Part 23
[36:28]
তারপর
আমি তার
সম্প্রদায়ের উপর আকাশ
থেকে কোন
বাহিনী
অবতীর্ণ
করিনি এবং আমি
(বাহিনী)
অবতরণকারীও
না।
[36:29]
বস্তুতঃ
এ ছিল এক
মহানাদ। অতঃপর সঙ্গে
সঙ্গে সবাই
স্তদ্ধ হয়ে
গেল।
[36:30]
বান্দাদের
জন্যে আক্ষেপ
যে, তাদের
কাছে এমন কোন
রসূলই আগমন
করেনি যাদের
প্রতি তারা
বিদ্রুপ করে
না।
[36:31]
তারা
কি প্রত্যক্ষ
করে না, তাদের
পূর্বে আমি কত
সম্প্রদায়কে
ধ্বংস করেছি
যে, তারা
তাদের মধ্যে
আর ফিরে আসবে
না।
[36:32]
ওদের
সবাইকে সমবেত
অবস্থায় আমার দরবারে
উপস্থিত হতেই
হবে।
[36:33]
তাদের
জন্যে একটি
নিদর্শন মৃত পৃথিবী। আমি
একে সঞ্জীবিত
করি এবং তা
থেকে উৎপন্ন
করি শস্য, তারা
তা থেকে ভক্ষণ করে।
[36:34]
আমি
তাতে সৃষ্টি
করি খেজুর ও আঙ্গুরের
বাগান এবং
প্রবাহিত করি
তাতে নির্ঝরিণী।
[36:35]
যাতে
তারা তার ফল
খায়। তাদের হাত একে
সৃষ্টি করে না। অতঃপর
তারা
কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করে না
কেন?
[36:36]
পবিত্র
তিনি যিনি
যমীন থেকে উৎপন্ন
উদ্ভিদকে, তাদেরই
মানুষকে এবং
যা তারা জানে
না, তার
প্রত্যেককে
জোড়া জোড়া
করে সৃষ্টি
করেছেন।
[36:37]
তাদের
জন্যে এক
নিদর্শন রাত্রি, আমি
তা থেকে দিনকে
অপসারিত করি, তখনই
তারা
অন্ধকারে
থেকে যায়।
[36:38]
সূর্য
তার
নির্দিষ্ট
অবস্থানে আবর্তন করে। এটা
পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ, আল্লাহর
নিয়ন্ত্রণ।
[36:39]
চন্দ্রের
জন্যে আমি
বিভিন্ন মনযিল
নির্ধারিত
করেছি। অবশেষে
সে পুরাতন
খর্জুর শাখার
অনুরূপ হয়ে যায়।
[36:40]
সূর্য
নাগাল পেতে
পারে না চন্দ্রের
এবং রাত্রি
অগ্রে চলে না
দিনের
প্রত্যেকেই
আপন আপন
কক্ষপথে
সন্তরণ করে।
[36:41]
তাদের
জন্যে একটি
নিদর্শন এই যে, আমি
তাদের
সন্তান-সন্ততিকে
বোঝাই নৌকায়
আরোহণ
করিয়েছি।
[36:42]
এবং
তাদের জন্যে
নৌকার অনুরূপ যানবাহন
সৃষ্টি করেছি, যাতে
তারা আরোহণ
করে।
[36:43]
আমি
ইচ্ছা করলে
তাদেরকে নিমজ্জত
করতে পারি, তখন
তাদের জন্যে
কোন
সাহায্যকারী
নেই এবং তারা
পরিত্রাণও পাবে না।
[36:44]
কিন্তু
আমারই পক্ষ
থেকে কৃপা এবং তাদেরকে
কিছু কাল
জীবনোপভোগ
করার সুযোগ দেয়ার
কারণে তা করি
না।
[36:45]
আর
যখন তাদেরকে
বলা হয়, তোমরা সামনের আযাব
ও পেছনের
আযাবকে ভয় কর, যাতে
তোমাদের
প্রতি
অনুগ্রহ করা
হয়, তখন তারা
তা অগ্রাহ্য
করে।
[36:46]
যখনই
তাদের
পালনকর্তার নির্দেশাবলীর
মধ্যে থেকে
কোন নির্দেশ
তাদের কাছে
আসে, তখনই
তারা তা থেকে
মুখে ফিরিয়ে
নেয়।
[36:47]
যখন
তাদেরকে বলা
হয়, আল্লাহ তোমাদেরকে
যা দিয়েছেন, তা
থেকে ব্যয় কর। তখন
কাফেররা
মুমিনগণকে
বলে, ইচ্ছা করলেই
আল্লাহ যাকে
খাওয়াতে
পারতেন, আমরা
তাকে কেন
খাওয়াব? তোমরা
তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে
পতিত রয়েছ।
[36:48]
তারা
বলে, তোমরা
সত্যবাদী হলে বল এই ওয়াদা
কবে পূর্ণ হবে?
[36:49]
তারা
কেবল একটা
ভয়াবহ
শব্দের অপেক্ষা
করছে, যা
তাদেরকে আঘাত
করবে তাদের
পারস্পরিক
বাকবিতন্ডাকালে।
[36:50]
তখন
তারা ওছিয়ত
করতেও সক্ষম হবে না। এবং
তাদের
পরিবার-পরিজনের
কাছেও ফিরে
যেতে পারবে না।
[36:51]
শিংগায়
ফুঁক দেয়া
হবে, তখনই তারা কবর
থেকে তাদের
পালনকর্তার
দিকে ছুটে চলবে।
[36:52]
তারা
বলবে, হায়
আমাদের দুর্ভোগ!
কে আমাদেরকে
নিদ্রাস্থল
থেকে উখিত করল? রহমান
আল্লাহ তো এরই
ওয়াদা দিয়েছিলেন
এবং রসূলগণ
সত্য
বলেছিলেন।
[36:53]
এটা
তো হবে কেবল
এক মহানাদ। সে মুহুর্তেই
তাদের সবাইকে
আমার সামনে
উপস্থিত করা
হবে।
[36:54]
আজকের
দিনে কারও
প্রতি জুলুম করা হবে না
এবং তোমরা যা করবে
কেবল তারই
প্রতিদান
পাবে।
[36:55]
এদিন
জান্নাতীরা
আনন্দে মশগুল থাকবে।
[36:56]
তারা
এবং তাদের
স্ত্রীরা উপবিষ্ট
থাকবে
ছায়াময়
পরিবেশে আসনে
হেলান দিয়ে।
[36:57]
সেখানে
তাদের জন্যে
থাকবে ফল-মূল
এবং যা চাইবে।
[36:58]
করুণাময়
পালনকর্তার
পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা
হবে সালাম।
[36:59]
হে
অপরাধীরা! আজ
তোমরা আলাদা হয়ে যাও।
[36:60]
হে
বনী-আদম! আমি
কি তোমাদেরকে বলে রাখিনি
যে, শয়তানের
এবাদত করো না, সে
তোমাদের
প্রকাশ্য
শত্রু?
[36:61]
এবং
আমার এবাদত কর। এটাই
সরল পথ।
[36:62]
শয়তান
তোমাদের অনেক
দলকে পথভ্রষ্ট
করেছে। তবুও
কি তোমরা
বুঝনি?
[36:63]
এই
সে জাহান্নাম, যার
ওয়াদা তোমাদেরকে
দেয়া হতো।
[36:64]
তোমাদের
কুফরের কারণে
আজ এতে প্রবেশ
কর।
[36:65]
আজ
আমি তাদের
মুখে মোহর
এঁটে দেব
তাদের হাত
আমার সাথে কথা
বলবে এবং
তাদের পা
তাদের
কৃতকর্মের
সাক্ষ্য দেবে।
[36:66]
আমি
ইচ্ছা করলে তাদের
দৃষ্টি শক্তি
বিলুপ্ত করে
দিতে পারতাম, তখন
তারা পথের
দিকে দৌড়াতে
চাইলে কেমন
করে দেখতে
পেত!
