Part 29
67 Al Mulk
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[67:1]
পূণ্যময়
তিনি, যাঁর
হাতে রাজত্ব। তিনি
সবকিছুর উপর
সর্বশক্তিমান।
[67:2]
যিনি
সৃষ্টি
করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে
তোমাদেরকে
পরীক্ষা
করেন-কে
তোমাদের মধ্যে
কর্মে
শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।
[67:3]
তিনি
সপ্ত আকাশ
স্তরে স্তরে সৃষ্টি
করেছেন। তুমি
করুণাময়
আল্লাহ তা’আলার
সৃষ্টিতে কোন
তফাত দেখতে
পাবে না। আবার
দৃষ্টিফেরাও; কোন
ফাটল দেখতে
পাও কি?
[67:4]
অতঃপর
তুমি বার বার
তাকিয়ে দেখ-তোমার
দৃষ্টি
ব্যর্থ ও
পরিশ্রান্ত
হয়ে তোমার
দিকে ফিরে
আসবে।
[67:5]
আমি
সর্বনিম্ন
আকাশকে প্রদীপমালা
দ্বারা
সুসজ্জত
করেছি; সেগুলোকে
শয়তানদের
জন্যে
ক্ষেপণাস্ত্রবৎ করেছি
এবং প্রস্তুত
করে রেখেছি
তাদের জন্যে জলন্ত
অগ্নির
শাস্তি।
[67:6]
যারা
তাদের
পালনকর্তাকে অস্বীকার
করেছে তাদের
জন্যে রয়েছে
জাহান্নামের
শাস্তি। সেটা
কতই না
নিকৃষ্ট স্থান।
[67:7]
যখন
তারা তথায়
নিক্ষিপ্ত
হবে, তখন তার উৎক্ষিপ্ত
গর্জন শুনতে
পাবে।
[67:8]
ক্রোধে
জাহান্নাম
যেন ফেটে পড়বে। যখনই
তাতে কোন
সম্প্রদায়
নিক্ষিপ্ত
হবে তখন
তাদেরকে তার
সিপাহীরা জিজ্ঞাসা
করবে। তোমাদের
কাছে কি কোন
সতর্ককারী
আগমন করেনি?
[67:9]
তারা
বলবেঃ হ্যাঁ
আমাদের কাছে সতর্ককারী
আগমন করেছিল, অতঃপর
আমরা
মিথ্যারোপ
করেছিলাম এবং
বলেছিলামঃ
আল্লাহ তা’আলা
কোন কিছু
নাজিল করেননি। তোমরা
মহাবিভ্রান্তিতে
পড়ে রয়েছ।
[67:10]
তারা
আরও বলবেঃ যদি
আমরা শুনতাম
অথবা বুদ্ধি
খাটাতাম, তবে
আমরা জাহান্নামবাসীদের
মধ্যে থাকতাম
না।
[67:11]
অতঃপর
তারা তাদের
অপরাধ স্বীকার
করবে। জাহান্নামীরা
দূর হোক।
[67:12]
নিশ্চয়
যারা তাদের পালনকর্তাকে
না দেখে ভয়
করে, তাদের
জন্যে রয়েছে
ক্ষমা ও
মহাপুরস্কার।
[67:13]
তোমরা
তোমাদের কথা
গোপনে বল অথবা
প্রকাশ্যে বল, তিনি
তো অন্তরের
বিষয়াদি
সম্পর্কে
সম্যক অবগত।
[67:14]
যিনি
সৃষ্টি
করেছেন, তিনি কি করে জানবেন
না? তিনি
সূক্ষ্নজ্ঞানী, সম্যক
জ্ঞাত।
[67:15]
তিনি
তোমাদের
জন্যে
পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব, তোমরা
তার কাঁধে
বিচরণ কর এবং
তাঁর দেয়া
রিযিক আহার কর। তাঁরই কাছে
পুনরুজ্জীবন
হবে।
[67:16]
তোমরা
কি
ভাবনামুক্ত
হয়ে গেছ যে, আকাশে
যিনি আছেন
তিনি
তোমাদেরকে
ভূগর্ভে বিলীন
করে দেবেন, অতঃপর
তা কাঁপতে থাকবে।
[67:17]
না
তোমরা
নিশ্চিন্ত
হয়ে গেছ যে, আকাশে
যিনি আছেন, তিনি
তোমাদের উপর
প্রস্তর
বৃষ্টি বর্ষণ
করবেন, অতঃপর
তোমরা জানতে
পারবে কেমন
ছিল আমার
সতর্কবাণী।
[67:18]
তাদের
পূর্ববর্তীরা
মিথ্যারোপ করেছিল, অতঃপর
কত কঠোর
হয়েছিল আমার
অস্বীকৃতি।
[67:19]
তারা
কি লক্ষ্য করে
না, তাদের মাথার উপর
উড়ন্ত
পক্ষীকুলের
প্রতি পাখা বিস্তারকারী
ও পাখা
সংকোচনকারী? রহমান আল্লাহ-ই
তাদেরকে
স্থির রাখেন। তিনি
সর্ব-বিষয়
দেখেন।
[67:20]
রহমান
আল্লাহ তা’আলা
ব্যতীত তোমাদের
কোন সৈন্য আছে
কি, যে
তোমাদেরকে
সাহায্য করবে? কাফেররা
বিভ্রান্তিতেই পতিত আছে।
[67:21]
তিনি
যদি রিযিক
বন্ধ করে দেন, তবে
কে আছে, যে
তোমাদেরকে
রিযিক দিবে
বরং তারা
অবাধ্যতা ও
বিমুখতায়
ডুবে রয়েছে।
[67:22]
যে
ব্যক্তি
উপুড় হয়ে
মুখে ভর দিয়ে
চলে, সে-ই কি সৎ পথে চলে, না
সে ব্যক্তি যে
সোজা হয়ে
সরলপথে চলে?
[67:23]
বলুন, তিনিই
তোমাদেরকে
সৃষ্টি করেছেন
এবং দিয়েছেন
কর্ণ, চক্ষু ও
অন্তর। তোমরা
অল্পই
কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ কর।
[67:24]
বলুন, তিনিই
তোমাদেরকে পৃথিবীতে
বিস্তৃত করেছেন
এবং তাঁরই
কাছে তোমরা
সমবেত হবে।
[67:25]
কাফেররা
বলেঃ এই
প্রতিশ্রুতি কবে হবে, যদি
তোমরা
সত্যবাদী হও?
[67:26]
বলুন, এর
জ্ঞান আল্লাহ
তা’আলার কাছেই
আছে। আমি
তো কেবল
প্রকাশ্য
সতর্ককারী।
[67:27]
যখন
তারা সেই
প্রতিশ্রুতিকে আসন্ন দেখবে
তখন কাফেরদের
মুখমন্ডল মলিন
হয়ে পড়বে
এবং বলা হবেঃ
এটাই তো তোমরা চাইতে।
[67:28]
বলুন, তোমরা
কি ভেবে
দেখেছ-যদি আল্লাহ তা’আলা
আমাকে ও আমার
সংগীদেরকে
ধ্বংস করেন
অথবা আমাদের
প্রতি দয়া
করেন, তবে
কাফেরদেরকে
কে
যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি থেকে
রক্ষা করবে?
[67:29]
বলুন, তিনি
পরম করুণাময়, আমরা তাতে
বিশ্বাস রাখি
এবং তাঁরই উপর
ভরসা করি। সত্ত্বরই
তোমরা জানতে
পারবে, কে প্রকাশ্য
পথ-ভ্রষ্টতায়
আছে।
[67:30]
বলুন, তোমরা
ভেবে দেখেছ কি, যদি
তোমাদের পানি
ভূগর্ভের
গভীরে চলে
যায়, তবে কে
তোমাদেরকে
সরবরাহ করবে
পানির স্রোতধারা?
