Part 26

 

46 Al-Ahqâf

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[46:1]

হা-মীম

[46:2]

এই কিতাব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ

[46:3]

নভোমন্ডল, ভূ-মন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু আমি যথাযথভাবেই এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্যেই সৃষ্টি করেছিআর কাফেররা যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে, তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়

[46:4]

বলুন, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের পূজা কর, তাদের বিষয়ে ভেবে দেখেছ কি? দেখাও আমাকে তারা পৃথিবীতে কি সৃষ্টি করেছে? অথবা নভোমন্ডল সৃজনে তাদের কি কোন অংশ আছে? এর পূর্ববর্তী কোন কিতাব অথবা পরস্পরাগত কোন জ্ঞান আমার কাছে উপস্থিত কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও

[46:5]

যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? তারা তো তাদের পুজা সম্পর্কেও বেখবর

[46:6]

যখন মানুষকে হাশরে একত্রিত করা হবে, তখন তারা তাদের শত্রু হবে এবং তাদের এবাদত অস্বীকার করবে

[46:7]

যখন তাদেরকে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনানো হয়, তখন সত্য আগমন করার পর কাফেররা বলে, এ তো প্রকাশ্য জাদু

[46:8]

তারা কি বলে যে, রসূল একে রচনা করেছে? বলুন, যদি আমি রচনা করে থাকি, তবে তোমরা আল্লাহর শাস্তি থেকে আমাকে রক্ষা করার অধিকারী নওতোমরা এ সম্পর্কে যা আলোচনা কর, সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত আমার ও তোমাদের মধ্যে তিনি সাক্ষী হিসাবে যথেষ্টতিনি ক্ষমাশীল, দয়াময়

[46:9]

বলুন, আমি তো কোন নতুন রসূল নইআমি জানি না, আমার ও তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবেআমি কেবল তারই অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি ওহী করা হয়আমি স্পষ্ট সতর্ক কারী বৈ নই

[46:10]

বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় এবং তোমরা একে অমান্য কর এবং বনী ইসরাঈলের একজন সাক্ষী এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে এতে বিশ্বাস স্থাপন করে; আর তোমরা অহংকার কর, তবে তোমাদের চেয়ে অবিবেচক আর কে হবে? নিশ্চয় আল্লাহ অবিবেচকদেরকে পথ দেখান না

[46:11]

আর কাফেররা মুমিনদের বলতে লাগল যে, যদি এ দ্বীন ভাল হত তবে এরা আমাদেরকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারত নাতারা যখন এর মাধ্যমে সুপথ পায়নি, তখন শীঘ্রই বলবে, এ তো এক পুরাতন মিথ্যা

[46:12]

এর আগে মূসার কিতাব ছিল পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপআর এই কিতাব তার সমর্থক আরবী ভাষায়, যাতে যালেমদেরকে সতর্ক করে এবং সৎকর্মপরায়ণদেরকে সুসংবাদ দেয়

[46:13]

নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না

[46:14]

তারাই জান্নাতের অধিকারী! তারা তথায় চিরকাল থাকবেতারা যে কর্ম করত, এটা তারই প্রতিফল

[46:15]

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছিতার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছেতাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাসঅবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্থে?র বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌছেছে, তখন বলতে লাগল, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় ৎকাজ করিআমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম

[46:16]

আমি এমন লোকদের সুকর্মগুলো কবুল করি এবং মন্দকর্মগুলো মার্জনা করিতারা জান্নাতীদের তালিকাভুক্ত সেই সত্য ওয়াদার কারণে যা তাদেরকে দেওয়া হত

[46:17]

আর যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে বলে, ধিক তোমাদেরকে, তোমরা কি আমাকে খবর দাও যে, আমি পুনরুত্থিত হব, অথচ আমার পূর্বে বহু লোক গত হয়ে গেছে? আর পিতা-মাতা আল্লাহর কাছে ফরিযাদ করে বলে, দুর্ভোগ তোমার তুমি বিশ্বাস স্থাপন করনিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্যতখন সে বলে, এটা তো পূর্ববর্তীদের উপকথা বৈ নয়

[46:18]

তাদের পূর্বে যে সব জ্বিন ও মানুষ গত হয়েছে, তাদের মধ্যে এ ধরনের লোকদের প্রতিও শাস্তিবানী অবধারিত হয়ে গেছেনিশ্চয় তারা ছিল ক্ষতিগ্রস্থ

[46:19]

প্রত্যেকের জন্যে তাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী বিভিন্ন স্তর রয়েছে, যাতে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেনবস্তুতঃ তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না

[46:20]

যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের কাছে উপস্থিত করা হবে সেদিন বলা হবে, তোমরা তোমাদের সুখ পার্থিব জীবনেই নিঃশেষ করেছ এবং সেগুলো ভোগ করেছ সুতরাং আজ তোমাদেরকে অপমানকর আযাবের শাস্তি দেয়া হবে; কারণ, তোমরা পৃথিবীতে অন্যায় ভাবে অহংকার করতে এবং তোমরা পাপাচার করতে

[46:21]

দ সম্প্রদায়ের ভাইয়ের কথা স্মরণ করুন, তার পূর্বে ও পরে অনেক সতর্ককারী গত হয়েছিল সে তার সম্প্রদায়কে বালুকাময় উচ্চ উপত্যকায় এ মর্মে সতর্ক করেছিল যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও এবাদত করো নাআমি তোমাদের জন্যে এক মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করি

[46:22]

তারা বলল, তুমি কি আমাদেরকে আমাদের উপাস্য দেব-দেবী থেকে নিবৃত্ত করতে আগমন করেছ? তুমি সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দাও, তা নিয়ে আস

[46:23]

সে বলল, এ জ্ঞান তো আল্লাহর কাছেই রয়েছেআমি যে বিষয়সহ প্রেরিত হয়েছি, তা তোমাদের কাছে পৌঁছাইকিন্তু আমি দেখছি তোমরা এক মুর্খ সম্প্রদায়

[46:24]

(অতঃপর) তারা যখন শাস্তিকে মেঘরূপে তাদের উপত্যকা অভিমুখী দেখল, তখন বলল, এ তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দেবে বরং এটা সেই বস্তু, যা তোমরা তাড়াতাড়ি চেয়েছিলেএটা বায়ু এতে রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি

[46:25]

তার পালনকর্তার আদেশে সে সব কিছুকে ধ্বংস করে দেবেঅতঃপর তারা ভোর বেলায় এমন হয়ে গেল যে, তাদের বসতিগুলো ছাড়া কিছুই দৃষ্টিগোচর হল নাআমি অপরাধী সম্প্রদায়কে এমনিভাবে শাস্তি দিয়ে থাকি

[46:26]

আমি তাদেরকে এমন বিষয়ে ক্ষমতা দিয়েছিলাম, যে বিষয়ে তোমাদেরকে ক্ষমতা দেইনিআমি তাদের দিয়েছিলাম, কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়, কিন্তু তাদের কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় তাদের কোন কাজে আসল না, যখন তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করল এবং তাদেরকে সেই শাস্তি গ্রাস করে নিল, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত

[46:27]

আমি তোমাদের আশপাশের জনপদ সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছি এবং বার বার আয়াতসমূহ শুনিয়েছি, যাতে তারা ফিরে আসে

[46:28]

অতঃপর আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে সান্নিধ্য লাভের জন্যে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল, তারা তাদেরকে সাহায্য করল না কেন? বরং তারা তাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেলএটা ছিল তাদের মিথ্যা ও মনগড়া বিষয়

[46:29]

যখন আমি একদল জিনকে আপনার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম, তারা কোরআন পাঠ শুনছিল,তারা যখন কোরআন পাঠের জায়গায় উপস্থিত হল, তখন পরস্পর বলল, চুপ থাকঅতঃপর যখন পাঠ সমাপ্ত হল, তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে সতর্ককারীরূপে ফিরে গেল

[46:30]

তারা বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়, আমরা এমন এক কিতাব শুনেছি, যা মূসার পর অবর্তীণ হয়েছেএ কিতাব পূর্ববর্তী সব কিতাবের প্রত্যায়ন করে, সত্যধর্ম ও সরলপথের দিকে পরিচালিত করে

[46:31]

হে আমাদের সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মান্য কর এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতিনি তোমাদের গোনাহ মার্জনা করবেন

[46:32]

আর যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মানবে না, সে পৃথিবীতে আল্লাহকে অপারক করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তার কোন সাহায্যকারী থাকবে নাএ ধরনের লোকই প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত

[46:33]

তারা কি জানে না যে, আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং এগুলোর সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তিবোধ করেননি, তিনি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম? কেন নয়, নিশ্চয় তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান

[46:34]

যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের সামনে পেশ করা হবে, সেদিন বলা হবে, এটা কি সত্য নয়? তারা বলবে, হঁ্যা আমাদের পালনকর্তার শপথআল্লাহ বলবেন, আযাব আস্বাদন করকারণ, তোমরা কুফরী করতে

[46:35]

অতএব, আপনি সবর করুন, যেমন উচ্চ সাহসী পয়গম্বরগণ সবর করেছেন এবং ওদের বিষয়ে তড়িঘড়ি করবেন নাওদেরকে যে বিষয়ে ওয়াদা দেয়া হত, তা যেদিন তারা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন তাদের মনে হবে যেন তারা দিনের এক মুহুর্তের বেশী পৃথিবীতে অবস্থান করেনিএটা সুস্পষ্ট অবগতিএখন তারাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে, যারা পাপাচারী সম্প্রদায়