[36:67]
আমি
ইচ্ছা করলে
তাদেরকে স্ব স্ব স্থানে
আকার বিকৃত
করতে পারতাম, ফলে
তারা আগেও
চলতে পারত না
এবং পেছনেও
ফিরে যেতে
পারত না।
[36:68]
আমি
যাকে দীর্ঘ
জীবন দান করি, তাকে
সৃষ্টিগত
পূর্বাবস্থায়
ফিরিয়ে নেই। তবুও
কি তারা বুঝে
না?
[36:69]
আমি
রসূলকে কবিতা
শিক্ষা দেইনি এবং তা তার
জন্যে
শোভনীয়ও নয়। এটা
তো এক উপদেশ ও
প্রকাশ্য
কোরআন।
[36:70]
যাতে
তিনি সতর্ক
করেন জীবিতকে এবং যাতে
কাফেরদের
বিরুদ্ধে
অভিযোগ
প্রতিষ্ঠিত
হয়।
[36:71]
তারা
কি দেখে না, তাদের
জন্যে আমি
আমার নিজ
হাতের তৈরী
বস্তুর
দ্বারা চতুস্পদ
জন্তু সৃষ্টি
করেছি, অতঃপর
তারাই এগুলোর
মালিক।
[36:72]
আমি
এগুলোকে
তাদের হাতে
অসহায় করে
দিয়েছি। ফলে
এদের কতক
তাদের বাহন
এবং কতক তারা
ভক্ষণ করে।
[36:73]
তাদের
জন্যে
চতুস্পদ
জন্তুর মধ্যে
অনেক
উপকারিতা ও
পানীয়
রয়েছে। তবুও
কেন তারা
শুকরিয়া
আদায় করে না?
[36:74]
তারা
আল্লাহর
পরিবর্তে
অনেক উপাস্য
গ্রহণ করেছে
যাতে তারা
সাহায্যপ্রাপ্ত
হতে পারে।
[36:75]
অথচ
এসব উপাস্য
তাদেরকে সাহায্য
করতে সক্ষম
হবে না এবং
এগুলো তাদের বাহিনী
রূপে ধৃত হয়ে
আসবে।
[36:76]
অতএব
তাদের কথা যেন
আপনাকে দুঃখিত
না করে। আমি
জানি যা তারা
গোপনে করে এবং
যা তারা প্রকাশ্যে
করে।
[36:77]
মানুষ
কি দেখে না যে, আমি
তাকে সৃষ্টি
করেছি বীর্য
থেকে? অতঃপর
তখনই সে হয়ে
গেল প্রকাশ্য
বাকবিতন্ডাকারী।
[36:78]
সে
আমার
সম্পর্কে এক
অদ্ভূত কথা
বর্ণনা করে, অথচ
সে নিজের
সৃষ্টি ভুলে
যায়। সে
বলে কে জীবিত
করবে অস্থিসমূহকে
যখন সেগুলো
পচে গলে যাবে?
[36:79]
বলুন, যিনি
প্রথমবার
সেগুলোকে সৃষ্টি
করেছেন, তিনিই
জীবিত করবেন। তিনি
সর্বপ্রকার
সৃষ্টি
সম্পর্কে
সম্যক অবগত।
[36:80]
যিনি
তোমাদের
জন্যে সবুজ
বৃক্ষ থেকে
আগুন উৎপন্ন
করেন। তখন
তোমরা তা থেকে
আগুন জ্বালাও।
[36:81]
যিনি
নভোমন্ডল ও
ভূমন্ডল সৃষ্টি
করেছেন, তিনিই কি
তাদের অনুরূপ
সৃষ্টি করতে
সক্ষম নন? হ্যাঁ
তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।
[36:82]
তিনি
যখন কোন কিছু
করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে
কেবল বলে দেন, ‘হও’ তখনই
তা হয়ে যায়।
[36:83]
অতএব
পবিত্র তিনি, যাঁর
হাতে সবকিছুর
রাজত্ব এবং
তাঁরই দিকে
তোমরা প্রত্যাবর্তিত
হবে।
37 As-Sâffât
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[37:1]
শপথ
তাদের যারা
সারিবদ্ধ
হয়ে দাঁড়ানো,
[37:2]
অতঃপর
ধমকিয়ে ভীতি প্রদর্শনকারীদের,
[37:3]
অতঃপর
মুখস্থ
আবৃত্তিকারীদের-
[37:4]
নিশ্চয়
তোমাদের
মাবুদ এক।
[37:5]
তিনি
আসমান সমূহ, যমীনও এতদুভয়ের
মধ্যবর্তী
সবকিছুর
পালনকর্তা এবং
পালনকর্তা
উদয়াচলসমূহের।
[37:6]
নিশ্চয়
আমি
নিকটবর্তী
আকাশকে তারকারাজির
দ্বারা
সুশোভিত
করেছি।
[37:7]
এবং
তাকে
সংরক্ষিত
করেছি প্রত্যেক
অবাধ্য
শয়তান থেকে।
[37:8]
ওরা
উর্ধ্ব জগতের
কোন কিছু শ্রবণ
করতে পারে না
এবং চার দিক
থেকে তাদের প্রতি
উল্কা
নিক্ষেপ করা
হয়।
[37:9]
ওদেরকে
বিতাড়নের
উদ্দেশে। ওদের জন্যে
রয়েছে
বিরামহীন
শাস্তি।
[37:10]
তবে
কেউ ছোঁ মেরে
কিছু শুনে ফেললে
জ্বলন্ত
উল্কাপিন্ড
তার
পশ্চাদ্ধাবন
করে।
[37:11]
আপনি
তাদেরকে
জিজ্ঞেস করুন, তাদেরকে
সৃষ্টি করা
কঠিনতর, না আমি
অন্য যা
সৃষ্টি করেছি? আমিই
তাদেরকে
সৃষ্টি করেছি
এঁটেল মাটি
থেকে।
[37:12]
বরং
আপনি বিস্ময়
বোধ করেন আর তারা
বিদ্রুপ করে।
[37:13]
যখন
তাদেরকে
বোঝানো হয়, তখন তারা বোঝে না।
[37:14]
তারা
যখন কোন
নিদর্শন দেখে
তখন বিদ্রূপ
করে।
[37:15]
এবং
বলে, কিছুই
নয়, এযে স্পষ্ট
যাদু।
[37:16]
আমরা
যখন মরে যাব, এবং
মাটি ও হাড়ে
পরিণত হয়ে
যাব, তখনও কি
আমরা
পুনরুত্থিত
হব?
[37:17]
আমাদের
পিতৃপুরুষগণও
কি?
[37:18]
বলুন, হ্যাঁ
এবং তোমরা হবে লাঞ্ছিত।
[37:19]
বস্তুতঃ
সে উত্থান হবে
একটি বিকট
শব্দ
মাত্র-যখন
তারা
প্রত্যক্ষ
করতে থাকবে।
[37:20]
এবং
বলবে, দুর্ভাগ্য
আমাদের! এটাই
তো প্রতিফল
দিবস।
[37:21]
বলা
হবে, এটাই
ফয়সালার দিন, যাকে
তোমরা মিথ্যা
বলতে।
[37:22]
একত্রিত
কর গোনাহগারদেরকে, তাদের
দোসরদেরকে
এবং যাদের
এবাদত তারা
করত।
[37:23]
আল্লাহ
ব্যতীত। অতঃপর
তাদেরকে পরিচালিত
কর
জাহান্নামের
পথে,
[37:24]
এবং
তাদেরকে
থামাও, তারা জিজ্ঞাসিত
হবে;
[37:25]
তোমাদের
কি হল যে, তোমরা
একে অপরের
সাহায্য করছ
না?
