Part 4
[3:93]
তওরাত
নাযিল হওয়ার পূর্বে ইয়াকুব যেগুলো
নিজেদের জন্য হারাম
করে নিয়েছিলেন, সেগুলো
ব্যতীত সমস্ত আহার্য বস্তুই বনী-ইসরায়ীলদের
জন্য হালাল ছিল। তুমি
বলে দাও, তোমরা
যদি সত্যবাদী হয়ে থাক। তাহলে
তওরাত নিয়ে এসো
এবং তা পাঠ কর।
[3:94]
অতঃপর
আল্লাহর প্রতি
যারা মিথ্যা
আরোপ করেছে, তারাই
যালেম সীমালংঘনকারী।
[3:95]
বল, ‘আল্লাহ
সত্য বলেছেন। এখন সবাই ইব্রাহীমের
ধর্মের অনুগত হয়ে
যাও, যিনি ছিলেন
একনিষ্ঠ ভাবে সত্যধর্মের অনুসারী। তিনি
মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত
ছিলেন না।
[3:96]
নিঃসন্দেহে
সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে
নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই
হচ্ছে এ ঘর, যা মক্কায়
অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের
জন্য হেদায়েত
ও বরকতময়।
[3:97]
এতে
রয়েছে মকামে ইব্রাহীমের মত প্রকৃষ্ট নিদর্শন। আর যে, লোক এর
ভেতরে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা
লাভ করেছে। আর এ ঘরের
হজ্ব করা হলো মানুষের
উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের
সামর্থ? রয়েছে এ পর্যন্ত
পৌছার। আর যে
লোক তা মানে না। আল্লাহ
সারা বিশ্বের কোন
কিছুরই পরোয়া
করেন না।
[3:98]
বলুন, হে আহলে
কিতাবগণ, কেন তোমরা আল্লাহর
কিতাব অমান্য করছো, অথচ তোমরা
যা কিছু কর, তা আল্লাহর
সামনেই রয়েছে।
[3:99]
বলুন, হে আহলে
কিতাবগণ! কেন তোমরা আল্লাহর
পথে ঈমানদারদিগকে
বাধা দান কর-তোমরা
তাদের দ্বীনের
মধ্যে বক্রতা অনুপ্রবেশ করানোর
পন্থা অনুসন্ধান
কর, অথচ তোমরা
এ পথের সত্যতা
প্রত্যক্ষ করছ। বস্তুতঃ আল্লাহ
তোমাদের কার্যকলাপ
সম্পর্কে অনবগত
নন।
[3:100]
হে
ঈমানদারগণ! তোমরা
যদি আহলে কিতাবদের
কোন ফেরকার কথা
মান, তাহলে ঈমান
আনার পর তারা তোমাদিগকে
কাফেরে পরিণত করে দেবে।
[3:101]
আর
তোমরা কেমন করে
কাফের হতে পার, অথচ তোমাদের
সামনে পাঠ করা
হয় আল্লাহর আয়াত
সমূহ এবং তোমাদের
মধ্যে রয়েছেন
আল্লাহর রসূল। আর যারা
আল্লাহর কথা দৃঢ়ভাবে
ধরবে, তারা হেদায়েত প্রাপ্ত হবে সরল
পথের।
[3:102]
হে
ঈমানদারগণ! আল্লাহকে
যেমন ভয় করা
উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে
ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই
মুসলমান না হয়ে
মৃত্যুবরণ করো না।
[3:103]
আর
তোমরা সকলে আল্লাহর
রজ্জুকে সুদৃঢ়
হস্তে ধারণ কর; পরস্পর
বিচ্ছিন্ন হয়ো
না। আর তোমরা সে
নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ
তোমাদিগকে দান
করেছেন। তোমরা
পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের
মনে সম্প্রীতি
দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা
তাঁর অনুগ্রহের
কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা
এক অগ্নিকুন্ডের
পাড়ে অবস্থান
করছিলে। অতঃপর
তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি
দিয়েছেন। এভাবেই
আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ
প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত
প্রাপ্ত হতে পার।
[3:104]
আর
তোমাদের মধ্যে
এমন একটা দল থাকা উচিত যারা
আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ
দেবে ভাল কাজের
এবং বারণ করবে
অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই
হলো সফলকাম।
[3:105]
আর
তাদের মত হয়ো
না, যারা বিচ্ছিন্ন
হয়ে গেছে এবং
নিদর্শন সমূহ আসার
পরও বিরোধিতা করতে
শুরু করেছে-তাদের জন্যে রয়েছে
ভয়ঙ্কর আযাব।
[3:106]
সেদিন
কোন কোন মুখ উজ্জ্বল হবে, আর কোন কোন
মুখ হবে কালো। বস্তুতঃ
যাদের মুখ কালো
হবে, তাদের বলা
হবে, তোমরা কি ঈমান
আনার পর কাফের
হয়ে গিয়েছিলে? এবার
সে কুফরীর বিনিময়ে
আযাবের আস্বাদ
গ্রহণ কর।
[3:107]
আর
যাদের মুখ উজ্জ্বল
হবে, তারা থাকবে
রহমতের মাঝে। তাতে
তারা অনন্তকাল
অবস্থান করবে।
[3:108]
এগুলো
হচ্ছে আল্লাহর
নির্দেশ, যা তোমাদিগকে
যথাযথ পাঠ করে
শুনানো হচ্ছে। আর আল্লাহ
বিশ্ব জাহানের
প্রতি উৎপীড়ন করতে চান
না।
[3:109]
আর
যা কিছু আসমান
ও যমীনে রয়েছে
সে সবই আল্লাহর
এবং আল্লাহর প্রতিই
সব কিছু প্রত্যাবর্তনশীল।
[3:110]
তোমরাই
হলে সর্বোত্তম
উম্মত, মানবজাতির
কল্যানের জন্যেই
তোমাদের উদ্ভব
ঘটানো হয়েছে। তোমরা
সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায়
কাজে বাধা দেবে
এবং আল্লাহর প্রতি
ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা
যদি ঈমান আনতো, তাহলে
তা তাদের জন্য
মঙ্গলকর হতো। তাদের
মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার
