Part 25
[41:47]
কেয়ামতের
জ্ঞান
একমাত্র
তাঁরই জানা। তাঁর
জ্ঞানের
বাইরে কোন ফল
আবরণমুক্ত
হয় না। এবং
কোন নারী
গর্ভধারণ ও সন্তান
প্রসব করে না। যেদিন
আল্লাহ
তাদেরকে ডেকে
বলবেন, আমার
শরীকরা
কোথায়? সেদিন
তারা বলবে, আমরা
আপনাকে বলে
দিয়েছি যে, আমাদের
কেউ এটা স্বীকার
করে না।
[41:48]
পূর্বে
তারা যাদের
পূজা করত, তারা
উধাও হয়ে
যাবে এবং তারা
বুঝে নেবে যে, তাদের
কোন নিস্কৃতি
নেই।
[41:49]
মানুষ
উন্নতি
কামনায়
ক্লান্ত হয়
না; যদি তাকে
অমঙ্গল
স্পর্শ করে, তবে
সে সম্পূর্ণ
রূপে নিরাশ
হয়ে পড়ে।
[41:50]
বিপদাপদ
স্পর্শ করার
পর আমি যদি
তাকে আমার
অনুগ্রহ
আস্বাদন করাই, তখন
সে বলতে থাকে, এটা
যে আমার যোগ্য প্রাপ্য; আমি
মনে করি না যে, কেয়ামত
সংঘটিত হবে। আমি
যদি আমার
পালনকর্তার
কাছে ফিরে
যাই, তবে
অবশ্যই তার
কাছে আমার
জন্য কল্যাণ
রয়েছে। অতএব, আমি
কাফেরদেরকে তাদের কর্ম
সম্পর্কে অবশ্যই
অবহিত করব এবং
তাদেরকে
অবশ্যই
আস্বাদন করাব
কঠিন শাস্তি।
[41:51]
আমি
যখন মানুষের
প্রতি
অনুগ্রহ করি
তখন সে মুখ
ফিরিয়ে নেয়
এবং পার্শ্ব
পরিবর্তন করে। আর
যখন তাকে
অনিষ্ট স্পর্শ
করে, তখন
সুদীর্ঘ
দোয়া করতে
থাকে।
[41:52]
বলুন, তোমরা
ভেবে দেখেছ কি, যদি
এটা আল্লাহর
পক্ষ থেকে হয়, অতঃপর
তোমরা একে
অমান্য কর, তবে
যে ব্যক্তি
ঘোর বিরোধিতায়
লিপ্ত, তার
চাইতে অধিক
পথভ্রষ্ট আর
কে?
[41:53]
এখন
আমি তাদেরকে
আমার নিদর্শনাবলী
প্রদর্শন
করাব পৃথিবীর
দিগন্তে এবং
তাদের
নিজেদের
মধ্যে; ফলে
তাদের কাছে
ফুটে উঠবে যে, এ
কোরআন সত্য। আপনার
পালনকর্তা
সর্ববিষয়ে
সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট
নয়?
[41:54]
শুনে
রাখ, তারা
তাদের পালনকর্তার
সাথে
সাক্ষাতের
ব্যাপারে
সন্দেহে পতিত
রয়েছে। শুনে
রাখ, তিনি সবকিছুকে
পরিবেষ্টন
করে রয়েছেন।
42 Ash-shûrâ
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[42:1]
হা-মীম।
[42:2]
আইন, সীন
ক্বা-ফ।
[42:3]
এমনিভাবে
পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়
আল্লাহ আপনার
প্রতি ও আপনার
পূর্ববর্তীদের
প্রতি ওহী
প্রেরণ করেন।
[42:4]
নভোমন্ডলে
যা কিছু আছে
এবং ভূমন্ডলে
যা কিছু আছে, সমস্তই
তাঁর। তিনি
সমুন্নত, মহান।
[42:5]
আকাশ
উপর থেকে ফেটে
পড়ার উপক্রম
হয় আর তখন
ফেরেশতাগণ
তাদের
পালনকর্তার
প্রশংসাসহ
পবিত্রতা
বর্ণনা করে এবং
পৃথিবীবাসীদের
জন্যে ক্ষমা
প্রার্থনা করে। শুনে
রাখ, আল্লাহই
ক্ষমাশীল, পরম করুনাময়।
[42:6]
যারা
আল্লাহ
ব্যতীত অপরকে অভিভাবক
হিসাবে গ্রহণ
করে, আল্লাহ
তাদের প্রতি
লক্ষ্য রাখেন। আপনার
উপর নয় তাদের
দায়-দায়িত্ব।
[42:7]
এমনি
ভাবে আমি
আপনার প্রতি আরবী ভাষায়
কোরআন নাযিল
করেছি, যাতে
আপনি মক্কা ও
তার আশ-পাশের
লোকদের সতর্ক করেন এবং
সতর্ক করেন
সমাবেশের দিন
সম্পর্কে, যাতে
কোন সন্দেহ
নেই। একদল
জান্নাতে এবং একদল
জাহান্নামে
প্রবেশ করবে।
[42:8]
আল্লাহ
ইচ্ছা করলে
সমস্ত লোককে এক দলে পরিণত
করতে পারেন। কিন্তু
তিনি যাকে
ইচ্ছা স্বীয়
রহমতে দাখিল করেন। আর যালেমদের
কোন অভিভাবক ও
সাহায্যকারী
নেই।
[42:9]
তারা
কি আল্লাহ
ব্যতীত অপরকে অভিভাবক
স্থির করেছে? পরন্তু
আল্লাহই তো
একমাত্র
অভিভাবক। তিনি
মৃতদেরকে
জীবিত করেন। তিনি
সর্ববিষয়ে
ক্ষমতাবান।
[42:10]
তোমরা
যে বিষয়েই
মতভেদ কর, তার
ফয়সালা
আল্লাহর কাছে
সোপর্দ। ইনিই
আল্লাহ আমার
পালনকর্তা
আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি
এবং তাঁরই
অভিমুখী হই।
[42:11]
তিনি
নভোমন্ডল ও
ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি
তোমাদের মধ্য
থেকে তোমাদের
জন্যে যুগল
সৃষ্টি
করেছেন এবং
চতুস্পদ জন্তুদের
মধ্য থেকে
জোড়া সৃষ্টি
করেছেন। এভাবে
তিনি তোমাদের
বংশ বিস্তার
করেন। কোন
কিছুই তাঁর
অনুরূপ নয়। তিনি
সব শুনেন, সব
দেখেন।
[42:12]
আকাশ
ও পৃথিবীর
চাবি তাঁর কাছে। তিনি
যার জন্যে
ইচ্ছা রিযিক
বৃদ্ধি করেন
এবং পরিমিত
করেন। তিনি
সর্ব বিষয়ে
জ্ঞানী।
[42:13]
তিনি
তোমাদের
জন্যে
দ্বীনের ক্ষেত্রে
সে পথই
নিধারিত
করেছেন, যার আদেশ
দিয়েছিলেন
নূহকে, যা আমি
প্রত্যাদেশ করেছি আপনার
প্রতি এবং যার
আদেশ
দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা
ও ঈসাকে এই
মর্মে যে, তোমরা
দ্বীনকে
প্রতিষ্ঠিত
কর এবং তাতে
অনৈক্য
সৃষ্টি করো না। আপনি
মূশরেকদেরকে যে বিষয়ের
প্রতি
আমন্ত্রণ
জানান, তা তাদের
কাছে
দুঃসাধ্য বলে
মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা
মনোনীত করেন
এবং যে তাঁর
অভিমুখী হয়, তাকে