[37:26]
বরং
তারা আজকের দিনে আত্নসমর্পণকারী।
[37:27]
তারা
একে অপরের দিকে
মুখ করে পরস্পরকে
জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
[37:28]
বলবে, তোমরা
তো আমাদের কাছে ডান দিক থেকে আসতে।
[37:29]
তারা
বলবে, বরং তোমরা
তো বিশ্বাসীই
ছিলে না।
[37:30]
এবং
তোমাদের উপর আমাদের
কোন কতৃত্ব
ছিল না, বরং তোমরাই
ছিলে সীমালংঘনকারী
সম্প্রদায়।
[37:31]
আমাদের
বিপক্ষে আমাদের পালনকর্তার উক্তিই
সত্য হয়েছে। আমাদেরকে
অবশই স্বাদ আস্বাদন
করতে হবে।
[37:32]
আমরা
তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিলাম। কারণ
আমরা নিজেরাই পথভ্রষ্ট
ছিলাম।
[37:33]
তারা
সবাই সেদিন শান্তিতে
শরীক হবে।
[37:34]
অপরাধীদের
সাথে আমি এমনি ব্যবহার করে থাকি।
[37:35]
তাদের
যখন বলা হত, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য
েনই, তখন তারা ঔদ্ধত্য
প্রদর্শন করত।
[37:36]
এবং
বলত, আমরা কি এক
উম্মাদ কবির
কথায় আমাদের উপাস্যদেরকে
পরিত্যাগ করব।
[37:37]
না, তিনি
সত্যসহ আগমন করেছেন এবং রসূলগণের
সত্যতা স্বীকার
করেছেন।
[37:38]
তোমরা
অবশ্যই বেদনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন
করবে।
[37:39]
তোমরা
যা করতে, তারই
প্রতিফল পাবে।
[37:40]
তবে
তারা নয়, যারা
আল্লাহর বাছাই
করা বান্দা।
[37:41]
তাদের
জন্যে রয়েছে নির্ধারিত রুযি।
[37:42]
ফল-মূল
এবং তারা সম্মানিত।
[37:43]
নেয়ামতের
উদ্যানসমূহ।
[37:44]
মুখোমুখি
হয়ে আসনে আসীন।
[37:45]
তাদেরকে
ঘুরে ফিরে পরিবেশন
করা হবে স্বচ্ছ
পানপাত্র।
[37:46]
সুশুভ্র, যা পানকারীদের
জন্যে সুস্বাদু।
[37:47]
তাতে
মাথা ব্যথার উপাদান
নেই এবং তারা
তা পান করে মাতালও
হবে না।
[37:48]
তাদের
কাছে থাকবে নত, আয়তলোচনা
তরুণীগণ।
[37:49]
যেন
তারা সুরক্ষিত
ডিম।
[37:50]
অতঃপর
তারা একে অপরের
দিকে মুখ করে জিজ্ঞাসাবাদ
করবে।
[37:51]
তাদের
একজন বলবে, আমার
এক সঙ্গী
ছিল।
[37:52]
সে
বলত, তুমি কি বিশ্বাস
কর যে,
[37:53]
আমরা
যখন মরে যাব এবং
মাটি ও হাড়ে
পরিণত হব, তখনও
কি আমরা প্রতিফল
প্রাপ্ত হব?
[37:54]
আল্লাহ
বলবেন, তোমরা কি তাকে উকি দিয়ে দেখতে
চাও?
[37:55]
অপর
সে উকি দিয়ে দেখবে
এবং তাকে জাহান্নামের
মাঝখানে দেখতে
পাবে।
[37:56]
সে
বলবে, আল্লাহর কসম, তুমি
তো আমাকে
প্রায় ধ্বংসই
করে দিয়েছিলে।
[37:57]
আমার
পালনকর্তার অনুগ্রহ
না হলে আমিও
যে গ্রেফতারকৃতদের
সাথেই উপস্থিত
হতাম।
[37:58]
এখন
আমাদের আর মৃত্যু
হবে না।
[37:59]
আমাদের
প্রথম মৃত্যু ছাড়া
এবং আমরা শাস্তি
প্রাপ্তও হব না।
[37:60]
নিশ্চয়
এই মহা সাফল্য।
[37:61]
এমন
সাফল্যের জন্যে পরিশ্রমীদের
পরিশ্রম করা উচিত।
[37:62]
এই
কি উত্তম আপ্যায়ন, না যাক্কুম বৃক্ষ?
[37:63]
আমি
যালেমদের জন্যে
একে বিপদ করেছি।
[37:64]
এটি
একটি বৃক্ষ, যা উদগত
হয় জাহান্নামের
মূলে।
[37:65]
এর
গুচ্ছ শয়তানের
মস্তকের মত।
[37:66]
কাফেররা
একে ভক্ষণ করবে
এবং এর দ্বারা
উদর পূর্ণ করবে।
[37:67]
তদুপরি
তাদেরকে দেয়া
হবে। ফুটন্ত
পানির মিশ্রণ,
[37:68]
অতঃপর
তাদের প্রত্যাবর্তন
হবে জাহান্নামের
দিকে।
[37:69]
তারা
তাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছিল বিপথগামী।
[37:70]
অতঃপর
তারা তদের পদাংক
অনুসরণে তৎপর ছিল।
[37:71]
তাদের
পূর্বেও অগ্রবর্তীদের অধিকাংশ বিপথগামী
হয়েছিল।
[37:72]
আমি
তাদের মধ্যে ভীতি প্রদর্শনকারী
প্রেরণ করেছিলাম।
[37:73]
অতএব
লক্ষ্য করুন, যাদেরকে ভীতিপ্রদর্শণ
করা হয়েছিল, তাদের
পরিণতি কি হয়েছে।
[37:74]
তবে
আল্লাহর বাছাই
করা বান্দাদের
কথা ভিন্ন।
[37:75]
আর
নূহ আমাকে ডেকেছিল। আর কি চমৎকারভাবে
আমি তার ডাকে সাড়া
দিয়েছিলাম।
[37:76]
আমি
তাকে ও তার পরিবারবর্গকে এক মহাসংকট থেকে
রক্ষা করেছিলাম।
[37:77]
এবং
তার বংশধরদেরকেই
আমি অবশিষ্ট
রেখেছিলাম।
[37:78]
আমি
তার জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয়
রেখে দিয়েছি যে,
[37:79]
বিশ্ববাসীর
মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত
হোক।
[37:80]
আমি
এভাবেই সৎকর্ম
পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে
থাকি।
[37:81]
সে
ছিল আমার ঈমানদার
বান্দাদের অন্যতম।
[37:82]
অতঃপর
আমি অপরাপর সবাইকে নিমজ্জত করেছিলাম।
[37:83]
আর
নূহ পন্থীদেরই
একজন ছিল ইব্রাহীম।
[37:84]
যখন
সে তার পালনকর্তার
নিকট সুষ্ঠু
চিত্তে উপস্থিত
হয়েছিল,
[37:85]
যখন
সে তার পিতা ও সম্প্রদায়কে
বলেছিলঃ তোমরা
কিসের উপাসনা করছ?
[37:86]
তোমরা
কি আল্লাহ ব্যতীত
মিথ্যা উপাস্য
কামনা করছ?
[37:87]
বিশ্বজগতের
পালনকর্তা সম্পর্কে তোমাদের ধারণা
কি?
[37:88]
অতঃপর
সে একবার তারকাদের
প্রতি লক্ষ্য
করল।
[37:89]
এবং
বললঃ আমি পীড়িত।
[37:90]
অতঃপর
তারা তার প্রতি
পিঠ ফিরিয়ে
চলে গেল।
[37:91]
অতঃপর
সে তাদের দেবালয়ে, গিয়ে
ঢুকল এবং বললঃ
তোমরা খাচ্ছ না
কেন?
[37:92]
তোমাদের
কি হল যে, কথা বলছ
না?
[37:93]
অতঃপর
সে প্রবল আঘাতে
তাদের উপর ঝাঁপিয়ে
পড়ল।
[37:94]
তখন
লোকজন তার দিকে
ছুটে এলো ভীত-সন্ত্রস্ত
পদে।
[37:95]
সে
বললঃ তোমরা স্বহস্ত
নির্মিত পাথরের
পূজা কর কেন?