আর অধিকাংশই হলো
পাপাচারী।
[3:111]
যৎসামান্য কষ্ট
দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের
কোনই ক্ষতি করতে
পারবে না। আর যদি
তারা তোমাদের সাথে
লড়াই করে, তাহলে
তারা পশ্চাদপসরণ
করবে। অতঃপর
তাদের সাহায্য
করা হবে না।
[3:112]
আল্লাহর
প্রতিশ্রুতি কিংবা মানুষের প্রতিশ্রুতি
ব্যতিত ওরা যেখানেই
অবস্থান করেছে
সেখানেই তাদের
ওপর লাঞ্ছনা
চাপিয়ে দেয়া
হয়েছে। আর ওরা
উপার্জন করেছে
আল্লাহর গযব। ওদের
উপর চাপানো
হয়েছে গলগ্রহতা। তা এজন্যে
যে, ওরা আল্লাহর
আয়াতসমূহকে অনবরত
অস্বীকার করেছে এবং নবীগনকে
অন্যায়ভাবে হত্যা
করেছে। তার কারণ, ওরা নাফরমানী
করেছে এবং সীমা লংঘন করেছে।
[3:113]
তারা
সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবদের মধ্যে
কিছু লোক এমনও
আছে যারা অবিচলভাবে
আল্লাহর আয়াতসমূহ
পাঠ করে এবং রাতের গভীরে তারা
সেজদা করে।
[3:114]
তারা
আল্লাহর প্রতি
ও কিয়ামত দিবসের প্রতি
ঈমান রাখে এবং
কল্যাণকর বিষয়ের
নির্দেশ দেয়; অকল্যাণ
থেকে বারণ করে এবং সৎকাজের জন্য সাধ্যমত
চেষ্টা করতে থাকে। আর এরাই
হল সৎকর্মশীল।
[3:115]
তারা
যেসব সৎকাজ
করবে, কোন অবস্থাতেই
সেগুলোর প্রতি
অবজ্ঞা প্রদর্শন
করা হবে না। আর আল্লাহ
পরহেযগারদের বিষয়ে অবগত।
[3:116]
নিশ্চয়
যারা কাফের হয়, তাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি
আল্লাহর সামনে
কখনও কোন কাজে
আসবে না। আর তারাই
হলো দোযখের
আগুনের অধিবাসী। তারা
সে আগুনে চিরকাল
থাকবে।
[3:117]
এ
দুনিয়ার জীবনে
যা কিছু ব্যয়
করা হয়, তার তুলনা
হলো ঝড়ো হাওয়ার
মতো, যাতে রয়েছে
তুষারের শৈত্য, যা সে জাতির শস্যক্ষেত্রে
গিয়ে লেগেছে যারা
নিজের জন্য মন্দ
করেছে। অতঃপর
সেগুলোকে নিঃশেষ করে দিয়েছে। বস্তুতঃ
আল্লাহ তাদের উপর
কোন অন্যায় করেননি, কিন্তু
তারা নিজেরাই
নিজেদের উপর অত্যাচার
করছিল।
[3:118]
হে
ঈমানদারগণ! তোমরা
মুমিন ব্যতীত
অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে
গ্রহণ করো না, তারা
তোমাদের অমঙ্গল
সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা
কষ্টে থাক, তাতেই
তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত
বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা
কিছু তাদের মনে
লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো
অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে
নিদর্শন বিশদভাবে
বর্ণনা করে দেয়া
হলো, যদি তোমরা
তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও।
[3:119]
দেখ!
তোমরাই তাদের ভালবাস, কিন্তু
তারা তোমাদের প্রতি
মোটেও সদভাব পোষণ
করে না। আর তোমরা
সমস্ত কিতাবেই বিশ্বাস কর। অথচ তারা
যখন তোমাদের সাথে
এসে মিশে, বলে, আমরা
ঈমান এনেছি। পক্ষান্তরে তারা
যখন পৃথক হয়ে
যায়, তখন তোমাদের
উপর রোষবশতঃ আঙ্গুল
কামড়াতে থাকে। বলুন, তোমরা
আক্রোশে মরতে থাক। আর আল্লাহ
মনের কথা ভালই
জানেন।
[3:120]
তোমাদের
যদি কোন মঙ্গল
হয়; তাহলে তাদের
খারাপ লাগে। আর তোমাদের
যদি অমঙ্গল হয়
তাহলে আনন্দিত
হয় আর তাতে যদি তোমরা ধৈর্য্যধারণ
কর এবং তাকওয়া
অবলম্বন কর, তবে তাদের
প্রতারণায় তোমাদের কোনই ক্ষতি হবে
না। নিশ্চয়ই
তারা যা কিছু করে
সে সমস্তই আল্লাহর
আয়ত্তে রয়েছে।
[3:121]
আর
আপনি যখন পরিজনদের
কাছ থেকে সকাল
বেলা বেরিয়ে গিয়ে
মুমিনগণকে যুদ্ধের
অবস্থানে বিন্যস্ত
করলেন, আর আল্লাহ সব বিষয়েই শোনেন
এবং জানেন।
[3:122]
যখন
তোমাদের দুটি দল
সাহস হারাবার
উপক্রম হলো, অথচ আল্লাহ
তাদের সাহায্যকারী
ছিলেন, আর আল্লাহর
উপরই ভরসা করা মুমিনদের
উচিত।
[3:123]
বস্তুতঃ
আল্লাহ বদরের যুদ্ধে তোমাদের সাহায্য
করেছেন, অথচ তোমরা
ছিলে দুর্বল। কাজেই
আল্লাহকে ভয় করতে
থাক, যাতে তোমরা
কৃতজ্ঞ হতে পারো।
[3:124]
আপনি
যখন বলতে লাগলেন মুমিনগণকে-তোমাদের
জন্য কি যথেষ্ট
নয় যে, তোমাদের সাহায্যার্থে
তোমাদের পালনকর্তা
আসমান থেকে অবতীর্ণ
তিন হাজার ফেরেশতা
পাঠাবেন।
[3:125]
অবশ্য
তোমরা যদি সবর
কর এবং বিরত
থাক আর তারা যদি
তখনই তোমাদের উপর
চড়াও হয়, তাহলে
তোমাদের পালনকর্তা চিহি?ত ঘোড়ার উপর
পাঁচ হাজার ফেরেশতা
তোমাদের সাহায্যে
পাঠাতে পারেন।
[3:126]
বস্তুতঃ
এটা তো আল্লাহ
তোমাদের সুসংবাদ
দান করলেন, যাতে
তোমাদের মনে এতে
সান্ত্বনা আসতে
পারে। আর সাহায্য শুধুমাত্র পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানী
আল্লাহরই পক্ষ
থেকে,
[3:127]
যাতে
ধবংস করে দেন কোন
কোন কাফেরকে
অথবা লাঞ্ছিত করে
দেন-যেন ওরা বঞ্চিত
হয়ে ফিরে যায়।
[3:128]