পথ প্রদর্শন
করেন।
[42:14]
তাদের
কাছে জ্ঞান
আসার পরই তারা
পারস্পরিক
বিভেদের
কারণে মতভেদ
করেছে। যদি
আপনার
পালনকর্তার
পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট
সময় পর্যন্ত
অবকাশের
পূর্ব সিদ্ধান্ত
না থাকত, তবে
তাদের
ফয়সালা হয়ে
যেত। তাদের
পর যারা কিতাব
প্রাপ্ত
হয়েছে, তারা
অস্বস্তিকর
সন্দেহে পতিত রয়েছে।
[42:15]
সুতরাং
আপনি এর
প্রতিই
দাওয়াত দিন
এবং হুকুম অনুযায়ী
অবিচল থাকুন; আপনি
তাদের
খেয়ালখুশীর
অনুসরণ করবেন
না। বলুন, আল্লাহ
যে কিতাব
নাযিল করেছেন, আমি
তাতে বিশ্বাস
স্থাপন করেছি। আমি তোমাদের
মধ্যে ন্যায়
বিচার করতে
আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ
আমাদের
পালনকর্তা ও
তোমাদের পালনকর্তা। আমাদের
জন্যে আমাদের
কর্ম এবং
তোমাদের
জন্যে
তোমাদের কর্ম। আমাদের মধ্যে ও
তোমাদের
মধ্যে বিবাদ
নেই। আল্লাহ
আমাদেরকে
সমবেত করবেন
এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তণ
হবে।
[42:16]
আল্লাহর
দ্বীন মেনে
নেয়ার পর যারা সে
সম্পর্কে
বিতর্কে
প্রবৃত্ত হয়, তাদের
বিতর্ক তাদের
পালনকর্তার
কাছে বাতিল, তাদের
প্রতি আল্লাহর
গযব এবং তাদের
জন্যে রয়েছে
কঠোর আযাব।
[42:17]
আল্লাহই
সত্যসহ কিতাব
ও ইনসাফের
মানদন্ড
নাযিল করেছেন। আপনি
কি জানেন, সম্ভবতঃ
কেয়ামত
নিকটবর্তী।
[42:18]
যারা
তাতে বিশ্বাস
করে না তারা তাকে তড়িৎ কামনা করে। আর
যারা বিশ্বাস
করে, তারা
তাকে ভয় করে
এবং জানে যে, তা সত্য। জেনে
রাখ, যারা
কেয়ামত
সম্পর্কে
বিতর্ক করে, তারা
দূরবর্তী পথ
ভ্রষ্টতায় লিপ্ত
রয়েছে।
[42:19]
আল্লাহ
তাঁর
বান্দাদের
প্রতি দয়ালু। তিনি
যাকে ইচ্ছা, রিযিক
দান করেন। তিনি
প্রবল, পরাক্রমশালী।
[42:20]
যে
কেউ পরকালের
ফসল কামনা করে, আমি
তার জন্যে সেই
ফসল বাড়িয়ে
দেই। আর যে
ইহকালের ফসল
কামনা করে, আমি
তাকে তার কিছু
দিয়ে দেই এবং
পরকালে তার
কোন অংশ থাকবে
না।
[42:21]
তাদের
কি এমন শরীক
দেবতা আছে, যারা
তাদের জন্যে
সে ধর্ম সিদ্ধ
করেছে, যার
অনুমতি
আল্লাহ দেননি ? যদি
চুড়ান্ত সিন্ধান্ত
না থাকত, তবে
তাদের ব্যাপারে
ফয়সালা হয়ে
যেত। নিশ্চয়
যালেমদের জন্যে
রয়েছে
যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি।
[42:22]
আপনি
কাফেরদেরকে
তাদের কৃতকর্মের
জন্যে
ভীতসন্ত্রস্ত
দেখবেন। তাদের
কর্মের
শাস্তি
অবশ্যই তাদের
উপর পতিত
হবে। আর
যারা মুমিন ও
সৎকর্মী, তারা
জান্নাতের
উদ্যানে
থাকবে। তারা
যা চাইবে, তাই
তাদের জন্যে
তাদের
পালনকর্তার
কাছে রয়েছে। এটাই
বড় পুরস্কার।
[42:23]
এরই
সুসংবাদ দেন
আল্লাহ তার সেসব
বান্দাকে, যারা
বিশ্বাস
স্থাপন করে ও
সৎকর্ম
করে। বলুন, আমি
আমার
দাওয়াতের জন্যে
তোমাদের কাছে
কেবল
আত্নীয়তাজনিত
সৌহার্দ চাই। যে
কেউ উত্তম কাজ
করে, আমি তার
জন্যে তাতে
পুণ্য
বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয়
আল্লাহ
ক্ষমাকারী, গুণগ্রাহী।
[42:24]
নাকি
তারা একথা বলে
যে, তিনি আল্লাহর
বিরুদ্ধে
মিথ্যা রটনা
করেছেন? আল্লাহ
ইচ্ছা করলে
আপনার অন্তরে
মোহর এঁটে দিতেন। বস্তুতঃ
তিনি
মিথ্যাকে
মিটিয়ে দেন
এবং নিজ বাক্য
দ্বারা
সত্যকে প্রতিষ্ঠিত
করেন। নিশ্চয়
তিনি
অন্তর্নিহিত
বিষয়
সম্পর্কে সর্বিশেষ
জ্ঞাত।
[42:25]
তিনি
তাঁর
বান্দাদের
তওবা কবুল করেন
পাপসমূহ
মার্জনা করেন
এবং তোমাদের
কৃত বিষয়
সম্পর্কে
অবগত রয়েছেন।
[42:26]
তিনি
মুমিন ও সৎকর্মীদের
দোয়া শোনেন
এবং তাদের
প্রতি স্বীয়
অনুগ্রহ
বাড়িয়ে দেন। আর
কাফেরদের
জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
[42:27]
যদি
আল্লাহ তাঁর
সকল বান্দাকে প্রচুর
রিযিক দিতেন, তবে
তারা
পৃথিবীতে
বিপর্যয়
সৃষ্টি করত। কিন্তু
তিনি যে পরিমাণ
ইচ্ছা সে
পরিমাণ নাযিল
করেন। নিশ্চয়
তিনি তাঁর
বান্দাদের
খবর রাখেন ও সবকিছু
দেখেন।
[42:28]
মানুষ
নিরাশ হয়ে
যাওয়ার পরে তিনি বৃষ্টি
বর্ষণ করেন
এবং স্বীয়
রহমত ছড়িয়ে
দেন। তিনিই
কার্যনির্বাহী, প্রশংসিত।
[42:29]
তাঁর
এক নিদর্শন
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের
সৃষ্টি এবং
এতদুভয়ের
মধ্যে তিনি
যেসব
জীব-জন্তু
ছড়িয়ে
দিয়েছেন। তিনি যখন
ইচ্ছা
এগুলোকে
একত্রিত করতে
সক্ষম।
[42:30]
তোমাদের
উপর যেসব
বিপদ-আপদ পতিত
হয়, তা
তোমাদের
কর্মেরই ফল
এবং তিনি
তোমাদের অনেক
গোনাহ ক্ষমা
করে দেন।
[42:31]
তোমরা
পৃথিবীতে
পলায়ন করে আল্লাহকে
অক্ষম করতে
পার না এবং
আল্লাহ ব্যতীত
তোমাদের কোন
কার্যনির্বাহী
নেই, সাহায্যকারীও
নেই।
[42:32]
সমুদ্রে
ভাসমান
পর্বতসম জাহাজসমূহ
তাঁর অন্যতম
