Part 6
[4:148]
আল্লাহ
কোন মন্দ বিষয়
প্রকাশ করা পছন্দ
করেন না। তবে কারো
প্রতি জুলুম হয়ে
থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ।
[4:149]
তোমরা
যদি কল্যাণ কর প্রকাশ্যভাবে
কিংবা গোপনে অথবা
যদি তোমরা আপরাধ
ক্ষমা করে দাও, তবে জেনো, আল্লাহ নিজেও ক্ষমাকারী, মহাশক্তিশালী।
[4:150]
যারা
আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি অস্বীকৃতি
জ্ঞাপনকারী তদুপরি
আল্লাহ ও রসূলের
প্রতি বিশ্বাসে
তারতম্য করতে চায় আর বলে যে, আমরা
কতককে বিশ্বাস
করি কিন্তু কতককে
প্রত্যাখ্যান
করি এবং এরই মধ্যবর্তী কোন
পথ অবলম্বন করতে
চায়।
[4:151]
প্রকৃতপক্ষে
এরাই সত্য প্রত্যাখ্যাকারী। আর যারা
সত্য প্রত্যাখ্যানকারী
তাদের জন্য তৈরী
করে রেখেছি অপমানজনক আযাব।
[4:152]
আর
যারা ঈমান এনেছে
আল্লাহর উপর, তাঁর
রসূলের উপর এবং
তাঁদের কারও প্রতি
ঈমান আনতে গিয়ে
কাউকে বাদ দেয়নি, শীঘ্রই
তাদেরকে প্রাপ্য
সওয়াব দান করা
হবে। বস্তুতঃ
আল্লাহ ক্ষমাশীল
দয়ালু।
[4:153]
আপনার
নিকট আহলে-কিতাবরা
আবেদন জানায়
যে, আপনি তাদের
উপর আসমান থেকে
লিখিত কিতাব অবতীর্ণ
করিয়ে নিয়ে আসুন। বস্তুতঃ এরা মূসার
কাছে এর চেয়েও
বড় জিনিস চেয়েছে। বলেছে, একেবারে সামনাসামনিভাবে
আমাদের আল্লাহকে
দেখিয়ে দাও। অতএব, তাদের
উপর বজ্রপাত হয়েছে তাদের পাপের দরুন; অতঃপর
তাদের নিকট সুস্পষ্ট
প্রমাণ-নিদর্শন
প্রকাশিত হবার
পরেও তারা গো-বৎসকে উপাস্যরূপে
গ্রহণ করেছিল; তাও আমি
ক্ষমা করে দিয়েছিলাম
এবং আমি মূসাকে
প্রকৃষ্ট প্রভাব
দান করেছিলাম।
[4:154]
আর
তাদের কাছ থেকে
প্রতিশ্রুতি নেবার উদ্দেশ্যে
আমি তাদের উপর
তূর পর্বতকে তুলে
ধরেছিলাম এবং তাদেরকে
বলেছিলাম, অবনত
মস্তকে দরজায়
ঢোক। আর বলেছিলাম, শনিবার
দিন সীমালংঘন করো
না। এভাবে তাদের কাছ থেকে দৃঢ়
অঙ্গীকার নিয়েছিলাম।
[4:155]
অতএব, তারা
যে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছিল, তা ছিল
তাদেরই অঙ্গীকার
ভঙ্গর জন্য এবং
অন্যায়ভাবে রসূলগণকে
হত্যা করার
কারণে এবং তাদের
এই উক্তির দরুন
যে, আমাদের হৃদয়
আচ্ছন্ন। অবশ্য
তা নয়, বরং কুফরীর
কারণে স্বয়ং আল্লাহ
তাদের অন্তরের
উপর মোহর এঁটে
দিয়েছেন। ফলে এরা ঈমান আনে না কিন্তু
অতি অল্পসংখ্যক।
[4:156]
আর
তাদের কুফরী এবং
মরিয়মের প্রতি মহা অপবাদ
আরোপ করার কারণে।
[4:157]
আর
তাদের একথা বলার
কারণে যে, আমরা
মরিয়ম পুত্র ঈসা
মসীহকে হত্যা করেছি
যিনি ছিলেন আল্লাহর
রসূল। অথচ তারা
না তাঁকে
হত্যা করেছে, আর না
শুলীতে চড়িয়েছে, বরং তারা
এরূপ ধাঁধায় পতিত হয়েছিল। বস্তুতঃ
তারা এ ব্যাপারে
নানা রকম কথা বলে, তারা
এক্ষেত্রে সন্দেহের
মাঝে পড়ে আছে, শুধুমাত্র
অনুমান করা ছাড়া
তারা এ বিষয়ে
কোন খবরই রাখে
না। আর নিশ্চয়ই
তাঁকে তারা হত্যা
করেনি।
[4:158]
বরং
তাঁকে উঠিয়ে নিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা নিজের
কাছে। আর আল্লাহ
হচ্ছেন মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
[4:159]
আর
আহলে-কিতাবদের
মধ্যে যত শ্রেণী
রয়েছে তারা সবাই
ঈমান আনবে ঈসার
উপর তাদের মৃত্যুর
পূর্বে। আর কেয়ামতের দিন তাদের জন্য
সাক্ষীর উপর সাক্ষী
উপস্থিত হবে।
[4:160]
বস্তুতঃ
ইহুদীদের জন্য
আমি হারাম
করে দিয়েছি বহু
পূত-পবিত্র বস্তু
যা তাদের জন্য
হালাল ছিল-তাদের
পাপের কারণে
এবং আল্লাহর পথে
অধিক পরিমাণে বাধা
দানের দরুন।
[4:161]
আর
এ কারণে যে, তারা
সুদ গ্রহণ করত, অথচ এ ব্যাপারে
নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করা হয়েছিল এবং
এ কারণে যে, তারা
অপরের সম্পদ
ভোগ করতো অন্যায়
ভাবে। বস্তুত; আমি কাফেরদের
জন্য তৈরী করে
রেখেছি বেদনাদায়ক
আযাব।
[4:162]
কিন্তু
যারা তাদের মধ্যে জ্ঞানপক্ক ও ঈমানদার, তারা
তাও মান্য করে
যা আপনার উপর অবতীর্ণ
হয়েছে এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে
আপনার পূর্বে। আর যারা
নামাযে অনুবর্তিতা
পালনকারী, যারা
যাকাত দানকারী
এবং যারা আল্লাহ
ও কেয়ামতে আস্থাশীল। বস্তুতঃ
এমন লোকদেরকে আমি
দান করবো মহাপুণ্য।
[4:163]
আমি
আপনার প্রতি ওহী পাঠিয়েছি, যেমন
করে ওহী পাঠিয়েছিলাম
নূহের প্রতি এবং
সে সমস্ত নবী-রসূলের প্রতি যাঁরা তাঁর
পরে প্রেরিত হয়েছেন। আর ওহী
পাঠিয়েছি, ইসমাঈল, ইব্রাহীম, ইসহাক, ইয়াকুব, ও তাঁর
সন্তাবর্গের প্রতি
