Part 28
58 Al-Mujadilah
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[58:1]
যে
নারী তার
স্বামীর
বিষয়ে আপনার
সাথে
বাদানুবাদ
করছে এবং
অভিযোগ পেশ করছে
আল্লাহর
দরবারে, আল্লাহ
তার কথা শুনেছেন। আল্লাহ
আপনাদের
উভয়ের
কথাবার্তা
শুনেন। নিশ্চয়
আল্লাহ সবকিছু
শুনেন, সবকিছু
দেখেন।
[58:2]
তোমাদের
মধ্যে যারা
তাদের স্ত্রীগণকে
মাতা বলে ফেলে, তাদের
স্ত্রীগণ
তাদের মাতা
নয়। তাদের
মাতা কেবল তারাই, যারা
তাদেরকে
জন্মদান
করেছে। তারা
তো অসমীচীন ও
ভিত্তিহীন
কথাই বলে। নিশ্চয়
আল্লাহ
মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।
[58:3]
যারা
তাদের
স্ত্রীগণকে
মাতা বলে
ফেলে, অতঃপর
নিজেদের
উক্তি
প্রত্যাহার
করে, তাদের
কাফফারা এই
একে অপরকে স্পর্শ করার
পূর্বে একটি
দাসকে মুক্তি
দিবে। এটা
তোমাদের
জন্যে উপদেশ
হবে। আল্লাহ
খবর রাখেন
তোমরা যা কর।
[58:4]
যার
এ সামর্থ্য
নেই, সে একে অপরকে
স্পর্শ করার
পূর্বে একাদিক্রমে
দুই মাস রোযা
রাখবে। যে
এতেও অক্ষম
হয় সে ষাট
জন মিসকীনকে
আহার করাবে। এটা
এজন্যে, যাতে
তোমরা আল্লাহ
ও তাঁর রসূলের
প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন কর। এগুলো
আল্লাহর
নির্ধারিত
শাস্তি। আর
কাফেরদের
জন্যে রয়েছে যন্ত্রণা
দায়ক আযাব।
[58:5]
যারা
আল্লাহর তাঁর
রসূলের বিরুদ্ধাচরণ
করে, তারা
অপদস্থ
হয়েছে, যেমন
অপদস্থ
হয়েছে তাদের
পূর্ববর্তীরা। আমি
সুস্পষ্ট
আয়াতসমূহ
নাযিল করেছি। আর
কাফেরদের
জন্যে রয়েছে
অপমানজনক
শাস্তি।
[58:6]
সেদিন
স্মরণীয়; যেদিন
আল্লাহ তাদের
সকলকে
পুনরুত্থিত
করবেন, অতঃপর
তাদেরকে
জানিয়ে
দিবেন যা তারা
করত। আল্লাহ তার হিসাব
রেখেছেন, আর
তারা তা ভুলে
গেছে। আল্লাহর
সামনে
উপস্থিত আছে
সব বস্তুই।
[58:7]
আপনি
কি ভেবে
দেখেননি যে, নভোমন্ডল
ও ভূমন্ডলে যা
কিছু আছে, আল্লাহ
তা জানেন। তিন
ব্যক্তির এমন
কোন পরামর্শ
হয় না যাতে
তিনি চতুর্থ
না থাকেন এবং
পাঁচ জনেরও
হয় না, যাতে
তিনি ষষ্ঠ
না থাকেন তারা
এতদপেক্ষা কম
হোক বা বেশী হোক
তারা যেখানেই
থাকুক না কেন তিনি তাদের
সাথে আছেন, তারা
যা করে, তিনি
কেয়ামতের
দিন তা
তাদেরকে
জানিয়ে দিবেন। নিশ্চয়
আল্লাহ
সর্ববিষয়ে
সম্যক জ্ঞাত।
[58:8]
আপনি
কি ভেবে
দেখেননি, যাদেরকে কানাঘুষা
করতে নিষেধ
করা হয়েছিল
অতঃপর তারা
নিষিদ্ধ কাজেরই
পুনরাবৃত্তি
করে এবং পাপাচার, সীমালংঘন
এবং রসূলের
অবাধ্যতার
বিষয়েই কানাঘুষা
করে। তারা
যখন আপনার কাছে আসে, তখন
আপনাকে এমন
ভাষায় সালাম
করে, যদ্দ্বারা
আল্লাহ
আপনাকে সালাম করেননি। তারা
মনে মনে বলেঃ
আমরা যা বলি, তজ্জন্যে
আল্লাহ
আমাদেরকে
শাস্তি দেন না কেন? জাহান্নামই
তাদের জন্যে
যথেষ্ট। তারা
তাতে প্রবেশ
করবে। কতই
না নিকৃষ্ট
সেই জায়গা।
[58:9]
মুমিনগণ, তোমরা
যখন কানাকানি কর, তখন
পাপাচার, সীমালংঘন
ও রসূলের
অবাধ্যতার
বিষয়ে কানাকানি
করো না বরং অনুগ্রহ ও
খোদাভীতির
ব্যাপারে
কানাকানি করো। আল্লাহকে
ভয় কর, যাঁর
কাছে তোমরা একত্রিত হবে।
[58:10]
এই
কানাঘুষা তো
শয়তানের কাজ; মুমিনদেরকে
দুঃখ দেয়ার
দেয়ার জন্যে। তবে
আল্লাহর
অনুমতি
ব্যতীত সে
তাদের কোন ক্ষতি করতে
পারবে না। মুমিনদের
উচিত আল্লাহর
উপর ভরসা করা।
[58:11]
মুমিনগণ, যখন
তোমাদেরকে
বলা হয়ঃ
মজলিসে স্থান
প্রশস্ত করে
দাও, তখন
তোমরা স্থান
প্রশস্ত করে
দিও। আল্লাহর জন্যে
তোমাদের জন্য
প্রশস্ত করে
দিবেন। যখন
বলা হয়ঃ উঠে
যাও, তখন উঠে
যেয়ো। তোমাদের
মধ্যে যারা
ঈমানদার এবং
যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ
তাদের
মর্যাদা উচ্চ
করে দিবেন। আল্লাহ
খবর রাখেন যা
কিছু তোমরা কর।
[58:12]
মুমিনগণ, তোমরা
রসূলের কাছে কানকথা বলতে
চাইলে তৎপূর্বে
সদকা প্রদান
করবে। এটা
তোমাদের
জন্যে
শ্রেয়ঃ ও পবিত্র
হওয়ার ভাল
উপায়। যদি
তাতে সক্ষম না
হও, তবে
আল্লাহ
ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[58:13]
তোমরা
কি কানকথা
বলার পূর্বে সদকা প্রদান
করতে ভীত হয়ে
গেলে? অতঃপর
তোমরা যখন
সদকা দিতে
পারলে না এবং
আল্লাহ তোমাদেরকে
মাফ করে দিলেন
তখন তোমরা
নামায কায়েম
কর, যাকাত
প্রদান কর এবং
আল্লাহ ও
রসূলের
আনুগত্য কর। আল্লাহ
খবর রাখেন
তোমরা যা কর।
[58:14]
আপনি
কি তাদের
প্রতি লক্ষ্য করেননি, যারা
আল্লাহর গযবে
নিপতিত
সম্প্রদায়ের
সাথে
বন্ধুত্ব করে? তারা মুসলমানদের
দলভুক্ত নয়
এবং তাদেরও
দলভূক্ত নয়। তারা
জেনেশুনে
মিথ্যা
বিষয়ে শপথ
করে।
[58:15]
আল্লাহ
তাদের জন্যে
কঠোর শাস্তি
প্রস্তুত
রেখেছেন। নিশ্চয়
তারা যা করে, খুবই
মন্দ।
[58:16]
তারা
তাদের শপথকে