68 Al Qalm
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[68:1]
নূন। শপথ
কলমের এবং সেই বিষয়ের যা
তারা
লিপিবদ্ধ করে,
[68:2]
আপনার
পালনকর্তার
অনুগ্রহে আপনি উম্মাদ
নন।
[68:3]
আপনার
জন্যে অবশ্যই
রয়েছে অশেষ
পুরস্কার।
[68:4]
আপনি
অবশ্যই মহান
চরিত্রের অধিকারী।
[68:5]
সত্ত্বরই
আপনি দেখে
নিবেন এবং তারাও দেখে
নিবে।
[68:6]
কে
তোমাদের
মধ্যে
বিকারগ্রস্ত।
[68:7]
আপনার
পালনকর্তা
সম্যক জানেন কে তাঁর পথ
থেকে বিচ্যুত
হয়েছে এবং
তিনি জানেন
যারা সৎপথ
প্রাপ্ত।
[68:8]
অতএব, আপনি
মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য
করবেন না।
[68:9]
তারা
চায় যদি আপনি
নমনীয় হন, তবে
তারাও নমনীয়
হবে।
[68:10]
যে
অধিক শপথ করে, যে
লাঞ্ছিত, আপনি
তার আনুগত্য
করবেন না।
[68:11]
যে
পশ্চাতে
নিন্দা করে
একের কথা
অপরের নিকট
লাগিয়ে ফিরে।
[68:12]
যে
ভাল কাজে বাধা
দেয়, সে সীমালংঘন
করে, সে
পাপিষ্ঠ,
[68:13]
কঠোর
স্বভাব, তদুপরি
কুখ্যাত;
[68:14]
এ
কারণে যে, সে
ধন-সম্পদ ও সন্তান
সন্ততির
অধিকারী।
[68:15]
তার
কাছে আমার
আয়াত পাঠ করা হলে সে বলে; সেকালের
উপকথা।
[68:16]
আমি
তার নাসিকা
দাগিয়ে দিব।
[68:17]
আমি
তাদেরকে
পরীক্ষা
করেছি, যেমন
পরীক্ষা
করেছি
উদ্যানওয়ালাদের, যখন
তারা শপথ
করেছিল যে, সকালে
বাগানের ফল আহরণ করবে,
[68:18]
ইনশাআল্লাহ
না বলে।
[68:19]
অতঃপর
আপনার
পালনকর্তার
পক্ষ থেকে
বাগানে এক
বিপদ এসে পতিত
হলো। যখন
তারা নিদ্রিত
ছিল।
[68:20]
ফলে
সকাল পর্যন্ত
হয়ে গেল ছিন্নবিচ্ছিন্ন
তৃণসম।
[68:21]
সকালে
তারা একে
অপরকে ডেকে বলল,
[68:22]
তোমরা
যদি ফল আহরণ
করতে চাও, তবে
সকাল সকাল
ক্ষেতে চল।
[68:23]
অতঃপর
তারা চলল
ফিসফিস করে
কথা বলতে
বলতে,
[68:24]
অদ্য
যেন কোন
মিসকীন
ব্যক্তি তোমাদের
কাছে বাগানে
প্রবেশ করতে
না পারে।
[68:25]
তারা
সকালে
লাফিয়ে
লাফিয়ে সজোরে
রওয়ানা হল।
[68:26]
অতঃপর
যখন তারা
বাগান দেখল, তখন
বললঃ আমরা তো
পথ ভূলে গেছি।
[68:27]
বরং
আমরা তো
কপালপোড়া,
[68:28]
তাদের
উত্তম
ব্যক্তি বললঃ
আমি কি
তোমাদেরকে
বলিনি? এখনও
তোমরা আল্লাহ
তা’আলার
পবিত্রতা
বর্ণনা করছো
না কেন?
[68:29]
তারা
বললঃ আমরা
আমাদের পালনকর্তার
পবিত্রতা
ঘোষণা করছি, নিশ্চিতই
আমরা
সীমালংঘনকারী
ছিলাম।
[68:30]
অতঃপর
তারা একে
অপরকে ভৎর্সনা করতে লাগল।
[68:31]
তারা
বললঃ হায়!
দুর্ভোগ আমাদের
আমরা ছিলাম
সীমাতিক্রমকারী।
[68:32]
সম্ভবতঃ
আমাদের
পালনকর্তা পরিবর্তে এর
চাইতে উত্তম
বাগান
আমাদেরকে দিবেন। আমরা
আমাদের
পালনকর্তার
কাছে আশাবাদী।
[68:33]
শাস্তি
এভাবেই আসে
এবং পরকালের শাস্তি আরও
গুরুতর; যদি তারা
জানত!
[68:34]
মোত্তাকীদের
জন্যে তাদের পালনকর্তার
কাছে রয়েছে
নেয়ামতের
জান্নাত।
[68:35]
আমি
কি
আজ্ঞাবহদেরকে
অপরাধীদের ন্যায় গণ্য
করব?
[68:36]
তোমাদের
কি হল ? তোমরা
কেমন সিদ্ধান্ত
দিচ্ছ?
[68:37]
তোমাদের
কি কোন কিতাব
আছে, যা তোমরা
পাঠ কর।
[68:38]
তাতে
তোমরা যা
পছন্দ কর, তাই পাও?
[68:39]
না
তোমরা আমার
কাছ
থেকেকেয়ামত পর্যন্ত বলবৎ কোন শপথ
নিয়েছ যে, তোমরা
তাই পাবে যা
তোমরা
সিদ্ধান্ত
করবে?
[68:40]
আপনি
তাদেরকে
জিজ্ঞাসা
করুন তাদের
কে এ বিষয়ে
দায়িত্বশীল?
[68:41]
না
তাদের কোন
শরীক উপাস্য
আছে? থাকলে
তাদের শরীক
উপাস্যদেরকে
উপস্থিত করুক
যদি তারা
সত্যবাদী হয়।
[68:42]
গোছা
পর্যন্ত পা
খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, সেদিন
তাদেরকে
সেজদা করতে
আহবান জানানো
হবে, অতঃপর
তারা সক্ষম
হবে না।
[68:43]
তাদের
দৃষ্টি অবনত
থাকবে; তারা লাঞ্ছনাগ্রস্ত
হবে, অথচ যখন
তারা সুস্থ ও
স্বাভাবিক
অবস্থায় ছিল, তখন
তাদেরকে সেজদা
করতে আহবান
জানানো হত।
[68:44]
অতএব, যারা
এই কালামকে
মিথ্যা বলে, তাদেরকে
আমার হাতে
ছেড়ে দিন, আমি
এমন ধীরে ধীরে
তাদেরকে
জাহান্নামের
দিকে নিয়ে
যাব যে, তারা
জানতে পারবে
না।
[68:45]
আমি
তাদেরকে সময়
দেই। নিশ্চয় আমার কৌশল
মজবুত।
[68:46]
আপনি
কি তাদের কাছে
পারিশ্রমিক চান? ফলে
তাদের উপর
জরিমানার
বোঝা পড়ছে?
[68:47]
না
তাদের কাছে
গায়বের খবর আছে? অতঃপর
তারা তা
লিপিবদ্ধ করে।
[68:48]
আপনি
আপনার
পালনকর্তার
আদেশের অপেক্ষায়
সবর করুন এবং
মাছওয়ালা
ইউনুসের মত
হবেন না, যখন
সে দুঃখাকুল
মনে প্রার্থনা
করেছিল।
[68:49]
যদি
তার
পালনকর্তার
অনুগ্রহ তাকে
সামাল না দিত, তবে
সে নিন্দিত
অবস্থায়
জনশুন্য
প্রান্তরে
নিক্ষিপ্ত হত।
[68:50]
অতঃপর
তার
পালনকর্তা
তাকে মনোনীত
করলেন এবং
তাকে সৎকর্মীদের
অন্তর্ভুক্ত
করে নিলেন।
[68:51]
কাফেররা
যখন কোরআন
শুনে, তখন তারা
তাদের দৃষ্টি
দ্বারা যেন
আপনাকে আছাড় দিয়ে
ফেলে দিবে এবং
তারা বলেঃ সে
তো একজন
পাগল।
[68:52]
অথচ
এই কোরআন তো
বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ
বৈ নয়।
69 Al Haqqah
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[69:1]
সুনিশ্চিত
বিষয়।
[69:2]
সুনিশ্চিত
বিষয় কি?
[69:3]
আপনি
কি কিছু জানেন, সেই সুনিশ্চিত
বিষয় কি?