এবং ঈসা, আইয়ুব, ইউনূস, হারুন
ও সুলায়মানের
প্রতি। আর আমি
দাউদকে দান করেছি
যবুর গ্রন্থ।
[4:164]
এছাড়া
এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের ইতিবৃত্ত
আমি আপনাকে শুনিয়েছি
ইতিপূর্বে এবং
এমন রসূল পাঠিয়েছি
যাদের বৃত্তান্ত
আপনাকে শোনাইনি। আর আল্লাহ
মূসার সাথে কথোপকথন
করেছেন সরাসরি।
[4:165]
সুসংবাদদাতা
ও ভীতি-প্রদর্শনকারী
রসূলগণকে প্রেরণ
করেছি, যাতে রসূলগণের
পরে আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করার
মত কোন অবকাশ মানুষের
জন্য না থাকে। আল্লাহ
প্রবল পরাক্রমশীল, প্রাজ্ঞ।
[4:166]
আল্লাহ
আপনার প্রতি যা
অবতীর্ণ করেছেন
তিনি যে তা সজ্ঞানেই
করেছেন, সে ব্যাপারে
আল্লাহ নিজেও সাক্ষী
এবং ফেরেশতাগণও
সাক্ষী। আর সাক্ষী
হিসাবে আল্লাহই
যথেষ্ট।
[4:167]
যারা
কুফরী অবলম্বন
করেছে, এবং আল্লাহর
পথে বাধার সৃষ্টি
করেছে, তারা বিভ্রান্তিতে
সুদূরে পতিত হয়েছে।
[4:168]
যারা
কুফরী অবলম্বন
করেছে এবং সত্য চাপা দিয়ে
রেখেছে, আল্লাহ কখনও
তাদের ক্ষমা করবেন
না এবং সরল পথ দেখাবেন না।
[4:169]
তাদের
জন্য রয়েছে জাহান্নামের পথ। সেখানে তারা
বাস করবে অনন্তকাল। আর এমন
করাটা আল্লাহর
পক্ষে সহজ।
[4:170]
হে
মানবজাতি! তোমাদের পালনকর্তার যথার্থ
বাণী নিয়ে তোমাদের
নিকট রসূল এসেছেন, তোমরা
তা মেনে নাও যাতে তোমাদের কল্যাণ
হতে পারে। আর যদি
তোমরা তা না মান, জেনে
রাখ আসমানসমূহে
ও যমীনে যা কিছু
রয়েছে সে সবকিছুই
আল্লাহর। আর আল্লাহ
হচ্ছেন সর্বজ্ঞ, প্রাজ্ঞ।
[4:171]
হে
আহলে-কিতাবগণ!
তোমরা দ্বীনের
ব্যাপারে বাড়াবাড়ি
করো না এবং আল্লাহর
শানে নিতান্ত সঙ্গত
বিষয় ছাড়া কোন কথা বলো না। নিঃসন্দেহে
মরিয়ম পুত্র মসীহ
ঈসা আল্লাহর রসূল
এবং তাঁর বাণী যা তিনি প্রেরণ
করেছেন মরিয়মের
নিকট এবং রূহ-তাঁরই
কাছ থেকে আগত। অতএব, তোমরা আল্লাহকে এবং তার রসূলগণকে
মান্য কর। আর একথা
বলো না যে, আল্লাহ
তিনের এক, একথা
পরিহার কর; তোমাদের
মঙ্গল হবে। নিঃসন্দেহে
আল্লাহ একক উপাস্য। সন্তান-সন্ততি
হওয়াটা তাঁর
যোগ্য বিষয় নয়। যা কিছু
আসমান সমূহ ও যমীনে
রয়েছে সবই তার। আর কর্মবিধানে আল্লাহই
যথেষ্ট।
[4:172]
মসীহ
আল্লাহর বান্দা
হবেন, তাতে তার কোন
লজ্জাবোধ নেই এবং
ঘনিষ্ঠ ফেরেশতাদেরও
না। বস্তুতঃ যারা
আল্লাহর দাসত্বে
লজ্জাবোধ করবে
এবং অহংকার করবে, তিনি
তাদের সবাইকে নিজের
কাছে সমবেত করবেন।
[4:173]
অতঃপর
যারা ঈমান এনেছে
এবং সৎকাজ করেছে, তিনি
তাদেরকে পরিপূর্ণ
সওয়াব দান করবেন, বরং স্বীয়
অনুগ্রহে আরো বেশী দেবেন। পক্ষান্তরে
যারা লজ্জাবোধ
করেছে এবং অহঙ্কার
করেছে তিনি তাদেরকে দেবেন বেদনাদায়ক
আযাব। আল্লাহকে
ছাড়া তারা কোন
সাহায্যকারী ও
সমর্থক পাবে না।
[4:174]
হে
মানবকুল! তোমাদের পরওয়ারদেগারের
পক্ষ থেকে তোমাদের
নিকট সনদ পৌঁছে
গেছে। আর আমি
তোমাদের প্রতি প্রকৃষ্ট আলো
অবতীর্ণ করেছি।
[4:175]
অতএব, যারা
আল্লাহর প্রতি
ঈমান এনেছে
এবং তাতে দৃঢ়তা
অবলম্বন করেছে
তিনি তাদেরকে স্বীয়
রহমত ও অনুগ্রহের আওতায় স্থান
দেবেন এবং নিজের
দিকে আসার মত সরল
পথে তুলে দেবেন।
[4:176]
মানুষ
আপনার নিকট ফতোয়া
জানতে চায়
অতএব, আপনি বলে দিন, আল্লাহ
তোমাদিগকে কালালাহ
এর মীরাস সংক্রান্ত
সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতলে
দিচ্ছেন, যদি কোন
পুরুষ মারা যায়
এবং তার কোন সন্তানাদি
না থাকে এবং এক
বোন থাকে, তবে সে
পাবে তার পরিত্যাক্ত
সম্পত্তির অর্ধেক
অংশ এবং সে যদি নিঃসন্তান হয়, তবে তার
ভাই তার উত্তরাধিকারী
হবে। তা দুই
বোন থাকলে তাদের
জন্য পরিত্যক্ত
সম্পত্তির দুই
তৃতীয়াংশ। পক্ষান্তরে
যদি ভাই ও বোন উভয়ই
থাকে, তবে একজন
পুরুষের অংশ দুজন
নারীর সমান। তোমরা
বিভ্রান্ত হবে
আল্লাহ তোমাদিগকে সুস্পষ্ট ভাবে
জানিয়ে দিচ্ছেন। আর আল্লাহ
হচ্ছেন সর্ব বিষয়ে
পরিজ্ঞাত।
5 Al-Maidah
শুরু
করছি আল্লাহর
নামে যিনি পরম
করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[5:1]
মুমিনগণ, তোমরা
অঙ্গীকারসমূহ পূর্ন কর। তোমাদের
জন্য চতুষ্পদ জন্তু
হালাল করা হয়েছে, যা তোমাদের
কাছে বিবৃত হবে তা ব্যতীত। কিন্তু
এহরাম বাধাঁ অবস্থায়
শিকারকে হালাল
মনে করো না! নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা যা
ইচ্ছা করেন, নির্দেশ
দেন।
[5:2]
হে
মুমিনগণ! হালাল
মনে করো না আল্লাহর নিদর্শনসমূহ