নিদর্শন।
[42:33]
তিনি
ইচ্ছা করলে
বাতাসকে থামিয়ে
দেন। তখন
জাহাজসমূহ
সমুদ্রপৃষ্ঠে
নিশ্চল হয়ে পড়ে
যেন পাহাড়। নিশ্চয় এতে
প্রত্যেক
সবরকারী, কৃতজ্ঞের
জন্যে
নিদর্শনাবলী
রয়েছে।
[42:34]
অথবা
তাদের
কৃতকর্মের
জন্যে সেগুলোকে
ধ্বংস করে দেন
এবং অনেককে
ক্ষমাও করে
দেন।
[42:35]
এবং
যারা আমার
ক্ষমতা
সম্পর্কে বিতর্ক করে, তারা
যেন জানে যে, তাদের
কোন পলায়নের
জায়গা নেই।
[42:36]
অতএব, তোমাদেরকে
যা দেয়া হয়েছে
তা পার্থিব
জীবনের ভোগ
মাত্র। আর
আল্লাহর কাছে
যা রয়েছে, তা উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী
তাদের জন্যে
যারা বিশ্বাস
স্থাপন করে ও
তাদের
পালনকর্তার
উপর ভরসা করে।
[42:37]
যারা
বড় গোনাহ ও
অশ্লীল কার্য থেকে বেঁচে
থাকে এবং
ক্রোধাম্বিত
হয়েও ক্ষমা
করে,
[42:38]
যারা
তাদের
পালনকর্তার
আদেশ মান্য
করে, নামায
কায়েম করে; পারস্পরিক
পরামর্শক্রমে
কাজ করে এবং
আমি তাদেরকে যে রিযিক
দিয়েছি, তা
থেকে ব্যয়
করে,
[42:39]
যারা
আক্রান্ত হলে
প্রতিশোধ গ্রহণ করে।
[42:40]
আর
মন্দের
প্রতিফল তো
অনুরূপ মন্দই। যে
ক্ষমা করে ও
আপোষ করে তার
পুরস্কার
আল্লাহর কাছে
রয়েছে; নিশ্চয়
তিনি অত্যাচারীদেরকে
পছন্দ করেন
নাই।
[42:41]
নিশ্চয়
যে
অত্যাচারিত
হওয়ার পর
প্রতিশোধ
গ্রহণ করে, তাদের
বিরুদ্ধেও
কোন অভিযোগ
নেই।
[42:42]
অভিযোগ
কেবল তাদের
বিরুদ্ধে, যারা
মানুষের উপর
অত্যাচার
চালায় এবং
পৃথিবীতে
অন্যায়ভাবে
বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের
জন্যে রয়েছে
যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি।
[42:43]
অবশ্যই
যে সবর করে ও
ক্ষমা করে নিশ্চয় এটা
সাহসিকতার
কাজ।
[42:44]
আল্লাহ
যাকে পথ
ভ্রষ্ট করেন, তার
জন্যে তিনি
ব্যতীত কোন
কার্যনির্বাহী
নেই। পাপাচারীরা
যখন আযাব
প্রত্যক্ষ করবে, তখন আপনি
তাদেরকে
দেখবেন যে, তারা
বলছে আমাদের
ফিরে যাওয়ার
কোন উপায় আছে কি?
[42:45]
জাহান্নামের
সামনে
উপস্থিত করার
সময় আপনি
তাদেরকে
দেখবেন, অপমানে
অবনত এবং অর্ধ
নিমীলিত
দৃষ্টিতে তাকায়। মুমিনরা
বলবে, কেয়ামতের
দিন
ক্ষতিগ্রস্ত
তারাই, যারা
নিজেদের ও
তাদের পরিবার-পরিজনের
ক্ষতি সাধন
করেছে। শুনে
রাখ, পাপাচারীরা
স্থায়ী
আযাবে থাকবে।
[42:46]
আল্লাহ
তা’আলা
ব্যতীত তাদের কোন
সাহায্যকারী
থাকবে না, যে
তাদেরকে
সাহায্য করবে। আল্লাহ
তা’আলা যাকে পথভ্রষ্ট
করেন, তার কোন
গতি নেই।
[42:47]
আল্লাহ
তা’আলার পক্ষ
থেকে অবশ্যম্ভাবী
দিবস আসার
পূর্বে তোমরা
তোমাদের
পালনকর্তার
আদেশ মান্য কর। সেদিন তোমাদের কোন
আশ্রয়স্থল থাকবে
না এবং তা
নিরোধকারী
কেউ থাকবে না।
[42:48]
যদি
তারা মুখ
ফিরিয়ে নেয়, তবে
আপনাকে আমি
তাদের রক্ষক
করে পাঠাইনি। আপনার
কর্তব্য কেবল
প্রচার করা। আমি তাদের রক্ষক
করে পাঠাইনি। আপনার
কর্তব্য কেবল
প্রচার করা। আমি
যখন মানুষকে
আমার রহমত
আস্বাদন করাই, তখন
সে উল্লসিত, আর
যখন তাদের
কৃতকর্মের
কারণে তাদের
কোন অনিষ্ট ঘটে, তখন
মানুষ খুব
অকৃতজ্ঞ হয়ে
যায়।
[42:49]
নভোমন্ডল
ও ভূমন্ডলের
রাজত্ব আল্লাহ
তা’আলারই। তিনি
যা ইচ্ছা, সৃষ্টি
করেন, যাকে
ইচ্ছা
কন্যা-সন্তান
এবং যাকে ইচ্ছা
পুত্র সন্তান
দান করেন।
[42:50]
অথবা
তাদেরকে দান
করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই
এবং যাকে
ইচ্ছা
বন্ধ্যা করে
দেন। নিশ্চয়
তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।
[42:51]
কোন
মানুষের জন্য
এমন হওয়ার নয় যে, আল্লাহ
তার সাথে কথা
বলবেন। কিন্তু
ওহীর মাধ্যমে
অথবা পর্দার
অন্তরাল থেকে
অথবা তিনি কোন
দূত প্রেরণ
করবেন, অতঃপর
আল্লাহ যা চান, সে
তা তাঁর অনুমতিক্রমে
পৌঁছে দেবে। নিশ্চয়
তিনি
সর্বোচ্চ
প্রজ্ঞাময়।
[42:52]
এমনিভাবে
আমি আপনার
কাছে এক ফেরেশতা
প্রেরণ করেছি
আমার
আদেশক্রমে। আপনি
জানতেন না, কিতাব
কি এবং ঈমান
কি? কিন্তু
আমি একে করেছি
নূর, যাদ্দ্বারা
আমি আমার
বান্দাদের
মধ্য থেকে যাকে
ইচ্ছা পথ
প্রদর্শন করি। নিশ্চয়
আপনি সরল পথ
প্রদর্শন
করেন-
[42:53]
আল্লাহর
পথ। নভোমন্ডল
ও ভূমন্ডল
যা কিছু আছে, সব
তাঁরই। শুনে
রাখ, আল্লাহ
তা’আলার
কাছেই সব
বিষয়ে পৌঁছে।
43 Az-Zukhruf
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[43:1]
হা-মীম।
[43:2]
শপথ
সুস্পষ্ট
কিতাবের,
[43:3]
আমি
একে করেছি
কোরআন, আরবী ভাষায়, যাতে
তোমরা বুঝ।
[43:4]
নিশ্চয়
এ কোরআন আমার
কাছে সমুন্নত
অটল রয়েছে
লওহে মাহফুযে।
[43:5]
তোমরা
সীমাতিক্রমকারী সম্প্রদায়-এ
কারণে কি আমি
তোমাদের কাছ
থেকে কোরআন
প্রত্যাহার
করে নেব?