[69:4]
আদ
ও সামুদ গোত্র
মহাপ্রলয়কে মিথ্যা
বলেছিল।
[69:5]
অতঃপর
সমুদ গোত্রকে
ধ্বংস করা হয়েছিল এক
প্রলয়ংকর
বিপর্যয়
দ্বারা।
[69:6]
এবং
আদ গোত্রকে
ধ্বংস করা হয়েছিল এক
প্রচন্ড
ঝঞ্জাবায়ূ,
[69:7]
যা
তিনি
প্রবাহিত
করেছিলেন তাদের উপর
সাত রাত্রি ও
আট দিবস
পর্যন্ত অবিরাম। আপনি
তাদেরকে
দেখতেন যে, তারা অসার খর্জুর
কান্ডের
ন্যায়
ভূপাতিত হয়ে
রয়েছে।
[69:8]
আপনি
তাদের কোন
অস্তিত্ব
দেখতে পান
কি?
[69:9]
ফেরাউন, তাঁর
পূর্ববর্তীরা
এবং উল্টে
যাওয়া
বস্তিবাসীরা
গুরুতর পাপ
করেছিল।
[69:10]
তারা
তাদের
পালনকর্তার
রসূলকে অমান্য
করেছিল। ফলে
তিনি তাদেরকে
কঠোরহস্তে
পাকড়াও
করলেন।
[69:11]
যখন
জলোচ্ছ্বাস
হয়েছিল, তখন আমি
তোমাদেরকে
চলন্ত নৌযানে
আরোহণ
করিয়েছিলাম।
[69:12]
যাতে
এ ঘটনা তোমাদের
জন্যে স্মৃতির
বিষয় এবং কান
এটাকে উপদেশ
গ্রহণের উপযোগী
রূপে গ্রহণ
করে।
[69:13]
যখন
শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে-একটি
মাত্র ফুৎকার
[69:14]
এবং
পৃথিবী ও
পর্বতমালা উত্তোলিত
হবে ও
চুর্ণ-বিচুর্ণ
করে দেয়া হবে,
[69:15]
সেদিন
কেয়ামত
সংঘটিত হবে।
[69:16]
সেদিন
আকাশ বিদীর্ণ
হবে ও বিক্ষিপ্ত
হবে।
[69:17]
এবং
ফেরেশতাগণ
আকাশের প্রান্তদেশে
থাকবে ও আট জন
ফেরেশতা
আপনার পালনকর্তার
আরশকে তাদের
উর্ধ্বে বহন করবে।
[69:18]
সেদিন
তোমাদেরকে
উপস্থিত করা হবে। তোমাদের
কোন কিছু গোপন
থাকবে না।
[69:19]
অতঃপর
যার আমলনামা
ডান হাতে দেয়া
হবে, সে বলবেঃ
নাও, তোমরাও
আমলনামা পড়ে
দেখ।
[69:20]
আমি
জানতাম যে, আমাকে
হিসাবের সম্মুখীন
হতে হবে।
[69:21]
অতঃপর
সে সুখী
জীবন-যাপন
করবে,
[69:22]
সুউচ্চ
জান্নাতে।
[69:23]
তার
ফলসমূহ
অবনমিত থাকবে।
[69:24]
বিগত
দিনে তোমরা যা
প্রেরণ করেছিলে, তার
প্রতিদানে তোমরা
খাও এবং পান
কর তৃপ্তি
সহকারে।
[69:25]
যার
আমলনামা তার
বাম হাতে দেয়া
হবে, সে বলবেঃ
হায় আমায়
যদি আমার আমল
নামা না দেয়া
হতো।
[69:26]
আমি
যদি না জানতাম
আমার হিসাব!
[69:27]
হায়, আমার
মৃত্যুই যদি
শেষ হত।
[69:28]
আমার
ধন-সম্পদ আমার
কোন উপকারে আসল না।
[69:29]
আমার
ক্ষমতাও
বরবাদ হয়ে
গেল।
[69:30]
ফেরেশতাদেরকে
বলা হবেঃ ধর
একে গলায়
বেড়ি
পড়িয়ে দাও,
[69:31]
অতঃপর
নিক্ষেপ কর
জাহান্নামে।
[69:32]
অতঃপর
তাকে
শৃঙ্খলিত কর
সত্তর গজ
দীর্ঘ এক
শিকলে।
[69:33]
নিশ্চয়
সে মহান
আল্লাহতে বিশ্বাসী
ছিল না।
[69:34]
এবং
মিসকীনকে
আহার্য দিতে উৎসাহিত
করত না।
[69:35]
অতএব, আজকের
দিন এখানে তার
কোন সুহূদ
নাই।
[69:36]
এবং
কোন খাদ্য নাই, ক্ষত-নিঃসৃত
পুঁজ ব্যতীত।
[69:37]
গোনাহগার
ব্যতীত কেউ
এটা খাবে না।
[69:38]
তোমরা
যা দেখ, আমি তার
শপথ করছি।
[69:39]
এবং
যা তোমরা দেখ
না, তার-
[69:40]
নিশ্চয়ই
এই কোরআন একজন সম্মানিত
রসূলের আনীত।
[69:41]
এবং
এটা কোন কবির
কালাম নয়; তোমরা
কমই বিশ্বাস
কর।
[69:42]
এবং
এটা কোন
অতীন্দ্রিয়বাদীর কথা নয়; তোমরা
কমই অনুধাবন
কর।
[69:43]
এটা
বিশ্বপালনকর্তার
কাছ থেকে অবতীর্ণ।
[69:44]
সে
যদি আমার নামে
কোন কথা রচনা করত,
[69:45]
তবে
আমি তার
দক্ষিণ হস্ত
ধরে ফেলতাম,
[69:46]
অতঃপর
কেটে দিতাম
তার গ্রীবা।
[69:47]
তোমাদের
কেউ তাকে
রক্ষা করতে পারতে না।
[69:48]
এটা
খোদাভীরুদের
জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ।
[69:49]
আমি
জানি যে, তোমাদের
মধ্যে কেউ
কেউ
মিথ্যারোপ
করবে।
[69:50]
নিশ্চয়
এটা কাফেরদের
জন্যে অনুতাপের
কারণ।
[69:51]
নিশ্চয়
এটা নিশ্চিত
সত্য।
[69:52]
অতএব, আপনি
আপনার মহান পালনকর্তার
নামের
পবিত্রতা
বর্ননা করুন।
70 Al Maarij
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[70:1]
একব্যক্তি
চাইল, সেই আযাব সংঘটিত হোক
যা অবধারিত-
[70:2]
কাফেরদের
জন্যে, যার প্রতিরোধকারী
কেউ নেই।
[70:3]
তা
আসবে আল্লাহ
তা’আলার পক্ষ থেকে, যিনি
সমুন্নত
মর্তবার
অধিকারী।
[70:4]
ফেরেশতাগণ
এবং রূহ
আল্লাহ তা’আলার
দিকে
উর্ধ্বগামী
হয় এমন
একদিনে, যার
পরিমাণ
পঞ্চাশ হাজার
বছর।
[70:5]
অতএব, আপনি
উত্তম সবর করুন।
[70:6]
তারা
এই আযাবকে
সুদূরপরাহত
মনে করে,
[70:7]
আর
আমি একে আসন্ন
দেখছি।
[70:8]
সেদিন
আকাশ হবে গলিত
তামার মত।
[70:9]
এবং
পর্বতসমূহ
হবে রঙ্গীন পশমের মত,
[70:10]
বন্ধু
বন্ধুর খবর
নিবে না।
[70:11]
যদিও
একে অপরকে
দেখতে পাবে। সেদিন
গোনাহগার
ব্যক্তি
পনস্বরূপ দিতে
চাইবে তার
সন্তান-সন্ততিকে,
[70:12]
তার
স্ত্রীকে, তার
ভ্রাতাকে,
[70:13]
তার
গোষ্ঠীকে, যারা
তাকে আশ্রয়
দিত।
[70:14]
এবং
পৃথিবীর
সবকিছুকে, অতঃপর নিজেকে
রক্ষা করতে
চাইবে।
[70:15]
কখনই
নয়। নিশ্চয়
এটা লেলিহান অগ্নি।
[70:16]
যা
চামড়া তুলে
দিবে।
[70:17]
সে
সেই
ব্যক্তিকে
ডাকবে যে সত্যের
প্রতি
পৃষ্ঠপ্রদর্শন
করেছিল ও বিমুখ
হয়েছিল।
[70:18]
সম্পদ
পুঞ্জীভূত
করেছিল, অতঃপর আগলিয়ে
রেখেছিল।
[70:19]
মানুষ
তো সৃজিত
হয়েছে ভীরুরূপে।
[70:20]
যখন
তাকে অনিষ্ট
স্পর্শ করে, তখন
সে হা-হুতাশ
করে।
[70:21]
আর
যখন
কল্যাণপ্রাপ্ত
হয়, তখন কৃপণ
হয়ে যায়।
[70:22]
তবে
তারা
স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায়
কারী।
[70:23]
যারা
তাদের নামাযে
সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে।
[70:24]
এবং
যাদের
ধন-সম্পদে
নির্ধারিত হক আছে
[70:25]
যাঞ্ছাকারী
ও বঞ্চিতের
[70:26]
এবং
যারা প্রতিফল
দিবসকে সত্য বলে বিশ্বাস
করে।
[70:27]
এবং
যারা তাদের
পালনকর্তার শাস্তির
সম্পর্কে
ভীত-কম্পিত।
[70:28]
নিশ্চয়
তাদের
পালনকর্তার শাস্তি থেকে
নিঃশঙ্কা
থাকা যায় না।
[70:29]
এবং
যারা তাদের
যৌন-অঙ্গকে সংযত রাখে
[70:30]
কিন্তু
তাদের স্ত্রী
অথবা মালিকানাভূক্ত
দাসীদের
বেলায়
তিরস্কৃত হবে
না।
[70:31]
অতএব, যারা
এদের ছাড়া
অন্যকে কামনা
করে, তারাই
সীমালংঘনকারী।
[70:32]
এবং
যারা তাদের
আমানত ও অঙ্গীকার
রক্ষা করে
[70:33]
এবং
যারা তাদের
সাক্ষ্যদানে সরল-নিষ্ঠাবান
[70:34]
এবং
যারা তাদের
নামাযে যত্নবান,
[70:35]
তারাই
জান্নাতে
সম্মানিত হবে।
[70:36]
অতএব, কাফেরদের
কি হল যে, তারা আপনার দিকে
উর্ধ্বশ্বাসে
ছুটে আসছে।
[70:37]
ডান
ও বামদিক থেকে
দলে দলে।
[70:38]
তাদের
প্রত্যেকেই
কি আশা করে যে, তাকে
নেয়ামতের
জান্নাতে
দাখিল করা হবে?