এবং সম্মানিত মাসসমূহকে
এবং হরমে কুরবানীর
জন্যে নির্দিষ্ট জন্তুকে এবং ঐসব
জন্তুকে, যাদের
গলায় কন্ঠাভরণ
রয়েছে এবং ঐসব
লোককে যারা সম্মানিত গৃহ
অভিমুখে যাচ্ছে, যারা
স্বীয় পালনকর্তার
অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি
কামনা করে। যখন তোমরা
এহরাম থেকে বের
হয়ে আস, তখন শিকার
কর। যারা পবিত্র
মসজিদ থেকে তোমাদেরকে বাধা
প্রদান করেছিল, সেই সম্প্রদায়ের
শুত্রুতা যেন তোমাদেরকে সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত
না করে। সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে
একে অন্যের সাহায্য
কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের
ব্যাপারে একে অন্যের
সহায়তা করো না। আল্লাহকে
ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর
শাস্তিদাতা।
[5:3]
তোমাদের
জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শুকরের
মাংস, যেসব জন্তু
আল্লাহ ছাড়া অন্যের
নামে উৎসর্গকৃত হয়, যা কন্ঠরোধে
মারা যায়, যা আঘাত
লেগে মারা যায়, যা উচ্চ
স্থান থেকে
পতনের ফলে মারা
যা, যা শিং এর আঘাতে
মারা যায় এবং
যাকে হিংস্র জন্তু
ভক্ষণ করেছে, কিন্তু
যাকে তোমরা যবেহ
করেছ। যে জন্তু
যজ্ঞবেদীতে যবেহ
করা হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক
শর দ্বারা বন্টন
করা হয়। এসব গোনাহর
কাজ। আজ কাফেররা
তোমাদের দ্বীন
থেকে নিরাশ হয়ে
গেছে। অতএব তাদেরকে
ভয় করো না বরং
আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্যে
তোমাদের দ্বীনকে
পূর্নাঙ্গ করে
দিলাম, তোমাদের প্রতি
আমার অবদান সম্পূর্ণ করে
দিলাম এবং ইসলামকে
তোমাদের জন্যে
দ্বীন হিসেবে পছন্দ
করলাম। অতএব যে ব্যাক্তি তীব্র
ক্ষুধায় কাতর
হয়ে পড়ে; কিন্তু
কোন গোনাহর প্রতি
প্রবণতা না থাকে, তবে নিশ্চয়ই
আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল।
[5:4]
তারা
আপনাকে জিজ্ঞেস
করে যে, কি বস্তু তাদের
জন্যে হালাল? বলে দিন, তোমাদের
জন্যে পবিত্র বস্তুসমূহ
হালাল করা হয়েছে। যেসব
শিকারী জন্তুকে
তোমরা প্রশিক্ষণ
দান কর শিকারের
প্রতি প্রেরণের জন্যে এবং ওদেরকে
ঐ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ
দাও, যা আল্লাহ
তোমাদেরকে শিক্ষা
দিয়েছেন। এমন শিকারী জন্তু
যে শিকারকে তোমাদের
জন্যে ধরে রাখে, তা খাও
এবং তার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ
কর। আল্লাহকে
ভয় করতে থাক। নিশ্চয়
আল্লাহ সত্ত্বর
হিসাব গ্রহণকারী।
[5:5]
আজ
তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ হালাল
করা হল। আহলে
কিতাবদের খাদ্য
তোমাদের জন্যে
হালাল এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য
হালাল। তোমাদের
জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী
মুসলমান নারী এবং
তাদের সতী-সাধ্বী
নারী, যাদেরকে কিতাব
দেয়া হয়েছে তোমাদের
পূর্বে, যখন তোমরা
তাদেরকে মোহরানা
প্রদান কর তাদেরকে
স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা
চরিতার্থ করার
জন্যে কিংবা
গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত
হওয়ার জন্যে নয়। যে ব্যক্তি
বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে, তার শ্রম
বিফলে যাবে এবং
পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত
হবে।
[5:6]
হে
মুমিনগণ, যখন তোমরা
নামাযের জন্যে
উঠ, তখন স্বীয়
মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ
কনুই পর্যন্ত ধৌত
কর এবং পদযুগল গিটসহ। যদি তোমরা
অপবিত্র হও তবে
সারা দেহ পবিত্র
করে নাও এবং যদি
তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে
থাক অথবা তোমাদের
কেউ প্রসাব-পায়খানা
সেরে আসে অথবা
তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর, অতঃপর
পানি না পাও, তবে তোমরা
পবিত্র মাটি দ্বারা
তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মন্ডল
ও হস্তদ্বয় মাটি
দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায়
ফেলতে চান না; কিন্তু
তোমাদেরকে পবিত্র
রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি
স্বীয় নেয়ামত
পূর্ণ করতে চান-যাতে
তোমরা কৃতজ্ঞাতা
প্রকাশ কর।
[5:7]
তোমরা
আল্লাহর নেয়ামতের
কথা স্মরণ
কর, যা তোমাদের
প্রতি অবতীর্ণ
হয়েছে এবং ঐ অঙ্গীকারকেও