ঢাল করে রেখেছেন, অতঃপর
তারা আল্লাহর
পথ থেকে
মানুষকে বাধা
প্রদান করে। অতএব, তাদের
জন্য রয়েছে
অপমানজনক
শাস্তি।
[58:17]
আল্লাহর
কবল থেকে
তাদের ধন-সম্পদ
ও
সন্তান-সন্ততি
তাদেরকে
মোটেই বাঁচাতে
পারবেনা। তারাই
জাহান্নামের অধিবাসী
তথায় তারা
চিরকাল থাকবে।
[58:18]
যেদিন
আল্লাহ তাদের
সকলকে পুনরুত্থিত
করবেন। অতঃপর
তারা আল্লাহর
সামনে শপথ
করবে, যেমন
তোমাদের
সামনে শপথ করে। তারা
মনে করবে যে, তারা
কিছু সৎপথে
আছে। সাবধান, তারাই
তো আসল
মিথ্যাবাদী।
[58:19]
শয়তান
তাদেরকে
বশীভূত করে নিয়েছে, অতঃপর
আল্লাহর
স্মরণ
ভূলিয়ে
দিয়েছে। তারা
শয়তানের দল। সাবধান, শয়তানের
দলই
ক্ষতিগ্রস্ত।
[58:20]
নিশ্চয়
যারা আল্লাহ ও
তাঁর রসূলের
বিরুদ্ধাচারণ
করে, তারাই
লাঞ্ছিতদের
দলভূক্ত।
[58:21]
আল্লাহ
লিখে
দিয়েছেনঃ
আমি এবং আমার
রসূলগণ
অবশ্যই
বিজয়ী হব। নিশ্চয়
আল্লাহ
শক্তিধর, পরাক্রমশালী।
[58:22]
যারা
আল্লাহ ও
পরকালে
বিশ্বাস করে, তাদেরকে
আপনি আল্লাহ ও
তাঁর রসূলের
বিরুদ্ধাচরণকারীদের
সাথে
বন্ধুত্ব
করতে দেখবেন
না, যদিও তারা
তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা
অথবা
জ্ঞাতি-গোষ্ঠী
হয়। তাদের অন্তরে
আল্লাহ ঈমান
লিখে
দিয়েছেন এবং
তাদেরকে
শক্তিশালী
করেছেন তাঁর
অদৃশ্য শক্তি
দ্বারা। তিনি
তাদেরকে
জান্নাতে
দাখিল করবেন, যার
তলদেশে নদী
প্রবাহিত। তারা তথায়
চিরকাল থাকবে। আল্লাহ
তাদের প্রতি
সন্তুষ্ট এবং
তারা আল্লাহর
প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই
আল্লাহর দল। জেনে
রাখ, আল্লাহর
দলই সফলকাম
হবে।
59 Al-Hashr
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[59:1]
নভোমন্ডল
ও ভূমন্ডলে যা
কিছু আছে, সবই
আল্লাহর
পবিত্রতা
বর্ণনা করে। তিনি
পরাক্রমশালী
মহাজ্ঞানী।
[59:2]
তিনিই
কিতাবধারীদের
মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে
প্রথমবার
একত্রিত করে
তাদের বাড়ী-ঘর
থেকে
বহিস্কার
করেছেন। তোমরা
ধারণাও করতে
পারনি যে, তারা
বের হবে এবং
তারা মনে
করেছিল যে, তাদের দূর্গগুলো
তাদেরকে
আল্লাহর কবল
থেকে রক্ষা করবে। অতঃপর
আল্লাহর
শাস্তি তাদের
উপর এমনদিক
থেকে আসল, যার
কল্পনাও তারা
করেনি। আল্লাহ
তাদের অন্তরে
ত্রাস সঞ্চার
করে দিলেন। তারা
তাদের
বাড়ী-ঘর
নিজেদের হাতে
এবং মুসলমানদের
হাতে ধ্বংস
করছিল। অতএব, হে
চক্ষুষ্মান
ব্যক্তিগণ, তোমরা
শিক্ষা গ্রহণ
কর।
[59:3]
আল্লাহ
যদি তাদের
জন্যে নির্বাসন
অবধারিত না
করতেন, তবে
তাদেরকে
দুনিয়াতে
শাস্তি দিতেন। আর
পরকালে তাদের
জন্যে রয়েছে
জাহান্নামের
আযাব।
[59:4]
এটা
এ কারণে যে, তারা
আল্লাহ ও তাঁর
রসূলের বিরুদ্ধাচরণ
করেছে। যে
আল্লাহর
বিরুদ্ধাচরণ
করে, তার জানা
উচিত যে, আল্লাহ
কঠোর
শাস্তিদাতা।
[59:5]
তোমরা
যে কিছু কিছু
খর্জুর বৃক্ষ
কেটে দিয়েছ
এবং কতক না
কেটে ছেড়ে
দিয়েছ, তা তো
আল্লাহরই
আদেশ এবং যাতে তিনি
অবাধ্যদেরকে
লাঞ্ছিত করেন।
[59:6]
আল্লাহ
বনু-বনুযায়রের
কাছ থেকে
তাঁর রসূলকে
যে ধন-সম্পদ
দিয়েছেন, তজ্জন্যে
তোমরা
ঘোড়ায়
কিংবা উটে
চড়ে যুদ্ধ
করনি, কিন্তু
আল্লাহ যার
উপর ইচ্ছা, তাঁর
রসূলগণকে
প্রাধান্য
দান করেন। আল্লাহ
সবকিছুর উপর
সর্বশক্তিমান।
[59:7]
আল্লাহ
জনপদবাসীদের
কাছ থেকে তাঁর
রসূলকে যা
দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর
আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের
এবং
মুসাফিরদের
জন্যে, যাতে
ধনৈশ্বর্য্য
কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের
মধ্যেই
পুঞ্জীভূত না
হয়। রসূল
তোমাদেরকে যা
দেন, তা গ্রহণ
কর এবং যা
নিষেধ করেন, তা
থেকে বিরত থাক
এবং আল্লাহকে
ভয় কর। নিশ্চয়
আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
[59:8]
এই
ধন-সম্পদ
দেশত্যাগী নিঃস্বদের
জন্যে, যারা
আল্লাহর
অনুগ্রহ ও
সন্তুষ্টিলাভের
অন্বেষণে এবং
আল্লাহ তাঁর
রসূলের
সাহায্যার্থে
নিজেদের
বাস্তুভিটা ও
ধন-সম্পদ থেকে
বহিস্কৃত
হয়েছে। তারাই
সত্যবাদী।
[59:9]
যারা
মুহাজিরদের
আগমনের
পূর্বে মদীনায়
বসবাস করেছিল
এবং বিশ্বাস
স্থাপন করেছিল, তারা
মুহাজিরদের
ভালবাসে, মুহাজিরদেরকে
যা দেয়া
হয়েছে, তজ্জন্যে
তারা অন্তরে
ঈর্ষাপোষণ
করে না এবং নিজেরা
অভাবগ্রস্ত
হলেও তাদেরকে
অগ্রাধিকার
দান করে। যারা
মনের
কার্পণ্য
থেকে মুক্ত, তারাই
সফলকাম।
[59:10]
আর
এই সম্পদ
তাদের জন্যে, যারা তাদের পরে
আগমন করেছে। তারা
বলেঃ হে
আমাদের
পালনকর্তা, আমাদেরকে
এবং ঈমানে আগ্রহী
আমাদের
ভ্রাতাগণকে
ক্ষমা কর এবং
ঈমানদারদের
বিরুদ্ধে
আমাদের
অন্তরে কোন বিদ্বেষ