[37:96]
অথচ
আল্লাহ তোমাদেরকে
এবং তোমরা
যা নির্মাণ করছ
সবাইকে সৃষ্টি
করেছেন।
[37:97]
তারা
বললঃ এর জন্যে
একটি ভিত নির্মাণ
কর এবং অতঃপর তাকে
আগুনের স্তুপে
নিক্ষেপ কর।
[37:98]
তারপর
তারা তার বিরুদ্ধে
মহা ষড়যন্ত্র
আঁটতে চাইল, কিন্তু
আমি তাদেরকেই পরাভূত
করে দিলাম।
[37:99]
সে
বললঃ আমি আমার
পালনকর্তার দিকে চললাম, তিনি
আমাকে পথপ্রদর্শন
করবেন।
[37:100]
হে
আমার পরওয়ারদেগার!
আমাকে এক সৎপুত্র দান কর।
[37:101]
সুতরাং
আমি তাকে এক সহনশীল পুত্রের সুসংবাদ
দান করলাম।
[37:102]
অতঃপর
সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার
বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম
তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে
দেখিযে, তোমাকে যবেহ
করছি; এখন তোমার
অভিমত কি দেখ। সে বললঃ
পিতাঃ! আপনাকে
যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ
চাহে তো আপনি আমাকে
সবরকারী পাবেন।
[37:103]
যখন
পিতা-পুত্র উভয়েই
আনুগত্য প্রকাশ
করল এবং ইব্রাহীম
তাকে যবেহ করার
জন্যে শায়িত করল।
[37:104]
তখন
আমি তাকে ডেকে
বললামঃ হে ইব্রাহীম,
[37:105]
তুমি
তো স্বপ্নকে সত্যে
পরিণত করে দেখালে!
আমি এভাবেই সৎকর্মীদেরকে
প্রতিদান দিয়ে
থাকি।
[37:106]
নিশ্চয়
এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা।
[37:107]
আমি
তার পরিবর্তে দিলাম
যবেহ করার জন্যে
এক মহান জন্তু।
[37:108]
আমি
তার জন্যে এ বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে
রেখে দিয়েছি যে,
[37:109]
ইব্রাহীমের
প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।
[37:110]
এমনিভাবে
আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে
থাকি।
[37:111]
সে
ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের একজন।
[37:112]
আমি
তাকে সুসংবাদ দিয়েছি ইসহাকের, সে সৎকর্মীদের মধ্য
থেকে একজন নবী।
[37:113]
তাকে
এবং ইসহাককে আমি
বরকত দান করেছি। তাদের
বংশধরদের মধ্যে
কতক সৎকর্মী
এবং কতক নিজেদের
উপর স্পষ্ট জুলুমকারী।
[37:114]
আমি
অনুগ্রহ করেছিলাম
মূসা ও হারুনের
প্রতি।
[37:115]
তাদেরকে
ও তাদের সম্প্রদায়কে উদ্ধার করেছি
মহা সংকট থেকে।
[37:116]
আমি
তাদেরকে সাহায্য
করেছিলাম, ফলে তারাই
ছিল বিজয়ী।
[37:117]
আমি
উভয়কে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট কিতাব।
[37:118]
এবং
তাদেরকে সরল পথ
প্রদর্শন করেছিলাম।
[37:119]
আমি
তাদের জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয়
রেখে দিয়েছি যে,
[37:120]
মূসা
ও হারুনের প্রতি
সালাম বর্ষিত
হোক।
[37:121]
এভাবে
আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে
থাকি।
[37:122]
তারা
উভয়েই ছিল আমার
বিশ্বাসী বান্দাদের অন্যতম।
[37:123]
নিশ্চয়ই
ইলিয়াস ছিল রসূল।
[37:124]
যখন
সে তার সম্প্রদায়কে
বললঃ তোমরা
কি ভয় কর না ?
[37:125]
তোমরা
কি বা’আল দেবতার
এবাদত করবে
এবং সর্বোত্তম
স্রষ্টাকে পরিত্যাগ
করবে।
[37:126]
যিনি
আল্লাহ তোমাদের
পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের
পালনকর্তা?
[37:127]
অতঃপর
তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। অতএব
তারা অবশ্যই গ্রেফতার
হয়ে আসবে।
[37:128]
কিন্তু
আল্লাহ তা’আলার
খাঁটি বান্দাগণ
নয়।
[37:129]
আমি
তার জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয়ে
রেখে দিয়েছি যে,
[37:130]
ইলিয়াসের
প্রতি সালাম বর্ষিত হোক!
[37:131]
এভাবেই
আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে
থাকি।
[37:132]
সে
ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত।
[37:133]
নিশ্চয়
লূত ছিলেন রসূলগণের একজন।
[37:134]
যখন
আমি তাকেও তার
পরিবারের সবাইকে উদ্ধার
করেছিলাম;
[37:135]
কিন্তু
এক বৃদ্ধাকে ছাড়া; সে অন্যান্যদের
সঙ্গে থেকে গিয়েছিল।
[37:136]
অতঃপর
অবশিষ্টদেরকে
আমি সমূলে উৎপাটিত
করেছিলাম।
[37:137]
তোমরা
তোমাদের ধ্বংস
স্তুপের উপর দিয়ে
গমন কর ভোর বেলায়
[37:138]
এবং
সন্ধ্যায়, তার পরেও
কি তোমরা
বোঝ না?
[37:139]
আর
ইউনুসও ছিলেন পয়গম্বরগণের একজন।
[37:140]
যখন
পালিয়ে তিনি বোঝাই
নৌকায় গিয়ে
পৌঁছেছিলেন।
[37:141]
অতঃপর
লটারী (সুরতি) করালে তিনি দোষী সাব্যস্ত
হলেন।
[37:142]
অতঃপর
একটি মাছ তাঁকে
গিলে ফেলল, তখন তিনি
অপরাধী গণ্য হয়েছিলেন।
[37:143]
যদি
তিনি আল্লাহর তসবীহ
পাঠ না করতেন,
[37:144]
তবে
তাঁকে কেয়ামত
দিবস পর্যন্ত
মাছের পেটেই থাকতে
হত।
[37:145]
অতঃপর
আমি তাঁকে এক বিস্তীর্ণ-বিজন
প্রান্তরে নিক্ষেপ
করলাম, তখন তিনি ছিলেন
রুগ্ন।
[37:146]
আমি
তাঁর উপর এক লতাবিশিষ্ট বৃক্ষ উদগত করলাম।
[37:147]
এবং
তাঁকে, লক্ষ বা ততোধিক লোকের প্রতি প্রেরণ
করলাম।
[37:148]
তারা
বিশ্বাস স্থাপন
করল অতঃপর আমি তাদেরকে নির্ধারিত
সময় পর্যন্ত জীবনোপভোগ
করতে দিলাম।
[37:149]
এবার
তাদেরকে জিজ্ঞেস
করুন, তোমার পালনকর্তার
জন্যে কি কন্যা
সন্তান রয়েছে
এবং তাদের জন্যে
কি পুত্র-সন্তান।
[37:150]
না
কি আমি তাদের উপস্থিতিতে ফেরেশতাগণকে
নারীরূপে সৃষ্টি
করেছি?
[37:151]
জেনো, তারা
মনগড়া উক্তি করে যে,
[37:152]
আল্লাহ
সন্তান জন্ম দিয়েছেন। নিশ্চয় তারা
মিথ্যাবাদী।
[37:153]
তিনি
কি পুত্র-সন্তানের
স্থলে কন্যা-সন্তান
পছন্দ করেছেন?
[37:154]
তোমাদের
কি হল? তোমাদের এ
কেমন সিন্ধান্ত?
[37:155]
তোমরা
কি অনুধাবন কর
না?
[37:156]
না
কি তোমাদের কাছে
সুস্পষ্ট কোন দলীল রয়েছে?