যা তোমাদের কাছ থেকে নিয়েছেন, যখন তোমরা
বলেছিলেঃ আমরা
শুনলাম এবং মেনে
নিলাম। আল্লাহকে
ভয় কর। নিশ্চয়ই
আল্লাহ অন্তরের
বিষয় সম্পর্কে
পুরোপুরি খবর রাখেন।
[5:8]
হে
মুমিনগণ, তোমরা
আল্লাহর উদ্দেশে
ন্যায় সাক্ষ্যদানের
ব্যাপারে অবিচল
থাকবে এবং কোন
সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে
কখনও ন্যায়বিচার
পরিত্যাগ করো না। সুবিচার
কর এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে
ভয় কর। তোমরা
যা কর, নিশ্চয় আল্লাহ
সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত।
[5:9]
যারা
বিশ্বাস স্থাপন
করে, এবং সৎকর্ম সম্পাদন
করে, আল্লাহ তা?েদরকে
ক্ষমা ও মহান প্রতিদানের
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
[5:10]
যারা
অবিশ্বাস করে এবং
আমার নিদর্শনাবলীকে
মিথ্যা বলে, তার দোযখী।
[5:11]
হে
মুমিনগণ, তোমাদের
প্রতি আল্লাহর
অনুগ্রহ স্মরণ
কর, যখন এক সম্প্রদায়
তোমাদের দিকে স্বীয়
হস্ত প্রসারিত করতে সচেষ্ট হয়েছিল, তখন তিনি
তাদের হস্ত তোমাদের
থেকে প্রতিহত করে
দিলেন। আল্লাহকে ভয়
কর এবং মুমিনদের
আল্লাহর উপরই ভরসা
করা উচিত।
[5:12]
আল্লাহ
বনী-ইসরাঈলের কাছ
থেকে অঙ্গীকার
নিয়েছিলেন এবং
আমি তাদের মধ্য
থেকে বার জন সর্দার
নিযুক্ত করেছিলাম। আল্লাহ বলে দিলেনঃ
আমি তোমাদের সঙ্গে
আছি। যদি তোমরা
নামায প্রতিষ্ঠিত
কর, যাকাত দিতে থাক, আমার
পয়গম্বরদের প্রতি
বিশ্বাস রাখ, তাঁদের
সাহায্য কর এবং
আল্লাহকে উত্তম পন্থায়
ঋন দিতে থাক, তবে আমি
অবশ্যই তোমাদের
গোনাহ দুর করে
দিব এবং অবশ্যই
তোমাদেরকে উদ্যান
সমূহে প্রবিষ্ট
করব, যেগুলোর তলদেশ
দিয়ে নিঝরিনীসমূহ প্রবাহিত হয়। অতঃপর
তোমাদের মধ্য থেকে
যে ব্যক্তি এরপরও
কাফের হয়, সে নিশ্চিতই সরল পথ থেকে বিচ্যুত
হয়ে পড়ে।
[5:13]
অতএব, তাদের
অঙ্গীকার ভঙ্গের দরুন আমি তাদের
উপর অভিসম্পাত
করেছি এবং তাদের
অন্তরকে কঠোর করে
দিয়েছি। তারা কালামকে তার স্থান
থেকে বিচ্যুত করে
দেয় এবং তাদেরকে
যে উপদেশ দেয়া
হয়েছিল, তারা
তা থেকে উপকার
লাভ করার বিষয়টি
বিস্মৃত হয়েছে। আপনি
সর্বদা তাদের কোন
না কোন প্রতারণা
সম্পর্কে অবগত
হতে থাকেন, তাদের
অল্প কয়েকজন ছাড়া। অতএব, আপনি তাদেরকে ক্ষমা
করুন এবং মার্জনা
করুন। আল্লাহ
অনুগ্রহকারীদেরকে
ভালবাসেন।
[5:14]
যারা
বলেঃ আমরা নাছারা, আমি তাদের কাছ থেকেও
তাদের অঙ্গীকার
নিয়েছিলাম। অতঃপর
তারাও যে উপদেশ
প্রাপ্ত হয়েছিল, তা থেকে
উপকার লাভ করা
ভুলে গেল। অতঃপর
আমি কেয়ামত পর্যন্ত
তাদের মধ্যে
পারস্পরিক শত্রুতা
ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত
করে দিয়েছি। অবশেষে
আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম
সম্পর্কে অবহিত
করবেন।
[5:15]
হে
আহলে-কিতাবগণ!
তোমাদের কাছে আমার রাসূল আগমন
করেছেন! কিতাবের
যেসব বিষয় তোমরা
গোপন করতে, তিনি
তার মধ্য থেকে
অনেক বিষয় প্রকাশ
করেন এবং অনেক
বিষয় মার্জনা
করেন। তোমাদের
কাছে একটি উজ্জল জ্যোতি
এসেছে এবং একটি
সমুজ্জল গ্রন্থ।
[5:16]
এর
দ্বারা আল্লাহ
যারা তাঁর সন্তুষ্টি কামনা
করে, তাদেরকে নিরাপত্তার
পথ প্রদর্শন করেন
এবং তাদেরকে স্বীয় নির্দেশ দ্বারা
অন্ধকার থেকে বের
করে আলোর দিকে
আনয়ন করেন এবং
সরল পথে পরিচালনা করেন।
[5:17]
নিশ্চয়
তারা কাফের, যারা
বলে, মসীহ ইবনে
মরিয়মই আল্লাহ। আপনি
জিজ্ঞেস করুন, যদি তাই
হয়, তবে বল যদি
আল্লাহ মসীহ
ইবনে মরিয়ম, তাঁর
জননী এবং ভূমন্ডলে
যারা আছে, তাদের
সবাইকে ধ্বংস করতে চান, তবে এমন কারও
সাধ্য আছে কি যে
আল্লাহর কাছ থেকে
তাদেরকে বিন্দুমাত্রও
বাঁচাতে পারে? নভোমন্ডল, ভুমন্ডল
ও এতদুভয়ের মধ্যে
যা আছে, সবকিছুর উপর
আল্লাহ তা’আলার আধিপত্য। তিনি
যা ইচ্ছা সৃষ্টি
করেন। আল্লাহ
সবকিছুর উপর শক্তিমান।
[5:18]
ইহুদী
ও খ্রীষ্টানরা
বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান
ও তাঁর প্রিয়জন। আপনি
বলুন, তবে তিনি তোমাদেরকে
পাপের বিনিময়ে কেন শাস্তি দান
করবেন? বরং তোমারও
অন্যান্য সৃষ্ট
মানবের অন্তর্ভুক্ত
সাধারণ মানুষ। তিনি
যাকে ইচ্ছা ক্ষমা
করেন এবং যাকে
ইচ্ছা শাস্তি প্রদান
করেন। নভোমন্ডল, ভুমন্ডল
ও এতদুভয়ের মধ্যে
যা কিছু আছে, তাতে
আল্লাহরই আধিপত্য
রয়েছে এবং তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন
করতে হবে।
[5:19]
হে
আহলে-কিতাবগণ!