[70:39]
কখনই
নয়, আমি
তাদেরকে এমন বস্তু
দ্বারা
সৃষ্টি করেছি, যা
তারা জানে।
[70:40]
আমি
শপথ করছি
উদয়াচল ও অস্তাচলসমূহের
পালনকর্তার, নিশ্চয়ই
আমি সক্ষম!
[70:41]
তাদের
পরিবর্তে উৎকৃষ্টতর মানুষ
সৃষ্টি করতে
এবং এটা আমার
সাধ্যের অতীত
নয়।
[70:42]
অতএব, আপনি
তাদেরকে
ছেড়ে দিন, তারা
বাকবিতন্ডা ও
ক্রীড়া-কৌতুক
করুক সেই দিবসের
সম্মুখীন
হওয়া পর্যন্ত, যে দিবসের
ওয়াদা তাদের
সাথে করা
হচ্ছে।
[70:43]
সে
দিন তারা কবর
থেকে দ্রুতবেগে
বের হবে, যেন
তারা কোন এক
লক্ষ্যস্থলের
দিকে ছুটে যাচ্ছে।
[70:44]
তাদের
দৃষ্টি থাকবে
অবনমিত; তারা হবে
হীনতাগ্রস্ত। এটাই
সেইদিন, যার
ওয়াদা
তাদেরকে
দেয়া হত।
71 Nooh (Noah)
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[71:1]
আমি
নূহকে প্রেরণ
করেছিলাম তাঁর
সম্প্রদায়ের
প্রতি একথা
বলেঃ তুমি তোমার
সম্প্রদায়কে
সতর্ক কর, তাদের প্রতি
মর্মন্তদ
শাস্তি আসার
আগে।
[71:2]
সে
বলল, হে আমার
সম্প্রদায়! আমি তোমাদের
জন্যে স্পষ্ট
সতর্ককারী।
[71:3]
এ
বিষয়ে যে, তোমরা
আল্লাহ তা’আলার
এবাদত কর, তাঁকে
ভয় কর এবং
আমার আনুগত্য
কর।
[71:4]
আল্লাহ
তা’আলা
তোমাদের
পাপসমূহ ক্ষমা
করবেন এবং
নির্দিষ্ট
সময় পর্যন্ত
অবকাশ দিবেন। নিশ্চয়
আল্লাহ তা’আলার নির্দিষ্টকাল
যখন হবে, তখন
অবকাশ দেয়া
হবে না, যদি তোমরা
তা জানতে!
[71:5]
সে
বললঃ হে আমার
পালনকর্তা! আমি আমার
সম্প্রদায়কে
দিবারাত্রি
দাওয়াত
দিয়েছি;
[71:6]
কিন্তু
আমার দাওয়াত
তাদের পলায়নকেই
বৃদ্ধি করেছে।
[71:7]
আমি
যতবারই
তাদেরকে
দাওয়াত দিয়েছি, যাতে
আপনি তাদেরকে
ক্ষমা করেন, ততবারই
তারা কানে
অঙ্গুলি দিয়েছে, মুখমন্ডল
বস্ত্রাবৃত
করেছে, জেদ
করেছে এবং খুব
ঔদ্ধত্য
প্রদর্শন
করেছে।
[71:8]
অতঃপর
আমি তাদেরকে
প্রকাশ্যে দাওয়াত
দিয়েছি,
[71:9]
অতঃপর
আমি ঘোষণা
সহকারে
প্রচার করেছি
এবং গোপনে
চুপিসারে
বলেছি।
[71:10]
অতঃপর
বলেছিঃ তোমরা
তোমাদের পালনকর্তার
ক্ষমা
প্রার্থনা কর। তিনি
অত্যন্ত
ক্ষমাশীল।
[71:11]
তিনি
তোমাদের উপর
অজস্র বৃষ্টিধারা
ছেড়ে দিবেন,
[71:12]
তোমাদের
ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি
বাড়িয়ে
দিবেন, তোমাদের
জন্যে উদ্যান
স্থাপন করবেন
এবং তোমাদের জন্যে
নদীনালা
প্রবাহিত
করবেন।
[71:13]
তোমাদের
কি হল যে, তোমরা আল্লাহ তা’আলার
শ্রেষ্টত্ব
আশা করছ না।
[71:14]
অথচ
তিনি
তোমাদেরকে
বিভিন্ন রকমে
সৃষ্টি
করেছেন।
[71:15]
তোমরা
কি লক্ষ্য কর
না যে, আল্লাহ
কিভাবে সপ্ত
আকাশ স্তরে
স্তরে সৃষ্টি
করেছেন।
[71:16]
এবং
সেখানে
চন্দ্রকে
রেখেছেন আলোরূপে
এবং সূর্যকে
রেখেছেন
প্রদীপরূপে।
[71:17]
আল্লাহ
তা’আলা
তোমাদেরকে মৃত্তিকা
থেকে উদগত
করেছেন।
[71:18]
অতঃপর
তাতে ফিরিয়ে
নিবেন এবং আবার
পুনরুত্থিত
করবেন।
[71:19]
আল্লাহ
তা’আলা
তোমাদের
জন্যে ভূমিকে
করেছেন
বিছানা।
[71:20]
যাতে
তোমরা
চলাফেরা কর
প্রশস্ত পথে।
[71:21]
নূহ
বললঃ হে আমার
পালনকর্তা, আমার
সম্প্রদায়
আমাকে অমান্য
করেছে আর
অনুসরণ করছে
এমন লোককে, যার
ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি
কেবল তার
ক্ষতিই
বৃদ্ধি করছে।
[71:22]
আর
তারা ভয়ানক
চক্রান্ত
করছে।
[71:23]
তারা
বলছেঃ তোমরা
তোমাদের উপাস্যদেরকে
ত্যাগ করো না
এবং ত্যাগ করো
না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক
ও নসরকে।
[71:24]
অথচ
তারা অনেককে
পথভ্রষ্ট করেছে। অতএব
আপনি
জালেমদের
পথভ্রষ্টতাই
বাড়িয়ে দিন।
[71:25]
তাদের
গোনাহসমূহের
দরুন তাদেরকে
নিমজ্জিত করা
হয়েছে, অতঃপর
দাখিল করা
হয়েছে
জাহান্নামে। অতঃপর
তারা আল্লাহ
তা’আলা
ব্যতীত কাউকে
সাহায্যকারী
পায়নি।
[71:26]
নূহ
আরও বললঃ হে
আমার পালনকর্তা, আপনি
পৃথিবীতে কোন
কাফের
গৃহবাসীকে
রেহাই দিবেন
না।
[71:27]
যদি
আপনি তাদেরকে
রেহাই দেন, তবে
তারা আপনার
বান্দাদেরকে
পথভ্রষ্ট
করবে এবং জন্ম
দিতে থাকবে
কেবল
পাপাচারী, কাফের।
[71:28]
হে
আমার
পালনকর্তা!