হয়
আল্লাহ তাদের ক্ষমা
করবেন কিংবা
তাদেরকে আযাব দেবেন। এ ব্যাপারে
আপনার কোন করণীয়
নাই। কারণ তারা
রয়েছে অন্যায়ের
উপর।
[3:129]
আর
যা কিছু আসমান
ও যমীনে রয়েছে, সেসবই
আল্লাহর। তিনি
যাকে ইচ্ছা ক্ষমা
করবেন, যাকে ইচ্ছা
আযাব দান করবেন। আর আল্লাহ
হচ্ছেন ক্ষমাকারী, করুণাময়।
[3:130]
হে
ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে
সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে
ভয় করতে থাক, যাতে
তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো।
[3:131]
এবং
তোমরা সে আগুন
থেকে বেঁচে থাক, যা কাফেরদের
জন্য প্রস্তুত
করা হয়েছে।
[3:132]
আর
তোমরা আনুগত্য
কর আল্লাহ ও রসূলের, যাতে
তোমাদের উপর রহমত
করা হয়।
[3:133]
তোমরা
তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের
দিকে ছুটে যাও
যার সীমানা হচ্ছে
আসমান ও যমীন, যা তৈরী
করা হয়েছে
পরহেযগারদের জন্য।
[3:134]
যারা
স্বচ্ছলতায় ও
অভাবের সময়
ব্যয় করে, যারা
নিজেদের রাগকে
সংবরণ করে আর মানুষের
প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুতঃ আল্লাহ
সৎকর্মশীলদিগকেই
ভালবাসেন।
[3:135]
তারা
কখনও কোন অশ্লীল
কাজ করে ফেললে
কিংবা কোন মন্দ
কাজে জড়িত হয়ে
নিজের উপর জুলুম
করে ফেললে আল্লাহকে
স্মরণ করে এবং
নিজের পাপের জন্য
ক্ষমা প্রার্থনা
করে। আল্লাহ
ছাড়া আর কে পাপ
ক্ষমা করবেন? তারা
নিজের কৃতকর্মের
জন্য হঠকারিতা
প্রদর্শন করে না
এবং জেনে-শুনে
তাই করতে থাকে
না।
[3:136]
তাদেরই
জন্য প্রতিদান
হলো তাদের
পালনকর্তার ক্ষমা
ও জান্নাত, যার তলদেশে
প্রবাহিত হচ্ছে
প্রস্রবণ যেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। যারা
কাজ করে তাদের
জন্য কতইনা চমৎকার প্রতিদান।
[3:137]
তোমাদের
আগে অতীত হয়েছে
অনেক ধরনের
জীবনাচরণ। তোমরা
পৃথিবীতে ভ্রমণ
কর এবং দেখ যারা
মিথ্যা প্রতিপন্ন
করেছে তাদের
পরিণতি কি হয়েছে।
[3:138]
এই
হলো মানুষের জন্য
বর্ণনা। আর যারা ভয় করে
তাদের জন্য উপদেশবাণী।
[3:139]
আর
তোমরা নিরাশ হয়ো
না এবং দুঃখ
করো না। যদি তোমরা
মুমিন হও তবে, তোমরাই
জয়ী হবে।
[3:140]
তোমরা
যদি আহত হয়ে থাক, তবে তারাও তো তেমনি
আহত হয়েছে। আর এ দিনগুলোকে
আমি মানুষের মধ্যে
পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। এভাবে
আল্লাহ জানতে চান
কারা ঈমানদার আর
তিনি তোমাদের কিছু
লোককে শহীদ
হিসাবে গ্রহণ করতে
চান। আর আল্লাহ
অত্যাচারীদেরকে
ভালবাসেন না।
[3:141]
আর
এ কারণে আল্লাহ ঈমানদারদেরকে
পাক-সাফ করতে চান
এবং কাফেরদেরকে
ধবংস করে দিতে
চান।
[3:142]
তোমাদের
কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ
করবে? অথচ আল্লাহ
এখনও দেখেননি তোমাদের
মধ্যে কারা জেহাদ
করেছে এবং কারা
ধৈর্য্যশীল।
[3:143]
আর
তোমরা তো মৃত্যু
আসার আগেই মরণ কামনা করতে, কাজেই
এখন তো তোমরা তা
চোখের সামনে উপস্থিত
দেখতে পাচ্ছ।
[3:144]
আর
মুহাম্মদ একজন
রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও
বহু রসূল অতিবাহিত
হয়ে গেছেন। তাহলে
কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত
হন, তবে তোমরা
পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তুতঃ
কেউ যদি পশ্চাদপসরণ
করে, তবে তাতে আল্লাহর
কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি
হবে না। আর যারা
কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন।
[3:145]
আর
আল্লাহর হুকুম
ছাড়া কেউ মরতে পারে না-সেজন্য
একটা সময় নির্ধারিত
রয়েছে। বস্তুতঃ
যে লোক দুনিয়ায় বিনিময় কামনা
করবে, আমি তাকে তা
দুনিয়াতেই দান
করব। পক্ষান্তরে-যে
লোক আখেরাতে বিনিময় কামনা
করবে, তা থেকে আমি
তাকে তাই দেবো। আর যারা
কৃতজ্ঞ তাদেরকে
আমি প্রতিদান দেবো
[3:146]
আর
বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা
তাঁদের অনুবর্তী
হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর
পথে-তাদের কিছু
কষ্ট হয়েছে
বটে, কিন্তু আল্লাহর
রাহে তারা হেরেও
যায়নি, ক্লান্তও
হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা
সবর করে, আল্লাহ
তাদেরকে ভালবাসেন।
[3:147]
তারা
আর কিছুই বলেনি-শুধু বলেছে, হে আমাদের
পালনকর্তা! মোচন
করে দাও আমাদের
পাপ এবং যা কিছু
বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে আমাদের
কাজে। আর আমাদিগকে
দৃঢ় রাখ এবং কাফেরদের
উপর আমাদিগকে সাহায্য কর।
[3:148]
অতঃপর
আল্লাহ তাদেরকে
দুনিয়ার সওয়াব দান করেছেন
এবং যথার্থ আখেরাতের
সওয়াব। আর যারা
সৎকর্মশীল
আল্লাহ তাদেরকে
ভালবাসেন।
[3:149]
হে