 

47 Muhammad

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[47:1]

যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে, আল্লাহ তাদের সকল কর্ম ব্যর্থ করে দেন

[47:2]

আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, ৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কর্মসমূহ মার্জনা করেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দেন

[47:3]

এটা এ কারণে যে, যারা কাফের, তারা বাতিলের অনুসরণ করে এবং যারা বিশ্বাসী, তারা তাদের পালনকর্তার নিকট থেকে আগত সত্যের অনুসরণ করেএমনিভাবে আল্লাহ মানুষের জন্যে তাদের দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন

[47:4]

অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দার মার, অবশেষে যখন তা?েদরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেলঅতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লওতোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলেআল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেনকিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চানযারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না

[47:5]

তিনি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করবেন

[47:6]

অতঃপর তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যা তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন

[47:7]

হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ়প্রতিষ্ঠ করবেন

[47:8]

আর যারা কাফের, তাদের জন্যে আছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন

[47:9]

এটা এজন্যে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে নাঅতএব, আল্লাহ তাদের কর্ম ব্যর্থ করে দিবেন

[47:10]

তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি অতঃপর দেখেনি যে, তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছে? আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন এবং কাফেরদের অবস্থা এরূপই হবে

[47:11]

এটা এজন্যে যে, আল্লাহ মুমিনদের হিতৈষী বন্ধু এবং কাফেরদের কোন হিতৈষী বন্ধু নাই

[47:12]

যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করেতাদের বাসস্থান জাহান্নাম

[47:13]

যে জনপদ আপনাকে বহিস্কার করেছে, তদপেক্ষা কত শক্তিশালী জনপদকে আমি ধ্বংস করেছি, অতঃপর তাদেরকে সাহায্য করার কেউ ছিল না

[47:14]

যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত নিদর্শন অনুসরণ করে, সে কি তার সমান, যার কাছে তার মন্দ কর্ম শোভনীয় করা হয়েছে এবং যে তার খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে

[47:15]

পরহেযগারদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপঃ তাতে আছে পানির নহর, নির্মল দুধের নহর যারা স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহরতথায় তাদের জন্যে আছে রকমারি ফল-মূল ও তাদের পালনকর্তার ক্ষমাপরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি অতঃপর তা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেবে?

[47:16]

তাদের মধ্যে কতক আপনার দিকে কান পাতে, অতঃপর যখন আপনার কাছ থেকে বাইরে যায়, তখন যারা শিক্ষিত, তাদেরকে বলেঃ এইমাত্র তিনি কি বললেন ? এদের অন্তরে আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে

[47:17]

যারা সৎপথপ্রাপ্ত হয়েছে, তাদের সৎপথপ্রাপ্তি আরও বেড়ে যায় এবং আল্লাহ তাদেরকে তাকওয়া দান করেন

[47:18]

তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুকবস্তুতঃ কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছেসুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে ?

[47:19]

জেনে রাখুন, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেইক্ষমাপ্রার্থনা করুন, আপনার ক্রটির জন্যে এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্যেআল্লাহ, তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত

[47:20]

যারা মুমিন, তারা বলেঃ একটি সূরা নাযিল হয় না কেন? অতঃপর যখন কোন দ্ব্যর্থহীন সূরা নাযিল হয় এবং তাতে জেহাদের উল্লেখ করা হয়, তখন যাদের অন্তরে রোগ আছে, আপনি তাদেরকে মৃত্যুভয়ে মূর্ছাপ্রাপ্ত মানুষের মত আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখবেনসুতরাং ধ্বংস তাদের জন্যে

[47:21]

তাদের আনুগত্য ও মিষ্ট বাক্য জানা আছেঅতএব, জেহাদের সিন্ধান্ত হলে যদি তারা আল্লাহর প্রতি পদত্ত অংগীকার পূর্ণ করে, তবে তাদের জন্যে তা মঙ্গলজনক হবে

[47:22]

ক্ষমতা লাভ করলে, সম্ভবতঃ তোমরা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করবে এবং আত্নীয়তা বন্ধন ছিন্ন করবে

[47:23]

এদের প্রতিই আল্লাহ অভিসম্পাত করেন, অতঃপর তাদেরকে বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন করেন

[47:24]

তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ?

[47:25]

নিশ্চয় যারা সোজা পথ ব্যক্ত হওয়ার পর তৎপ্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে, শয়তান তাদের জন্যে তাদের কাজকে সুন্দর করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা দেয়

[47:26]

এটা এজন্য যে, তারা তাদেরকে বলে, যারা আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাব অপছন্দ করেঃ আমরা কোন কোন ব্যাপারে তোমাদের কথা মান্য করবআল্লাহ তাদের গোপন পরামর্শ অবগত আছেন

[47:27]

ফেরেশতা যখন তাদের মুখমন্ডল ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করতে করতে প্রাণ হরণ করবে, তখন তাদের অবস্থা কেমন হবে?