আপনি আমাকে, আমার
পিতা-মাতাকে, যারা
মুমিন হয়ে
আমার গৃহে
প্রবেশ
করে-তাদেরকে এবং মুমিন পুরুষ
ও মুমিন
নারীদেরকে
ক্ষমা করুন এবং
যালেমদের
কেবল ধ্বংসই
বৃদ্ধি করুন।
72 Al-Jinn
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[72:1]
বলুনঃ
আমার প্রতি
ওহী নাযিল করা হয়েছে
যে, জিনদের
একটি দল কোরআন
শ্রবণ করেছে, অতঃপর
তারা বলেছেঃ
আমরা বিস্ময়কর
কোরআন শ্রবণ
করেছি;
[72:2]
যা
সৎপথ
প্রদর্শন করে। ফলে আমরা তাতে
বিশ্বাস
স্থাপন করেছি। আমরা
কখনও আমাদের
পালনকর্তার
সাথে কাউকে শরীক করব না।
[72:3]
এবং
আরও বিশ্বাস
করি যে, আমাদের
পালনকর্তার
মহান মর্যাদা
সবার উর্ধ্বে। তিনি
কোন পত্নী
গ্রহণ করেননি
এবং তাঁর
কোন সন্তান
নেই।
[72:4]
আমাদের
মধ্যে
নির্বোধেরা আল্লাহ তা’আলা
সম্পর্কে
বাড়াবাড়ির
কথাবার্তা
বলত।
[72:5]
অথচ
আমরা মনে
করতাম, মানুষ ও জিন কখনও
আল্লাহ তা’আলা
সম্পর্কে
মিথ্যা বলতে
পারে না।
[72:6]
অনেক
মানুষ অনেক
জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা
জিনদের
আত্নম্ভরিতা
বাড়িয়ে দিত।
[72:7]
তারা
ধারণা করত, যেমন
তোমরা মানবেরা
ধারণা কর যে, মৃত্যুর
পর আল্লাহ তা’আলা
কখনও কাউকে
পুনরুত্থিত
করবেন না।
[72:8]
আমরা
আকাশ
পর্যবেক্ষণ
করছি, অতঃপর
দেখতে
পেয়েছি যে, কঠোর
প্রহরী ও
উল্কাপিন্ড
দ্বারা আকাশ
পরিপূর্ণ।
[72:9]
আমরা
আকাশের
বিভিন্ন
ঘাঁটিতে সংবাদ
শ্রবণার্থে
বসতাম। এখন
কেউ সংবাদ
শুনতে চাইলে
সে জলন্ত
উল্কাপিন্ড
ওঁৎ পেতে
থাকতে দেখে।
[72:10]
আমরা
জানি না
পৃথিবীবাসীদের অমঙ্গল সাধন
করা অভীষ্ট, না
তাদের
পালনকর্তা
তাদের মঙ্গল
সাধন করার ইচ্ছা
রাখেন।
[72:11]
আমাদের
কেউ কেউ সৎকর্মপরায়ণ এবং কেউ কেউ এরূপ
নয়। আমরা ছিলাম
বিভিন্ন পথে বিভক্ত।
[72:12]
আমরা
বুঝতে পেরেছি যে, আমরা পৃথিবীতে আল্লাহ
তা’আলাকে পরাস্ত
করতে পারব না এবং
পলায়ন করেও তাকে
অপারক করত পরব না।
[72:13]
আমরা
যখন সুপথের নির্দেশ শুনলাম, তখন তাতে
বিশ্বাস স্থাপন
করলাম। অতএব, যে তার
পালনকর্তার প্রতি
বিশ্বাস করে, সে লোকসান
ও জোর-জবরের আশংকা
করে না।
[72:14]
আমাদের
কিছুসংখ্যক আজ্ঞাবহ
এবং কিছুসংখ্যক
অন্যায়কারী। যারা
আজ্ঞাবহ হয়, তারা
সৎপথ বেছে
নিয়েছে।
[72:15]
আর
যারা অন্যায়কারী, তারা
তো জাহান্নামের
ইন্ধন।
[72:16]
আর
এই প্রত্যাদেশ
করা হয়েছে যে, তারা যদি সত্যপথে
কায়েম থাকত, তবে আমি
তাদেরকে প্রচুর
পানি বর্ষণে সিক্ত করতাম।
[72:17]
যাতে
এ ব্যাপারে তাদেরকে পরীক্ষা করি। পক্ষান্তরে
যে ব্যক্তি তার
পালনকর্তার স্মরণ
থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তিনি তাকে
উদীয়মান আযাবে
পরিচালিত করবেন।
[72:18]
এবং
এই ওহীও করা হয়েছে
যে, মসজিদসমূহ
আল্লাহ তা’আলাকে
স্মরণ করার জন্য। অতএব, তোমরা
আল্লাহ তা’আলার
সাথে কাউকে
ডেকো না।
[72:19]
আর
যখন আল্লাহ তা’আলার
বান্দা তাঁকে
ডাকার জন্যে দন্ডায়মান
হল, তখন অনেক জিন
তার কাছে ভিড়
জমাল।
[72:20]
বলুনঃ
আমি তো আমার পালনকর্তাকেই
ডাকি এবং তাঁর
সাথে কাউকে শরীক
করি না।
[72:21]
বলুনঃ
আমি তোমাদের ক্ষতি
সাধন করার ও
সুপথে আনয়ন করার
মালিক নই।
[72:22]
বলুনঃ
আল্লাহ তা’আলার
কবল থেকে আমাকে
কেউ রক্ষা করতে
পারবে না এবং তিনি
ব্যতীত আমি কোন
আশ্রয়স্থল পাব
না।
[72:23]
কিন্তু
আল্লাহ তা’আলার
বাণী পৌছানো
ও তাঁর পয়গাম
প্রচার করাই আমার
কাজ। যে আল্লাহ
ও তাঁর রসূলকে
অমান্য করে, তার জন্যে
রয়েছে জাহান্নামের
অগ্নি। তথায়
তারা চিরকাল থাকবে।
[72:24]
এমনকি
যখন তারা প্রতিশ্রুত শাস্তি দেখতে
পাবে, তখন তারা জানতে
পারবে, কার সাহায্যকারী
দূর্বল এবং কার সংখ্যা কম।
[72:25]
বলুনঃ
আমি জানি না তোমাদের প্রতিশ্রুত বিষয়
আসন্ন না আমার
পালনকর্তা এর জন্যে
কোন মেয়াদ স্থির
করে রেখেছেন।
[72:26]
তিনি
অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয়
কারও কাছে প্রকাশ
করেন না।
[72:27]
তাঁর
মনোনীত রসূল ব্যতীত। তখন তিনি তার অগ্রে
ও পশ্চাতে প্রহরী
নিযুক্ত করেন
[72:28]
যাতে
আল্লাহ তা’আলা জেনে
নেন যে, রসূলগণ
তাঁদের পালনকর্তার
পয়গাম পৌছিয়েছেন
কি না। রসূলগণের
কাছে যা আছে, তা তাঁর
জ্ঞান-গোচর। তিনি
সবকিছুর সংখ্যার
হিসাব রাখেন।
73 Al Muzzammil
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[73:1]
হে
বস্ত্রাবৃত!
