড়ি
করে এরপর মন্দ
কর্মের পরিবর্তে
সৎকর্ম করে। নিশ্চয়
আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[27:12]
আপনার
হাত আপনার বগলে
ঢুকিয়ে দিন, সুশুভ্র
হয়ে বের হবে নির্দোষ
অবস্থায়। এগুলো
ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের কাছে আনীত নয়টি
নিদর্শনের অন্যতম। নিশ্চয়
তারা ছিল পাপাচারী
সম্প্রদায়।
[27:13]
অতঃপর
যখন তাদের কাছে
আমার উজ্জল
নিদর্শনাবলী আগমন
করল, তখন তারা বলল, এটা তো
সুস্পষ্ট জাদু।
[27:14]
তারা
অন্যায় ও অহংকার
করে নিদর্শনাবলীকে
প্রত্যাখ্যান
করল, যদিও তাদের
অন্তর এগুলো সত্য
বলে বিশ্বাস করেছিল। অতএব
দেখুন, অনর্থকারীদের
পরিণাম কেমন হয়েছিল?
[27:15]
আমি
অবশ্যই দাউদ ও
সুলায়মানকে জ্ঞান দান করেছিলাম। তাঁরা
বলে ছিলেন, আল্লাহর
প্রশংসা, যিনি
আমাদেরকে তাঁর
অনেক মুমিন
বান্দার উপর শ্রেষ্ঠত্ব
দান করেছেন।
[27:16]
সুলায়মান
দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘হে লোক
সকল, আমাকে উড়ন্ত
পক্ষীকূলের ভাষা
শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে
সব কিছু দেয়া
হয়েছে। নিশ্চয়
এটা সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব। ’
[27:17]
সুলায়মানের
সামনে তার সেনাবাহিনীকে
সমবেত করা হল। জ্বিন-মানুষ
ও পক্ষীকুলকে, অতঃপর
তাদেরকে বিভিন্ন ব্যূহে বিভক্ত
করা হল।
[27:18]
যখন
তারা পিপীলিকা
অধ্যূষিত উপত্যকায় পৌঁছাল, তখন এক
পিপীলিকা বলল, হে পিপীলিকার
দল, তোমরা তোমাদের
গৃহে প্রবেশ
কর। অন্যথায়
সুলায়মান ও তার
বাহিনী অজ্ঞাতসারে
তোমাদেরকে পিষ্ট
করে ফেলবে।
[27:19]
তার
কথা শুনে সুলায়মান
মুচকি হাসলেন
এবং বললেন, হে আমার
পালনকর্তা, তুমি
আমাকে সামর্থ? দাও যাতে
আমি তোমার সেই নিয়ামতের
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করতে পারি, যা তুমি
আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে
দান করেছ এবং
যাতে আমি তোমার
পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি
এবং
আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ন
বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত
কর।
[27:20]
সুলায়মান
পক্ষীদের খোঁজ
খবর নিলেন, অতঃপর
বললেন, কি হল, হুদহুদকে
দেখছি না কেন? নাকি
সে অনুপস্থিত?
[27:21]
আমি
অবশ্যই তাকে কঠোর
শাস্তি দেব কিংবা
হত্যা করব অথবা
সে উপস্থিত করবে
উপযুক্ত কারণ।
[27:22]
কিছুক্ষণ
পড়েই হুদ এসে
বলল, আপনি যা অবগত
নন, আমি তা অবগত
হয়েছি। আমি আপনার
কাছে সাবা থেকে
নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে আগমন করেছি।
[27:23]
আমি
এক নারীকে সাবাবাসীদের
উপর রাজত্ব
করতে দেখেছি। তাকে
সবকিছুই দেয়া
হয়েছে এবং তার
একটা বিরাট সিংহাসন
আছে।
[27:24]
আমি
তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর
পরিবর্তে সূর্যকে
সেজদা করছে। শয়তান
তাদের দৃষ্টিতে
তাদের কার্যাবলী
সুশোভিত করে দিয়েছে। অতঃপর
তাদেরকে সৎপথ থেকে নিবৃত্ত
করেছে। অতএব তারা সৎপথ
পায় না।
[27:25]
তারা
আল্লাহকে সেজদা
করে না কেন, যিনি
নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের
গোপন বস্তু প্রকাশ
করেন এবং জানেন
যা তোমরা গোপন কর ও যা প্রকাশ
কর।
[27:26]
আল্লাহ
ব্যতীত কোন উপাস্য
নেই; তিনি মহা আরশের
মালিক। [ Sajdah ]
[27:27]
সুলায়মান
বললেন, এখন আমি দেখব তুমি সত্য বলছ, না তুমি
মিথ্যবাদী।
[27:28]
তুমি
আমার এই পত্র নিয়ে
যাও এবং এটা
তাদের কাছে অর্পন
কর। অতঃপর তাদের
কাছ থেকে সরে পড়
এবং দেখ, তারা
কি জওয়াব
দেয়।
[27:29]
বিলকীস
বলল, হে পরিষদবর্গ, আমাকে
একটি সম্মানিত
পত্র দেয়া হয়েছে।
[27:30]
সেই
পত্র সুলায়মানের
পক্ষ থেকে এবং
তা এইঃ সসীম দাতা, পরম দয়ালু, আল্লাহর
নামে শুরু;
[27:31]
আমার
মোকাবেলায় শক্তি প্রদর্শন করো
না এবং বশ্যতা
স্বীকার করে আমার
কাছে উপস্থিত হও।
[27:32]
বিলকীস
বলল, হে পরিষদবর্গ, আমাকে
আমার কাজে পরামর্শ
দাও। তোমাদের
উপস্থিতি ব্যতিরেকে
আমি কোন কাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করি না।
[27:33]
তারা
বলল, আমরা শক্তিশালী
এবং কঠোর যোদ্ধা। এখন সিদ্ধান্ত
গ্রহণের ক্ষমতা
আপনারই। অতএব
আপনি ভেবে দেখুন, আমাদেরকে
কি আদেশ করবেন।
[27:34]
সে
বলল, রাজা বাদশারা
যখন কোন জনপদে
প্রবেশ করে, তখন তাকে
বিপর্যস্ত করে
দেয় এবং সেখানকার
সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গকে
অপদস্থ করে। তারাও
এরূপই করবে।
[27:35]
আমি
তাঁর কাছে কিছু
উপঢৌকন পাঠাচ্ছি; দেখি
প্রেরিত লোকেরা
কি জওয়াব আনে।
[27:36]
অতঃপর
যখন দূত সুলায়মানের কাছে আগমন করল, তখন সুলায়মান
বললেন, তোমরা কি ধনসম্পদ
দ্বারা আমাকে সাহায্য করতে চাও? আল্লাহ
আমাকে যা দিয়েছেন, তা তোমাদেরকে
প্রদত্ত বস্তু
থেকে উত্তম। বরং তোমরাই তোমাদের
উপঢৌকন নিয়ে সুখে
থাক।
[27:37]
ফিরে
যাও তাদের কাছে। এখন অবশ্যই আমি তাদের
বিরুদ্ধে এক সৈন্যবাহিনী
নিয়ে আসব, যার মোকাবেলা
করার শক্তি তাদের নেই। আমি অবশ্যই
তাদেরকে অপদস্থ
করে সেখান থেকে
বহিষ্কৃত করব এবং
তারা হবে লাঞ্ছিত।
[27:38]
সুলায়মান
বললেন, হে পরিষদবর্গ, তারা
আত্নসমর্পণ করে
আমার কাছে আসার
পূর্বে কে বিলকীসের
সিংহাসন আমাকে
এনে দেবে?
[27:39]
জনৈক
দৈত্য-জিন বলল, আপনি আপনার স্থান থেকে
উঠার পূর্বে আমি
তা এনে দেব এবং
আমি একাজে শক্তিবান, বিশ্বস্ত।
[27:40]
কিতাবের
জ্ঞান যার ছিল, সে বলল, আপনার দিকে
আপনার চোখের পলক
ফেলার পূর্বেই
আমি তা আপনাকে
এনে দেব। অতঃপর সুলায়মান যখন
তা সামনে রক্ষিত
দেখলেন, তখন বললেন
এটা আমার পালনকর্তার
অনুগ্রহ, যাতে
তিনি আমাকে পরীক্ষা
করেন যে, আমি কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করি, না অকৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করি। যে কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করে, সে নিজের
উপকারের জন্যেই
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করে এবং যে অকৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করে সে
জানুক যে, আমার
পালনকর্তা অভাবমুক্ত
কৃপাশীল।
[27:41]
সুলায়মান
বললেন, বিলকীসের সামনে তার সিংহাসনের
আকার-আকৃতি বদলিয়ে
দাও, দেখব সে সঠিক
বুঝতে পারে, না সে তাদের অন্তর্ভুক্ত, যাদের
দিশা নেই ?