রেখো না। হে
আমাদের
পালনকর্তা, আপনি
দয়ালু, পরম
করুণাময়।
[59:11]
আপনি
কি মুনাফিকদেরকে
দেখেন নি? তারা
তাদের
কিতাবধারী
কাফের
ভাইদেরকে
বলেঃ তোমরা
যদি বহিস্কৃত
হও, তবে আমরা অবশ্যই
তোমাদের সাথে
দেশ থেকে বের
হয়ে যাব এবং
তোমাদের
ব্যাপারে
আমরা কখনও
কারও কথা
মানব না। আর
যদি তোমরা
আক্রান্ত হও, তবে
আমরা অবশ্যই
তোমাদেরকে
সাহায্য করব। আল্লাহ তাআলা
সাক্ষ্য দেন
যে, ওরা
নিশ্চয়ই
মিথ্যাবাদী।
[59:12]
যদি
তারা
বহিস্কৃত হয়, তবে মুনাফিকরা
তাদের সাথে
দেশত্যাগ
করবে না আর যদি
তারা
আক্রান্ত হয়, তবে
তারা তাদেরকে
সাহায্য করবে
না। যদি
তাদেরকে
সাহায্য করে, তবে
অবশ্যই
পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পলায়ন
করবে। এরপর
কাফেররা কোন
সাহায্য পাবে
না।
[59:13]
নিশ্চয়
তোমরা তাদের
অন্তরে আল্লাহ
তাআলা
অপেক্ষা
অধিকতর
ভয়াবহ। এটা
এ কারণে যে, তারা
এক নির্বোধ সম্প্রদায়।
[59:14]
তারা
সংঘবদ্ধভাবেও
তোমাদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করতে
পারবে না। তারা
যুদ্ধ করবে
কেবল
সুরক্ষিত
জনপদে অথবা দুর্গ প্রাচীরের
আড়াল থেকে। তাদের
পারস্পরিক
যুদ্ধই
প্রচন্ড হয়ে
থাকে। আপনি
তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ
মনে করবেন; কিন্তু
তাদের অন্তর
শতধাবিচ্ছিন্ন। এটা
এ কারণে যে, তারা
এক কান্ডজ্ঞানহীণ
সম্প্রদায়।
[59:15]
তারা
সেই লোকদের মত, যারা তাদের নিকট
অতীতে
নিজেদের
কর্মের
শাস্তিভোগ
করেছে। তাদের
জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি।
[59:16]
তারা
শয়তানের মত, যে
মানুষকে কাফের
হতে বলে। অতঃপর
যখন সে কাফের
হয়, তখন
শয়তান বলেঃ
তোমার সাথে
আমার কোন সম্পর্ক
নেই। আমি
বিশ্বপালনকর্তা
আল্লাহ তাআলাকে
ভয় করি।
[59:17]
অতঃপর
উভয়ের
পরিণতি হবে এই যে, তারা
জাহান্নামে
যাবে এবং
চিরকাল তথায়
বসবাস করবে। এটাই
জালেমদের
শাস্তি।
[59:18]
মুমিনগণ, তোমরা
আল্লাহ তাআলাকে
ভয় কর। প্রত্যেক
ব্যক্তির
উচিত, আগামী
কালের জন্যে
সে কি প্রেরণ
করে, তা
চিন্তা করা। আল্লাহ
তাআলাকে ভয়
করতে থাক। তোমরা
যা কর, আল্লাহ
তাআলা সে সম্পর্কে খবর
রাখেন।
[59:19]
তোমরা
তাদের মত হয়ো
না, যারা আল্লাহ
তাআলাকে ভুলে
গেছে। ফলে আল্লাহ
তাআলা তাদেরকে
আত্ন বিস্মৃত করে দিয়েছেন। তারাই
অবাধ্য।
[59:20]
জাহান্নামের
অধিবাসী এবং জান্নাতের অধিবাসী
সমান হতে পারে
না। যারা জান্নাতের
অধিবাসী, তারাই
সফলকাম।
[59:21]
যদি
আমি এই কোরআন পাহাড়ের
উপর অবতীর্ণ
করতাম, তবে তুমি দেখতে
যে, পাহাড় বিনীত
হয়ে আল্লাহ তাআলার
ভয়ে বিদীর্ণ
হয়ে গেছে। আমি এসব
দৃষ্টান্ত মানুষের
জন্যে বর্ণনা করি, যাতে
তারা চিন্তা-ভাবনা
করে।
[59:22]
তিনিই
আল্লাহ তাআলা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য
নেই; তিনি দৃশ্য
ও অদৃশ্যকে জানেন
তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা।
[59:23]
তিনিই
আল্লাহ তিনি ব্যতিত
কোন উপাস্য
নেই। তিনিই
একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি
ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মাহাত্ন?শীল। তারা
যাকে অংশীদার করে
আল্লাহ তা আলা তা থেকে পবিত্র।
[59:24]
তিনিই
আল্লাহ তাআলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম
নাম সমূহ তাঁরই। নভোমন্ডলে
ও ভূমন্ডলে যা
কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা
ঘোষণা করে। তিনি
পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।
60 Al-Mumtahanah
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[60:1]
মুমিনগণ, তোমরা
আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধরূপে
গ্রহণ করো না। তোমরা
তো তাদের প্রতি
বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তারা যে
সত্য তোমাদের কাছে
আগমন করেছে, তা অস্বীকার
করছে। তারা রসূলকে ও তোমাদেরকে
বহিস্কার করে এই
অপরাধে যে, তোমরা
তোমাদের পালনকর্তার
প্রতি বিশ্বাস
রাখ। যদি তোমরা
আমার সন্তুষ্টিলাভের
জন্যে এবং আমার
পথে জেহাদ করার জন্যে বের হয়ে
থাক, তবে কেন তাদের
প্রতি গোপনে বন্ধুত্বের
পয়গাম প্রেরণ
করছ? তোমরা যা গোপন
কর এবং যা প্রকাশ
কর, ত আমি খুব জানি। তোমাদের
মধ্যে যে এটা করে, সে সরলপথ
থেকে বিচ্যুত হয়ে
যায়।
[60:2]
তোমাদেরকে
করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের
শত্রু হয়ে যাবে
এবং মন্দ উদ্দেশ্যে
তোমাদের প্রতি
বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে
এবং চাইবে যে, কোনরূপে
তোমরা ও কাফের
হয়ে যাও।
[60:3]