তোমাদের কাছে আমার রসূল আগমণ
করেছেন, যিনি পয়গম্বরদের
বিরতির পর তোমাদের
কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা করেন-যাতে
তোমরা একথা বলতে
না পার যে, আমাদের
কাছে কোন সুসংবাদদাতা
ও ভীতিপ্রদর্শক
আগমন করে নি। অতএব, তোমাদের
কাছে সুসংবাদদাতা
ও ভীতি প্রদর্শক
আগমন করেননি। অতএব, তোমাদের
কাছে সুসংবাদদাতা
ও ভয় প্রদর্শক
এসে গেছেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর শক্তিমান।
[5:20]
যখন
মূসা স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেনঃ হে আমার
সম্প্রদায়, তোমাদের
প্রতি আল্লাহর
নেয়ামত স্মরণ
কর, যখন তিনি তোমাদের মধ্যে
পয়গম্বর সৃষ্টি
করেছেন, তোমাদেরকে
রাজ্যাধিপতি করেছেন
এবং তোমাদেরকে
এমন জিনিস দিয়েছেন, যা বিশ্বজগতের
কাউকে দেননি।
[5:21]
হে
আমার সম্প্রদায়, পবিত্র ভুমিতে প্রবেশ
কর, যা আল্লাহ
তোমাদের জন্যে
নির্ধারিত করে
দিয়েছেন এবং পেছন দিকে প্রত্যাবর্তন
করো না। অন্যথায়
তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত
হয়ে পড়বে।
[5:22]
তারা
বললঃ হে মূসা, সেখানে একটি প্রবল পরাক্রান্ত
জাতি রয়েছে। আমরা
কখনও সেখানে যাব
না, যে পর্যন্ত
না তারা সেখান
থেকে বের হয়ে
যায়। তারা যদি
সেখান থেকে বের
হয়ে যায় তবে
নিশ্চিতই আমরা প্রবেশ করব।’
[5:23]
খোদাভীরুদের
মধ্য থেকে দু’ব্যক্তি বলল, যাদের
প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ
করেছিলেনঃ তোমরা
তাদের উপর আক্রমণ করে দরজায় প্রবেশ
কর। অতঃপর তোমরা
যখন তাতে পবেশ
করবে, তখন তোমরাই
জয়ী হবে। আর আল্লাহর উপর ভরসা
কর যদি তোমরা বিশ্বাসী
হও।
[5:24]
তারা
বললঃ হে মূসা, আমরা জীবনেও কখনো সেখানে
যাব না, যতক্ষণ তারা
সেখানে থাকবে। অতএব, আপনি
ও আপনার পালনকর্তাই
যান এবং উভয়ে
যুদ্ধ করে নিন। আমরা
তো এখানেই বসলাম।
[5:25]
মূসা
বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমি শুধু
নিজের উপর ও নিজের
ভাইয়ের উপর ক্ষমতা
রাখি। অতএব, আপনি
আমাদের মধ্যে ও এ অবাধ্য সম্প্রদায়ের
মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ
করুন।
[5:26]
বললেনঃ
এ দেশ চল্লিশ বছর পর্যন্ত তাদের
জন্যে হারাম করা
হল। তারা ভুপৃষ্ঠে
উদভ্রান্ত হয়ে
ফিরবে। অতএব, আপনি
অবাধ্য সম্প্রদায়ের
জন্যে দুঃখ করবেন
না।
[5:27]
আপনি
তাদেরকে আদমের
দুই পুত্রের
বাস্তব অবস্থা
পাঠ করে শুনান। যখন তারা
ভয়েই কিছু উৎসর্গ নিবেদন করেছিল, তখন তাদের
একজনের উৎসর্গ
গৃহীত হয়েছিল
এবং অপরজনের গৃহীত
হয়নি। সে বললঃ আমি অবশ্যই
তোমাকে হত্যা করব। সে বললঃ
আল্লাহ ধর্মভীরুদের
পক্ষ থেকেই তো গ্রহণ করেন।
[5:28]
যদি
তুমি আমাকে হত্যা
করতে আমার দিকে
হস্ত প্রসারিত
কর, তবে আমি তোমাকে
হত্যা করতে তোমার
দিকে হস্ত প্রসারিত করব
না। কেননা, আমি বিশ্বজগতের
পালনকর্তা আল্লাহকে
ভয় করি।
[5:29]
আমি
চাই যে, আমার পাপ ও
তোমার পাপ তুমি
নিজের মাথায় চাপিয়ে
নাও। অতঃপর
তুমি দোযখীদের
অন্তর্ভূক্ত হয়ে
যাও। এটাই
অত্যাচারীদের
শাস্তি।
[5:30]
অতঃপর
তার অন্তর তাকে ভ্রাতৃহত্যায়
উদুদ্ধ করল। অনন্তর
সে তাকে হত্যা
করল। ফলে সে
ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত
হয়ে গেল।
[5:31]
আল্লাহ
এক কাক প্রেরণ
করলেন। সে মাটি খনন করছিল
যাতে তাকে শিক্ষা
দেয় যে, আপন ভ্রাতার
মৃতদেহ কিভাবে
আবৃত করবে। সে বললঃ
আফসোস, আমি কি এ কাকের
সমতুল্যও হতে পারলাম
না যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ আবৃত করি। অতঃপর
সে অনুতাপ করতে
লাগল।
[5:32]
এ
কারণেই আমি বনী-ইসলাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি
যে, যে কেউ প্রাণের
বিনিময়ে প্রাণ
অথবাপৃথিবীতে
অনর্থ সৃষ্টি
করা ছাড়া কাউকে
হত্যা করে সে যেন
সব মানুষকেই হত্যা
করে। এবং যে
কারও জীবন রক্ষা
করে, সে যেন সবার
জীবন রক্ষা করে। তাদের
কাছে আমার পয়গম্বরগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী
নিয়ে এসেছেন। বস্তুতঃ
এরপরও তাদের অনেক
লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে।
[5:33]
যারা
আল্লাহ ও তাঁর
রসূলের সাথে
সংগ্রাম করে এবং
দেশে হাঙ্গামা
সৃষ্টি করতে সচেষ্ট
হয়, তাদের শাস্তি
হচ্ছে এই যে, তাদেরকে
হত্যা করা হবে
অথবা শূলীতে চড়ানো
হবে অথবা তাদের
হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে
কেটে দেয়া হবে
অথবা দেশ থেকে
বহিষ্কার করা হবে। এটি হল
তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা
আর পরকালে তাদের
জন্যে রয়েছে কঠোর
শাস্তি।
[5:34]
কিন্তু
যারা তোমাদের গ্রেফতারের পূর্বে
তওবা করে; জেনে
রাখ, আল্লাহ ক্ষমাকারী, দয়ালু।
[5:35]
হে
মুমিনগণ! আল্লাহকে
ভয় কর, তাঁর নৈকট্য
অন্বেষন কর এবং
তাঁর পথে জেহাদ
কর যাতে তোমরা
সফলকাম হও।
[5:36]
যারা
কাফের, যদি তাদের
কাছে পৃথিবীর
সমুদয় সম্পদ এবং
তৎসহ আরও তদনুরূপ
সম্পদ থাকে আর
এগুলো বিনিময়ে
দিয়ে কিয়ামতের
শাস্তি থেকে পরিত্রান
পেতে চায়, তবুও
তাদের কাছ থেকে
তা কবুল করা হবে না। তাদের জন্যে
যন্ত্রনাদায়ক
শাস্তি রয়েছে।
[5:37]
তারা
দোযখের আগুন থেকে
বের হয়ে আসতে
চাইবে কিন্তু তা
থেকে বের হতে পারবে
না। তারা চিরস্থায়ী
শাস্তি ভোগ করবে।
[5:38]
যে