[27:42]
অতঃপর
যখন বিলকীস এসে
গেল, তখন তাকে
জিজ্ঞাসা করা হল, তোমার
সিংহাসন কি এরূপই? সে বলল, মনে হয়
এটা সেটাই। আমরা পূর্বেই সমস্ত
অবগত হয়েছি এবং
আমরা আজ্ঞাবহও
হয়ে গেছি।
[27:43]
আল্লাহর
পরিবর্তে সে যার
এবাদত করত, সেই তাকে
ঈমান থেকে নিবৃত্ত
করেছিল। নিশ্চয়
সে কাফের সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত
ছিল।
[27:44]
তাকে
বলা হল, এই প্রাসাদে প্রবেশ কর। যখন সে
তার প্রতি দৃষ্টিপাত
করল সে ধারণা করল
যে, এটা স্বচ্ছ
গভীর জলাশয়। সে তার
পায়ের গোছা খুলে
ফেলল। সুলায়মান
বলল, এটা তো স্বচ্ছ
স্ফটিক নির্মিত
প্রাসাদ। বিলকীস
বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমি তো
নিজের প্রতি জুলুম করেছি। আমি সুলায়মানের
সাথে বিশ্ব জাহানের
পালনকর্তা আল্লাহর
কাছে আত্নসমর্পন করলাম।
[27:45]
আমি
সামুদ সম্প্রদায়ের
কাছে তাদের
ভাই সালেহকে এই
মর্মে প্রেরণ করেছি
যে, তোমরা আল্লাহর
এবাদত কর। অতঃপর তারা দ্বিধাবিভক্ত
হয়ে বিতর্কে প্রবৃত্ত
হল।
[27:46]
সালেহ
বললেন, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা
কল্যাণের পূর্বে
দ্রুত অকল্যাণ
কামনা করছ কেন? তোমরা
আল্লাহর কাছে
ক্ষমা প্রার্থনা
করছ না কেন? সম্ভবতঃ
তোমরা দয়াপ্রাপ্ত
হবে।
[27:47]
তারা
বলল, তোমাকে এবং
তোমার সাথে
যারা আছে, তাদেরকে
আমরা অকল্যাণের
প্রতীক মনে করি। সালেহ
বললেন, তোমাদের মঙ্গলামঙ্গল
আল্লাহর কাছে; বরং তোমরা
এমন সম্প্রদায়, যাদেরকে
পরীক্ষা করা হচ্ছে।
[27:48]
আর
সেই শহরে ছিল এমন
একজন ব্যক্তি, যারা
দেশময় অনর্থ সৃষ্টি
করে বেড়াত এবং
সংশোধন করত না।
[27:49]
তারা
বলল, তোমরা পরস্পরে আল্লাহর নামে
শপথ গ্রহণ কর যে, আমরা
রাত্রিকালে তাকে
ও তার পরিবারবর্গকে
হত্যা করব। অতঃপর
তার দাবীদারকে
বলে দেব যে, তার পরিবারবর্গের
হত্যাকান্ড আমরা প্রত্যক্ষ করিনি। আমরা
নিশ্চয়ই সত্যবাদী।
[27:50]
তারা
এক চক্রান্ত করেছিল
এবং আমিও এক
চক্রান্ত করেছিলাম। কিন্তু
তারা বুঝতে পারেনি।
[27:51]
অতএব, দেখ তাদের
চক্রান্তের পরিনাম, আমি অবশ্রই
তাদেরকে এবং তাদের
সম্প্রদায়কে
নাস্তনাবুদ করে
দিয়েছি।
[27:52]
এই
তো তাদের বাড়ীঘর-তাদের অবিশ্বাসের কারণে
জনশূন্য অবস্থায়
পড়ে আছে। নিশ্চয়
এতে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন
আছে।
[27:53]
যারা
বিশ্বাস স্থাপন
করেছিল এবং পরহেযগার
ছিল, তাদেরকে আমি
উদ্ধার করেছি।
[27:54]
স্মরণ
কর লূতের কথা, তিনি
তাঁর কওমকে
বলেছিলেন, তোমরা
কেন অশ্লীল কাজ
করছ? অথচ এর পরিণতির
কথা তোমরা অবগত
আছ!
[27:55]
তোমরা
কি কামতৃপ্তির
জন্য নারীদেরকে
ছেড়ে পুরুষে উপগত
হবে? তোমরা তো এক
বর্বর সম্প্রদায়।