তোমাদের
স্বজন-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি
কিয়ামতের দিন
কোন উপকারে আসবে
না। তিনি তোমাদের
মধ্যে ফয়সালা করবেন। তোমরা
যা কর, আল্লাহ তা
দেখেন।
[60:4]
তোমাদের
জন্যে ইব্রাহীম
ও তাঁর সঙ্গীগণের
মধ্যে চমৎকার
আদর্শ রয়েছে। তারা
তাদের সম্প্রদায়কে
বলেছিলঃ তোমাদের সাথে এবং তোমরা
আল্লাহর পরিবর্তে
যার এবাদত কর, তার সাথে
আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের
মানি না। তোমরা
এক আল্লাহর প্রতি
বিশ্বাস স্থাপন
না করলে তোমাদের মধ্যে ও আমাদের
মধ্যে চিরশত্রুতা
থাকবে। কিন্তু
ইব্রাহীমের উক্তি
তাঁর পিতার উদ্দেশে এই আদর্শের
ব্যতিক্রম। তিনি
বলেছিলেনঃ আমি
অবশ্যই তোমার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা
করব। তোমার
উপকারের জন্যে
আল্লাহর কাছে আমার
আর কিছু করার নেই। হে আমাদের পালনকর্তা!
আমরা তোমারই উপর
ভরসা করেছি, তোমারই
দিকে মুখ করেছি
এবং তোমারই
নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তন।
[60:5]
হে
আমাদের পালনকর্তা!
তুমি আমাদেরকে
কাফেরদের জন্য
পরীক্ষার পাত্র
করো না। হে আমাদের
পালনকর্তা! আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয়
তুমি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
[60:6]
তোমরা
যারা আল্লাহ ও
পরকাল প্রত্যাশা
কর, তোমাদের জন্য
তাদের মধ্যে উত্তম
আদর্শ রয়েছে। আর যে
মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জানা উচিত
যে, আল্লাহ বেপরওয়া, প্রশংসার
মালিক।
[60:7]
যারা
তোমাদের শত্রু
আল্লাহ তাদের
মধ্যে ও তোমাদের
মধ্যে সম্ভবতঃ
বন্ধুত্ব সৃষ্টি
করে দেবেন। আল্লাহ
সবই করতে পারেন
এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
[60:8]
ধর্মের
ব্যাপারে যারা
তোমাদের বিরুদ্ধে
লড়াই করেনি এবং
তোমাদেরকে দেশ
থেকে বহিস্কৃত
করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ
করতে আল্লাহ তোমাদেরকে
নিষেধ করেন না। নিশ্চয়
আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে
ভালবাসেন।
[60:9]
আল্লাহ
কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে
নিষেধ করেন, যারা
ধর্মের ব্যাপারে
তোমাদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে
দেশ থেকে বহিস্কৃত
করেছে এবং বহিস্কারকার্যে
সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব
করে তারাই জালেম।
[60:10]
মুমিনগণ, যখন তোমাদের
কাছে ঈমানদার
নারীরা হিজরত করে
আগমন করে, তখন তাদেরকে
পরীক্ষা কর। আল্লাহ
তাদের ঈমান সম্পর্কে সম্যক
অবগত আছেন। যদি তোমরা
জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর
তাদেরকে কাফেরদের
কাছে ফেরত পাঠিও
না। এরা কাফেরদের
জন্যে হালাল নয়
এবং কাফেররা এদের জন্যে হালাল নয়। কাফেররা
যা ব্যয় করেছে, তা তাদের
দিয়ে দাও। তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য
মোহরানা দিয়ে
বিবাহ করলে তোমাদের
অপরাধ হবে না। তোমরা
কাফের নারীদের
সাথে দাম্পত্য
সম্পর্ক বজায়
রেখো না। তোমরা
যা ব্যয় করেছ, তা চেয়ে নাও এবং তারাও
চেয়ে নিবে যা
তারা ব্যয় করেছে। এটা আল্লাহর
বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা
করেন। আল্লাহ
সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।
[60:11]
তোমাদের
স্ত্রীদের মধ্যে
যদি কেউ হাতছাড়া
হয়ে কাফেরদের
কাছে থেকে যায়, অতঃপর
তোমরা সুযোগ পাও, তখন যাদের স্ত্রী হাতছাড়া
হয়ে গেছে, তাদেরকে
তাদের ব্যয়কৃত
অর্থের সমপরিমাণ
অর্থ প্রদান কর এবং আল্লাহকে
ভয় কর, যার প্রতি
তোমরা বিশ্বাস
রাখ।
[60:12]
হে
নবী, ঈমানদার নারীরা
যখন আপনার
কাছে এসে আনুগত্যের
শপথ করে যে, তারা
আল্লাহর সাথে কাউকে
শরীক করবে না, চুরি
করবে না, ব্যভিচার
করবে না, তাদের
সন্তানদেরকে হত্যা
করবে না, জারজ সন্তানকে স্বামীর
ঔরস থেকে আপন গর্ভজাত
সন্তান বলে মিথ্যা
দাবী করবে না এবং
ভাল কাজে আপনার
অবাধ্যতা করবে
না, তখন তাদের
আনুগত্য গ্রহণ
করুন এবং তাদের
জন্যে আল্লাহর
কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
করুন। নিশ্চয়
আল্লাহ ক্ষমাশীল
অত্যন্ত দয়ালু।
[60:13]
মুমিনগণ, আল্লাহ
যে জাতির প্রতি
রুষ্ট, তোমরা তাদের
সাথে বন্ধুত্ব
করো না। তারা
পরকাল সম্পর্কে
নিরাশ হয়ে গেছে যেমন কবরস্থ
কাফেররা নিরাশ
হয়ে গেছে।
60 As-Saff
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[61:1]
নভোমন্ডলে
ও ভূমন্ডলে যা
কিছু আছে, সবই আল্লাহর
পবিত্রতা ঘোষণা
করে। তিনি পরাক্রান্ত
প্রজ্ঞাবান।
[61:2]
মুমিনগণ!