[43:6]
পূর্ববর্তী
লোকদের কাছে
আমি অনেক
রসূলই প্রেরণ
করেছি।
[43:7]
যখনই
তাদের কাছে
কোন রসূল আগমন করেছেন, তখনই
তারা তাঁর
সাথে
ঠাট্টা-বিদ্রুপ
করেছে।
[43:8]
সুতরাং
আমি তাদের
চেয়ে অধিক শক্তি
সম্পন্নদেরকে
ধ্বংস করে
দিয়েছি। পূর্ববর্তীদের
এ ঘটনা অতীত
হয়ে গেছে।
[43:9]
আপনি
যদি তাদেরকে
জিজ্ঞাসা করেন কে
নভোমন্ডল ও
ভূ-মন্ডল
সৃষ্টি করেছে? তারা
অবশ্যই বলবে, এগুলো
সৃষ্টি করেছেন
পরাক্রমশালী
সর্বজ্ঞ
আল্লাহ।
[43:10]
যিনি
তোমাদের
জন্যে
পৃথিবীকে করেছেন
বিছানা এবং
তাতে তোমাদের
জন্যে করেছেন
পথ, যাতে
তোমরা
গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পার।
[43:11]
এবং
যিনি আকাশ
থেকে পানি
বর্ষণ করেছেন
পরিমিত। আতঃপর
তদ্দ্বারা
আমি মৃত
ভূ-ভাগকে
পুনরুজ্জীবিত
করেছি। তোমরা এমনিভাবে
উত্থিত হবে।
[43:12]
এবং
যিনি সবকিছুর
যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং
নৌকা ও
চতুস্পদ
জন্তুকে
তোমাদের জন্যে
যানবাহনে
পরিণত করেছেন,
[43:13]
যাতে
তোমরা তাদের
পিঠের উপর আরোহণ কর। অতঃপর
তোমাদের
পালনকর্তার
নেয়ামত
স্মরণ কর এবং
বল পবিত্র
তিনি, যিনি এদেরকে
আমাদের
বশীভূত করে
দিয়েছেন এবং
আমরা এদেরকে
বশীভূত করতে
সক্ষম ছিলাম
না।
[43:14]
আমরা
অবশ্যই
আমাদের
পালনকর্তার দিকে ফিরে
যাব।
[43:15]
তারা
আল্লাহর
বান্দাদের
মধ্য থেকে
আল্লাহর অংশ
স্থির করেছে। বাস্তবিক
মানুষ স্পষ্ট
অকৃতজ্ঞ।
[43:16]
তিনি
কি তাঁর
সৃষ্টি থেকে কন্যা
সন্তান গ্রহণ
করেছেন এবং
তোমাদের জন্য
মনোনীত
করেছেন পুত্র
সন্তান?
[43:17]
তারা
রহমান
আল্লাহর
জন্যে যে, কন্যা-সন্তান
বর্ণনা করে, যখন
তাদের কাউকে
তার সংবাদ দেয়া
হয়, তখন তার মুখমন্ডল
কালো হয়ে
যায় এবং ভীষণ
মনস্তাপ ভোগ
করে।
[43:18]
তারা
কি এমন
ব্যক্তিকে
আল্লাহর জন্যে
বর্ণনা করে, যে
অলংকারে
লালিত-পালিত
হয় এবং
বিতর্কে কথা বলতে
অক্ষম।
[43:19]
তারা
নারী স্থির
করে ফেরেশতাগণকে, যারা
আল্লাহর
বান্দা। তারা
কি তাদের সৃষ্টি
প্রত্যক্ষ
করেছে? এখন তাদের
দাবী
লিপিবদ্ধ করা
হবে এবং তাদের
জিজ্ঞাসা করা
হবে।
[43:20]
তারা
বলে, রহমান
আল্লাহ ইচছা না করলে আমরা
ওদের পূজা
করতাম না। এ
বিষয়ে তারা
কিছুই জানে না। তারা
কেবল অনুমানে
কথা বলে।
[43:21]
আমি
কি তাদেরকে
কোরআনের
পূর্বে কোন
কিতাব দিয়েছি, অতঃপর
তারা তাকে
আঁকড়ে
রেখেছে?
[43:22]
বরং
তারা বলে, আমরা
আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে
পেয়েছি এক
পথের পথিক এবং
আমরা তাদেরই
পদাংক অনুসরণ
করে পথপ্রাপ্ত।
[43:23]
এমনিভাবে
আপনার পূর্বে
আমি যখন কোন
জনপদে কোন
সতর্ককারী
প্রেরণ করেছি, তখনই
তাদের
বিত্তশালীরা
বলেছে, আমরা আমাদের
পূর্বপুরুষদেরকে
পেয়েছি এক
পথের পথিক এবং
আমরা তাদেরই
পদাংক অনুসরণ
করে চলছি।
[43:24]
সে
বলত, তোমরা
তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে
যে বিষয়ের
উপর পেয়েছ, আমি
যদি তদপেক্ষা
উত্তম বিষয়
নিয়ে তোমাদের
কাছে এসে থাকি, তবুও
কি তোমরা তাই
বলবে? তারা বলত
তোমরা যে
বিষয়সহ প্রেরিত
হয়েছ, তা আমরা
মানব না।
[43:25]
অতঃপর
আমি তাদের কাছ
থেকে প্রতিশোধ
নিয়েছি। অতএব
দেখুন, মিথ্যারোপকারীদের
পরিণাম কিরূপ
হয়েছে।
[43:26]
যখন
ইব্রাহীম তার
পিতা ও সম্প্রদায়কে
বলল, তোমরা
যাদের পূজা কর, তাদের
সাথে আমার কোন
সম্পর্ক নেই।
[43:27]
তবে
আমার সম্পর্ক
তাঁর সাথে যিনি আমাকে
সৃষ্টি
করেছেন। অতএব, তিনিই
আমাকে সৎপথ
প্রদর্শন
করবেন।
[43:28]
এ
কথাটিকে সে
অক্ষয়
বাণীরূপে তার
সন্তানদের
মধ্যে রেখে
গেছে, যাতে
তারা আল্লাহর
দিকেই আকৃষ্ট
থাকে।
[43:29]
পরন্ত
আমিই এদেরকে ও
এদের পূর্বপুরুষদেরকে
জীবনোপভোগ
করতে দিয়েছি, অবশেষে
তাদের কাছে
সত্য ও স্পষ্ট বর্ণনাকারী
রসূল আগমন
করেছে।
[43:30]
যখন
সত্য তাদের
কাছে আগমন করল, তখন
তারা বলল, এটা
যাদু, আমরা একে
মানি না।
[43:31]
তারা
বলে, কোরআন
কেন দুই জনপদের
কোন প্রধান
ব্যক্তির উপর
অবতীর্ণ হল না?