ঈমানদারগণ! তোমরা
যদি কাফেরদের
কথা শোন, তাহলে
ওরা তোমাদেরকে
পেছনে ফিরিয়ে
দেবে, তাতে তোমরা
ক্ষতির সম্মুখীণ
হয়ে পড়বে।
[3:150]
বরং
আল্লাহ তোমাদের সাহায্যকারী, আর তাঁর
সাহায্যই হচ্ছে
উত্তম সাহায্য।
[3:151]
খুব
শীঘ্রই আমি কাফেরদের
মনে ভীতির
সঞ্চার করবো। কারণ, ওরা আল্লাহর
সাথে অংশীদার সাব্যস্ত
করে যে সম্পর্কে কোন সনদ অবতীর্ণ
করা হয়নি। আর ওদের
ঠিকানা হলো দোযখের
আগুন। বস্তুতঃ
জালেমদের ঠিকানা অত্যন্ত
নিকৃষ্ট।
[3:152]
আর
আল্লাহ সে ওয়াদাকে
সত্যে পরিণত
করেছেন, যখন তোমরা
তাঁরই নির্দেশে
ওদের খতম করছিলে। এমনকি
যখন তোমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে
পড়েছে ও কর্তব্য
স্থির করার ব্যাপারে
বিবাদে লিপ্ত হয়েছে। আর যা তোমরা চাইতে তা
দেখার পর কৃতঘ্নতা
প্রদর্শন করেছ, তাতে
তোমাদের কারো কাম্য
ছিল দুনিয়া আর কারো বা কাম্য
ছিল আখেরাত। অতঃপর
তোমাদিগকে সরিয়ে
দিলেন ওদের উপর
থেকে যাতে তোমাদিগকে পরীক্ষা
করেন। বস্তুতঃ
তিনি তোমাদিগকে
ক্ষমা করেছেন। আর আল্লাহর মুমিনদের প্রতি
অনুগ্রহশীল।
[3:153]
আর
তোমরা উপরে উঠে
যাচ্ছিলে এবং পেছন দিকে
ফিরে তাকাচ্ছিলে
না কারো প্রতি, অথচ রসূল
ডাকছিলেন তোমাদিগকে তোমাদের পেছন
দিক থেকে। অতঃপর
তোমাদের উপর এলো
শোকের ওপরে শোক, যাতে
তোমরা হাত থেকে বেরিয়ে
যাওয়া বস্তুর
জন্য দুঃখ না কর
এবং যার সম্মুখীণ
হচ্ছ সেজন্য বিমর্ষ না হও। আর আল্লাহ
তোমাদের কাজের
ব্যাপারে অবহিত
রয়েছেন।
[3:154]
অতঃপর
তোমাদের উপর শোকের
পর শান্তি
অবতীর্ণ করলেন, যা ছিল
তন্দ্রার মত। সে তন্দ্রায়
তোমাদের মধ্যে
কেউ কেউ ঝিমোচ্ছিল
আর কেউ কেউ প্রাণের
ভয়ে ভাবছিল। আল্লাহ
সম্পর্কে তাদের
মিথ্যা ধারণা হচ্ছিল মুর্খদের
মত। তারা বলছিল
আমাদের হাতে কি
কিছুই করার নেই? তুমি
বল, সবকিছুই আল্লাহর হাতে। তারা
যা কিছু মনে লুকিয়ে
রাখে-তোমার নিকট
প্রকাশ করে না
সে সবও। তারা বলে আমাদের
হাতে যদি কিছু
করার থাকতো, তাহলে
আমরা এখানে নিহত
হতাম না। তুমি বল, তোমরা যদি
নিজেদের ঘরেও থাকতে
তবুও তারা অবশ্যই
বেরিয়ে আসত নিজেদের
অবস্থান থেকে
যাদের মৃত্যু লিখে
দেয়া হয়েছে। তোমাদের
বুকে যা রয়েছে
তার পরীক্ষা করা ছিল আল্লাহর ইচ্ছা, আর তোমাদের
অন্তরে যা কিছু
রয়েছে তা পরিষ্কার
করা ছিল তাঁর কাম্য। আল্লাহ
মনের গোপন বিষয়
জানেন।
[3:155]
তোমাদের
যে দুটি দল লড়াইয়ের দিনে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল
শয়তান তাদেরকে
বিভ্রান্ত করেছিল, তাদেরই
পাপের দরুন।
[3:156]
হে
ঈমাণদারগণ! তোমরা
তাদের মত হয়ো
না, যারা কাফের
হয়েছে এবং নিজেদের
ভাই বন্ধুরা যখন
কোন অভিযানে বের
হয় কিংবা
জেহাদে যায়, তখন তাদের
সম্পর্কে বলে, তারা
যদি আমাদের সাথে
থাকতো, তাহলে মরতোও না আহতও
হতো না। যাতে
তারা এ ধারণা সৃষ্টির
মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের
মনে অনুতাপ সৃষ্টি করতে পারে। অথচ আল্লাহই
জীবন দান করেন
এবং মৃত্যু দেন। তোমাদের
সমস্ত কাজই, তোমরা
যা কিছুই কর না
কেন, আল্লাহ সবকিছুৃই
দেখেন।
[3:157]
আর
তোমরা যদি আল্লাহর
পথে নিহত হও কিংবা
মৃত্যুবরণ কর, তোমরা
যা কিছু সংগ্রহ
করে থাক আল্লাহ
তা’আলার ক্ষমা
ও করুণা সে সবকিছুর
চেয়ে উত্তম।
[3:158]
আর
তোমরা মৃত্যুই
বরণ কর অথবা নিহতই হও, অবশ্য
আল্লাহ তা’আলার
সামনেই সমবেত হবে।
[3:159]
আল্লাহর
রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয়
হয়েছেন পক্ষান্তরে
আপনি যদি রাগ ও
কঠিন হৃদয় হতেন
তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে
বিচ্ছিন্ন হয়ে
যেতো। কাজেই
আপনি তাদের ক্ষমা
করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত
কামনা করুন এবং
কাজে কর্মে তাদের
পরামর্শ করুন। অতঃপর
যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করে ফেলেন, তখন আল্লাহ
তা’আলার উপর ভরসা
করুন আল্লাহ তাওয়াক্কুল
কারীদের ভালবাসেন।
[3:160]
যদি
আল্লাহ তোমাদের
সহায়তা করেন, তাহলে
কেউ তোমাদের উপর
পরাক্রান্ত হতে
পারবে না। আর যদি
তিনি তোমাদের সাহায্য না করেন, তবে এমন
কে আছে, যে তোমাদের
সাহায্য করতে পারে? আর আল্লাহর ওপরই মুসলমানগনের
ভরসা করা উচিত।
[3:161]
আর
কোন বিষয় গোপন
করে রাখা নবীর
কাজ নয়। আর যে
লোক গোপন করবে
সে কিয়ামতের দিন
সেই গোপন বস্তু
নিয়ে আসবে। অতঃপর পরিপূর্ণভাবে
পাবে প্রত্যেকে, যা সে
অর্জন করেছে। আর তাদের
প্রতি কোন অন্যায় করা হবে
না।
[3:162]
যে
লোক আল্লাহর ইচ্ছার
অনুগত, সে কি ঐ লোকের
সমান হতে পারে, যে আল্লাহর
রোষ অর্জন করেছে? বস্তুতঃ
তার ঠিকানা হল দোযখ। আর তা
কতইনা নিকৃষ্ট
অবস্থান!