পুরুষ চুরি করে
এবং যে নারী চুরি করে তাদের
হাত কেটে দাও তাদের
কৃতকর্মের সাজা
হিসেবে। আল্লাহর
পক্ষ থেকে হুশিয়ারী। আল্লাহ
পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়।
[5:39]
অতঃপর
যে তওবা করে স্বীয় অত্যাচারের পর
এবং সংশোধিত হয়, নিশ্চয়
আল্লাহ তার তওবা
কবুল করেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
[5:40]
তুমি
কি জান না যে আল্লাহর নিমিত্তেই নভোমন্ডল
ও ভূমন্ডলের আধিপত্য। তিনি
যাকে ইচ্ছা শাস্তি
দেন এবং যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আল্লাহ
সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
[5:41]
হে
রসূল, তাদের জন্যে
দুঃখ করবেন
না, যারা দৌড়ে
গিয়ে কুফরে পতিত
হয়; যারা মুখে
বলেঃ আমরা মুসলমান, অথচ তাদের অন্তর মুসলমান
নয় এবং যারা ইহুদী; মিথ্যাবলার
জন্যে তারা গুপ্তচর
বৃত্তি করে। তারা
অন্যদলের গুপ্তচর, যারা
আপনার কাছে আসেনি। তারা
বাক্যকে স্বস্থান
থেকে পরিবর্তন
করে। তারা বলেঃ
যদি তোমরা এ নির্দেশ
পাও, তবে কবুল করে
নিও এবং যদি এ নির্দেশ না পাও, তবে বিরত
থেকো। আল্লাহ
যাকে পথভ্রষ্ট
করতে চান, তার জন্যে আল্লাহর কাছে
আপনি কিছু করতে
পারবেন না। এরা এমনিই
যে, আল্লাহ এদের
অন্তরকে পবিত্র
করতে চান না। তাদের
জন্যে রয়েছে দুনিয়াতে
লাঞ্ছনা এবং পরকালে
বিরাট শাস্তি।
[5:42]
এরা
মিথ্যা বলার জন্যে গুপ্তচরবৃত্তি
করে, হারাম ভক্ষণ
করে। অতএব, তারা
যদি আপনার কাছে
আসে, তবে হয় তাদের মধ্যে ফয়সালা
করে দিন, না হয়
তাদের ব্যাপারে
নির্লিপ্ত থাকুন। যদি তাদের থেকে নির্লিপ্ত
থাকেন, তবে তাদের
সাধ্য নেই যে, আপনার
বিন্দুমাত্র ক্ষতি
করতে পারে। যদি ফয়সালা
করেন, তবেন্যায়
ভাবে ফয়সালা করুন। নিশ্চয়
আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে
ভালবাসেন।
[5:43]
তারা
আপনাকে কেমন করে
বিচারক নিয়োগ
করবে অথচ তাদের
কাছে তওরাত রয়েছে। তাতে
আল্লাহর নির্দেশ
আছে। অতঃপর
এরা পেছন দিকে
মুখ ফিরিয়ে নেয়। তারা
কখনও বিশ্বাসী
নয়।
[5:44]
আমি
তওরাত অবর্তীর্ন
করেছি। এতে হেদায়াত
ও আলো রয়েছে। আল্লাহর
আজ্ঞাবহ পয়গম্বর, দরবেশ
ও আলেমরা এর মাধ্যমে ইহুদীদেরকে
ফয়সালা দিতেন। কেননা, তাদেরকে
এ খোদায়ী গ্রন্থের
দেখাশোনা করার নির্দেশ
দেয়া হয়েছিল
এবং তাঁরা এর রক্ষণাবেক্ষণে
নিযুক্ত ছিলেন। অতএব, তোমরা মানুষকে ভয় করো
না এবং আমাকে ভয়
কর এবং আমার আয়াত
সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্যে
গ্রহণ করো না, যেসব
লোক আল্লাহ যা
অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে
না, তারাই কাফের।
[5:45]
আমি
এ গ্রন্থে তাদের
প্রতি লিখে
দিয়েছি যে, প্রাণের
বিনিময়ে প্রাণ, চক্ষুর
বিনিময়ে চক্ষু, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের
বিনিময়ে কান, দাঁতের
বিনিময়ে দাঁত
এবং যখম সমূহের বিনিময়ে সমান
যখম। অতঃপর
যে ক্ষমা করে, সে গোনাহ
থেকে পাক হয়ে
যায়। যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ
করেছেন, তদনুযায়ী
ফয়সালা করে না
তারাই জালেম।
[5:46]
আমি
তাদের পেছনে মরিয়ম
তনয় ঈসাকে
প্রেরণ করেছি। তিনি
পূর্ববর্তী গ্রন্থ
তওরাতের সত্যায়নকারী
ছিলেন। আমি তাঁকে ইঞ্জিল
প্রদান করেছি। এতে হেদায়াত
ও আলো রয়েছে। এটি পূর্ববতী
গ্রন্থ তওরাতের
সত্যায়ন করে পথ
প্রদর্শন করে এবং
এটি খোদাভীরুদের
জন্যে হেদায়েত
উপদেশ বানী।
[5:47]
ইঞ্জিলের
অধিকারীদের উচিত, আল্লাহ
তাতে যা অবতীর্ণ
করেছেন। তদানুযায়ী
ফয়সালা করা। যারা
আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী
ফয়সালা করে না, তারাই
পাপাচারী।
[5:48]
আমি
আপনার প্রতি অবতীর্ণ
করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী
গ্রন্থ সমূহের
সত্যায়নকারী
এবং সেগুলোর বিষয়বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি
তাদের পারস্পারিক
ব্যাপারাদিতে
আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী
ফয়সালা করুন এবং
আপনার কাছে যে
সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে
তাদের প্রবৃত্তির
অনুসরণ করবেন না। আমি তোমাদের
প্রত্যেককে একটি
আইন ও পথ দিয়েছি। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে তোমাদের
সবাইকে এক উম্মত
করে দিতেন, কিন্তু
এরূপ করেননি-যাতে তোমাদেরকে যে
ধর্ম দিয়েছেন, তাতে
তোমাদের পরীক্ষা
নেন। অতএব, দৌড়ে
কল্যাণকর বিষয়াদি অর্জন
কর। তোমাদের সবাইকে
আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন
করতে হবে। অতঃপর তিনি অবহিত করবেন
সে বিষয়, যাতে
তোমরা মতবিরোধ
করতে।
[5:49]
আর
আমি আদেশ করছি
যে, আপনি তাদের
পারস্পরিক ব্যাপারাদিতে
আল্লাহ যা নাযিল
করেছেন তদনুযায়ী
ফয়সালা করুন; তাদের
প্রবৃত্তির অনুসরণ
করবেন না এবং তাদের
থেকে সতর্ক থাকুন-যেন
তারা আপনাকে এমন কোন নির্দেশ
থেকে বিচ্যুত না
করে, যা আল্লাহ
আপনার প্রতি নাযিল
করেছেন। অনন্তর যদি তার মুখ ফিরিয়ে
নেয়, তবে জেনে নিন, আল্লাহ
তাদেরকে তাদের
গোনাহের কিছু শাস্তি দিতেই
চেয়েছেন। মানুষের
মধ্যে অনেকেই নাফরমান।
[5:50]
তারা
কি জাহেলিয়াত
আমলের ফয়সালা
কামনা করে? আল্লাহ
অপেক্ষা বিশ্বাসীদের
জন্যে উত্তম ফয়সালাকারী
কে?