[47:28]

এটা এজন্যে যে, তারা সেই বিষয়ের অনুসরণ করে, যা আল্লাহর অসন্তোষ সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিকে অপছন্দ করেফলে তিনি তাদের কর্মসমূহ ব্যর্থ করে দেন

[47:29]

যাদের অন্তরে রোগ আছে, তারা কি মনে করে যে, আল্লাহ তাদের অন্তরের বিদ্বেষ প্রকাশ করে দেবেন না?

[47:30]

আমি ইচ্ছা করলে আপনাকে তাদের সাথে পরিচিত করে দিতামতখন আপনি তাদের চেহারা দেখে তাদেরকে চিনতে পারতেন এবং আপনি অবশ্যই কথার ভঙ্গিতে তাদেরকে চিনতে পারবেনআল্লাহ তোমাদের কর্মসমূহের খবর রাখেন

[47:31]

আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যে পর্যন্ত না ফুটিয়ে তুলি তোমাদের জেহাদকারীদেরকে এবং সবরকারীদেরকে এবং যতক্ষণ না আমি তোমাদের অবস্থান সমূহ যাচাই করি

[47:32]

নিশ্চয় যারা কাফের এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে এবং নিজেদের জন্যে সৎপথ ব্যক্ত হওয়ার পর রসূলের (সঃ) বিরোধিতা করে, তারা আল্লাহর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না এবং তিনি ব্যর্থ করে দিবেন তাদের কর্মসমূহকে

[47:33]

হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রসূলের (সাঃ) আনুগত্য কর এবং নিজেদের কর্ম বিনষ্ট করো না

[47:34]

নিশ্চয় যারা কাফের এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে, অতঃপর কাফের অবস্থায় মারা যায়, আল্লাহ কখনই তাদেরকে ক্ষমা করবেন না

[47:35]

অতএব, তোমরা হীনবল হয়ো না এবং সন্ধির আহবান জানিও না, তোমরাই হবে প্রবলআল্লাহই তোমাদের সাথে আছেনতিনি কখনও তোমাদের কর্ম হ্রাস করবেন না

[47:36]

পার্থিব জীবন তো কেবল খেলাধুলা, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও এবং সংযম অবলম্বন কর, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিদান দেবেন এবং তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ চাইবেন না

[47:37]

তিনি তোমাদের কাছে ধন-সম্পদ চাইলে অতঃপর তোমাদেরকে অতিষ্ঠ করলে তোমরা কার্পণ্য করবে এবং তিনি তোমাদের মনের সংকীর্ণতা প্রকাশ করে দেবেন

[47:38]

শুন, তোমরাই তো তারা, যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার আহবান জানানো হচ্ছে, অতঃপর তোমাদের কেউ কেউ কৃপণতা করছে যারা কৃপণতা করছে, তারা নিজেদের প্রতিই কৃপণতা করছেআল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্থযদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, এরপর তারা তোমাদের মত হবে না

 

48 Al-Fath

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[48:1]

নিশ্চয় আমি আপনার জন্যে এমন একটা ফয়সালা করে দিয়েছি, যা সুস্পষ্ট

[48:2]

যাতে আল্লাহ আপনার অতীত ও ভবিষ্যত ত্রুটিসমূহ মার্জনা করে দেন এবং আপনার প্রতি তাঁর নেয়ামত পূর্ণ করেন ও আপনাকে সরল পথে পরিচালিত করেন

[48:3]

এবং আপনাকে দান করেন বলিষ্ঠ সাহায্য

[48:4]

তিনি মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বেড়ে যায়নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়

[48:5]

ঈমান এজন্যে বেড়ে যায়, যাতে তিনি ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান, যার তলদেশে নদী প্রবাহিতসেথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে এবং যাতে তিনি তাদের পাপ মোচন করেন এটাই আল্লাহর কাছে মহাসাফল্য

[48:6]

এবং যাতে তিনি কপট বিশ্বাসী পুরুষ ও কপট বিশ্বাসিনী নারী এবং অংশীবাদী পুরুষ ও অংশীবাদিনী নারীদেরকে শাস্তি দেন, যারা আল্লাহ সম্পর্কে মন্দ ধারণা পোষন করেতাদের জন্য মন্দ পরিনামআল্লাহ তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাদেরকে অভিশপ্ত করেছেনএবং তাহাদের জন্যে জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেনতাদের প্রত্যাবর্তন স্থল অত্যন্ত মন্দ

[48:7]

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের বাহিনীসমূহ আল্লাহরইআল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়

[48:8]

আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি অবস্থা ব্যক্তকারীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে

[48:9]

যাতে তোমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তাঁকে সাহায্য ও সম্মান কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা কর

[48:10]

যারা আপনার কাছে আনুগত্যের শপথ করে, তারা তো আল্লাহর কাছে আনুগত্যের শপথ করেআল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর রয়েছেঅতএব, যে শপথ ভঙ্গ করে; অতি অবশ্যই সে তা নিজের ক্ষতির জন্যেই করে এবং যে আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করে; আল্লাহ সত্ত্বরই তাকে মহাপুরস্কার দান করবেন

[48:11]

মরুবাসীদের মধ্যে যারা গৃহে বসে রয়েছে, তারা আপনাকে বলবেঃ আমরা আমাদের ধন-সম্পদ ও পরিবার-পরিজনের কাজে ব্যস্ত ছিলামঅতএব, আমাদের পাপ মার্জনা করানতারা মুখে এমন কথা বলবে, যা তাদের অন্তরে নেইবলুনঃ আল্লাহ তোমাদের ক্ষতি অথবা উপকার সাধনের ইচ্ছা করলে কে তাকে বিরত রাখতে পারে? বরং তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয় পরিপূর্ণ জ্ঞাত

[48:12]

বরং তোমরা ধারণ করেছিলে যে, রসূল ও মুমিনগণ তাদের বাড়ী-ঘরে কিছুতেই ফিরে আসতে পারবে না এবং এই ধারণা তোমাদের জন্যে খুবই সুখকর ছিলতোমরা মন্দ ধারণার বশবর্তী হয়েছিলেতোমরা ছিলে ধ্বংসমুখী এক সম্প্রদায়

[48:13]

যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস করে না, আমি সেসব কাফেরের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছি

[48:14]

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরইতিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেনতিনি ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান

[48:15]

তোমরা যখন যুদ্ধলব্ধ ধন-সম্পদ সংগ্রহের জন্য যাবে, তখন যারা পশ্চাতে থেকে গিয়েছিল, তারা বলবেঃ আমাদেরকেও তোমাদের সঙ্গে যেতে দাওতারা আল্লাহর কালাম পরিবর্তন করতে চায়বলুনঃ তোমরা কখনও আমাদের সঙ্গে যেতে পারবে নাআল্লাহ পূর্ব থেকেই এরূপ বলে দিয়েছেনতারা বলবেঃ বরং তোমরা আমাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করছপরন্তু তারা সামান্যই বোঝে

[48:16]

গৃহে অবস্থানকারী মরুবাসীদেরকে বলে দিনঃ আগামীতে তোমরা এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধ করতে আহুত হবে তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না তারা মুসলমান হয়ে যায়তখন যদি তোমরা নির্দেশ পালন কর, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম পুরস্কার দিবেনআর যদি পৃষ্ঠপ্রদর্শন কর যেমন ইতিপূর্বে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছ, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি দিবেন

[48:17]

অন্ধের জন্যে, খঞ্জের জন্যে ও রুগ্নের জন্যে কোন অপরাধ নাই এবং যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত্য করবে তাকে তিনি জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত হয়পক্ষান্তরে যে, ব্যক্তি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিবেন

[48:18]

আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা বৃক্ষের নীচে আপনার কাছে শপথ করলআল্লাহ অবগত ছিলেন যা তাদের অন্তরে ছিলঅতঃপর তিনি তাদের প্রতি প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদেরকে আসন্ন বিজয় পুরস্কার দিলেন

[48:19]

এবং বিপুল পরিমাণে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, যা তারা লাভ করবেআল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়

[48:20]

আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ওয়াদা দিয়েছেন, যা তোমরা লাভ করবেতিনি তা তোমাদের জন্যে ত্বরান্বিত করবেনতিনি তোমাদের থেকে শত্রুদের স্তব্দ করে দিয়েছেন-যাতে এটা মুমিনদের জন্যে এক নিদর্শন হয় এবং তোমাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন

[48:21]

আর ও একটি বিজয় রয়েছে যা এখনও তোমাদের অধিকারে আসেনি, আল্লাহ তা বেষ্টন করে আছেনআল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান

[48:22]

যদি কাফেররা তোমাদের মোকাবেলা করত, তবে অবশ্যই তারা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করততখন তারা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পেত না

[48:23]

এটাই আল্লাহর রীতি, যা পূর্ব থেকে চালু আছেতুমি আল্লাহর রীতিতে কোন পরিবর্তন পাবে না

[48:24]

তিনি মক্কা শহরে তাদের হাত তোমাদের থেকে এবং তোমাদের হাত তাদের থেকে নিবারিত করেছেন তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করার পরতোমরা যা কিছু কর, আল্লাহ তা দেখেন

[48:25]