[37:157]
তোমরা
সত্যবাদী হলে তোমাদের কিতাব আন।
[37:158]
তারা
আল্লাহ ও জ্বিনদের
মধ্যে সম্পর্ক
সাব্যস্ত করেছে, অথচ জ্বিনেরা
জানে যে, তারা
গ্রেফতার হয়ে
আসবে।
[37:159]
তারা
যা বলে তা থেকে
আল্লাহ পবিত্র।
[37:160]
তবে
যারা আল্লাহর নিষ্ঠাবান বান্দা, তারা
গ্রেফতার হয়ে
আসবে না।
[37:161]
অতএব
তোমরা এবং তোমরা
যাদের উপাসনা
কর,
[37:162]
তাদের
কাউকেই তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে বিভ্রান্ত
করতে পারবে না।
[37:163]
শুধুমাত্র
তাদের ছাড়া যারা জাহান্নামে পৌছাবে।
[37:164]
আমাদের
প্রত্যেকের জন্য
রয়েছে নির্দিষ্ট
স্থান।
[37:165]
এবং
আমরাই সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান থাকি।
[37:166]
এবং
আমরাই আল্লাহর
পবিত্রতা ঘোষণা করি।
[37:167]
তারা
তো বলতঃ
[37:168]
যদি
আমাদের কাছে পূর্ববর্তীদের কোন উপদেশ থাকত,
[37:169]
তবে
আমরা অবশ্যই আল্লাহর মনোনীত বান্দা
হতাম।
[37:170]
বস্তুতঃ
তারা এই কোরআনকে অস্বীকার করেছে। এখন শীঘ্রই
তারা জেনে নিতে
পারবে,
[37:171]
আমার
রাসূল ও বান্দাগণের ব্যাপারে আমার
এই বাক্য সত্য
হয়েছে যে,
[37:172]
অবশ্যই
তারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়।
[37:173]
আর
আমার বাহিনীই হয়
বিজয়ী।
[37:174]
অতএব
আপনি কিছুকালের
জন্যে তাদেরকে
উপেক্ষা করুন।
[37:175]
এবং
তাদেরকে দেখতে
থাকুন। শীঘ্রই তারাও
এর পরিণাম দেখে
নেবে।
[37:176]
আমার
আযাব কি তারা দ্রুত
কামনা করে?
[37:177]
অতঃপর
যখন তাদের আঙ্গিনায় আযাব নাযিল হবে, তখন যাদেরকে
সতর্ক করা হয়েছিল, তাদের
সকাল বেলাটি হবে
খুবই মন্দ।
[37:178]
আপনি
কিছুকালের জন্যে
তাদেরকে উপেক্ষা
করুন।
[37:179]
এবং
দেখতে থাকুন, শীঘ্রই
তারাও এর পরিণাম
দেখে নেবে।
[37:180]
পবিত্র
আপনার পরওয়ারদেগারের সত্তা, তিনি সম্মানিত
ও পবিত্র যা তারা
বর্ণনা করে তা
থেকে।
[37:181]
পয়গম্বরগণের
প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।
[37:182]
সমস্ত
প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর নিমিত্ত।
38 Sâd
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[38:1]
ছোয়াদ। শপথ উপদেশপূর্ণ কোরআনের,
[38:2]
বরং
যারা কাফের, তারা
অহংকার ও বিরোধিতায়
লিপ্ত।
[38:3]
তাদের
আগে আমি কত জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, অতঃপর
তারা আর্তনাদ করতে
শুরু করেছে কিন্তু
তাদের নিষ্কৃতি
লাভের সময়
ছিল না।
[38:4]
তারা
বিস্ময়বোধ করে
যে, তাদেরই কাছে
তাদের মধ্যে থেকে
একজন সতর্ককারী
আগমন করেছেন। আর কাফেররা
বলে এ-তো এক মিথ্যাচারী
যাদুকর।
[38:5]
সে
কি বহু উপাস্যের
পরিবর্তে এক উপাস্যের উপাসনা
সাব্যস্ত করে দিয়েছে। নিশ্চয়
এটা এক বিস্ময়কর
ব্যাপার।
[38:6]
তাদের
কতিপয় বিশিষ্ট
ব্যক্তি একথা
বলে প্রস্থান করে
যে, তোমরা চলে
যাও এবং তোমাদের
উপাস্যদের পূজায়
দৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই
এ বক্তব্য কোন
বিশেষ উদ্দেশ্যে
প্রণোদিত।
[38:7]
আমরা
সাবেক ধর্মে এ
ধরনের কথা শুনিনি। এটা মনগড়া
ব্যাপার বৈ নয়।
[38:8]
আমাদের
মধ্য থেকে শুধু
কি তারই প্রতি
উপদেশ বানী অবতীর্ণ
হল? বস্তুতঃ ওরা
আমার উপদেশ সম্পর্কে
সন্দিহান; বরং ওরা এখনও আমার
মার আস্বাদন করেনি।
[38:9]
না
কি তাদের কাছে
আপনার পরাক্রান্ত
দয়াবান পালনকর্তার
রহমতের কোন ভান্ডার
রয়েছে?
[38:10]
নাকি
নভোমন্ডল, ভূমন্ডল
ও এতদুভয়ের
মধ্যবর্তী সবকিছুর
উপর তাদের সাম্রাজ্য
রয়েছে? থাকলে তাদের
আকাশে আরোহণ
করা উচিত রশি ঝুলিয়ে।
[38:11]
এক্ষেত্রে
বহু বাহিনীর মধ্যে ওদেরও এক বাহিনী
আছে, যা পরাজিত
হবে।
[38:12]
তাদের
পূর্বেও মিথ্যারোপ করেছিল নূহের
সম্প্রদায়, আদ, কীলক
বিশিষ্ট ফেরাউন,
[38:13]
সামুদ, লূতের
সম্প্রদায় ও আইকার লোকেরা। এরাই
ছিল বহু বাহিনী।
[38:14]
এদের
প্রত্যেকেই পয়গম্বরগণের প্রতি মিথ্যারোপ
করেছে। ফলে আমার
আযাব প্রতিষ্ঠিত
হয়েছে।
[38:15]
কেবল
একটি মহানাদের
অপেক্ষা করছে, যাতে
দম ফেলার অবকাশ
থাকবে না।
[38:16]
তারা
বলে, হে আমাদের পরওয়ারদেগার, আমাদের
প্রাপ্য অংশ হিসাব
দিবসের আগেই দিয়ে
দাও।
[38:17]
তারা
যা বলে তাতে আপনি
সবর করুন এবং
আমার শক্তিশালী
বান্দা দাউদকে
স্মরণ করুন। সে ছিল
আমার প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।
[38:18]
আমি
পর্বতমালাকে তার
অনুগামী করে দিয়েছিলাম, তারা
সকাল-সন্ধ্যায়
তার সাথে পবিত্রতা
ঘোষণা করত;
[38:19]
আর
পক্ষীকুলকেও, যারা
তার কাছে সমবেত
হত। সবাই ছিল তাঁর
প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।
[38:20]
আমি
তাঁর সাম্রাজ্যকে
সুদৃঢ় করেছিলাম
এবং তাঁকে দিয়েছিলাম
প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী
বাগ্নীতা।
[38:21]
আপনার
কাছে দাবীদারদের বৃত্তান্ত পৌছেছে, যখন তারা
প্রাচীর ডিঙ্গীয়ে
এবাদত খানায় প্রবেশ
করেছিল।
[38:22]
যখন
তারা দাউদের কাছে অনুপ্রবেশ করল, তখন সে
সন্ত্রস্ত হয়ে
পড়ল। তারা বললঃ
ভয় করবেন না; আমরা বিবদমান দুটি
পক্ষ, একে অপরের
প্রতি বাড়াবাড়ি
করেছি। অতএব, আমাদের
মধ্যে ন্যায়বিচার
করুন, অবিচার করবেন
না। আমাদেরকে
সরল পথ প্রদর্শন
করুন।
[38:23]
সে
আমার ভাই, সে নিরানব্বই দুম্বার মালিক
আর আমি মালিক একটি
মাদী দুম্বার। এরপরও
সে বলেঃ এটিও আমাকে
দিয়ে দাও। সে কথাবার্তায়
আমার উপর বল প্রয়োগ
করে।
[38:24]
দাউদ
বললঃ সে তোমার
দুম্বাটিকে নিজের দুম্বাগুলোর