[43:32]
তারা
কি আপনার পালনকর্তার
রহমত বন্টন
করে? আমি
তাদের মধ্যে
তাদের জীবিকা
বন্টন করেছি পার্থিব
জীবনে এবং
একের মর্যাদাকে
অপরের উপর
উন্নীত করেছি, যাতে
একে অপরকে
সেবক রূপে
গ্রহণ করে। তারা
যা সঞ্চয়
করে, আপনার
পালনকর্তার
রহমত
তদপেক্ষা
উত্তম।
[43:33]
যদি
সব মানুষের এক
মতাবলম্বী হয়ে
যাওয়ার
আশংকা না থাকত, তবে
যারা দয়াময়
আল্লাহকে
অস্বীকার করে
আমি তাদেরকে
দিতাম তাদের
গৃহের জন্যে
রৌপ্য নির্মিত
ছাদ ও সিঁড়ি, যার
উপর তারা চড়ত।
[43:34]
এবং
তাদের গৃহের
জন্যে দরজা দিতাম এবং
পালংক দিতাম
যাতে তারা
হেলান দিয়ে
বসত।
[43:35]
এবং
স্বর্ণনির্মিতও
দিতাম। এগুলো সবই তো
পার্থিব
জীবনের ভোগ
সামগ্রী মাত্র। আর
পরকাল আপনার
পালনকর্তার
কাছে তাঁদের
জন্যেই যারা
ভয় করে।
[43:36]
যে
ব্যক্তি
দয়াময়
আল্লাহর স্মরণ
থেকে চোখ
ফিরিয়ে নেয়, আমি
তার জন্যে এক
শয়তান
নিয়োজিত করে
দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার
সঙ্গী।
[43:37]
শয়তানরাই
মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর
মানুষ মনে করে
যে, তারা সৎপথে রয়েছে।
[43:38]
অবশেষে
যখন সে আমার
কাছে আসবে, তখন
সে শয়তানকে
বলবে, হায়, আমার
ও তোমার মধ্যে
যদি
পূর্ব-পশ্চিমের
দূরত্ব থাকত। কত
হীন সঙ্গী সে।
[43:39]
তোমরা
যখন কুফর
করছিলে, তখন তোমাদের
আজকের আযাবে
শরীক হওয়া
কোন কাজে আসবে
না।
[43:40]
আপনি
কি বধিরকে
শোনাতে
পারবেন? অথবা যে
অন্ধ ও যে
স্পষ্ট পথ
ভ্রষ্টতায়
লিপ্ত, তাকে পথ
প্রদর্শণ
করতে পারবেন?
[43:41]
অতঃপর
আমি যদি
আপনাকে নিয়ে যাই, তবু আমি
তাদের কাছে
থেকে
প্রতিশোধ নেব।
[43:42]
অথবা
যদি আমি তাদেরকে
যে আযাবের
ওয়াদা
দিয়েছি, তা
আপনাকে
দেখিয়ে দেই, তবু
তাদের উপর
আমার পূর্ণ
ক্ষমতা রয়েছে।
[43:43]
অতএব, আপনার
প্রতি যে ওহী নাযিল করা
হয়, তা
দৃঢ়ভাবে
অবলম্বন করুন। নিঃসন্দেহে
আপনি সরল পথে
রয়েছেন।
[43:44]
এটা
আপনার ও আপনার সম্প্রদায়ের
জন্যে
উল্লেখিত থাকবে
এবং শীঘ্রই
আপনারা
জিজ্ঞাসিত
হবেন।
[43:45]
আপনার
পূর্বে আমি
যেসব রসূল প্রেরণ
করেছি, তাদেরকে
জিজ্ঞেস করুন, দয়াময়
আল্লাহ
ব্যতীত আমি কি
কোন উপাস্য স্থির
করেছিলাম
এবাদতের
জন্যে?
[43:46]
আমি
মূসাকে আমার
নিদর্শনাবলী দিয়ে
ফেরাউন ও তার
পরিষদবর্গের
কাছে প্রেরণ
করেছিলাম, অতঃপর
সে বলেছিল, আমি বিশ্ব
পালনকর্তার
রসূল।
[43:47]
অতঃপর
সে যখন তাদের
কাছে আমার নিদর্শনাবলী
উপস্থাপন করল, তখন
তারা
হাস্যবিদ্রুপ
করতে লাগল।
[43:48]
আমি
তাদেরকে যে
নিদর্শনই দেখাতাম, তাই
হত
পূর্ববর্তী
নিদর্শন
অপেক্ষা বৃহৎ এবং আমি
তাদেরকে
শাস্তি দ্বারা পাকড়াও
করলাম, যাতে
তারা ফিরে আসে।
[43:49]
তারা
বলল, হে
যাদুকর, তুমি আমাদের
জন্যে তোমার
পালনকর্তার
কাছে সে বিষয়
প্রার্থনা কর, যার
ওয়াদা তিনি তোমাকে
দিয়েছেন; আমরা
অবশ্যই সৎপথ
অবলম্বন করব।
[43:50]
অতঃপর
যখন আমি তাদের
থেকে আযাব প্রত্যাহার
করে নিলাম, তখনই
তারা
অঙ্গীকার
ভঙ্গ করতে
লাগলো।
[43:51]
ফেরাউন
তার
সম্প্রদায়কে
ডেকে বলল, হে
আমার কওম, আমি
কি মিসরের
অধিপতি নই? এই
নদী গুলো আমার
নিম্নদেশে প্রবাহিত
হয়, তোমরা কি
দেখ না?
[43:52]
আমি
যে শ্রেষ্ট এ
ব্যক্তি থেকে, যে
নীচ এবং কথা
বলতেও সক্ষম
নয়।
[43:53]
তাকে
কেন
স্বর্ণবলয়
পরিধান করানো
হল না, অথবা কেন
আসল না তার
সঙ্গে
ফেরেশতাগণ দল
বেঁধে?
[43:54]
অতঃপর
সে তার
সম্প্রদায়কে বোকা
বানিয়ে দিল, ফলে
তারা তার কথা
মেনে নিল। নিশ্চয়
তারা ছিল
পাপাচারী সম্প্রদায়।
[43:55]
অতঃপর
যখন আমাকে
রাগাম্বিত
করল তখন
আমি তাদের কাছ
থেকে
প্রতিশোধ
নিলাম এবং
নিমজ্জত
করলাম। তাদের
সবাইকে।
[43:56]
অতঃপর
আমি তাদেরকে
করে দিলাম অতীত লোক ও
দৃষ্টান্ত
পরবর্তীদের
জন্যে।
[43:57]
যখনই মরিয়ম
তনয়ের
দৃষ্টান্ত
বর্ণনা করা হল, তখনই
আপনার
সম্প্রদায়
হঞ্জগোল শুরু
করে দিল
[43:58]
এবং
বলল, আমাদের
উপাস্যরা শ্রেষ্ঠ, না
সে? তারা
আপনার সামনে
যে উদাহরণ
উপস্থাপন করে
তা কেবল
বিতর্কের জন্যেই করে। বস্তুতঃ
তারা হল এক
বিতর্ককারী
সম্প্রদায়।
[43:59]
সে
তো এক বান্দাই
বটে আমি তার প্রতি
অনুগ্রহ
করেছি এবং
তাকে করেছি
বণী-ইসরাঈলের
জন্যে আদর্শ।
[43:60]
আমি
ইচ্ছা করলে তোমাদের
থেকে ফেরেশতা
সৃষ্টি করতাম, যারা
পৃথিবীতে একের
পর এক বসবাস করত।
[43:61]
সুতরাং
তা হল কেয়ামতের নিদর্শন। কাজেই
তোমরা কেয়ামতে
সন্দেহ করো না
এবং আমার কথা মান। এটা এক
সরল পথ।
[43:62]
শয়তান
যেন তোমাদেরকে
নিবৃত্ত না করে। সে তোমাদের
প্রকাশ্য শুত্রু।
[43:63]
ঈসা
যখন স্পষ্ট নিদর্শনসহ
আগমন করল, তখন বলল, আমি তোমাদের
কাছে প্রজ্ঞা নিয়ে
এসেছি এবং তোমরা
যে, কোন কোন বিষয়ে মতভেদ
করছ তা ব্যক্ত
করার জন্যে এসেছি, অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর
এবং আমার কথা
মান।
[43:64]
নিশ্চয়
আল্লাহই আমার পালনকর্তা ও তোমাদের
পালনকর্তা। অতএব, তাঁর
এবাদত কর। এটা হল
সরল পথ।
[43:65]
অতঃপর
তাদের মধ্যে থেকে বিভিন্ন দল মতভেদ
সৃষ্টি করল। সুতরাং
যালেমদের জন্যে
রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক দিবসের আযাবের
দুর্ভোগ।
[43:66]
তারা
কেবল কেয়ামতেরই
অপেক্ষা করছে
যে, আকস্মিকভাবে
তাদের কাছে এসে
যাবে এবং তারা
খবর ও রাখবে না।
[43:67]
বন্ধুবর্গ
সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা
নয়।
[43:68]
হে
আমার বান্দাগণ, তোমাদের
আজ কোন ভয়
নেই এবং তোমরা
দুঃখিতও হবে না।
[43:69]
তোমরা
আমার আয়াতসমূহে
বিশ্বাস স্থাপন
করেছিলে এবং তোমরা
আজ্ঞাবহ ছিলে।
[43:70]
জান্নাতের
প্রবেশ কর তোমরা
এবং তোমাদের
বিবিগণ সানন্দে।
[43:71]
তাদের
কাছে পরিবেশন করা
হবে স্বর্ণের
থালা ও পানপাত্র
এবং তথায় রয়েছে
মনে যা চায় এবং
নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। তোমরা
তথায় চিরকাল অবস্থান
করবে।
[43:72]
এই
যে, জান্নাতের
উত্তরাধিকারী তোমরা হয়েছ, এটা তোমাদের
কর্মের ফল।
[43:73]
তথায়
তোমাদের জন্যে
আছে প্রচুর
ফল-মূল, তা থেকে তোমরা
আহার করবে।
[43:74]
নিশ্চয়
অপরাধীরা জাহান্নামের আযাবে চিরকাল
থাকবে।
[43:75]
তাদের
থেকে আযাব লাঘব
করা হবে না এবং
তারা তাতেই থাকবে
হতাশ হয়ে।
[43:76]
আমি
তাদের প্রতি জুলুম
করিনি; কিন্তু তারাই
ছিল জালেম।
[43:77]
তারা
ডেকে বলবে, হে মালেক, পালনকর্তা
আমাদের কিসসাই
শেষ করে দিন। সে বলবে, নিশ্চয়
তোমরা চিরকাল থাকবে।
[43:78]
আমি
তোমাদের কাছে সত্যধর্ম পৌঁছিয়েছি; কিন্তু
তোমাদের অধিকাংশই
সত্যধর্মে নিস্পৃহ!
[43:79]
তারা
কি কোন ব্যবস্থা
চুড়ান্ত করেছে? তাহলে আমিও
এক ব্যবস্থা চুড়ান্ত
করেছি।
[43:80]
তারা
কি মনে করে যে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও গোপন
পরামর্শ শুনি না? হঁ্যা, শুনি। আমার
ফেরেশতাগণ তাদের
নিকটে থেকে
লিপিবদ্ধ করে।
[43:81]
বলুন, দয়াময়
আল্লাহর কোন সন্তান থাকলে
আমি সর্ব প্রথম
তার এবাদত করব।
[43:82]
তারা
যা বর্ণনা করে, তা থেকে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের
পালনকর্তা, আরশের
পালনকর্তা পবিত্র।
[43:83]
অতএব, তাদেরকে
বাকচাতুরী ও ক্রীড়া-কৌতুক
করতে দিন সেই দিবসের
সাক্ষাত পর্যন্ত, যার ওয়াদা
তাদেরকে দেয়া হয়।
[43:84]
তিনিই
উপাস্য নভোমন্ডলে
এবং তিনিই
উপাস্য ভুমন্ডলে। তিনি
প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ,
[43:85]
বরকতময়
তিনিই, নভোমন্ডল, ভূমন্ডল
ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী
সবকিছু যার। তাঁরই
কাছে আছে কেয়ামতের
জ্ঞান এবং তাঁরই দিকে তোমরা
প্রত্যাবর্তিত
হবে।
[43:86]
তিনি
ব্যতীত তারা যাদের
পুজা করে, তারা
সুপারিশের অধিকারী
হবে না, তবে যারা সত্য
স্বীকার করত ও
বিশ্বাস করত।
[43:87]
যদি
আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে
সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই
তারা বলবে, আল্লাহ, অতঃপর
তারা কোথায়
ফিরে যাচ্ছে ?
[43:88]
রসূলের
এই উক্তির কসম, হে আমার পালনকর্তা, এ সম্প্রদায়
তো বিশ্বাস স্থাপন
করে না।
[43:89]
অতএব, আপনি
তাদের থেকে
মুখ ফিরিয়ে
নিন এবং বলুন, ‘সালাম’। তারা
শীঘ্রই জানতে
পারবে।
44 Ad-Dukhân
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[44:1]
হা-মীম।
[44:2]
শপথ
সুস্পষ্ট কিতাবের।
[44:3]
আমি
একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয়
আমি সতর্ককারী।
[44:4]
এ
রাতে প্রত্যেক
প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত
হয়।
[44:5]
আমার
পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই
প্রেরণকারী।
[44:6]
আপনার
পালনকর্তার পক্ষ
থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি
সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
[44:7]
যদি
তোমাদের বিশ্বাস
থাকে দেখতে
পাবে। তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল
ও এতদুভয়ের মধ্যেবর্তী
সবকিছুর পালনকর্তা।
[44:8]
তিনি
ব্যতীত কোন উপাস্য
নেই। তিনি
জীবন দান করেন
ও মৃত্যু দেন। তিনি
তোমাদের পালনকর্তা
এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃ-পুরুষদেরও
পালনকর্তা।
[44:9]
এতদসত্ত্বেও
এরা সন্দেহে পতিত হয়ে ক্রীড়া-কৌতুক
করছে।
[44:10]
অতএব
আপনি সেই দিনের
অপেক্ষা করুন, যখন আকাশ
ধূয়ায় ছেয়ে
যাবে।
[44:11]
যা
মানুষকে ঘিরে ফেলবে। এটা যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি।
[44:12]
হে
আমাদের পালনকর্তা
আমাদের উপর থেকে
শাস্তি প্রত্যাহার
করুন, আমরা বিশ্বাস
স্থাপন করছি।
[44:13]
তারা
কি করে বুঝবে, অথচ তাদের কাছে এসেছিলেন
স্পষ্ট বর্ণনাকারী
রসূল।
[44:14]
অতঃপর
তারা তাকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে এবং বলে, সে তো
উম্মাদ-শিখানো
কথা বলে।
[44:15]
আমি
তোমাদের উপর থেকে
আযাব কিছুটা
প্রত্যাহার করব, কিন্তু
তোমরা পুনরায়
পুনর্বস্থায়
ফিরে যাবে।
[44:16]
যেদিন
আমি প্রবলভাবে
ধৃত করব, সেদিন
পুরোপুরি প্রতিশোধ
গ্রহণ করবই।
[44:17]
তাদের
পূর্বে আমি ফেরাউনের সম্প্রদায়কে
পরীক্ষা করেছি
এবং তাদের কাছে
আগমন করেছেন একজন
সম্মানিত রসূল,
[44:18]
এই
মর্মে যে, আল্লাহর বান্দাদেরকে
আমার কাছে অর্পণ
কর। আমি তোমাদের
জন্য প্রেরীত বিশ্বস্ত
রসূল।
[44:19]
আর
তোমরা আল্লাহর
বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রকাশ
করো না। আমি তোমাদের
কাছে প্রকাশ্য
প্রমাণ উপস্থিত
করছি।
[44:20]
তোমরা
যাতে আমাকে প্রস্তরবর্ষণে
হত্যা না কর, তজ্জন্যে
আমি আমার পালনকর্তা
ও তোমাদের পালনকর্তার শরনাপন্ন হয়েছি।
[44:21]