তারাই তো কুফরী করেছে এবং বাধা দিয়েছে তোমাদেরকে মসজিদে হারাম থেকে এবং অবস্থানরত কোরবানীর জন্তুদেরকে যথাস্থানে পৌছতেযদি মক্কায় কিছুসংখ্যক ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী না থাকত, যাদেরকে তোমরা জানতে নাঅর্থাৎ তাদের পিষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকত, অতঃপর তাদের কারণে তোমরা অজ্ঞাতসারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে, তবে সব কিছু চুকিয়ে দেয়া হত; কিন্তু এ কারণে চুকানো হয়নি, যাতে আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা স্বীয় রহমতে দাখিল করে নেনযদি তারা সরে যেত, তবে আমি অবশ্যই তাদের মধ্যে যারা কাফের তাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শস্তি দিতাম

[48:26]

কেননা, কাফেররা তাদের অন্তরে মূর্খতাযুগের জেদ পোষণ করতঅতঃপর আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদের উপর স্বীয় প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদের জন্যে সংযমের দায়িত্ব অপরিহার্য করে দিলেন বস্তুতঃ তারাই ছিল এর অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্তআল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত

[48:27]

আল্লাহ তাঁর রসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছেনআল্লাহ চাহেন তো তোমরা অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে মস্তকমুন্ডিত অবস্থায় এবং কেশ কর্তিত অবস্থায়তোমরা কাউকে ভয় করবে নাঅতঃপর তিনি জানেন যা তোমরা জান নাএছাড়াও তিনি দিয়েছেন তোমাদেরকে একটি আসন্ন বিজয়

[48:28]

তিনিই তাঁর রসূলকে হেদায়েত ও সত্য ধর্মসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেনসত্য প্রতিষ্ঠাতারূপে আল্লাহ যথেষ্ট

[48:29]

মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীলআল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সেজদারত দেখবেনতাদের মুখমন্ডলে রয়েছে সেজদার চিহ্ন তওরাতে তাদের অবস্থা এরূপ এবং ইঞ্জিলে তাদের অবস্থা যেমন একটি চারা গাছ যা থেকে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর তা শক্ত ও মজবুত হয় এবং কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে-চাষীকে আনন্দে অভিভুত করে-যাতে আল্লাহ তাদের দ্বারা কাফেরদের অন্তর্জালা সৃষ্টি করেনতাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের ওয়াদা দিয়েছেন

 

49 Al-Hujurât

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[49:1]

মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও রসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় করনিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন

[49:2]

মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো নাএতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না

[49:3]

যারা আল্লাহর রসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে শিষ্টাচারের জন্যে শোধিত করেছেনতাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার

[49:4]

যারা প্রাচীরের আড়াল থেকে আপনাকে উচুস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই অবুঝ

[49:5]

যদি তারা আপনার বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত সবর করত, তবে তা-ই তাদের জন্যে মঙ্গলজনক হতআল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু

[49:6]

মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও

[49:7]

তোমরা জেনে রাখ তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রসূল রয়েছেনতিনি যদি অনেক বিষয়ে তোমাদের আবদার মেনে নেন, তবে তোমরাই কষ্ট পাবেকিন্তু আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ঈমানের মহব্বত সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা হৃদয়গ্রাহী করে দিয়েছেনপক্ষান্তরে কুফর, পাপাচার ও নাফরমানীর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দিয়েছেনতারাই সৎপথ অবলম্বনকারী

[49:8]

এটা আল্লাহর কৃপা ও নিয়ামতঃ আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়

[49:9]

যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবেঅতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসেযদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবেনিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন

[49:10]

মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও

[49:11]

মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করেকেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করেকেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো নাকেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহযারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম

[49:12]

মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাকনিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহএবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করেতোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই করআল্লাহকে ভয় কর নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু

[49:13]

হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হওনিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগারনিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন

[49:14]

মরুবাসীরা বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছিবলুনঃ তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করনি; বরং বল, আমরা বশ্যতা স্বীকার করেছিএখনও তোমাদের অন্তরে বিশ্বাস জন্মেনিযদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর, তবে তোমাদের কর্ম বিন্দুমাত্রও নিস্ফল করা হবে নানিশ্চয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান

[49:15]

তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন-সম্পদ দ্বারা জেহাদ করেতারাই সত্যনিষ্ঠ

[49:16]

বলুনঃ তোমরা কি তোমাদের ধর্ম পরায়ণতা সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে ভূমন্ডলে এবং যা কিছু আছে নভোমন্ডলেআল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত

[49:17]

তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করেবলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো নাবরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক

[49:18]

আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের অদৃশ্য বিষয় জানেন, তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন

 

50 Qâf

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[50:1]

ক্বাফ! সম্মানিত কোরআনের শপথ;