[3:163]
আল্লাহর
নিকট মানুষের মর্যাদা বিভিন্ন স্তরের
আর আল্লাহ দেখেন
যা কিছু তারা করে।
[3:164]
আল্লাহ
ঈমানদারদের উপর
অনুগ্রহ করেছেন
যে, তাদের মাঝে
তাদের নিজেদের
মধ্য থেকে নবী
পাঠিয়েছেন। তিনি
তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ
পাঠ করেন। তাদেরকে
পরিশোধন করেন এবং
তাদেরকে কিতাব
ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুতঃ
তারা ছিল পূর্ব
থেকেই পথভ্রষ্ট।
[3:165]
যখন
তোমাদের উপর একটি
মুসীবত এসে পৌছাল, অথচ তোমরা
তার পূর্বেই দ্বিগুণ
কষ্টে পৌছে গিয়েছ, তখন কি
তোমরা বলবে, এটা কোথা
থেকে এল? তাহলে
বলে দাও, এ কষ্ট
তোমাদের উপর পৌছেছে
তোমারই পক্ষ থেকে। নিশ্চয়ই
আল্লাহ প্রত্যেক
বিষয়ের উপর ক্ষমতাশীল।
[3:166]
আর
যেদিন দু’দল সৈন্যের মোকাবিলা হয়েছে; সেদিন
তোমাদের উপর যা
আপতিত হয়েছে তা
আল্লাহর হুকুমেই
হয়েছে এবং তা
এজন্য যে, তাতে
ঈমানদারদিগকে
জানা যায়।
[3:167]
এবং
তাদেরকে যাতে সনাক্ত
করা যায় যারা
মুনাফিক ছিল। আর তাদেরকে
বলা হল এসো, আল্লাহর
রাহে লড়াই কর
কিংবা শত্রুদিগকে
প্রতিহত কর। তারা
বলেছিল, আমরা যদি জানতাম
যে, লড়াই হবে, তাহলে অবশ্যই তোমাদের
সাথে থাকতাম। সে দিন
তারা ঈমানের তুলনায়
কুফরীর কাছাকাছি
ছিল। যা তাদের
অন্তরে নেই তারা
নিজের মুখে সে
কথাই বলে বস্তুতঃআল্লাহ
ভালভাবে জানেন তারা যা কিছু গোপন
করে থাকে।
[3:168]
ওরা
হলো যে সব লোক, যারা
বসে থেকে নিজেদের
ভাইদের সম্বদ্ধে
বলে, যদি তারা আমাদের
কথা শুনত, তবে নিহত
হত না। তাদেরকে
বলে দিন, এবার
তোমাদের নিজেদের
উপর থেকে মৃত্যুকে
সরিয়ে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে
থাক।
[3:169]
আর
যারা আল্লাহর রাহে
নিহত হয়, তাদেরকে
তুমি কখনো মৃত
মনে করো না। বরং তারা
নিজেদের পালনকর্তার
নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত।
[3:170]
আল্লাহ
নিজের অনুগ্রহ
থেকে যা দান করেছেন
তার প্রেক্ষিতে
তারা আনন্দ উদযাপন
করছে। আর যারা
এখনও তাদের কাছে
এসে পৌঁছেনি
তাদের পেছনে তাদের
জন্যে আনন্দ প্রকাশ
করে। কারণ, তাদের
কোন ভয় ভীতিও নেই এবং কোন চিন্তা
ভাবনাও নেই।
[3:171]
আল্লাহর
নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্যে তারা আনন্দ
প্রকাশ করে এবং
তা এভাবে যে, আল্লাহ, ঈমানদারদের
শ্রমফল বিনষ্ট করেন না।
[3:172]
যারা
আহত হয়ে পড়ার
পরেও আল্লাহ
এবং তাঁর রসূলের
নির্দেশ মান্য
করেছে, তাদের মধ্যে
যারা সৎ
ও পরহেযগার, তাদের
জন্য রয়েছে মহান
সওয়াব।
[3:173]
যাদেরকে
লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের
সাথে মোকাবেলা
করার জন্য লোকেরা
সমাবেশ করেছে বহু
সাজ-সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের
বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর
হয়ে যায় এবং
তারা বলে, আমাদের
জন্য আল্লাহই
যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী।
[3:174]
অতঃপর
ফিরে এল মুসলমানরা আল্লাহর অনুগ্রহ
নিয়ে, তদের কিছুই
অনিষ্ট হলো না। তারপর
তারা আল্লাহর ইচ্ছার অনুগত হল। বস্তুতঃ
আল্লাহর অনুগ্রহ
অতি বিরাট।
[3:175]
এরা
যে রয়েছে, এরাই
হলে শয়তান, এরা নিজেদের
বন্ধুদের ব্যাপারে
ভীতি প্রদর্শন
করে। সুতরাং
তোমরা তাদের ভয় করো না। আর তোমরা
যদি ঈমানদার হয়ে
থাক, তবে আমাকে
ভয় কর।
[3:176]
আর
যারা কুফরের দিকে
ধাবিত হচ্ছে
তারা যেন তোমাদিগকে
চিন্তাম্বিত করে
না তোলে। তারা
আল্লাহ তা’আলার
কোন কিছুই
অনিষ্ট সাধন করতে
পারবে না। আখেরাতে
তাদেরকে কোন কল্যাণ
দান না করাই আল্লাহর ইচ্ছা। বস্তুতঃ
তাদের জন্যে রয়েছে
মহা শাস্তি।
[3:177]
যারা
ঈমানের পরিবর্তে
কুফর ক্রয়
করে নিয়েছে, তারা
আল্লাহ তা’আলার
কিছুই ক্ষতিসাধন
করতে পারবে না। আর তাদের জন্য রয়েছে
বেদনাদায়ক শাস্তি।
[3:178]
কাফেররা
যেন মনে না করে
যে আমি যে, অবকাশ
দান করি, তা তাদের
পক্ষে কল্যাণকর। আমি তো
তাদেরকে অবকাশ
দেই যাতে করে তারা পাপে উন্নতি
লাভ করতে পারে। বস্তুতঃ
তাদের জন্য রয়েছে
লাঞ্ছনাজনক শাস্তি।
[3:179]
নাপাককে
পাক থেকে পৃথক
করে দেয়া
পর্যন্ত আল্লাহ
এমন নন যে, ঈমানদারগণকে
সে অবস্থাতেই রাখবেন
যাতে তোমরা রয়েছ, আর আল্লাহ
এমন নন যে, তোমাদিগকে
গায়বের সংবাদ
দেবেন। কিন্তু
আল্লাহ স্বীয়
রসূল গণের মধ্যে
যাকে ইচ্ছা বাছাই
করে নিয়েছেন। সুতরাং
আল্লাহর ওপর এবং তাঁর রসূলগণের
ওপর তোমরা প্রত্যয়
স্থাপন কর। বস্তুতঃ
তোমরা যদি বিশ্বাস
ও পরহেযগারীর
ওপর প্রতিষ্ঠিত
থেকে থাক, তবে তোমাদের
জন্যে রয়েছে বিরাট
প্রতিদান।
[3:180]
আল্লাহ
তাদেরকে নিজের
অনুগ্রহে যা দান করেছেন
তাতে যারা কৃপণতা
করে এই কার্পন্য
তাদের জন্য মঙ্গলকর
হবে বলে তারা
যেন ধারণা না করে। বরং এটা
তাদের পক্ষে একান্তই
ক্ষতিকর প্রতিপন্ন
হবে। যাতে
তারা কার্পন্য
করে সে সমস্ত ধন-সম্পদকে
কিয়ামতের দিন
তাদের গলায় বেড়ী
বানিয়ে পরানো
হবে। আর আল্লাহ
হচ্ছেন আসমান ও
যমীনের পরম সত্ত্বাধিকারী। আর যা
কিছু তোমরা
কর; আল্লাহ সে
সম্পর্কে জানেন।
[3:181]
নিঃসন্দেহে
আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন, যারা
বলেছে যে, আল্লাহ
হচ্ছেন অভাবগ্রস্ত
আর আমরা বিত্তবান!