তোমরা যা কর না, তা কেন বল?
[61:3]
তোমরা
যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে
খুবই অসন্তোষজনক।
[61:4]
আল্লাহ
তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে
লড়াই করে, যেন তারা
সীসাগালানো প্রাচীর।
[61:5]
স্মরণ
কর, যখন মূসা (আঃ)
তাঁর সম্প্রদায়কে
বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা
কেন আমাকে কষ্ট
দাও, অথচ তোমরা
জান যে, আমি তোমাদের
কাছে আল্লাহর রসূল। অতঃপর
তারা যখন বক্রতা
অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের
অন্তরকে বক্র করে
দিলেন। আল্লাহ
পাপাচারী সম্প্রদায়কে
পথপ্রদর্শন করেন না।
[61:6]
স্মরণ
কর, যখন মরিয়ম-তনয়
ঈসা (আঃ) বললঃ হে
বনী ইসরাইল! আমি
তোমাদের কাছে আল্লাহর
প্রেরিত রসূল, আমার পূর্ববর্তী তওরাতের
আমি সত্যায়নকারী
এবং আমি এমন একজন
রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন
করবেন। তাঁর
নাম আহমদ। অতঃপর
যখন সে স্পষ্ট
প্রমাণাদি নিয়ে
আগমন করল, তখন তারা
বললঃ এ তো এক প্রকাশ্য
যাদু।
[61:7]
যে
ব্যক্তি ইসলামের
দিকে আহুত হয়েও আল্লাহ
সম্পর্কে মিথ্যা
বলে; তার চাইতে
অধিক যালেম আর
কে? আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে
পথ প্রদর্শন করেন
না।
[61:8]
তারা
মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে
চায়। আল্লাহ
তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে
বিকশিত করবেন যদিও
কাফেররা তা অপছন্দ
করে।
[61:9]
তিনি
তাঁর রসূলকে পথ
নির্দেশ ও সত্যধর্ম নিয়ে
প্রেরণ করেছেন, যাতে
একে সবধর্মের উপর
প্রবল করে দেন
যদিও মুশরিকরা
তা অপছন্দ করে।
[61:10]
মুমিনগণ, আমি কি
তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের
সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে
যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি থেকে মুক্তি
দেবে?
[61:11]
তা
এই যে, তোমরা আল্লাহ
ও তাঁর রসূলের
প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন করবে এবং
আল্লাহর পথে নিজেদের
ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জেহাদ করবে। এটাই
তোমাদের জন্যে
উত্তম; যদি তোমরা
বোঝ।
[61:12]
তিনি
তোমাদের পাপরাশি
ক্ষমা করবেন
এবং এমন জান্নাতে
দাখিল করবেন, যার পাদদেশে
নদী প্রবাহিত এবং
বসবাসের জান্নাতে
উত্তম বাসগৃহে। এটা মহাসাফল্য।
[61:13]
এবং
আরও একটি অনুগ্রহ
দিবেন, যা তোমরা পছন্দ
কর। আল্লাহর পক্ষ
থেকে সাহায্য এবং
আসন্ন বিজয়। মুমিনদেরকে
এর সুসংবাদ
দান করুন।
[61:14]
মুমিনগণ, তোমরা
আল্লাহর সাহায্যকারী
হয়ে যাও, যেমন
ঈসা ইবনে-মরিয়ম
তার শিষ্যবর্গকে
বলেছিল, আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী
হবে? শিষ্যবর্গ
বলেছিলঃ আমরা আল্লাহর
পথে সাহায্যকারী। অতঃপর বনী-ইসরাঈলের
একদল বিশ্বাস স্থাপন
করল এবং একদল কাফের
হয়ে গেল। যারা বিশ্বাস স্থাপন
করেছিল, আমি তাদেরকে
তাদের শত্রুদের
মোকাবেলায় শক্তি
যোগালাম, ফলে তারা
বিজয়ী হল।
62 Al Jummah
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[62:1]
রাজ্যাধিপতি, পবিত্র, পরাক্রমশালী
ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহর
পবিত্রতা ঘোষণা
করে, যা কিছু আছে
নভোমন্ডলে ও যা কিছু আছে ভূমন্ডলে।
[62:2]
তিনিই
নিরক্ষরদের মধ্য
থেকে একজন রসূল
প্রেরণ করেছেন, যিনি
তাদের কাছে পাঠ
করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং
শিক্ষা দেন কিতাব
ও হিকমত। ইতিপূর্বে
তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।
[62:3]
এই
রসূল প্রেরিত হয়েছেন
অন্য আরও লোকদের
জন্যে, যারা এখনও
তাদের সাথে মিলিত
হয়নি। তিনি
পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
[62:4]
এটা
আল্লাহর কৃপা, যাকে
ইচ্ছা তিনি
তা দান করেন। আল্লাহ
মহাকৃপাশীল।
[62:5]
যাদেরকে
তওরাত দেয়া হয়েছিল, অতঃপর
তারা তার অনুসরণ
করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত
সেই গাধা, যে পুস্তক
বহন করে, যারা
আল্লাহর আয়াতসমূহকে
মিথ্যা বলে, তাদের
দৃষ্টান্ত কত নিকৃষ্ট। আল্লাহ
জালেম সম্প্রদায়কে
পথ প্রদর্শন করেন
না।
[62:6]
বলুন
হে ইহুদীগণ, যদি তোমরা দাবী কর যে, তোমরাই
আল্লাহর বন্ধু-অন্য
কোন মানব নয়, তবে তোমরা
মৃত্যু কামনা কর যদি তোমরা সত্যবাদী
হও।
[62:7]
তারা
নিজেদের কৃতকর্মের
কারণে কখনও
মৃত্যু কামনা করবে
না। আল্লাহ জালেমদের
সম্পর্কে সম্যক
অবগত আছেন।
[62:8]
বলুন, তোমরা
যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু
অবশ্যই তোমাদের
মুখামুখি হবে, অতঃপর
তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর
কাছে উপস্থিত হবে। তিনি
তোমাদেরকে জানিয়ে
দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে।
[62:9]
মুমিনগণ, জুমআর
দিনে যখন নামাযের
আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা
আল্লাহর স্মরণের
পানে ত্বরা কর
এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের
জন্যে উত্তম যদি
তোমরা বুঝ।
[62:10]
অতঃপর
নামায সমাপ্ত হলে
তোমরা পৃথিবীতে