তোমরা
যদি আমার প্রতি
বিশ্বাস স্থাপন
না কর, তবে আমার কাছ
থেকে দূরে থাক।
[44:22]
অতঃপর
সে তার পালনকর্তার
কাছে দোয়া
করল যে, এরা অপরাধী
সম্প্রদায়।
[44:23]
তাহলে
তুমি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিবেলায়
বের হয়ে পড়। নিশ্চয়
তোমাদের পশ্চাদ্ধবন
করা হবে।
[44:24]
এবং
সমুদ্রকে অচল থাকতে
দাও। নিশ্চয়
ওরা নিমজ্জত বাহিনী।
[44:25]
তারা
ছেড়ে গিয়েছিল
কত উদ্যান ও প্রস্রবন,
[44:26]
কত
শস্যক্ষেত্র ও
সূরম্য স্থান।
[44:27]
কত
সুখের উপকরণ, যাতে
তারা খোশগল্প
করত।
[44:28]
এমনিই
হয়েছিল এবং আমি
ওগুলোর মালিক
করেছিলাম ভিন্ন
সম্প্রদায়কে।
[44:29]
তাদের
জন্যে ক্রন্দন
করেনি আকাশ
ও পৃথিবী এবং তারা
অবকাশও পায়নি।
[44:30]
আমি
বনী-ইসরাঈলকে অপমানজনক শাস্তি থেকে উদ্ধার
করছি।
[44:31]
ফেরাউন
সে ছিল সীমালংঘনকারীদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।
[44:32]
আমি
জেনেশুনে তাদেরকে বিশ্ববাসীদের
উপর শ্রেষ্ঠত্ব
দিয়েছিলাম।
[44:33]
এবং
আমি তাদেরকে এমন নিদর্শনাবলী
দিয়েছিলাম যাতে
ছিল স্পষ্ট সাহায্য।
[44:34]
কাফেররা
বলেই থাকে,
[44:35]
প্রথম
মৃত্যুর মাধ্যমেই
আমাদের সবকিছুর
অবসান হবে এবং
আমরা পুনরুত্থিত
হব না।
[44:36]
তোমরা
যদি সত্যবাদী হও, তবে আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে
নিয়ে এস।
[44:37]
ওরা
শ্রেষ্ঠ, না তুব্বার সম্প্রদায় ও
তাদের পূর্ববর্তীরা? আমি ওদেরকে
ধ্বংস করে দিয়েছি। ওরা ছিল অপরাধী।
[44:38]
আমি
নভোমন্ডল, ভূমন্ডল
ও এতদুভয়ের
মধ্যবর্তী সবকিছু
ক্রীড়াচ্ছলে
সৃষ্টি করিনি।
[44:39]
আমি
এগুলো যথাযথ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছি; কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বোঝে না।
[44:40]
নিশ্চয়
ফয়সালার দিন তাদের সবারই নির্ধারিত
সময়।
[44:41]
যেদিন
কোন বন্ধুই কোন
বন্ধুর উপকারে
আসবে না এবং তারা
সাহায্যপ্রাপ্তও
হবে না।
[44:42]
তবে
আল্লাহ যার প্রতি
দয়া করেন, তার কথা
ভিন্ন। নিশ্চয়
তিনি পরাক্রমশালী
দয়াময়।
[44:43]
নিশ্চয়
যাক্কুম বৃক্ষ
[44:44]
পাপীর
খাদ্য হবে;
[44:45]
গলিত
তাম্রের মত পেটে
ফুটতে থাকবে।
[44:46]
যেমন
ফুটে পানি।
[44:47]
একে
ধর এবং টেনে নিয়ে
যাও জাহান্নামের
মধ্যস্থলে,
[44:48]
অতঃপর
তার মাথার উপর
ফুটন্ত পানির
আযাব ঢেলে দাও,
[44:49]
স্বাদ
গ্রহণ কর, তুমি
তো সম্মানিত, সম্ভ্রান্ত।
[44:50]
এ
সম্পর্কে তোমরা
সন্দেহে পতিত ছিলে।
[44:51]
নিশ্চয়
খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে-
[44:52]
উদ্যানরাজি
ও নির্ঝরিণীসমূহে।
[44:53]
তারা
পরিধান করবে চিকন
ও পুরু রেশমীবস্ত্র, মুখোমুখি
হয়ে বসবে।
[44:54]
এরূপই
হবে এবং আমি তাদেরকে আনতলোচনা স্ত্রী
দেব।
[44:55]
তারা
সেখানে শান্ত মনে
বিভিন্ন ফল-মূল
আনতে বলবে।
[44:56]
তারা
সেখানে মৃত্যু
আস্বাদন করবে
না, প্রথম মৃত্যু
ব্যতীত এবং আপনার
পালনকর্তা তাদেরকে
জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করবেন।
[44:57]
আপনার
পালনকর্তার কৃপায়
এটাই মহা সাফল্য।
[44:58]
আমি
আপনার ভাষায় কোরআনকে
সহজ করে
দিয়েছি, যাতে
তারা স্মরণ
রাখে।
[44:59]
অতএব, আপনি
অপেক্ষা করুন, তারাও
অপেক্ষা করছে।
45 Al-Jâthiyah
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[45:1]
হা-মীম।
[45:2]
পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ
থেকে অবতীর্ণ এ
কিতাব।
[45:3]
নিশ্চয়
নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে মুমিনদের জন্যে
নিদর্শনাবলী রয়েছে।
[45:4]
আর
তোমাদের সৃষ্টিতে
এবং চারদিকে
ছড়িয়ে রাখা জীব
জন্তুর সৃজনের
মধ্যেও নিদর্শনাবলী
রয়েছে বিশ্বাসীদের জন্য।
[45:5]
দিবারাত্রির
পরিবর্তনে, আল্লাহ আকাশ থেকে যে রিযিক
(বৃষ্টি) বর্ষণ
করেন অতঃপর পৃথিবীকে
তার মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত
করেন, তাতে এবং বায়ুর
পরিবর্তনে বুদ্ধিমানদের
জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
[45:6]
এগুলো
আল্লাহর আয়াত, যা আমি আপনার কাছে আবৃত্তি
করি যথাযথরূপে। অতএব, আল্লাহ
ও তাঁর আয়াতের
পর তারা কোন কথায় বিশ্বাস
স্থাপন করবে।
[45:7]
প্রত্যেক
মিথ্যাবাদী পাপাচারীর দুর্ভোগ।
[45:8]
সে
আল্লাহর আয়াতসমূহ
শুনে, অতঃপর অহংকারী
হয়ে জেদ ধরে, যেন সে
আয়াত শুনেনি। অতএব, তাকে
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ
দিন।
[45:9]
যখন
সে আমার কোন আয়াত
অবগত হয়, তখন তাকে
ঠাট্টারূপে গ্রহণ
করে। এদের জন্যই
রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক
শাস্তি।
[45:10]
তাদের
সামনে রয়েছে জাহান্নাম। তারা যা উপার্জন
করেছে, তা তাদের কোন
কাজে আসবে না, তারা
আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে বন্ধুরূপে
গ্রহণ করেছে তারাও
নয়। তাদের
জন্যে রয়েছে মহাশাস্তি।
[45:11]
এটা
সৎপথ প্রদর্শন, আর যারা তাদের পালনকর্তার
আয়াতসমূহ অস্বীকার
করে, তাদের জন্যে
রয়েছে কঠোর যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি।
[45:12]
তিনি
আল্লাহ যিনি সমুদ্রকে তোমাদের উপকারার্থে
আয়ত্বাধীন করে
দিয়েছেন, যাতে
তাঁর আদেশক্রমে
তাতে জাহাজ চলাচল করে এবং
যাতে তোমরা তাঁর