সাথে সংযুক্ত করার
দাবী করে তোমার
প্রতি অবিচার করেছে। শরীকদের অনেকেই
একে অপরের প্রতি
জুলুম করে থাকে। তবে তারা
করে না, যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী
ও সৎকর্ম সম্পাদনকারী। অবশ্য
এমন লোকের সংখ্যা
অল্প। দাউদের
খেয়াল হল যে, আমি তাকে
পরীক্ষা করছি। অতঃপর
সে তার পালনকর্তার
কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল, সেজদায় লুটিয়ে
পড়ল এবং তাঁর
দিকে প্রত্যাবর্তন
করল। [ Sajdah ]
[38:25]
আমি
তার সে অপরাধ ক্ষমা
করলাম। নিশ্চয় আমার
কাছে তার জন্যে
রয়েছে উচ্চ মর্তবা
ও সুন্দর আবাসস্থল।
[38:26]
হে
দাউদ! আমি তোমাকে
পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব, তুমি
মানুষের মাঝে ন্যায়সঙ্গতভাবে
রাজত্ব কর এবং খেয়াল-খুশীর
অনুসরণ করো না। তা তোমাকে
আল্লাহর পথ থেকে
বিচ্যুত করে দেবে। নিশ্চয় যারা
আল্লাহর পথ থেকে
বিচ্যুত হয়, তাদের
জন্যে রয়েছে কঠোর
শাস্তি, এ কারণে
যে, তারা হিসাবদিবসকে
ভূলে যায়।
[38:27]
আমি
আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী কোন
কিছু অযথা সৃষ্টি
করিনি। এটা কাফেরদের
ধারণা। অতএব, কাফেরদের জন্যে রয়েছে
দূর্ভোগ অর্থাৎ জাহান্নাম।
[38:28]
আমি
কি বিশ্বাসী ও সৎকর্মীদেরকে
পৃথিবীতে বিপর্যয়
সৃষ্টিকারী কাফেরদের সমতুল্য
করে দেব? না খোদাভীরুদেরকে
পাপাচারীদের সম্মান
করে দেব।
[38:29]
এটি
একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি
বরকত হিসেবে অবতীর্ণ
করেছি, যাতে মানুষ
এর আয়াতসূহ লক্ষ্য
করে এবং বুদ্ধিমানগণ
যেন তা অনুধাবন
করে।
[38:30]
আমি
দাউদকে সোলায়মান
দান করেছি। সে একজন
উত্তম বান্দা। সে ছিল
প্রত্যাবর্তনশীল।
[38:31]
যখন
তার সামনে অপরাহ্নে উৎকৃষ্ট
অশ্বরাজি পেশ করা
হল,
[38:32]
তখন
সে বললঃ আমি তো
আমার পরওয়ারদেগারের
স্মরণে বিস্মৃত
হয়ে সম্পদের মহব্বতে
মুগ্ধ হয়ে পড়েছি-এমনকি সূর্য ডুবে গেছে।
[38:33]
এগুলোকে
আমার কাছে ফিরিয়ে
আন। অতঃপর
সে তাদের পা ও গলদেশ
ছেদন করতে শুরু
করল।
[38:34]
আমি
সোলায়মানকে পরীক্ষা
করলাম এবং রেখে
দিলাম তার সিংহাসনের
উপর একটি নিস্প্রাণ
দেহ। অতঃপর
সে রুজু হল।
[38:35]
সোলায়মান
বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে
মাফ করুন এবং আমাকে
এমন সাম্রাজ্য
দান করুন যা আমার
পরে আর কেউ পেতে পারবে না। নিশ্চয়
আপনি মহাদাতা।
[38:36]
তখন
আমি বাতাসকে তার
অনুগত করে দিলাম, যা তার হুকুমে
অবাধে প্রবাহিত
হত যেখানে সে পৌছাতে
চাইত।
[38:37]
আর
সকল শয়তানকে তার
অধীন করে দিলাম
অর্থৎ, যারা
ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী
ও ডুবুরী।
[38:38]
এবং
অন্য আরও অনেককে
অধীন করে দিলাম, যারা
আবদ্ধ থাকত শৃঙ্খলে।
[38:39]
এগুলো
আমার অনুগ্রহ, অতএব, এগুলো
কাউকে দাও অথবা
নিজে রেখে দাও-এর
কোন হিসেব দিতে
হবে না।
[38:40]
নিশ্চয়
তার জন্যে আমার
কাছে রয়েছে
মর্যাদা ও শুভ
পরিণতি।
[38:41]
স্মরণ
করুণ, আমার বান্দা আইয়্যুবের কথা, যখন সে
তার পালনকর্তাকে
আহবান করে বললঃ
শয়তান আমাকে যন্ত্রণা
ও কষ্ট পৌছিয়েছে।
[38:42]
তুমি
তোমার পা দিয়ে
ভূমিতে আঘাত
কর। ঝরণা নির্গত
হল গোসল করার জন্যে
শীতল ও পান করার
জন্যে।
[38:43]
আমি
তাকে দিলাম তার
পরিজনবর্গ ও তাদের মত আরও
অনেক আমার পক্ষ
থেকে রহমতস্বরূপ
এবং বুদ্ধিমানদের
জন্যে উপদেশস্বরূপ।
[38:44]
তুমি
তোমার হাতে এক
মুঠো তৃণশলা
নাও, তদ্বারা আঘাত
কর এবং শপথ ভঙ্গ
করো না। আমি তাকে
পেলাম সবরকারী। চমৎকার বান্দা
সে। নিশ্চয় সে
ছিল প্রত্যাবর্তনশীল।
[38:45]
স্মরণ
করুন, হাত ও চোখের অধিকারী আমার
বান্দা ইব্রাহীম, ইসহাক
ও ইয়াকুবের কথা।
[38:46]
আমি
তাদের এক বিশেষ
গুণ তথা পরকালের
স্মরণ দ্বারা স্বাতন্ত্র্য
দান করেছিলাম।
[38:47]
আর
তারা আমার কাছে
মনোনীত ও সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত।
[38:48]
স্মরণ
করুণ, ইসমাঈল, আল ইয়াসা ও যুলকিফলের কথা। তারা
প্রত্যেকেই গুনীজন।
[38:49]
এ
এক মহৎ আলোচনা। খোদাভীরুদের জন্যে রয়েছে
উত্তম ঠিকানা-
[38:50]
তথা
স্থায়ী বসবাসের
জান্নাত; তাদের
জন্যে তার দ্বার
উম্মুক্ত রয়েছে।
[38:51]
সেখানে
তারা হেলান দিয়ে
বসবে। তারা
সেখানে চাইবে অনেক
ফল-মূল ও পানীয়।
[38:52]
তাদের
কাছে থাকবে আনতনয়না সমবয়স্কা রমণীগণ।
[38:53]
তোমাদেরকে
এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে বিচার
দিবসের জন্যে।
[38:54]
এটা
আমার দেয়া রিযিক
যা শেষ হবে না।
[38:55]
এটাতো
শুনলে, এখন দুষ্টদের জন্যে রয়েছে
নিকৃষ্ট ঠিকানা
[38:56]
তথা
জাহান্নাম। তারা
সেখানে প্রবেশ
করবে। অতএব, কত নিকৃষ্ট
সেই আবাস স্থল।
[38:57]
এটা
উত্তপ্ত পানি ও
পঁূজ; অতএব তারা একে আস্বাদন
করুক।
[38:58]
এ
ধরনের আরও কিছু
শাস্তি আছে।
[38:59]
এই
তো একদল তোমাদের
সাথে প্রবেশ
করছে। তাদের
জন্যে অভিনন্দন
নেই তারা তো জাহান্নামে
প্রবেশ করবে।
[38:60]
তারা
বলবে, তোমাদের জন্যে
ও তো অভিনন্দন
নেই। তোমরাই
আমাদেরকে এ বিপদের
সম্মুখীন করেছ। অতএব, এটি কতই
না ঘৃণ্য আবাসস্থল।
[38:61]
তারা
বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, যে আমাদেরকে
এর সম্মুখীন করেছে, আপনি
জাহান্নামে তার
শাস্তি দ্বিগুণ করে দিন।
[38:62]
তারা
আরও বলবে, আমাদের
কি হল যে, আমরা
যাদেরকে মন্দ লোক
বলে গণ্য করতাম, তাদেরকে
এখানে দেখছি না।
[38:63]
আমরা
কি অহেতুক তাদেরকে ঠাট্টার পাত্র
করে নিয়েছিলাম, না আমাদের
দৃষ্টি ভুল করছে?