ছড়িয়ে পড় এবং
আল্লাহর অনুগ্রহ
তালাশ কর ও আল্লাহকে
অধিক স্মরণ কর, যাতে
তোমরা সফলকাম হও।
[62:11]
তারা
যখন কোন ব্যবসায়ের
সুযোগ অথবা
ক্রীড়াকৌতুক
দেখে তখন আপনাকে
দাঁড়ানো অবস্থায়
রেখে তারা সেদিকে
ছুটে যায়। বলুনঃ
আল্লাহর কাছে যা
আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক
ও ব্যবসায় অপেক্ষা
উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম
রিযিকদাতা।
63 Al Munafiqoon
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[63:1]
মুনাফিকরা
আপনার কাছে এসে
বলেঃ আমরা সাক্ষ্য
দিচ্ছি যে আপনি
নিশ্চয়ই আল্লাহর
রসূল। আল্লাহ
জানেন যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর
রসূল এবং আল্লাহ
সাক্ষ্য দিচ্ছেন
যে, মুনাফিকরা
অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
[63:2]
তারা
তাদের শপথসমূহকে
ঢালরূপে ব্যবহার
করে। অতঃপর
তারা আল্লাহর পথে
বাধা সৃষ্টি করে। তারা
যা করছে, তা খুবই মন্দ।
[63:3]
এটা
এজন্য যে, তারা
বিশ্বাস করার
পর পুনরায় কাফের
হয়েছে। ফলে তাদের
অন্তরে মোহর মেরে
দেয়া হয়েছে। অতএব তারা বুঝে না।
[63:4]
আপনি
যখন তাদেরকে দেখেন, তখন তাদের দেহাবয়ব
আপনার কাছে প্রীতিকর
মনে হয়। আর যদি
তারা কথা বলে, তবে আপনি তাদের কথা শুনেন। তারা
প্রাচীরে ঠেকানো
কাঠসদৃশ্য। প্রত্যেক
শোরগোলকে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে
মনে করে। তারাই
শত্রু, অতএব তাদের
সম্পর্কে সতর্ক
হোন। ধ্বংস করুন আল্লাহ তাদেরকে। তারা
কোথায় বিভ্রান্ত
হচ্ছে ?
[63:5]
যখন
তাদেরকে বলা হয়ঃ
তোমরা এস, আল্লাহর
রসূল তোমাদের জন্য
ক্ষমাপ্রার্থনা
করবেন, তখন তারা মাথা
ঘুরিয়ে নেয়
এবং আপনি তাদেরকে
দেখেন যে, তারা
অহংকার করে মুখ
ফিরিয়ে নেয়।
[63:6]
আপনি
তাদের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনা
করুন অথবা না করুন, উভয়ই
সমান। আল্লাহ
কখনও তাদেরকে ক্ষমা
করবেন না। আল্লাহ
পাপাচারী সম্প্রদায়কে
পথপ্রদর্শন করেন
না।
[63:7]
তারাই
বলেঃ আল্লাহর রাসূলের সাহচর্যে যারা
আছে তাদের জন্যে
ব্যয় করো না। পরিণামে
তারা আপনা-আপনি
সরে যাবে। ভূ ও নভোমন্ডলের
ধন-ভান্ডার আল্লাহরই
কিন্তু মুনাফিকরা
তা বোঝে না।
[63:8]
তারাই
বলেঃ আমরা যদি
মদীনায় প্রত্যাবর্তন
করি তবে সেখান
থেকে সবল অবশ্যই
দুর্বলকে বহিস্কৃত
করবে। শক্তি
তো আল্লাহ
তাঁর রসূল ও মুমিনদেরই
কিন্তু মুনাফিকরা
তা জানে না।
[63:9]
মুমিনগণ!
তোমাদের ধন-সম্পদ
ও সন্তান-সন্ততি
যেন তোমাদেরকে
আল্লাহর স্মরণ
থেকে গাফেল না
করে। যারা এ
কারণে গাফেল
হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।
[63:10]
আমি
তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার
আগেই ব্যয় কর। অন্যথায়
সে বলবেঃ হে আমার
পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ
দিলে না কেন? তাহলে
আমি সদকা করতাম
এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত
হতাম।
[63:11]
প্রত্যেক
ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত
হবে, তখন আল্লাহ
কাউকে অবকাশ দেবেন
না। তোমরা যা কর, আল্লাহ
সে বিষয়ে
খবর রাখেন।
64 At Taghabun
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[64:1]
নভোমন্ডল
ও ভূমন্ডলে যা
কিছু আছে, সবই আল্লাহর
পবিত্রতা ঘোষণা
করে। রাজত্ব
তাঁরই এবং প্রশংসা
তাঁরই। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
[64:2]
তিনিই
তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর
তোমাদের মধ্যে
কেউ কাফের এবং
কেউ মুমিন। তোমরা
যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।
[64:3]
তিনি
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি
করেছেন এবং তোমাদেরকে
আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর
সুন্দর করেছেন তোমাদের আকৃতি। তাঁরই
কাছে প্রত্যাবর্তন।
[64:4]
নভোমন্ডল
ও ভূমন্ডলে যা
আছে, তিনি তা জানেন। তিনি
আরও জানেন তোমরা
যা গোপনে কর এবং
যা প্রকাশ্যে কর। আল্লাহ অন্তরের বিষয়াদি
সম্পর্কে সম্যক
জ্ঞাত।
[64:5]
তোমাদের
পুর্বে যারা কাফের ছিল, তাদের বৃত্তান্ত
কি তোমাদের কাছে
পৌছেনি? তারা তাদের
কর্মের শাস্তি
আস্বাদন করেছে, এবং তাদের
জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি।
[64:6]
এটা
এ কারণে যে, তাদের
কাছে তাদের
রসূলগণ প্রকাশ্য
নিদর্শনাবলীসহ
আগমন করলে তারা
বলতঃ মানুষই কি
আমাদেরকে পথপ্রদর্শন করবে? অতঃপর
তারা কাফের হয়ে
গেল এবং মুখ ফিরিয়ে
নিল। এতে আল্লাহর কিছু আসে যায়
না। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী
প্রশংসিত।
[64:7]
কাফেররা
দাবী করে যে, তারা কখনও পুনরুত্থিত
হবে না। বলুন, অবশ্যই
হবে, আমার পালনকর্তার
কসম, তোমরা নিশ্চয় পুরুত্থিত হবে। অতঃপর
তোমাদেরকে অবহিত
করা হবে যা তোমরা
করতে। এটা আল্লাহর
পক্ষে সহজ।
[64:8]
অতএব
তোমরা আল্লাহ তাঁর
রসূল এবং অবতীর্ন
নূরের প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন কর। তোমরা
যা কর, সে বিষয়ে
আল্লাহ সম্যক
অবগত।
[64:9]
সেদিন
অর্থাৎ, সমাবেশের