অনুগ্রহ তালাশ
কর ও তাঁর প্রতি
কৃতজ্ঞ হও।
[45:13]
এবং
আয়ত্ত্বাধীন
করে দিয়েছেন তোমাদের, যা আছে
নভোমন্ডলে ও যা
আছে ভূমন্ডলে; তাঁর
পক্ষ থেকে। নিশ্চয়
এতে চিন্তাশীল
সম্প্রদায়ের
জন্যে নিদর্শনাবলী
রয়েছে।
[45:14]
মুমিনদেরকে
বলুন, তারা যেন তাদেরকে ক্ষমা
করে, যারা আল্লাহর
সে দিনগুলো সম্পর্কে
বিশ্বাস রাখে না
যাতে তিনি কোন সম্প্রদায়কে
কৃতকর্মের প্রতিফল
দেন।
[45:15]
যে
সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণার্থেই
তা করছে, আর যে
অসৎকাজ করছে, তা তার
উপরই বর্তাবে। অতঃপর
তোমরা তোমাদের
পালনকর্তার দিকে
প্রত্যাবর্তিত
হবে।
[45:16]
আমি
বনী ইসরাঈলকে কিতাব, রাজত্ব
ও নবুওয়ত দান
করেছিলাম এবং তাদেরকে
পরিচ্ছন্ন রিযিক
দিয়েছিলাম এবং বিশ্ববাসীর উপর
শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম।
[45:17]
আরও
দিয়েছিলাম তাদেরকে
ধর্মের সুস্পষ্ট
প্রমাণাদি। অতঃপর
তারা জ্ঞান লাভ
করার পর শুধু পারস্পরিক
জেদের বশবর্তী হয়ে মতভেদ সৃষ্টি
করেছে। তারা
যে বিষয়ে মতভেদ
করত, আপনার পালনকর্তা
কেয়ামতের দিন তার ফয়সালা
করে দেবেন।
[45:18]
এরপর
আমি আপনাকে রেখেছি
ধর্মের এক বিশেষ
শরীয়তের উপর। অতএব, আপনি
এর অনুসরণ করুন
এবং অজ্ঞানদের
খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন
না।
[45:19]
আল্লাহর
সামনে তারা আপনার
কোন উপকারে
আসবে না। যালেমরা
একে অপরের বন্ধু। আর আল্লাহ
পরহেযগারদের বন্ধু।
[45:20]
এটা
মানুষের জন্যে
জ্ঞানের কথা এবং বিশ্বাসী
সম্প্রদায়ের
জন্য হেদায়েত
ও রহমত।
[45:21]
যারা
দুস্কর্ম উপার্জন
করেছে তারা
কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে
সে লোকদের মত করে
দেব, যারা ঈমান
আনে ও সৎকর্ম করে এবং তাদের
জীবন ও মুত্যু
কি সমান হবে? তাদের
দাবী কত মন্দ।
[45:22]
আল্লাহ
নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল যথাযথভাবে সৃষ্টি
করেছেন, যাতে প্রত্যেক
ব্যক্তি তার উপার্জনের
ফল পায়। তাদের প্রতি যুলুম করা
হবে না।
[45:23]
আপনি
কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার
খেয়াল-খুশীকে
স্বীয় উপাস্য
স্থির করেছে? আল্লাহ
জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান
ও অন্তরে মহর এঁটে
দিয়েছেন এবং তার
চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর
পর কে তাকে পথ প্রদর্শন
করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা
কর না?
[45:24]
তারা
বলে, আমাদের পার্থিব জীবনই তো শেষ; আমরা
মরি ও বাঁচি মহাকালই
আমাদেরকে ধ্বংস
করে। তাদের
কাছে এ ব্যাপারে
কোন জ্ঞান নেই। তারা
কেবল অনুমান করে
কথা বলে।
[45:25]
তাদের
কাছে যখন আমার
সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ
করা হয়, তখন একথা
বলা ছাড়া তাদের
কোন মুক্তিই থাকে
না যে, তোমরা সত্যবাদী হলে
আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে
নিয়ে আস।
[45:26]
আপনি
বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন, অতঃপর
মৃত্যু দেন, অতঃপর
তোমাদেরকে কেয়ামতের
দিন একত্রিত করবেন, যাতে
কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু
অধিকাংশ মানুষ
বোঝে না।
[45:27]
নভোমন্ডল
ও ভূ-মন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। যেদিন
কেয়ামত সংঘটিত
হবে, সেদিন মিথ্যাপন্থীরা
ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
[45:28]
আপনি
প্রত্যেক উম্মতকে
দেখবেন নতজানু
অবস্থায়। প্রত্যেক
উম্মতকে তাদের
আমলনামা দেখতে
বলা হবে। তোমরা
যা করতে, অদ্য
তোমারদেরকে তার
প্রতিফল দেয়া
হবে।
[45:29]
আমার
কাছে রক্ষিত এই
আমলনামা তোমাদের
সম্পর্কে সত্য
কথা বলবে। তোমরা
যা করতে আমি তা
লিপিবদ্ধ করতাম।
[45:30]
যারা
বিশ্বাস স্থাপন
করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে
তাদের পালনকর্তা
স্বীয় রহমতে দাখিল
করবেন। এটাই
প্রকাশ্য সাফল্য।
[45:31]
আর
যারা কুফর করেছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা
হবে, তোমাদের কাছে
কি আয়াতসমূহ পঠিত
হত না? কিন্তু তোমরা
অহংকার করছিলে
এবং তোমরা ছিলে
এক অপরাধী সম্প্রদায়।
[45:32]
যখন
বলা হত, আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং কেয়ামতে
কোন সন্দেহ নেই, তখন তোমরা
বলতে আমরা জানি
না কেয়ামত কি
? আমরা
কেবল ধারণাই করি
এবং এ বিষয়ে আমরা
নিশ্চিত নই।
[45:33]
তাদের
মন্দ কর্ম গুলো
তাদের সামনে
প্রকাশ হয়ে পড়বে
এবং যে আযাব নিয়ে
তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ
করত, তা তাদেরকে গ্রাস করবে।
[45:34]
বলা
হবে, আজ আমি তোমাদেরকে ভুলে যাব, যেমন
তোমরা এ দিনের
সাক্ষাৎকে
ভুলে গিয়েছিলে। তোমাদের
আবাসস্থল জাহান্নাম এবং
তোমাদের সাহায্যকারী
নেই।
[45:35]
এটা
এজন্যে যে, তোমরা
আল্লাহর আয়াতসমূহকে
ঠাট্টারূপে গ্রহণ
করেছিলে এবং পার্থিব
জীবন তোমাদেরকে
প্রতারিত করেছিল। সুতরাং
আজ তাদেরকে জাহান্নাম
থেকে বের করা হবে
না এবং তাদের কাছে
তওবা চাওয়া
হবে না।
[45:36]
অতএব, বিশ্বজগতের
পালনকর্তা, ভূ-মন্ডলের
পালনকর্তা ও নভোমন্ডলের
পালনকর্তা আল্লাহর-ই
প্রশংসা।
[45:37]
নভোমন্ডলে
ও ভূ-মন্ডলে তাঁরই গৌরব। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।