[38:64]
এটা
অর্থাৎ
জাহান্নামীদের পারস্পরিক বাক-বিতন্ডা
অবশ্যম্ভাবী।
[38:65]
বলুন, আমি তো
একজন সতর্ককারী মাত্র এবং এক পরাক্রমশালী
আল্লাহ ব্যতীত
কোন উপাস্য নেই।
[38:66]
তিনি
আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব
কিছুর পালনকর্তা, পরাক্রমশালী, মার্জনাকারী।
[38:67]
বলুন, এটি এক
মহাসংবাদ,
[38:68]
যা
থেকে তোমরা মুখ
ফিরিয়ে নিয়েছ।
[38:69]
ঊর্ধ্ব
জগৎ সম্পর্কে
আমার কোন জ্ঞান
ছিল না যখন ফেরেশতারা
কথাবার্তা বলছিল।
[38:70]
আমার
কাছে এ ওহীই আসে
যে, আমি একজন
স্পষ্ট সতর্ককারী।
[38:71]
যখন
আপনার পালনকর্তা ফেরেশতাগণকে
বললেন, আমি মাটির
মানুষ সৃষ্টি করব।
[38:72]
যখন
আমি তাকে সুষম
করব এবং তাতে
আমার রূহ ফুঁকে
দেব, তখন তোমরা
তার সম্মুখে সেজদায়
নত হয়ে যেয়ো।
[38:73]
অতঃপর
সমস্ত ফেরেশতাই
একযোগে সেজদায়
নত হল,
[38:74]
কিন্তু
ইবলীস; সে অহংকার
করল এবং অস্বীকারকারীদের
অন্তর্ভুক্ত হয়ে
গেল।
[38:75]
আল্লাহ
বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে
সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে
সেজদা করতে তোমাকে
কিসে বাধা দিল? তুমি অহংকার করলে, না তুমি
তার চেয়ে উচ্চ
মর্যাদা সম্পন্ন?
[38:76]
সে
বললঃ আমি তার চেয়ে
উত্তম আপনি
আমাকে আগুনের দ্বারা
সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে
সৃষ্টি করেছেন
মাটির দ্বারা।
[38:77]
আল্লাহ
বললেনঃ বের হয়ে
যা, এখান থেকে। কারণ, তুই অভিশপ্ত।
[38:78]
তোর
প্রতি আমার এ অভিশাপ
বিচার দিবস
পর্যন্ত স্থায়ী
হবে।
[38:79]
সে
বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি
আমাকে পুনরুত্থান
দিবস পর্যন্ত অবকাশ
দিন।
[38:80]
আল্লঅহ
বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল।
[38:81]
সে
সময়ের দিন পর্যন্ত
যা জানা।
[38:82]
সে
বলল, আপনার ইযযতের
কসম, আমি অবশ্যই
তাদের সবাইকে বিপথগামী
করে দেব।
[38:83]
তবে
তাদের মধ্যে যারা
আপনার খাঁটি
বান্দা, তাদেরকে ছাড়া।
[38:84]
আল্লাহ
বললেনঃ তাই ঠিক, আর আমি সত্য বলছি-
[38:85]
তোর
দ্বারা আর তাদের
মধ্যে যারা
তোর অনুসরণ করবে
তাদের দ্বারা আমি
জাহান্নাম পূর্ণ
করব।
[38:86]
বলুন, আমি তোমাদের
কাছে কোন প্রতিদান
চাই না আর আমি লৌকিকতাকারীও
নই।
[38:87]
এটা
তো বিশ্ববাসীর
জন্যে এক উপদেশ
মাত্র।
[38:88]
তোমরা
কিছু কাল পরে এর
সংবাদ অবশ্যই
জানতে পারবে।
39 Az-Zumar
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[39:1]
কিতাব
অবতীর্ণ হয়েছে পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়
আল্লাহর পক্ষ থেকে।
[39:2]
আমি
আপনার প্রতি এ
কিতাব যথার্থরূপে
নাযিল করেছি। অতএব, আপনি
নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর
এবাদত করুন।
[39:3]
জেনে
রাখুন, নিষ্ঠাপূর্ণ
এবাদত আল্লাহরই
নিমিত্ত। যারা
আল্লাহ ব্যতীত
অপরকে উপাস্যরূপে
গ্রহণ করে রেখেছে
এবং বলে যে, আমরা
তাদের এবাদত এ
জন্যেই করি, যেন তারা
আমাদেরকে আল্লাহর
নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয়
আল্লাহ তাদের মধ্যে
তাদের পারস্পরিক
বিরোধপূর্ণ বিষয়ের
ফয়সালা করে দেবেন। আল্লাহ
মিথ্যাবাদী কাফেরকে
সৎপথে পরিচালিত
করেন না।
[39:4]
আল্লাহ
যদি সন্তান গ্রহণ
করার ইচ্ছা করতেন, তবে তাঁর সৃষ্টির
মধ্য থেকে যা কিছু
ইচ্ছা মনোনীত করতেন, তিনি পবিত্র। তিনি
আল্লাহ, এক পরাক্রমশালী।
[39:5]
তিনি
আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে। তিনি
রাত্রিকে দিবস
দ্বারা আচ্ছাদিত
করেন এবং দিবসকে
রাত্রি দ্বারা
আচ্ছাদিত করেন
এবং তিনি সুর্য
ও চন্দ্রকে কাজে
নিযুক্ত করেছেন
প্রত্যেকেই বিচরণ করে নির্দিষ্ট
সময়কাল পর্যন্ত। জেনে
রাখুন, তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।
[39:6]
তিনি
সৃষ্টি করেছেন
তোমাদেরকে একই ব্যক্তি থেকে। অতঃপর
তা থেকে তার যুগল
সৃষ্টি করেছেন
এবং তিনি তোমাদের
জন্যে আট প্রকার
চতুষ্পদ জন্তু
অবতীর্ণ করেছেন। তিনি
তোমাদেরকে সৃষ্টি
করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভে পর্যায়ক্রমে
একের পর এক ত্রিবিধ
অন্ধকারে। তিনি
আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা, সাম্রাজ্য
তাঁরই। তিনি
ব্যতীত কোন উপাস্য
নেই। অতএব, তোমরা
কোথায় বিভ্রান্ত
হচ্ছ?