[73:2]
রাত্রিতে
দন্ডায়মান হোন
কিছু অংশ বাদ
দিয়ে;
[73:3]
অর্ধরাত্রি
অথবা তদপেক্ষা
কিছু কম
[73:4]
অথবা
তদপেক্ষা বেশী
এবং কোরআন আবৃত্তি করুন
সুবিন্যস্ত ভাবে
ও স্পষ্টভাবে।
[73:5]
আমি
আপনার প্রতি অবতীর্ণ
করেছি গুরুত্বপূর্ণ
বাণী।
[73:6]
নিশ্চয়
এবাদতের জন্যে রাত্রিতে উঠা
প্রবৃত্তি দলনে
সহায়ক এবং স্পষ্ট
উচ্চারণের অনুকূল।
[73:7]
নিশ্চয়
দিবাভাগে রয়েছে
আপনার দীর্ঘ
কর্মব্যস্ততা।
[73:8]
আপনি
আপনার পালনকর্তার
নাম স্মরণ
করুন এবং একাগ্রচিত্তে
তাতে মগ্ন হোন।
[73:9]
তিনি
পূর্ব ও পশ্চিমের অধিকর্তা। তিনি
ব্যতীত কোন উপাস্য
নেই। অতএব, তাঁকেই
গ্রহণ করুন কর্মবিধায়করূপে।
[73:10]
কাফেররা
যা বলে, তজ্জন্যে
আপনি সবর করুন
এবং সুন্দরভাবে
তাদেরকে পরিহার
করে চলুন।
[73:11]
বিত্ত-বৈভবের
অধিকারী মিথ্যারোপকারীদেরকে
আমার হাতে ছেড়ে
দিন এবং তাদেরকে
কিছু অবকাশ দিন।
[73:12]
নিশ্চয়
আমার কাছে আছে
শিকল ও অগ্নিকুন্ড।
[73:13]
গলগ্রহ
হয়ে যায় এমন
খাদ্য এবং যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি।
[73:14]
যেদিন
পৃথিবী পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে
এবং পর্বতসমূহ
হয়ে যাবে বহমান
বালুকাস্তুপ।
[73:15]
আমি
তোমাদের কাছে একজন
রসূলকে তোমাদের
জন্যে সাক্ষী করে
প্রেরণ করেছি, যেমন
প্রেরণ করেছিলাম
ফেরাউনের কাছে একজন রসূল।
[73:16]
অতঃপর
ফেরাউন সেই রসূলকে অমান্য করল, ফলে আমি
তাকে কঠিন শাস্তি
দিয়েছি।
[73:17]
অতএব, তোমরা
কিরূপে আত্নরক্ষা করবে যদি তোমরা
সেদিনকে অস্বীকার
কর, যেদিন বালককে
করে দিব বৃদ্ধ?
[73:18]
সেদিন
আকাশ বিদীর্ণ হবে। তার প্রতিশ্রুতি
অবশ্যই বাস্তবায়িত
হবে।
[73:19]
এটা
উপদেশ। অতএব, যার ইচ্ছা, সে তার
পালনকর্তার দিকে
পথ অবলম্বন করুক।
[73:20]
আপনার
পালনকর্তা জানেন, আপনি এবাদতের জন্যে
দন্ডায়মান হন
রাত্রির প্রায়
দু’তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ
ও তৃতীয়াংশ এবং আপনার সঙ্গীদের
একটি দলও দন্ডায়মান
হয়। আল্লাহ
দিবা ও রাত্রি
পরিমাপ করেন। তিনি জানেন, তোমরা
এর পূর্ণ হিসাব
রাখতে পার না। অতএব
তিনি তোমাদের প্রতি
ক্ষমা পরায়ন
হয়েছেন। কাজেই
কোরআনের যতটুকু
তোমাদের জন্যে
সহজ, ততটুকু আবৃত্তি
কর। তিনি জানেন
তোমাদের মধ্যে
কেউ কেউ অসুস্থ
হবে, কেউ কেউ আল্লাহর
অনুগ্রহ সন্ধানে দেশে-বিদেশে যাবে
এবং কেউ কেউ আল্লাহর
পথে জেহাদে লিপ্ত
হবে। কাজেই
কোরআনের যতটুকু
তোমাদের জন্যে
সহজ ততটুকু আবৃত্তি
কর। তোমরা নামায
কায়েম কর, যাকাত
দাও এবং আল্লাহকে
উত্তম ঋণ দাও। তোমরা
নিজেদের জন্যে
যা কিছু অগ্রে
পাঠাবে, তা আল্লাহর
কাছে উত্তম আকারে
এবং পুরস্কার হিসেবে
বর্ধিতরূপে পাবে। তোমরা
আল্লাহর কাছে
ক্ষমাপ্রার্থনা
কর। নিশ্চয় আল্লাহ
ক্ষমাশীল, দয়ালু।
74 Al Muddathir
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[74:1]
হে
চাদরাবৃত!
[74:2]
উঠুন, সতর্ক
করুন,
[74:3]
আপন
পালনকর্তার মাহাত্ম্য ঘোষনা করুন,
[74:4]
আপন
পোশাক পবিত্র করুন
[74:5]
এবং
অপবিত্রতা থেকে
দূরে থাকুন।
[74:6]
অধিক
প্রতিদানের আশায়
অন্যকে কিছু
দিবেন না।
[74:7]
এবং
আপনার পালনকর্তার
উদ্দেশে সবর করুন।
[74:8]
যেদিন
শিংগায় ফুঁক দেয়া
হবে;
[74:9]
সেদিন
হবে কঠিন দিন,
[74:10]
কাফেরদের
জন্যে এটা সহজ
নয়।
[74:11]
যাকে
আমি অনন্য করে
সৃষ্টি করেছি, তাকে
আমার হাতে ছেড়ে
দিন।
[74:12]
আমি
তাকে বিপুল ধন-সম্পদ দিয়েছি।
[74:13]
এবং
সদা সংগী পুত্রবর্গ দিয়েছি,
[74:14]
এবং
তাকে খুব সচ্ছলতা
দিয়েছি।
[74:15]
এরপরও
সে আশা করে যে, আমি তাকে আরও বেশী দেই।
[74:16]
কখনই
নয়! সে আমার নিদর্শনসমূহের
বিরুদ্ধাচরণকারী।
[74:17]
আমি
সত্ত্বরই তাকে
শাস্তির পাহাড়ে
আরোহণ করাব।
[74:18]
সে
চিন্তা করেছে এবং
মনঃস্থির করেছে,
[74:19]
ধ্বংস
হোক সে, কিরূপে সে মনঃস্থির করেছে!
[74:20]
আবার
ধ্বংস হোক সে, কিরূপে
সে মনঃস্থির
করেছে!
[74:21]
সে
আবার দৃষ্টিপাত
করেছে,
[74:22]
অতঃপর
সে ভ্রূকুঞ্চিত
করেছে ও মুখ বিকৃত
করেছে,
[74:23]
অতঃপর
পৃষ্ঠপ্রদশন করেছে
ও অহংকার করেছে।
[74:24]
এরপর
বলেছেঃ এতো লোক
পরস্পরায় প্রাপ্ত জাদু
বৈ নয়,
[74:25]
এতো
মানুষের উক্তি
বৈ নয়।
[74:26]
আমি
তাকে দাখিল করব
অগ্নিতে।
[74:27]
আপনি
কি বুঝলেন অগ্নি
কি?
[74:28]
এটা
অক্ষত রাখবে না
এবং ছাড়বেও
না।
[74:29]
মানুষকে
দগ্ধ করবে।
[74:30]
এর
উপর নিয়োজিত আছে
উনিশ (ফেরেশতা)।
[74:31]
আমি
জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাই রেখেছি। আমি কাফেরদেরকে
পরীক্ষা করার জন্যেই
তার এই সংখ্যা
করেছি-যাতে কিতাবীরা দৃঢ়বিশ্বাসী
হয়, মুমিনদের
ঈমান বৃদ্ধি পায়
এবং কিতাবীরা ও
মুমিনগণ সন্দেহ
পোষণ না করে এবং
যাতে যাদের অন্তরে
রোগ আছে, তারা
এবং কাফেররা বলে
যে, আল্লাহ এর
দ্বারা কি বোঝাতে
চেয়েছেন। এমনিভাবে
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা
পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা
সৎপথে চালান। আপনার
পালনকর্তার বাহিনী
সম্পর্কে একমাত্র
তিনিই জানেন
এটা তো মানুষের
জন্যে উপদেশ বৈ
নয়।
[74:32]
কখনই
নয়। চন্দ্রের
শপথ,
[74:33]
শপথ
রাত্রির যখন তার
অবসান হয়,
[74:34]
শপথ
প্রভাতকালের যখন
তা আলোকোদ্ভাসিত
হয়,
[74:35]
নিশ্চয়
জাহান্নাম গুরুতর বিপদসমূহের অন্যতম,
[74:36]
মানুষের
জন্যে সতর্ককারী।
[74:37]
তোমাদের
মধ্যে যে সামনে
অগ্রসর হয় অথবা
পশ্চাতে থাকে।
[74:38]
প্রত্যেক
ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য
দায়ী;
[74:39]
কিন্তু
ডানদিকস্থরা,
[74:40]
তারা
থাকবে জান্নাতে
এবং পরস্পরে
জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
[74:41]
অপরাধীদের
সম্পর্কে
[74:42]
বলবেঃ
তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত
করেছে?