এখন আমি তাদের
কথা এবং যেসব নবীকে
তারা অন্যায়ভাবে
হত্যা করেছে তা
লিখে রাখব, অতঃপর বলব, আস্বাদন কর
জ্বলন্ত আগুনের
আযাব।
[3:182]
এ
হল তারই প্রতিফল
যা তোমরা ইতিপূর্বে
নিজের হাতে পাঠিয়েছ। বস্তুতঃ
আল্লাহ বান্দাদের
প্রতি অত্যাচার
করেন না।
[3:183]
সে
সমস্ত লোক, যারা
বলে যে, আল্লাহ আমাদিগকে
এমন কোন রসূলের
ওপর বিশ্বাস না
করতে বলে রেখেছেন
যতক্ষণ না তারা আমাদের নিকট এমন
কোরবানী নিয়ে
আসবেন যাকে আগুন
গ্রাস করে নেবে। তুমি
তাদের বলে দাও, তোমাদের মাঝে
আমার পূর্বে বহু
রসূল নিদর্শনসমূহ
এবং তোমরা যা আব্দার
করেছ তা নিয়ে
এসেছিলেন, তখন তোমরা
কেন তাদেরকে হত্যা
করলে যদি তোমরা
সত্য হয়ে থাক।
[3:184]
তাছাড়া
এরা যদি তোমাকে
মিথ্যা প্রতিপন্ন
করে, তবে তোমার
পূর্বেও এরা এমন
বহু নবীকে মিথ্যা
প্রতিপন্ন করেছে, যারা
নিদর্শন সমূহ নিয়ে
এসেছিলেন। এবং এনেছিলেন
সহীফা ও প্রদীপ্ত
গ্রন্থ।
[3:185]
প্রত্যেক
প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা
কিয়ামতের দিন
পরিপূর্ণ বদলা
প্রাপ্ত হবে। তারপর
যাকে দোযখ থেকে
দূরে রাখা হবে
এবং জান্নাতে প্রবেশ
করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি
ঘটবে। আর পার্থিব
জীবন ধোঁকা ছাড়া
অন্য কোন সম্পদ
নয়।
[3:186]
অবশ্য
ধন-সম্পদে এবং
জনসম্পদে তোমাদের পরীক্ষা
হবে এবং অবশ্য
তোমরা শুনবে পূর্ববর্তী
আহলে কিতাবদের
কাছে এবং মুশরেকদের
কাছে বহু অশোভন
উক্তি। আর যদি
তোমরা ধৈর্য্য
ধারণ কর এবং পরহেযগারী অবলম্বন কর, তবে তা
হবে একান্ত সৎসাহসের ব্যাপার।
[3:187]
আর
আল্লাহ যখন আহলে
কিতাবদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা
গ্রহণ করলেন যে, তা মানুষের
নিকট বর্ণনা করবে
এবং গোপন করবে না, তখন তারা সে
প্রতিজ্ঞাকে নিজেদের
পেছনে ফেলে রাখল
আর তার কেনা-বেচা
করল সামান্য
মূল্যের বিনিময়ে। সুতরাং
কতই না মন্দ তাদের
এ বেচা-কেনা।
[3:188]
তুমি
মনে করো না, যারা
নিজেদের কৃতকর্মের
উপর আনন্দিত হয়
এবং না করা বিষয়ের
জন্য প্রশংসা কামনা
করে, তারা আমার নিকট থেকে
অব্যাহতি লাভ করেছে। বস্তুতঃ
তাদের জন্যে রয়েছে
বেদনাদায়ক আযাব।
[3:189]
আর
আল্লাহর জন্যই
হল আসমান ও যমিনের বাদশাহী। আল্লাহই
সর্ব বিষয়ে ক্ষমতার
অধিকারী।
[3:190]
নিশ্চয়
আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের
আবর্তনে নিদর্শন
রয়েছে বোধ সম্পন্ন
লোকদের জন্যে।
[3:191]
যাঁরা
দাঁড়িয়ে, বসে, ও শায়িত অবস্থায়
আল্লাহকে স্মরণ
করে এবং চিন্তা
গবেষণা করে আসমান
ও জমিন সৃষ্টির বিষযে, (তারা বলে)
পরওয়ারদেগার!
এসব তুমি অনর্থক
সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা তোমারই, আমাদিগকে
তুমি দোযখের শাস্তি
থেকে বাঁচাও।
[3:192]
হে
আমাদের পালনকর্তা!
নিশ্চয় তুমি
যাকে দোযখে নিক্ষেপ
করলে তাকে সবসময়ে
অপমানিত করলে; আর জালেমদের
জন্যে তো সাহায্যকারী
নেই।
[3:193]
হে
আমাদের পালনকর্তা!
আমরা নিশ্চিতরূপে
শুনেছি একজন আহবানকারীকে
ঈমানের প্রতি আহবান
করতে যে, তোমাদের পালনকর্তার প্রতি
ঈমান আন; তাই আমরা
ঈমান এনেছি। হে আমাদের
পালনকর্তা! অতঃপর আমাদের সকল গোনাহ
মাফ কর এবং আমাদের
সকল দোষত্রুটি
দুর করে দাও, আর আমাদের মৃত্যু দাও নেক
লোকদের সাথে।
[3:194]
হে
আমাদের পালনকর্তা!