[39:7]
যদি
তোমরা অস্বীকার
কর, তবে আল্লাহ
তোমাদের থেকে বেপরওয়া। তিনি
তাঁর বান্দাদের
কাফের হয়ে পড়া
পছন্দ করেন না। পক্ষান্তরে
যদি তোমরা কৃতজ্ঞ
হও, তবে তিনি তোমাদের
জন্যে তা পছন্দ
করেন। একের
পাপ ভার অন্যে
বহন করবে না। অতঃপর
তোমরা তোমাদের
পালনকর্তার কাছে
ফিরে যাবে। তিনি তোমাদেরকে
তোমাদের কর্ম সম্বন্ধে
অবহিত করবেন। নিশ্চয়
তিনি অন্তরের বিষয় সম্পর্কেও অবগত।
[39:8]
যখন
মানুষকে দুঃখ-কষ্ট
স্পর্শ করে, তখন সে
একাগ্রচিত্তে
তার পালনকর্তাকে
ডাকে, অতঃপর তিনি
যখন তাকে নেয়ামত দান করেন, তখন সে
কষ্টের কথা বিস্মৃত
হয়ে যায়, যার জন্যে
পূর্বে ডেকেছিল
এবং আল্লাহর
সমকক্ষ স্থির করে; যাতে
করে অপরকে আল্লাহর
পথ থেকে বিভ্রান্ত
করে। বলুন, তুমি
তোমার কুফর সহকারে
কিছুকাল জীবনোপভোগ
করে নাও। নিশ্চয়
তুমি জাহান্নামীদের অন্তর্ভূক্ত।
[39:9]
যে
ব্যক্তি রাত্রিকালে
সেজদার মাধ্যমে
অথবা দাঁড়িয়ে
এবাদত করে, পরকালের
আশংকা রাখে এবং
তার পালনকর্তার
রহমত প্রত্যাশা
করে, সে কি তার
সমান, যে এরূপ করে
না; বলুন, যারা
জানে এবং যারা
জানে না; তারা
কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা
কেবল তারাই করে, যারা
বুদ্ধিমান।
[39:10]
বলুন, হে আমার
বিশ্বাসী বান্দাগণ! তোমরা
তোমাদের পালনকর্তাকে
ভয় কর। যারা
এ দুনিয়াতে সৎকাজ করে, তাদের জন্যে রয়েছে
পুণ্য। আল্লাহর
পৃথিবী প্রশস্ত। যারা
সবরকারী, তারাই
তাদের পুরস্কার
পায় অগণিত।
[39:11]
বলুন, আমি নিষ্ঠার
সাথে আল্লাহর
এবাদত করতে আদিষ্ট
হয়েছি।
[39:12]
আরও
আদিষ্ট হয়েছি, সর্ব
প্রথম নির্দেশ
পালনকারী হওয়ার
জন্যে।
[39:13]
বলুন, আমি আমার
পালনকর্তার অবাধ্য হলে এক
মহাদিবসের শাস্তির
ভয় করি।
[39:14]
বলুন, আমি নিষ্ঠার
সাথে আল্লাহ তা’আলারই এবাদত
করি।
[39:15]
অতএব, তোমরা
আল্লাহর পরিবর্তে যার ইচ্ছা তার
এবাদত কর। বলুন, কেয়ামতের
দিন তারাই বেশী
ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা নিজেদের ও পরিবারবর্গের
তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত
হবে। জেনে রাখ, এটাই
সুস্পষ্ট ক্ষতি।
[39:16]
তাদের
জন্যে উপর দিক
থেকে এবং নীচের
দিক থেকে আগুনের
মেঘমালা থাকবে। এ শাস্তি
দ্বারা আল্লাহ
তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করেন যে, হে আমার
বান্দাগণ, আমাকে
ভয় কর।
[39:17]
যারা
শয়তানী শক্তির পূজা-অর্চনা থেকে
দূরে থাকে এবং
আল্লাহ অভিমুখী
হয়, তাদের জন্যে
রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, সুসংবাদ
দিন আমার বান্দাদেরকে।
[39:18]
যারা
মনোনিবেশ সহকারে
কথা শুনে, অতঃপর
যা উত্তম, তার অনুসরণ
করে। তাদেরকেই
আল্লাহ সৎপথ
প্রদর্শন করেন
এবং তারাই
বুদ্ধিমান।
[39:19]
যার
জন্যে শাস্তির
হুকুম অবধারিত
হয়ে গেছে আপনি
কি সে জাহান্নামীকে
মুক্ত করতে পারবেন?
[39:20]
কিন্তু
যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, তাদের
জন্যে নির্মিত
রয়েছে প্রাসাদের
উপর প্রাসাদ। এগুলোর
তলদেশে নদী প্রবাহিত। আল্লাহ
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আল্লাহ
প্রতিশ্রুতির
খেলাফ করেন না।
[39:21]
তুমি
কি দেখনি যে, আল্লাহ
আকাশ থেকে পানি
বর্ষণ করেছেন, অতঃপর
সে পানি যমীনের
ঝর্ণাসমূহে প্রবাহিত
করেছেন, এরপর তদ্দ্বারা বিভিন্ন
রঙের ফসল উৎপন্ন করেন, অতঃপর
তা শুকিয়ে যায়, ফলে তোমরা
তা পীতবর্ণ
দেখতে পাও। এরপর
আল্লাহ তাকে খড়-কুটায়
পরিণত করে দেন। নিশ্চয়
এতে বুদ্ধিমানদের
জন্যে উপদেশ রয়েছে।
[39:22]
আল্লাহ
যার বক্ষ ইসলামের
জন্যে উম্মুক্ত
করে দিয়েছেন, অতঃপর
সে তার পালনকর্তার
পক্ষ থেকে আগত
আলোর মাঝে রয়েছে। (সে কি
তার সমান, যে এরূপ
নয়) যাদের অন্তর
আল্লাহ স্মরণের
ব্যাপারে কঠোর, তাদের জন্যে
দূর্ভোগ। তারা
সুস্পষ্ঠ গোমরাহীতে
রয়েছে।
[39:23]
আল্লাহ
উত্তম বাণী তথা
কিতাব নাযিল
করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পূনঃ
পূনঃ পঠিত। এতে তাদের
লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা
তাদের পালনকর্তাকে
ভয় করে, এরপর
তাদের চামড়া ও
অন্তর আল্লাহর
স্মরণে বিনম্র
হয়। এটাই আল্লাহর
পথ নির্দেশ, এর মাধ্যমে
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। আর আল্লাহ
যাকে গোমরাহ করেন, তার কোন
পথপ্রদর্শক নেই।
[39:24]
যে
ব্যক্তি কেয়ামতের
দিন তার মুখ দ্বারা
অশুভ আযাব ঠেকাবে
এবং এরূপ জালেমদেরকে
বলা হবে, তোমরা
যা করতে তার স্বাদ আস্বাদন
কর,-সে কি তার সমান, যে এরূপ
নয়?
[39:25]
তাদের
পূর্ববর্তীরাও
মিথ্যারোপ করেছিল, ফলে তাদের
কাছে আযাব এমনভাবে
আসল, যা তারা কল্পনাও
করত না।
[39:26]
অতঃপর
আল্লাহ তাদেরকে
পার্থিব জীবনে
লাঞ্ছনার স্বাদ
আস্বাদন করালেন, আর পরকালের
আযাব হবে আরও গুরুতর, যদি তারা জানত!
[39:27]
আমি
এ কোরআনে মানুষের
জন্যে সব দৃষ্টান্তই
বর্ণনা করেছি, যাতে
তারা অনুধাবন করে;
[39:28]
আরবী
ভাষায় এ কোরআন বক্রতামুক্ত, যাতে
তারা সাবধান হয়ে
চলে।
[39:29]
আল্লাহ
এক দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেনঃ একটি
লোকের উপর পরস্পর
বিরোধী কয়জন মালিক
রয়েছে, আরেক ব্যক্তির
প্রভু মাত্র
একজন-তাদের উভয়ের
অবস্থা কি সমান? সমস্ত
প্রশংসা আল্লাহর। কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
জানে না।
[39:30]
নিশ্চয়
তোমারও মৃত্যু
হবে এবং তাদেরও
মৃত্যু হবে।
[39:31]
অতঃপর
কেয়ামতের দিন
তোমরা সবাই
তোমাদের পালনকর্তার
সামনে কথা কাটাকাটি
করবে।