দিন আল্লাহ
তোমাদেরকে সমবেত
করবেন। এ দিন
হার-জিতের দিন। যে ব্যক্তি
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন
করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন
করে, আল্লাহ তার
পাপসমূহ মোচন করবেন
এবং তাকে জান্নাতে
দাখিল করবেন। যার তলদেশে
নির্ঝরিনীসমূহ
প্রবাহিত হবে, তারা
তথায় চিরকাল
বসবাস করবে। এটাই
মহাসাফল্য।
[64:10]
আর
যারা কাফের এবং
আমার আয়াতসমূহকে
মিথ্যা বলে, তারাই
জাহান্নামের অধিবাসী, তারা
তথায় অনন্তকাল
থাকবে। কতই না মন্দ প্রত্যাবর্তনস্থল
এটা।
[64:11]
আল্লাহর
নির্দেশ ব্যতিরেকে
কোন বিপদ আসে
না এবং যে আল্লাহর
প্রতি বিশ্বাস
করে, তিনি তার অন্তরকে
সৎপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ
সর্ববিষয়ে সম্যক
পরিজ্ঞাত।
[64:12]
তোমরা
আল্লাহর আনুগত্য
কর এবং রসূলুল্লাহর
আনুগত্য কর। যদি তোমরা
মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমার
রসূলের দায়িত্ব কেবল খোলাখুলি
পৌছে দেয়া।
[64:13]
আল্লাহ
তিনি ব্যতীত কোন
মাবুদ নেই। অতএব
মুমিনগণ আল্লাহর
উপর ভরসা করুক।
[64:14]
হে
মুমিনগণ, তোমাদের
কোন কোন স্ত্রী
ও সন্তান-সন্ততি
তোমাদের দুশমন। অতএব
তাদের ব্যাপারে
সতর্ক থাক। যদি মার্জনা কর, উপেক্ষা
কর, এবং ক্ষমা
কর, তবে আল্লাহ
ক্ষমাশীল, করুনাময়।
[64:15]
তোমাদের
ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি
তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর আল্লাহর
কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার।
[64:16]
অতএব
তোমরা যথাসাধ্য
আল্লাহকে ভয় কর, শুন, আনুগত্য
কর এবং ব্যয় কর। এটা তোমাদের
জন্যে কল্যাণকর। যারা
মনের কার্পন্য
থেকে মুক্ত, তারাই
সফলকাম।
[64:17]
যদি
তোমরা আল্লাহকে
উত্তম ঋণ দান কর, তিনি
তোমাদের জন্যে
তা দ্বিগুণ করে
দেবেন এবং তোমাদেরকে
ক্ষমা করবেন। আল্লাহ গুণগ্রাহী, সহনশীল।
[64:18]
তিনি
দৃশ্য ও অদৃশ্যের
জ্ঞানী, পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।
65 Talaq
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[65:1]
হে
নবী, তোমরা যখন
স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তখন তাদেরকে
তালাক দিয়ো ইদ্দতের
প্রতি লক্ষ্য রেখে
এবং ইদ্দত গণনা করো। তোমরা
তোমাদের পালনকর্তা
আল্লাহকে ভয় করো। তাদেরকে
তাদের গৃহ থেকে বহিস্কার করো
না এবং তারাও যেন
বের না হয় যদি
না তারা কোন সুস্পষ্ট
নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত হয়। এগুলো
আল্লাহর নির্ধারিত
সীমা। যে ব্যক্তি
আল্লাহর সীমালংঘন করে, সে নিজেরই
অনিষ্ট করে। সে জানে
না, হয়তো আল্লাহ
এই তালাকের পর
কোন নতুন উপায়
করে দেবেন।
[65:2]
অতঃপর
তারা যখন তাদের ইদ্দতকালে পৌঁছে, তখন তাদেরকে
যথোপযুক্ত পন্থায়
রেখে দেবে অথবা
যথোপযুক্ত পন্থায় ছেড়ে
দেবে এবং তোমাদের
মধ্য থেকে দুজন নির্ভরযোগ্য
লোককে সাক্ষী রাখবে। তোমরা
আল্লাহর উদ্দেশ্যে
সাক্ষ্য দিবে। এতদ্দ্বারা
যে ব্যক্তি আল্লাহ
ও পরকালে বিশ্বাস
করে, তাকে উপদেশ
দেয়া হচ্ছে। আর যে
আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির
পথ করে দেবেন।
[65:3]
এবং
তাকে তার ধারণাতীত
জায়গা থেকে
রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি
আল্লাহর উপর ভরসা
করে তার জন্যে
তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ
পূর্ণ করবেন। আল্লাহ
সবকিছুর জন্যে
একটি পরিমাণ স্থির
করে রেখেছেন।
[65:4]
তোমাদের
স্ত্রীদের মধ্যে
যাদের ঋতুবর্তী
হওয়ার আশা নেই, তাদের
ব্যাপারে সন্দেহ
হলে তাদের ইদ্দত
হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর
বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও
অনুরূপ ইদ্দতকাল
হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল
সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে
ভয় করে, আল্লাহ
তার কাজ সহজ করে দেন।
[65:5]
এটা
আল্লাহর নির্দেশ, যা তিনি তোমাদের প্রতি
নাযিল করেছেন। যে আল্লাহকে
ভয় করে, আল্লাহ
তার পাপ মোচন করেন
এবং তাকে মহাপুরস্কার
দেন।
[65:6]
তোমরা
তোমাদের সামর্থ? অনুযায়ী
যেরূপ গৃহে বাস
কর, তাদেরকেও বসবাসের
জন্যে সেরূপ গৃহ
দাও। তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সংকটাপন্ন
করো না। যদি তারা
গর্ভবতী হয়, তবে সন্তানপ্রসব
পর্যন্ত তাদের
ব্যয়ভার বহন করবে। যদি তারা
তোমাদের সন্তানদেরকে
স্তন্যদান করে, তবে তাদেরকে প্রাপ্য
পারিশ্রমিক দেবে
এবং এ সম্পর্কে
পরস্পর সংযতভাবে
পরামর্শ করবে। তোমরা যদি পরস্পর
জেদ কর, তবে অন্য নারী
স্তন্যদান করবে।
[65:7]
বিত্তশালী
ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয়
করবে। যে ব্যক্তি
সীমিত পরিমাণে
রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ
যা দিয়েছেন, তা থেকে
ব্যয় করবে। আল্লাহ
যাকে যা দিয়েছেন, তদপেক্ষা
বেশী ব্যয় করার আদেশ কাউকে
করেন না। আল্লাহ
কষ্টের পর সুখ
দেবেন।
[65:8]
অনেক
জনপদ তাদের পালনকর্তা
ও তাঁর রসূলগণের
আদেশ অমান্য করেছিল, অতঃপর
আমি তাদেরকে কঠোর