[74:43]
তারা
বলবেঃ আমরা নামায
পড়তাম না,
[74:44]
অভাবগ্রস্তকে
আহার্য্য দিতাম না,
[74:45]
আমরা
সমালোচকদের সাথে
সমালোচনা করতাম।
[74:46]
এবং
আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।
[74:47]
আমাদের
মৃত্যু পর্যন্ত।
[74:48]
অতএব, সুপারিশকারীদের
সুপারিশ তাদের
কোন উপকারে আসবে
না।
[74:49]
তাদের
কি হল যে, তারা
উপদেশ থেকে
মুখ ফিরিয়ে নেয়?
[74:50]
যেন
তারা ইতস্ততঃ
বিক্ষিপ্ত গর্দভ।
[74:51]
হট্টগোলের
কারণে পলায়নপর।
[74:52]
বরং
তাদের প্রত্যেকেই
চায় তাদের
প্রত্যেককে একটি
উম্মুক্ত গ্রন্থ
দেয়া হোক।
[74:53]
কখনও
না, বরং তারা পরকালকে
ভয় করে না।
[74:54]
কখনও
না, এটা তো উপদেশ
মাত্র।
[74:55]
অতএব, যার ইচ্ছা, সে একে
স্মরণ করুক।
[74:56]
তারা
স্মরণ করবে না, কিন্তু যদি আল্লাহ চান। তিনিই
ভয়ের যোগ্য এবং
ক্ষমার অধিকারী।
75 Al Qiyamah
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[75:1]
আমি
শপথ করি কেয়ামত
দিবসের,
[75:2]
আরও
শপথ করি সেই মনের, যে নিজেকে ধিক্কার
দেয়-
[75:3]
মানুষ
কি মনে করে যে আমি
তার অস্থিসমূহ
একত্রিত করব না?
[75:4]
পরন্ত
আমি তার অংগুলিগুলো পর্যন্ত সঠিকভাবে
সন্নিবেশিত করতে
সক্ষম।
[75:5]
বরং
মানুষ তার ভবিষ্যত
জীবনেও ধৃষ্টতা
করতে চায়
[75:6]
সে
প্রশ্ন করে-কেয়ামত
দিবস কবে?
[75:7]
যখন
দৃষ্টি চমকে যাবে,
[75:8]
চন্দ্র
জ্যোতিহীন হয়ে
যাবে।
[75:9]
এবং
সূর্য ও চন্দ্রকে
একত্রিত করা হবে-
[75:10]
সে
দিন মানুষ বলবেঃ
পলায়নের জায়গা কোথায়
?
[75:11]
না
কোথাও আশ্রয়স্থল
নেই।
[75:12]
আপনার
পালনকর্তার কাছেই
সেদিন ঠাঁই
হবে।
[75:13]
সেদিন
মানুষকে অবহিত
করা হবে সে যা
সামনে প্রেরণ করেছে
ও পশ্চাতে ছেড়ে
দিয়েছে।
[75:14]
বরং
মানুষ নিজেই তার
নিজের সম্পর্কে
চক্ষুমান।
[75:15]
যদিও
সে তার অজুহাত
পেশ করতে চাইবে।
[75:16]
তাড়াতাড়ি
শিখে নেয়ার জন্যে আপনি দ্রুত ওহী
আবৃত্তি করবেন
না।
[75:17]
এর
সংরক্ষণ ও পাঠ
আমারই দায়িত্ব।
[75:18]
অতঃপর
আমি যখন তা পাঠ
করি, তখন আপনি
সেই পাঠের অনুসরণ
করুন।
[75:19]
এরপর
বিশদ বর্ণনা আমারই দায়িত্ব।
[75:20]
কখনও
না, বরং তোমরা
পার্থিব জীবনকে
ভালবাস
[75:21]
এবং
পরকালকে উপেক্ষা
কর।
[75:22]
সেদিন
অনেক মুখমন্ডল
উজ্জ্বল হবে।
[75:23]
তারা
তার পালনকর্তার
দিকে তাকিয়ে
থাকবে।
[75:24]
আর
অনেক মুখমন্ডল
সেদিন উদাস হয়ে পড়বে।
[75:25]
তারা
ধারণা করবে যে, তাদের সাথে কোমর-ভাঙ্গা
আচরণ করা হবে।
[75:26]
কখনও
না, যখন প্রাণ
কন্ঠাগত হবে।
[75:27]
এবং
বলা হবে, কে ঝাড়বে
[75:28]
এবং
সে মনে করবে যে, বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে।
[75:29]
এবং
গোছা গোছার সাথে
জড়িত হয়ে
যাবে।
[75:30]
সেদিন, আপনার
পালনকর্তার নিকট সবকিছু নীত হবে।
[75:31]
সে
বিশ্বাস করেনি
এবং নামায পড়েনি;
[75:32]
পরন্ত
মিথ্যারোপ করেছে
ও পৃষ্ঠ প্রদর্শন
করেছে।
[75:33]
অতঃপর
সে দম্ভভরে পরিবার-পরিজনের
নিকট ফিরে গিয়েছে।
[75:34]
তোমার
দুর্ভোগের উপর
দুর্ভোগ।
[75:35]
অতঃপর, তোমার
দুর্ভোগের উপর দূর্ভোগ।
[75:36]
মানুষ
কি মনে করে যে, তাকে এমনি ছেড়ে দেয়া
হবে?
[75:37]
সে
কি স্খলিত বীর্য
ছিল না?
[75:38]
অতঃপর
সে ছিল রক্তপিন্ড, অতঃপর আল্লাহ তাকে সৃষ্টি
করেছেন এবং সুবিন্যস্ত
করেছেন।
[75:39]
অতঃপর
তা থেকে সৃষ্টি
করেছেন যুগল
নর ও নারী।
[75:40]
তবুও
কি সেই আল্লাহ
মৃতদেরকে জীবিত করতে সক্ষম
নন?