[5:51]
হে
মুমিণগণ! তোমরা
ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে
বন্ধু হিসাবে গ্রহণ
করো না। তারা
একে অপরের বন্ধু। তোমাদের
মধ্যে যে তাদের
সাথে বন্ধুত্ব
করবে, সে তাদেরই
অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ
জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন
না।
[5:52]
বস্তুতঃ
যাদের অন্তরে রোগ রয়েছে, তাদেরকে
আপনি দেখবেন, দৌড়ে
গিয়ে তাদেরই মধ্যে
প্রবেশ করে। তারা
বলেঃ আমরা আশঙ্কা
করি, পাছে না আমরা
কোন দুর্ঘটনায়
পতিত হই। অতএব, সেদিন
দুরে নয়, যেদিন
আল্লাহ তা’আলা বিজয়
প্রকাশ করবেন অথবা
নিজের পক্ষ থেকে
কোন নির্দেশ দেবেন-ফলে তারা স্বীয় গোপন
মনোভাবের জন্যে
অনুতপ্ত হবে।
[5:53]
মুসলমানরা
বলবেঃ এরাই কি
সেসব লোক, যারা
আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা
করত যে, আমরা তোমাদের
সাথে আছি? তাদের কৃতকর্মসমূহ
বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা
ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে
আছে।
[5:54]
হে
মুমিনগণ, তোমাদের
মধ্যে যে স্বীয়
ধর্ম থেকে ফিরে
যাবে, অচিরে আল্লাহ
এমন সম্প্রদায়
সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন
এবং তারা তাঁকে
ভালবাসবে। তারা
মুসলমানদের প্রতি
বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের
প্রতি কঠোর হবে। তারা
আল্লাহর পথে জেহাদ
করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত
হবে না। এটি আল্লাহর
অনুগ্রহ-তিনি যাকে
ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী।
[5:55]
তোমাদের
বন্ধু তো আল্লাহ
তাঁর রসূল এবং
মুমিনবৃন্দ-যারা
নামায কায়েম করে, যাকাত
দেয় এবং বিনম্র।
[5:56]
আর
যারা আল্লাহ তাঁর
রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে
বন্ধুরূপে গ্রহণ
করে, তারাই আল্লাহর
দল এবং তারাই বিজয়ী।
[5:57]
হে
মুমিনগণ, আহলে
কিতাবদের মধ্য থেকে যারা
তোমাদের ধর্মকে
উপহাস ও খেলা মনে
করে, তাদেরকে এবং
অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু
রূপে গ্রহণ করো
না। আল্লাহকে
ভয় কর, যদি তোমরা
ঈমানদার হও।
[5:58]
আর
যখন তোমরা নামাযের
জন্যে আহবান
কর, তখন তারা একে
উপহাস ও খেলা বলে
মনে করে। কারণ, তারা
নিবোর্ধ।
[5:59]
বলুনঃ
হে আহলে কিতাবগণ, আমাদের সাথে তোমাদের
এছাড়া কি শত্রুতা
যে, আমরা বিশ্বাস
স্থাপন করেছি আল্লাহর
প্রতি, আমাদের উপর
অবতীর্ণ গ্রন্থের
প্রতি এবং পূর্বে
অবতীর্ণ গ্রন্থের
প্রতি। আর তোমাদের অধিকাংশই
নাফরমান।
[5:60]
বলুনঃ
আমি তোমাদেরকে
বলি, তাদের মধ্যে
কার মন্দ প্রতিফল
রয়েছে আল্লাহর
কাছে? যাদের প্রতি
আল্লাহ অভিসম্পাত
করেছেন, যাদের প্রতি
তিনি ক্রোধাম্বিত
হয়েছেন, যাদের
কতককে বানর ও শুকরে রূপান্তরিত
করে দিয়েছেন এবং
যারা শয়তানের
আরাধনা করেছে, তারাই
মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্টতর
এবং সত্যপথ থেকেও
অনেক দূরে।
[5:61]
যখন
তারা তোমাদের কাছে
আসে তখন বলে দাওঃ
আমরা বিশ্বাস স্থাপন
করেছি। অথচ তারা
কুফর নিয়ে এসেছিল
এবং কুফর নিয়েই
প্রস্থান করেছে। তারা
যা গোপন করত, আল্লাহ
তা খুব জানেন।
[5:62]
আর
আপনি তাদের অনেককে
দেখবেন যে, দৌড়ে
দৌড়ে পাপে, সীমালঙ্ঘনে
এবং হারাম ভক্ষনে
পতিত হয়। তারা
অত্যন্ত মন্দ কাজ করছে।
[5:63]
দরবেশ
ও আলেমরা কেন তাদেরকে পাপ কথা বলতে এবং
হারাম ভক্ষণ করতে
নিষেধ করে না? তারা
খুবই মন্দ কাজ
করছে।
[5:64]
আর
ইহুদীরা বলেঃ আল্লাহর
হাত বন্ধ হয়ে
গেছে। তাদেরই
হাত বন্ধ হোক। একথা
বলার জন্যে তাদের
প্রতি অভিসম্পাত। বরং তাঁর উভয়
হস্ত উম্মুক্ত। তিনি
যেরূপ ইচ্ছা ব্যয়
করেন। আপনার
প্রতি পলনকর্তার
পক্ষ থেকে যে কালাম
অবর্তীণ হয়েছে, তার কারণে
তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর পরিবর্ধিত
হবে। আমি তাদের
পরস্পরের মধ্যে
কেয়ামত পর্যন্ত
শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত
করে দিয়েছি। তারা
যখনই যুদ্ধের আগুন
প্রজ্জ?লিত করে, আল্লাহ তা নির্বাপিত
করে দেন। তারা
দেশে অশান্তি উৎপাদন করে বেড়ায়। আল্লাহ
অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে
পছন্দ করেন না।
[5:65]
আর
যদি আহলে-কিতাবরা
বিশ্বাস স্থাপন
করত এবং খোদাভীতি
অবলম্বন করত, তবে আমি
তাদের মন্দ বিষয়সমূহ
ক্ষমা করে দিতাম এবং তাদেরকে
নেয়ামতের উদ্যানসমূহে
প্রবিষ্ট করতাম।