আমাদেরকে দাও, যা তুমি ওয়াদা
করেছ তোমার রসূলগণের
মাধ্যমে এবং কিয়ামতের
দিন আমাদিগকে তুমি অপমানিত
করো না। নিশ্চয়
তুমি ওয়াদা খেলাফ
করো না।
[3:195]
অতঃপর
তাদের পালনকর্তা
তাদের দোয়া
(এই বলে) কবুল করে
নিলেন যে, আমি তোমাদের
কোন পরিশ্রমকারীর
পরিশ্রমই বিনষ্ট করি না, তা সে
পুরুষ হোক কিংবা
স্ত্রীলোক। তোমরা
পরস্পর এক। তারপর
সে সমস্ত
লোক যারা হিজরত
করেছে, তাদেরকে নিজেদের
দেশ থেকে বের করে
দেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রতি
উৎপীড়ন করা
হয়েছে আমার পথে
এবং যারা লড়াই
করেছে ও মৃত্যুবরণ করেছে, অবশ্যই আমি
তাদের উপর থেকে
অকল্যাণকে অপসারিত
করব। এবং তাদেরকে
প্রবিষ্ট করব জান্নাতে
যার তলদেশে নহর
সমূহ প্রবাহিত। এই হলো
বিনিময় আল্লাহর
পক্ষ থেকে। আর আল্লাহর নিকট
রয়েছে উত্তম বিনিময়।
[3:196]
নগরীতে
কাফেরদের চাল-চলন
যেন তোমাদিগকে
ধোঁকা না দেয়।
[3:197]
এটা
হলো সামান্য ফায়দা-এরপর তাদের ঠিকানা
হবে দোযখ। আর সেটি
হলো অতি নিকৃষ্ট
অবস্থান।
[3:198]
কিন্তু
যারা ভয় করে নিজেদের পালনকর্তাকে
তাদের জন্যে রয়েছে
জান্নাত যার তলদেশে
প্রবাহিত রয়েছে
প্রস্রবণ। তাতে আল্লাহর
পক্ষ থেকে সদা
আপ্যায়ন চলতে
থাকবে। আর যা
আল্লাহর নিকট রয়েছে, তা সৎকর্মশীলদের
জন্যে একান্তই
উত্তম।
[3:199]
আর
আহলে কিতাবদের
মধ্যে কেউ কেউ এমনও রয়েছে, যারা
আল্লাহর উপর ঈমান
আনে এবং যা কিছু
তোমার উপর অবতীর্ণ
হয় আর যা
কিছু তাদের উপর
অবতীর্ণ হয়েছে
সেগুলোর উপর, আল্লাহর
সামনে বিনয়াবনত
থাকে এবং আল্লার
আয়াতসমুহকে স্বল্পমুল্যের
বিনিময়ে সওদা
করে না, তারাই হলো
সে লোক যাদের
জন্য পারিশ্রমিক
রয়েছে তাদের পালনকর্তার
নিকট। নিশ্চয়ই
আল্লাহ যথাশীঘ্র হিসাব চুকিয়ে
দেন।
[3:200]
হে
ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য
ধারণ কর এবং মোকাবেলায়
দৃঢ়তা অবলম্বন
কর। আর আল্লাহকে
ভয় করতে থাক যাতে
তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে
সমর্থ হতে পার।
@
4 An-Nisa
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[4:1]
হে
মানব সমাজ! তোমরা
তোমাদের পালনকর্তাকে
ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে
এক ব্যক্তি থেকে
সৃষ্টি করেছেন
এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে
সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার
করেছেন তাদের দু’জন থেকে
অগণিত পুরুষ
ও নারী। আর আল্লাহকে
ভয় কর, যাঁর নামে
তোমরা একে অপরের
নিকট যাচঞ্ঝা করে থাক এবং আত্নীয়
জ্ঞাতিদের ব্যাপারে
সতর্কতা অবলম্বন
কর। নিশ্চয় আল্লাহ
তোমাদের ব্যাপারে
সচেতন রয়েছেন।
[4:2]
এতীমদেরকে
তাদের সম্পদ বুঝিয়ে দাও। খারাপ
মালামালের সাথে
ভালো মালামালের
অদল-বদল করো না। আর তাদের
ধন-সম্পদ নিজেদের
ধন-সম্পদের সাথে
সংমিশ্রিত করে
তা গ্রাস করো না। নিশ্চয়
এটা বড়ই মন্দ কাজ।
[4:3]
আর
যদি তোমরা ভয়
কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে
পুরণ করতে পারবে
না, তবে সেসব মেয়েদের
মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের
বিয়ে করে নাও
দুই, তিন, কিংবা
চারটি পর্যন্ত। আর যদি
এরূপ আশঙ্কা
কর যে, তাদের মধ্যে
ন্যায় সঙ্গত আচরণ
বজায় রাখতে পারবে
না, তবে, একটিই
অথবা তোমাদের
অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই
পক্ষপাতিত্বে
জড়িত না হওয়ার
অধিকতর সম্ভাবনা।
[4:4]
আর
তোমরা স্ত্রীদেরকে
তাদের মোহর
দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা
যদি খুশী হয়ে
তা থেকে অংশ ছেড়ে
দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে
ভোগ কর।
[4:5]
আর
যে সম্পদকে আল্লাহ
তোমাদের জীবন-যাত্রার
অবলম্বন করেছেন, তা অর্বাচীনদের
হাতে তুলে দিও
না। বরং তা থেকে তাদেরকে খাওয়াও, পরাও
এবং তাদেরকে সান্তনার
বানী শোনাও।
[4:6]
আর
এতীমদের প্রতি
বিশেষভাবে নজর রাখবে, যে পর্যন্ত
না তারা বিয়ের
বয়সে পৌঁছে। যদি তাদের
মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার
উন্মেষ আঁচ করতে
পার, তবে তাদের
সম্পদ তাদের হাতে
অর্পন করতে পার। এতীমের
মাল প্রয়োজনাতিরিক্ত
খরচ করো না বা তারা
বড় হয়ে যাবে
মনে করে তাড়াতাড়ি
খেয়ে ফেলো না। যারা
স্বচ্ছল তারা অবশ্যই
এতীমের মাল খরচ
করা থেকে বিরত
থাকবে। আর যে
অভাবগ্রস্ত সে
সঙ্গত পরিমাণ খেতে
পারে। যখন তাদের
হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যার্পণ
কর, তখন সাক্ষী
রাখবে। অবশ্য
আল্লাহই হিসাব
নেয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট।
[4:7]
পিতা-মাতা
ও আত্নীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে
পুরুষদেরও অংশ
আছে এবং পিতা-মাতা
ও আত্নীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে
নারীদেরও অংশ আছে; অল্প
হোক কিংবা বেশী। এ অংশ
নির্ধারিত।
[4:8]
সম্পতি
বন্টনের সময় যখন আত্নীয়-স্বজন, এতীম
ও মিসকীন উপস্থিত
হয়, তখন তা থেকে
তাদের কিছু খাইয়ে
দাও এবং তাদের
সাথে কিছু সদালাপ
করো।
[4:9]
তাদের
ভয় করা উচিত, যারা নিজেদের পশ্চাতে
দুর্বল অক্ষম সন্তান-সন্ততি
ছেড়ে গেলে তাদের
জন্যে তারাও আশঙ্কা করে; সুতরাং
তারা যেন আল্লাহকে
ভয় করে এবং সংগত
কথা বলে।
[4:10]
যারা
এতীমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে
খায়, তারা নিজেদের
পেটে আগুনই ভর্তি
করেছে এবং সত্ত্বরই
তারা অগ্নিতে
প্রবেশ করবে।
[4:11]
আল্লাহ
তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে
আদেশ করেনঃ একজন
পুরুষের অংশ দু?জন নারীর
অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারীই
হয় দু' এর অধিক, তবে তাদের
জন্যে ঐ মালের
তিন ভাগের দুই
ভাগ যা ত্যাগ
করে মরে এবং যদি
একজনই হয়, তবে তার
জন্যে অর্ধেক। মৃতের
পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের
জন্যে ত্যাজ্য
সম্পত্তির ছয়
ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের
পুত্র থাকে। যদি পুত্র
না থাকে এবং পিতা-মাতাই
ওয়ারিস হয়, তবে মাতা
পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অতঃপর
যদি মৃতের কয়েকজন
ভাই থাকে, তবে তার
মাতা পাবে ছয়
ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যতের পর, যা করে
মরেছে কিংবা ঋণ
পরিশোধের পর। তোমাদের
পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের
জন্যে অধিক উপকারী
তোমরা জান না। এটা আল্লাহ
কতৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ
সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ।
[4:12]
আর, তোমাদের
হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে
যায় তোমাদের স্ত্রীরা
যদি তাদের কোন
সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান
থাকে, তবে তোমাদের
হবে এক-চতুর্থাংশ
ঐ সম্পত্তির, যা তারা
ছেড়ে যায়; ওছিয়্যতের
পর, যা তারা করে
এবং ঋণ পরিশোধের
পর। স্ত্রীদের
জন্যে এক-চতুর্থাংশ
হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা
ছেড়ে যাও যদি
তোমাদের কোন সন্তান
না থাকে। আর যদি
তোমাদের সন্তান
থাকে, তবে তাদের
জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির
আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে
যাও ওছিয়্যতের
পর, যা তোমরা কর
এবং ঋণ পরিশোধের
পর। যে পুরুষের, ত্যাজ্য
সম্পত্তি, তার যদি
পিতা-পুত্র কিংবা
স্ত্রী না থাকে
এবং এই মৃতের
এক ভাই কিংবা এক
বোন থাকে, তবে উভয়ের
প্রত্যেকে ছয়-ভাগের
এক পাবে। আর যদি ততোধিক থাকে, তবে তারা
এক তৃতীয়াংশ অংশীদার
হবে ওছিয়্যতের
পর, যা করা হয় অথবা ঋণের পর এমতাবস্থায়
যে, অপরের ক্ষতি
না করে। এ বিধান
আল্লাহর। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
[4:13]
এগুলো
আল্লাহর নির্ধারিত
সীমা। যে কেউ
আল্লাহ ও রসূলের
আদেশমত চলে, তিনি
তাকে জান্নাত সমূহে
প্রবেশ করাবেন, যেগুলোর
তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী
প্রবাহিত হবে। তারা
সেখানে চিরকাল
থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য।
[4:14]
যে
কেউ আল্লাহ ও রসূলের অবাধ্যতা করে
এবং তার সীমা অতিক্রম
করে তিনি তাকে
আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল
থাকবে। তার জন্যে
রয়েছে অপমানজনক
শাস্তি।
[4:15]
আর
তোমাদের নারীদের
মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী
তাদের বিরুদ্ধে
তোমাদের মধ্য থেকে
চার জন পুরুষকে
সাক্ষী হিসেবে
তলব কর। অতঃপর
যদি তারা সাক্ষ্য
প্রদান করে তবে
সংশ্লিষ্টদেরকে
গৃহে আবদ্ধ রাখ, যে পর্যন্ত মৃত্যু
তাদেরকে তুলে না
নেয় অথবা আল্লাহ
তাদের জন্য অন্য
কোন পথ নির্দেশ
না করেন।
[4:16]
তোমাদের
মধ্য থেকে যে দু’জন সেই কুকর্মে লিপ্ত
হয়, তাদেরকে শাস্তি
প্রদান কর। অতঃপর
যদি উভয়ে তওবা
করে এবং নিজেদের
সংশোধন করে, তবে তাদের
থেকে হাত গুটিয়ে
নাও। নিশ্চয়
আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু।
[4:17]
অবশ্যই
আল্লাহ তাদের তওবা
কবুল করবেন, যারা
ভূলবশতঃ মন্দ কাজ
করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে
তওবা করে; এরাই
হল সেসব লোক যাদেরকে
আল্লাহ ক্ষমা করে
দেন। আল্লাহ
মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ।
[4:18]
আর
এমন লোকদের জন্য
কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ
কাজ করতেই থাকে, এমন কি
যখন তাদের কারো
মাথার উপর মৃত্যু
উপস্থিত হয়, তখন বলতে
থাকেঃ আমি এখন
তওবা করছি। আর তওবা
নেই তাদের জন্য, যারা
কুফরী অবস্থায়
মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের
জন্য যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি প্রস্তুত
করে রেখেছি।
[4:19]
হে
ঈমাণদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে
গ্রহন করা তোমাদের
জন্যে হালাল নয়
এবং তাদেরকে আটক
রেখো না যাতে
তোমরা তাদেরকে
যা প্রদান করেছ
তার কিয়দংশ নিয়ে
নাও; কিন্তু তারা
যদি কোন প্রকাশ্য
অশ্লীলতা করে!
নারীদের সাথে সদ্ভাবে
জীবন-যাপন কর। অতঃপর
যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত
তোমরা এমন এক জিনিসকে
অপছন্দ করছ, যাতে
আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।
[4:20]
যদি
তোমরা এক স্ত্রীর
স্থলে অন্য
স্ত্রী পরিবর্তন
করতে ইচ্ছা কর
এবং তাদের একজনকে
প্রচুর ধন-সম্পদ
প্রদান করে থাক, তবে তা
থেকে কিছুই ফেরত
গ্রহণ করো না। তোমরা
কি তা অন্যায়ভাবে
ও প্রকাশ্য
গোনাহর মাধ্যমে
গ্রহণ করবে?
[4:21]
তোমরা
কিরূপে তা গ্রহণ
করতে পার, অথচ তোমাদের
একজন অন্য জনের
কাছে গমন এবং নারীরা
তোমাদের কাছে থেকে
সুদৃঢ় অঙ্গীকার
গ্রহণ করেছে।
[4:22]
যে
নারীকে তোমাদের
পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে তোমরা
তাদের বিবাহ করো
না। কিন্তু যা
বিগত হয়ে গেছে। এটা অশ্লীল, গযবের
কাজ এবং নিকৃষ্ট
আচরণ।
[4:23]
তোমাদের
জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের
মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের
বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের
খালা, ভ্রাতৃকণ্যা; ভগিনীকণ্যা
তোমাদের সে মাতা, যারা
তোমাদেরকে স্তন্যপান
করিয়েছে, তোমাদের
দুধ-বোন, তোমাদের
স্ত্রীদের মাতা, তোমরা
যাদের সাথে সহবাস
করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা যারা তোমাদের
লালন-পালনে আছে। যদি তাদের
সাথে সহবাস না
করে থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের
কোন গোনাহ নেই। তোমাদের
ঔরসজাত পুত্রদের
স্ত্রী এবং দুই
বোনকে একত্রে
বিবাহ করা; কিন্তু
যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয়
আল্লাহ ক্ষমাকরী, দয়ালু।