76 Al Insan
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[76:1]
মানুষের
উপর এমন কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে
যখন সে উল্লেখযোগ্য
কিছু ছিল না।
[76:2]
আমি
মানুষকে সৃষ্টি
করেছি মিশ্র
শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে
যে, তাকে পরীক্ষা
করব অতঃপর তাকে
করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।
[76:3]
আমি
তাকে পথ দেখিয়ে
দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ
হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ
হয়।
[76:4]
আমি
অবিশ্বাসীদের
জন্যে প্রস্তুত
রেখেছি শিকল, বেড়ি
ও প্রজ্বলিত অগ্নি।
[76:5]
নিশ্চয়ই
সৎকর্মশীলরা
পান করবে কাফুর
মিশ্রিত পানপাত্র।
[76:6]
এটা
একটা ঝরণা, যা থেকে আল্লাহর বান্দাগণ
পান করবে-তারা
একে প্রবাহিত করবে।
[76:7]
তারা
মান্নত পূর্ণ করে
এবং সেদিনকে
ভয় করে, যেদিনের
অনিষ্ট হবে সুদূরপ্রসারী।
[76:8]
তারা
আল্লাহর প্রেমে অভাবগ্রস্ত, এতীম
ও বন্দীকে আহার্য
দান করে।
[76:9]
তারা
বলেঃ কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে
আমরা তোমাদেরকে
আহার্য দান করি
এবং তোমাদের কাছে
কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা
করি না।
[76:10]
আমরা
আমাদের পালনকর্তার
তরফ থেকে এক
ভীতিপ্রদ ভয়ংকর
দিনের ভয় রাখি।
[76:11]
অতঃপর
আল্লাহ তাদেরকে
সেদিনের অনিষ্ট
থেকে রক্ষা করবেন
এবং তাদেরকে দিবেন
সজীবতা ও আনন্দ।
[76:12]
এবং
তাদের সবরের প্রতিদানে তাদেরকে দিবেন
জান্নাত ও রেশমী
পোশাক।
[76:13]
তারা
সেখানে সিংহাসনে
হেলান দিয়ে
বসবে। সেখানে
রৌদ্র ও শৈত্য
অনুভব করবে না।
[76:14]
তার
বৃক্ষছায়া তাদের
উপর ঝুঁকে
থাকবে এবং তার
ফলসমূহ তাদের আয়ত্তাধীন
রাখা হবে।
[76:15]
তাদেরকে
পরিবেশন করা হবে
রূপার পাত্রে
এবং স্ফটিকের মত
পানপাত্রে।
[76:16]
রূপালী
স্ফটিক পাত্রে, পরিবেশনকারীরা
তা পরিমাপ করে
পূর্ণ করবে।
[76:17]
তাদেরকে
সেখানে পান করানো
হবে ‘যানজাবীল’ মিশ্রিত
পানপাত্র।
[76:18]
এটা
জান্নাতস্থিত
‘সালসাবীল’ নামক
একটি ঝরণা।
[76:19]
তাদের
কাছে ঘোরাফেরা
করবে চির কিশোরগণ। আপনি
তাদেরকে দেখে মনে
করবেন যেন বিক্ষিপ্ত
মনি-মুক্তা।
[76:20]
আপনি
যখন সেখানে দেখবেন, তখন নেয়ামতরাজি
ও বিশাল রাজ্য
দেখতে পাবেন।
[76:21]
তাদের
আবরণ হবে চিকন
সবুজ রেশম ও মোটা সবুজ রেশম
এবং তাদেরকে পরিধান
করোনো হবে রৌপ্য
নির্মিত কংকণ এবং
তাদের পালনকর্তা
তাদেরকে পান করাবেন
‘শরাবান-তহুরা’।
[76:22]
এটা
তোমাদের প্রতিদান। তোমাদের প্রচেষ্টা স্বীকৃতি
লাভ করেছে।
[76:23]
আমি
আপনার প্রতি পর্যায়ক্রমে কোরআন নাযিল করেছি।
[76:24]
অতএব, আপনি
আপনার পালনকর্তার আদেশের জন্যে
ধৈর্য্য সহকারে
অপেক্ষা করুন এবং
ওদের মধ্যকার কোন
পাপিষ্ঠ কাফেরের আনুগত্য করবেন
না।
[76:25]
এবং
সকাল-সন্ধ্যায়
আপন পালনকর্তার
নাম স্মরণ করুন।
[76:26]
রাত্রির
কিছু অংশে তাঁর উদ্দেশে সিজদা
করুন এবং রাত্রির
দীর্ঘ সময় তাঁর
পবিত্রতা বর্ণনা
করুন।
[76:27]
নিশ্চয়
এরা পার্থিব জীবনকে ভালবাসে এবং এক
কঠিন দিবসকে পশ্চাতে
ফেলে রাখে।
[76:28]
আমি
তাদেরকে সৃষ্টি
করেছি এবং মজবুত করেছি তাদের
গঠন। আমি যখন
ইচ্ছা করব, তখন তাদের
পরিবর্তে তাদের
অনুরূপ লোক আনব।
[76:29]
এটা
উপদেশ, অতএব যার ইচ্ছা
হয় সে তার
পালনকর্তার পথ
অবলম্বন করুক।
[76:30]
আল্লাহর
অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন
অভিপ্রায় পোষণ
করবে না। আল্লাহ
সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।
[76:31]
তিনি
যাকে ইচ্ছা তাঁর
রহমতে দাখিল
করেন। আর যালেমদের
জন্যে তো প্রস্তুত
রেখেছেন মর্মন্তুদ
শাস্তি।
77 Al Mursalat
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[77:1]
কল্যাণের
জন্যে প্রেরিত
বায়ুর শপথ,
[77:2]
সজোরে
প্রবাহিত ঝটিকার
শপথ,
[77:3]
মেঘবিস্তৃতকারী
বায়ুর শপথ
[77:4]
মেঘপুঞ্জ
বিতরণকারী বায়ুর
শপথ এবং
[77:5]
ওহী
নিয়ে অবতরণকারী ফেরেশতাগণের
শপথ-
[77:6]
ওযর-আপত্তির
অবকাশ না রাখার জন্যে অথবা সতর্ক
করার জন্যে।
[77:7]
নিশ্চয়ই
তোমাদেরকে প্রদত্ত ওয়াদা বাস্তবায়িত
হবে।
[77:8]
অতঃপর
যখন নক্ষত্রসমুহ নির্বাপিত হবে,
[77:9]
যখন
আকাশ ছিদ্রযুক্ত
হবে,
[77:10]
যখন
পর্বতমালাকে উড়িয়ে
দেয়া হবে এবং
[77:11]
যখন
রসূলগণের একত্রিত
হওয়ার সময়
নিরূপিত হবে,
[77:12]
এসব
বিষয় কোন দিবসের
জন্যে স্থগিত
রাখা হয়েছে?
[77:13]
বিচার
দিবসের জন্য।
[77:14]
আপনি
জানেন বিচার দিবস
কি?
[77:15]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:16]
আমি
কি পূর্ববর্তীদেরকে
ধ্বংস করিনি?
[77:17]
অতঃপর
তাদের পশ্চাতে
প্রেরণ করব পরবর্তীদেরকে।
[77:18]
অপরাধীদের
সাথে আমি এরূপই
করে থাকি।
[77:19]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:20]
আমি
কি তোমাদেরকে তুচ্ছ
পানি থেকে সৃষ্টি
করিনি?
[77:21]
অতঃপর
আমি তা রেখেছি
এক সংরক্ষিত
আধারে,
[77:22]
এক
নির্দিষ্টকাল
পর্যন্ত,
[77:23]
অতঃপর
আমি পরিমিত আকারে
সৃষ্টি করেছি, আমি কত
সক্ষম স্রষ্টা?
[77:24]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:25]
আমি
কি পৃথিবীকে সৃষ্টি
করিনি ধারণকারিণীরূপে,
[77:26]
জীবিত
ও মৃতদেরকে?
[77:27]
আমি
তাতে স্থাপন করেছি
মজবুত সুউচ্চ
পর্বতমালা এবং
পান করিয়েছি তোমাদেরকে
তৃষ্ণা নিবারণকারী
সুপেয় পানি।
[77:28]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:29]
চল
তোমরা তারই দিকে, যাকে তোমরা মিথ্যা
বলতে।
[77:30]
চল
তোমরা তিন কুন্ডলীবিশিষ্ট ছায়ার দিকে,
[77:31]
যে
ছায়া সুনিবিড়
নয় এবং অগ্নির
উত্তাপ থেকে রক্ষা
করে না।
[77:32]
এটা
অট্টালিকা সদৃশ
বৃহৎ স্ফুলিংগ নিক্ষেপ
করবে।
[77:33]
যেন
সে পীতবর্ণ উষ্ট্রশ্রেণী।
[77:34]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:35]
এটা
এমন দিন, যেদিন
কেউ কথা বলবে
না।
[77:36]
এবং
কাউকে তওবা করার
অনুমতি দেয়া
হবে না।
[77:37]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:38]
এটা
বিচার দিবস, আমি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে
একত্রিত করেছি।
[77:39]
অতএব, তোমাদের
কোন অপকৌশল থাকলে তা প্রয়োগ
কর আমার কাছে।
[77:40]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:41]
নিশ্চয়
খোদাভীরুরা থাকবে ছায়ায় এবং প্রস্রবণসমূহে-
[77:42]
এবং
তাদের বাঞ্ছিত
ফল-মূলের মধ্যে।
[77:43]
বলা
হবেঃ তোমরা যা
করতে তার বিনিময়ে
তৃপ্তির সাথে পানাহার
কর।
[77:44]
এভাবেই
আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে
থাকি।
[77:45]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:46]
কাফেরগণ, তোমরা
কিছুদিন খেয়ে নাও এবং ভোগ করে
নাও। তোমরা
তো অপরাধী।
[77:47]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:48]
যখন
তাদেরকে বলা হয়, নত হও, তখন তারা
নত হয় না।
[77:49]
সেদিন
মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
[77:50]
এখন
কোন কথায় তারা
এরপর বিশ্বাস
স্থাপন