হিসাবে ধৃত করেছিলাম এবং তাদেরকে ভীষণ
শাস্তি দিয়েছিলাম।
[65:9]
অতঃপর
তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করল এবং
তাদের কর্মের পরিণাম
ক্ষতিই ছিল।
[65:10]
আল্লাহ
তাদের জন্যে যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি প্রস্তত
রেখেছেন অতএব, হে বুদ্ধিমানগণ, যারা
ঈমান এনেছ, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ
তোমাদের প্রতি
উপদেশ নাযিল করেছেন।
[65:11]
একজন
রসূল, যিনি তোমাদের
কাছে আল্লাহর
সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ
পাঠ করেন, যাতে
বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণদের
অন্ধকার থেকে
আলোতে আনয়ন করেন। যে আল্লাহর
প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তিনি তাকে
দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে
নদী প্রবাহিত, তথায়
তারা চিরকাল
থাকবে। আল্লাহ
তাকে উত্তম রিযিক
দেবেন।
[65:12]
আল্লাহ
সপ্তাকাশ সৃষ্টি
করেছেন এবং পৃথিবীও
সেই পরিমাণে, এসবের
মধ্যে তাঁর আদেশ
অবতীর্ণ হয়, যাতে
তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সর্বশক্তিমান
এবং সবকিছু তাঁর
গোচরীভূত।
66 At Tahreem
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[66:1]
হে
নবী, আল্লাহ আপনার
জন্যে যা হালাল
করছেন, আপনি আপনার
স্ত্রীদেরকে খুশী
করার জন্যে তা
নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন? আল্লাহ
ক্ষমাশীল, দয়াময়।
[66:2]
আল্লাহ
তোমাদের জন্যে
কসম থেকে অব্যহতি
লাভের উপায় নির্ধারণ
করে দিয়েছেন। আল্লাহ
তোমাদের মালিক। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
[66:3]
যখন
নবী তাঁর একজন
স্ত্রীর কাছে
একটি কথা গোপনে
বললেন, অতঃপর স্ত্রী
যখন তা বলে দিল
এবং আল্লাহ নবীকে
তা জানিয়ে
দিলেন, তখন নবী সে
বিষয়ে স্ত্রীকে
কিছু বললেন এবং
কিছু বললেন না। নবী যখন তা স্ত্রীকে
বললেন, তখন স্ত্রী
বললেনঃ কে আপনাকে
এ সম্পর্কে অবহিত
করল? নবী বললেন,ঃ যিনি সর্বজ্ঞ, ওয়াকিফহাল, তিনি
আমাকে অবহিত করেছেন।
[66:4]
তোমাদের
অন্তর অন্যায়ের
দিকে ঝুঁকে
পড়েছে বলে যদি
তোমরা উভয়ে তওবা
কর, তবে ভাল কথা। আর যদি
নবীর বিরুদ্ধে একে অপরকে সাহায্য
কর, তবে জেনে রেখ
আল্লাহ জিবরাঈল
এবং সৎকর্মপরায়ণ
মুমিনগণ তাঁর
সহায়। উপরন্তুত
ফেরেশতাগণও তাঁর
সাহায্যকারী।
[66:5]
যদি
নবী তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন, তবে সম্ভবতঃ
তাঁর পালনকর্তা
তাঁকে পরিবর্তে
দিবেন তোমাদের
চাইতে উত্তম
স্ত্রী, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, নামাযী
তওবাকারিণী, এবাদতকারিণী, রোযাদার, অকুমারী
ও কুমারী।
[66:6]
মুমিনগণ, তোমরা
নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে
সেই অগ্নি থেকে
রক্ষা কর, যার ইন্ধন
হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে
নিয়োজিত আছে পাষাণ
হৃদয়, কঠোরস্বভাব
ফেরেশতাগণ। তারা
আল্লাহ তাআলা যা
আদেশ করেন, তা অমান্য
করে না এবং যা করতে
আদেশ করা হয়, তাই করে।
[66:7]
হে
কাফের সম্প্রদায়, তোমরা
আজ ওযর পেশ
করো না। তোমাদেরকে
তারই প্রতিফল দেয়া
হবে, যা তোমরা করতে।
[66:8]
মুমিনগণ!
তোমরা আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক
তওবা। আশা করা
যায়, তোমাদের পালনকর্তা
তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন
করে দেবেন এবং
তোমাদেরকে দাখিল
করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে
নদী প্রবাহিত। সেদিন
আল্লাহ নবী এবং
তাঁর বিশ্বাসী
সহচরদেরকে অপদস্থ
করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে
ও ডানদিকে ছুটোছুটি
করবে। তারা বলবেঃ
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের
নূরকে পূর্ণ করে
দিন এবং আমাদেরকে
ক্ষমা করুন। নিশ্চয়
আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।
[66:9]
হে
নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ
করুন এবং তাদের
প্রতি কঠোর হোন। তাদের
ঠিকানা জাহান্নাম। সেটা কতই না নিকৃষ্ট
স্থান।
[66:10]
আল্লাহ
তাআলা কাফেরদের
জন্যে নূহ-পত্নী
ও লূত-পত্নীর দৃষ্টান্ত
বর্ণনা করেছেন। তারা
ছিল আমার দুই ধর্মপরায়ণ বান্দার গৃহে। অতঃপর
তারা তাদের সাথে
বিশ্বাসঘাতকতা
করল। ফলে নূহ
ও লূত তাদেরকে আল্লাহ তাআলার
কবল থেকে রক্ষা
করতে পারল না এবং
তাদেরকে বলা হলঃ
জাহান্নামীদের সাথে জাহান্নামে
চলে যাও।
[66:11]
আল্লাহ
তাআলা মুমিনদের
জন্যে ফেরাউন-পত্নীর
দৃষ্টান্ত বর্ণনা
করেছেন। সে বললঃ
হে আমার পালনকর্তা!
আপনার সন্নিকটে
জান্নাতে আমার
জন্যে একটি গৃহ
নির্মাণ করুন, আমাকে
ফেরাউন ও তার দুস্কর্ম থেকে
উদ্ধার করুন এবং
আমাকে যালেম সম্প্রদায়
থেকে মুক্তি দিন।
[66:12]
আর
দৃষ্টান্ত বর্ণনা
করেছেন এমরান-তনয়া
মরিয়মের, যে তার
সতীত্ব বজায় রেখেছিল। অতঃপর
আমি তার মধ্যে
আমার পক্ষ থেকে
জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম
এবং সে তার পালনকর্তার
বানী ও কিতাবকে
সত্যে পরিণত
করেছিল। সে ছিল
বিনয় প্রকাশকারীনীদের
একজন।