[5:66]
যদি
তারা তওরাত, ইঞ্জিল
এবং যা প্রতিপালকের
পক্ষ থেকে তাদের
প্রতি অবতীর্ণ
হয়েছে, পুরোপুরি
পালন করত, তবে তারা উপর থেকে এবং পায়ের
নীচ থেকে ভক্ষণ
করত। তাদের
কিছুসংখ্যক লোক
সৎপথের অনুগামী এবং অনেকেই মন্দ
কাজ করে যাচ্ছে।
[5:67]
হে
রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের
পক্ষ থেকে আপনার
প্রতি যা অবতীর্ণ
হয়েছে। আর যদি
আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর
পয়গাম কিছুই পৌছালেন
না। আল্লাহ আপনাকে
মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়
আল্লাহ কাফেরদেরকে
পথ প্রদর্শন করেন
না।
[5:68]
বলে
দিনঃ হে আহলে কিতাবগণ, তোমরা
কোন পথেই নও, যে পর্যন্ত
না তোমরা তওরাত, ইঞ্জিল
এবং যে গ্রন্থ
তোমাদের পালনকর্তার
পক্ষ থেকে তোমাদের
প্রতি অবতীর্ণ
হয়েছে তাও পুরোপুরি
পালন না কর। আপনার পালনকর্তার
কাছ থেকে আপনার
প্রতি যা অবর্তীণ
হয়েছে, তার কারণে
তাদের অনেকের
অবাধ্যতা ও কুফর
বৃদ্ধি পাবে। অতএব, এ কাফের
সম্প্রদায়ের
জন্যে দুঃখ করবেন না।
[5:69]
নিশ্চয়
যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, ছাবেয়ী বা
খ্রীষ্টান, তাদের
মধ্যে যারা বিশ্বাস
স্থাপন করে আল্লাহর প্রতি, কিয়ামতের
প্রতি এবং সৎকর্ম সম্পাদন
করে, তাদের কোন
ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।
[5:70]
আমি
বনী-ইসরাঈলের কাছ
থেকে অঙ্গীকার
নিয়েছিলাম এবং
তাদের কাছে অনেক
পয়গম্বর প্রেরণ
করে ছিলাম। যখনই
তাদের কাছে
কোন পয়গম্বর এমন
নির্দেশ নিয়ে
আসত যা তাদের মনে
চাইত না, তখন তাদের অনেকের প্রতি
তারা মিথ্যারোপ
করত এবংঅনেককে
হত্যা করে ফেলত।
[5:71]
তারা
ধারণা করেছে যে, কোন অনিষ্ট হবে না। ফলে তারা
আরও অন্ধ ও বধির
হয়ে গেল। অতঃপর
আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করলেন। এরপরও
তাদের অধিকাংশই
অন্ধ ও বধির হয়ে
রইল। আল্লাহ
দেখেন তারা যা কিছু করে।
[5:72]
তারা
কাফের, যারা বলে যে, মরিময়-তনয়
মসীহ-ই আল্লাহ; অথচ মসীহ
বলেন, হে বণী-ইসরাঈল, তোমরা
আল্লাহর এবাদত কর, যিনি আমার
পালন কর্তা এবং
তোমাদেরও পালনকর্তা। নিশ্চয়
যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার
স্থির করে, আল্লাহ
তার জন্যে জান্নাত
হারাম করে দেন। এবং তার
বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের
কোন সাহায্যকারী
নেই।
[5:73]
নিশ্চয়
তারা কাফের, যারা
বলেঃ আল্লাহ
তিনের এক; অথচ এক
উপাস্য ছাড়া কোন
উপাস্য নেই। যদি তারা
স্বীয় উক্তি থেকে নিবৃত্ত
না হয়, তবে তাদের
মধ্যে যারা কুফরে
অটল থাকবে, তাদের
উপর যন্ত্রনাদায়ক
শাস্তি পতিত হবে।
[5:74]
তারা
আল্লাহর কাছে তওবা
করে না কেন এবং
ক্ষমা প্রার্থনা
করে না কেন? আল্লাহ
যে ক্ষমাশীল, দয়ালু।
[5:75]
মরিয়ম-তনয়
মসীহ রসূল ছাড়া আর কিছু নন। তাঁর
পূর্বে অনেক রসূল
অতিক্রান্ত হয়েছেন
আর তার জননী একজন
ওলী। তাঁরা
উভয়েই খাদ্য ভক্ষণ
করতেন। দেখুন, আমি তাদের
জন্যে কিরূপ যুক্তি-প্রমাণ বর্ননা করি, আবার
দেখুন, তারা উল্টা
কোন দিকে যাচেছ।
[5:76]
বলে
দিনঃ তোমরা কি
আল্লাহ ব্যতীত
এমন বস্তুর এবাদত
কর যে, তোমাদের অপকার
বা উপকার করার
ক্ষমতা রাখে না? অথচ আল্লাহ
সব শুনেন ও জানেন।
[5:77]
বলুনঃ
হে আহলে কিতাবগন, তোমরা স্বীয় ধর্মে
অন্যায় বাড়াবাড়ি
করো না এবং এতে
ঐ সম্প্রদায়ের
প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা
পূর্বে পথভ্রষ্ট
হয়েছে এবং অনেককে
পথভ্রষ্ট করেছে। তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত
হয়ে পড়েছে।
[5:78]
বনী-ইসলাঈলের
মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে দাউদ
ও মরিয়মতনয় ঈসার
মুখে অভিসম্পাত
করা হয়েছে। এটা একারণে যে, তারা অবাধ্যতা
করত এবং সীমা লংঘন
করত।
[5:79]
তারা
পরস্পরকে মন্দ
কাজে নিষেধ করত না, যা তারা করত। তারা
যা করত তা অবশ্যই
মন্দ ছিল
[5:80]
আপনি
তাদের অনেককে দেখবেন, কাফেরদের
সাথে বন্ধুত্ব
করে। তারা নিজেদের
জন্য যা পাঠিয়েছে
তা অবশ্যই মন্দ। তা এই যে, তাদের প্রতি
আল্লাহ ক্রোধান্বিত
হয়েছেন এবং তারা
চিরকাল আযাবে থাকবে।
[5:81]
যদি
তারা আল্লাহর প্রতি
ও রসূলের প্রতি
অবতীর্ণ বিষয়ের
প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন করত, তবে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ
করত না। কিন্তু
তাদের মধ্যে অনেকেই
দুরাচার।