[50:2]

বরং তারা তাদের মধ্য থেকেই একজন ভয় প্রদর্শনকারী আগমন করেছে দেখে বিস্ময় বোধ করেঅতঃপর কাফেররা বলেঃ এটা আশ্চর্যের ব্যাপার

[50:3]

আমরা মরে গেলে এবং মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে গেলেও কি পুনরুত্থিত হব? এ প্রত্যাবর্তন সুদূরপরাহত

[50:4]

মৃত্তিকা তাদের কতটুকু গ্রাস করবে, তা আমার জানা আছে এবং আমার কাছে আছে সংরক্ষিত কিতাব

[50:5]

বরং তাদের কাছে সত্য আগমন করার পর তারা তাকে মিথ্যা বলছেফলে তারা সংশয়ে পতিত রয়েছে

[50:6]

তারা কি তাদের উপরস্থিত আকাশের পানে দৃষ্টিপাত করে না আমি কিভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি? তাতে কোন ছিদ্রও নেই

[50:7]

আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালার ভার স্থাপন করেছি এবং তাতে সর্বপ্রকার নয়নাভিরাম উদ্ভিদ উদগত করেছি

[50:8]

এটা জ্ঞান আহরণ ও স্মরণ করার মত ব্যাপার প্রত্যেক অনুরাগী বান্দার জন্যে

[50:9]

আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তদ্বারা বাগান ও শস্য উদগত করি, যেগুলোর ফসল আহরণ করা হয়

[50:10]

এবং লম্বমান খর্জুর বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খর্জুর,

[50:11]

বান্দাদের জীবিকাস্বরূপ এবং বৃষ্টি দ্বারা আমি মৃত জনপদকে সঞ্জীবিত করিএমনিভাবে পুনরুত্থান ঘটবে

[50:12]

তাদের পূর্বে মিথ্যাবাদী বলেছে নূহের সম্প্রদায়, কুপবাসীরা এবং সামুদ সম্প্রদায়

[50:13]

আদ, ফেরাউন, ও লূতের সম্প্রদায়,

[50:14]

বনবাসীরা এবং তোব্বা সম্প্রদায়প্রত্যেকেই রসূলগণকে মিথ্যা বলেছে, অতঃপর আমার শাস্তির যোগ্য হয়েছে

[50:15]

আমি কি প্রথমবার সৃষ্টি করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি? বরং তারা নতুন সৃষ্টির ব্যাপারে সন্দেহ পোষন করেছে

[50:16]

আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছিআমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী

[50:17]

যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল গ্রহণ করে

[50:18]

সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে

[50:19]

মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে এ থেকেই তুমি টালবাহানা করতে

[50:20]

এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে এটা হবে ভয় প্রদর্শনের দিন

[50:21]

প্রত্যেক ব্যক্তি আগমন করবে তার সাথে থাকবে চালক ও কর্মের সাক্ষী

[50:22]

তুমি তো এই দিন সম্পর্কে উদাসীন ছিলেএখন তোমার কাছ থেকে যবনিকা সরিয়ে দিয়েছিফলে আজ তোমার দৃষ্টি সুতীক্ষ্ন

[50:23]

তার সঙ্গী ফেরেশতা বলবেঃ আমার কাছে যে, আমলনামা ছিল, তা এই

[50:24]

তোমরা উভয়েই নিক্ষেপ কর জাহান্নামে প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ বিরুদ্ধবাদীকে,

[50:25]

যে বাধা দিত মঙ্গলজনক কাজে, সীমালঙ্ঘনকারী, সন্দেহ পোষণকারীকে

[50:26]

যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য গ্রহণ করত, তাকে তোমরা কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর

[50:27]

তার সঙ্গী শয়তান বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমি তাকে অবাধ্যতায় লিপ্ত করিনিবস্তুতঃ সে নিজেই ছিল সুদূর পথভ্রান্তিতে লিপ্ত

[50:28]

আল্লাহ বলবেনঃ আমার সামনে বাকবিতন্ডা করো না আমি তো পূর্বেই তোমাদেরকে আযাব দ্বারা ভয় প্রদর্শন করেছিলাম

[50:29]

আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নই

[50:30]

যেদিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞাসা করব; তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ? সে বলবেঃ আরও আছে কি?

[50:31]

জান্নাতকে উপস্থিত করা হবে খোদাভীরুদের অদূরে

[50:32]

তোমাদের প্রত্যেক অনুরাগী ও স্মরণকারীকে এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল

[50:33]

যে না দেখে দয়াময় আল্লাহ তাআলাকে ভয় করত এবং বিনীত অন্তরে উপস্থিত হত

[50:34]

তোমরা এতে শান্তিতে প্রবেশ কর এটাই অনন্তকাল বসবাসের জন্য প্রবেশ করার দিন

[50:35]

তারা তথায় যা চাইবে, তাই পাবে এবং আমার কাছে রয়েছে আরও অধিক

[50:36]

আমি তাদের পূর্বে বহু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি, তারা এদের অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী ছিল এবং দেশে-বিদেশে বিচরণ করে ফিরততাদের কোন পলায়ন স্থান ছিল না

[50:37]

এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্যে, যার অনুধাবন করার মত অন্তর রয়েছেঅথবা সে নিবিষ্ট মনে শ্রবণ করে

[50:38]

আমি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃষ্টি করেছি এবং আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি

[50:39]

অতএব, তারা যা কিছু বলে, তজ্জন্যে আপনি ছবর করুন এবং, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে আপনার পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করুন

[50:40]

রাত্রির কিছু অংশে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন এবং নামাযের পশ্চাতেও

[50:41]

শুন, যে দিন এক আহবানকারী নিকটবর্তী স্থান থেকে আহবান করবে

[50:42]

যেদিন মানুষ নিশ্চিত সেই ভয়াবহ আওয়াজ শুনতে পাবে, সেদিনই পুনরত্থান দিবস

[50:43]

আমি জীবন দান করি, মৃত্যু ঘটাই এবং আমারই দিকে সকলের প্রত্যাবর্তন

[50:44]

যেদিন ভূমন্ডল বিদীর্ণ হয়ে মানুষ ছুটাছুটি করে বের হয়ে আসবেএটা এমন সমবেত করা, যা আমার জন্যে অতি সহজ

[50:45]

তারা যা বলে, তা আমি সম্যক অবগত আছিআপনি তাদের উপর জোরজবরকারী ননঅতএব, যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কোরআনের মাধ্যমে উপদেশ দান করুন

 

51 Adh-Dhâriyât

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[51:1]

কসম ঝঞ্ঝাবায়ুর

[51:2]

অতঃপর বোঝা বহনকারী মেঘের

[51:3]

অতঃপর মৃদু চলমান জলযানের,

[51:4]

অতঃপর কর্ম বন্টনকারী ফেরেশতাগণের,

[51:5]

তোমাদের প্রদত্ত ওয়াদা অবশ্যই সত্য

[51:6]

ইনসাফ অবশ্যম্ভাবী

[51:7]

পথবিশিষ্ট আকাশের কসম,

[51:8]

তোমরা তো বিরোধপূর্ণ কথা বলছ

[51:9]

যে ভ্রষ্ট, সেই এ থেকে মুখ ফিরায়,

[51:10]

অনুমানকারীরা ধ্বংস হোক,

[51:11]

যারা উদাসীন, ভ্রান্ত

[51:12]

তারা জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কবে হবে?

[51:13]

যেদিন তারা অগ্নিতে পতিত হবে,

[51:14]

তোমরা তোমাদের শাস্তি আস্বাদন করতোমরা একেই ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিল

[51:15]

খোদাভীরুরা জান্নাতে ও প্রস্রবণে থাকবে

[51:16]

এমতাবস্থায় যে, তারা গ্রহণ করবে যা তাদের পালনকর্তা তাদেরকে দেবেননিশ্চয় ইতিপূর্বে তারা ছিল ৎকর্মপরায়ণ,

[51:17]

তারা রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত,

[51:18]

রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করত,

[51:19]

এবং তাদের ধন-সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক ছিল

[51:20]

বিশ্বাসকারীদের জন্যে পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে,

[51:21]

এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও, তোমরা কি অনুধাবন করবে না?

[51:22]

আকাশে রয়েছে তোমাদের রিযিক ও প্রতিশ্রুত সবকিছু

[51:23]

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের পালনকর্তার কসম, তোমাদের কথাবার্তার মতই এটা সত্য

[51:24]

আপনার কাছে ইব্রাহীমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছে কি?

[51:25]

যখন তারা তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে বললঃ সালাম, তখন সে বললঃ সালামএরা তো অপরিচিত লোক

[51:26]

অতঃপর সে গ্রহে গেল এবং একটি ঘৃতেপক্ক মোটা গোবৎস নিয়ে হাযির হল

[51:27]

সে গোবৎসটি তাদের সামনে রেখে বললঃ তোমরা আহার করছ না কেন?

[51:28]

অতঃপর তাদের সম্পর্কে সে মনে মনে ভীত হলঃ তারা বললঃ ভীত হবেন নাতারা তাঁকে একট জ্ঞানীগুণী পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল

[51:29]

অতঃপর তাঁর স্ত্রী চীৎকার করতে করতে সামনে এল এবং মুখ চাপড়িয়ে বললঃ আমি তো বৃদ্ধা, বন্ধ্যা

[51:30]

তারা বললঃ তোমার পালনকর্তা এরূপই বলেছেননিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