26 Ash-Shu‘arâ’
শুরু করছি
আল্লাহর নামে যিনি
পরম করুণাময়, অতি
দয়ালু।
[26:1]
ত্বা, সীন, মীম।
[26:2]
এগুলো
সুস্পষ্ট কিতাবের
আয়াত।
[26:3]
তারা
বিশ্বাস করে না
বলে আপনি হয়তো
মর্মব্যথায় আত্নঘাতী
হবেন।
[26:4]
আমি
যদি ইচ্ছা করি, তবে আকাশ থেকে তাদের কাছে
কোন নিদর্শন নাযিল
করতে পারি। অতঃপর
তারা এর সামনে
নত হয়ে যাবে।
[26:5]
যখনই
তাদের কাছে রহমান
এর কোন নতুন
উপদেশ আসে, তখনই
তারা তা থেকে মুখ
ফিরিয়ে নেয়।
[26:6]
অতএব
তারা তো মিথ্যারোপ করেছেই; সুতরাং
যে বিষয় নিয়ে
তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ
করত, তার যথার্থ
স্বরূপ শীঘ্রই
তাদের কাছে পৌছবে।
[26:7]
তারা
কি ভুপৃষ্ঠের প্রতি দৃষ্টিপাত করে
না? আমি তাতে সর্বপ্রকার
বিশেষ-বস্তু কত
উদগত করেছি।
[26:8]
নিশ্চয়
এতে নিদর্শন আছে, কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাসী নয়।
[26:9]
আপনার
পালনকর্তা তো পরাক্রমশালী
পরম দয়ালু।
[26:10]
যখন
আপনার পালনকর্তা
মূসাকে ডেকে
বললেনঃ তুমি পাপিষ্ঠ
সম্প্রদায়ের
নিকট যাও;
[26:11]
ফেরাউনের
সম্প্রদায়ের
নিকট; তারা কি ভয়
করে না?
[26:12]
সে
বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমার
আশংকা হচ্ছে যে, তারা
আমাকে মিথ্যাবাদী
বলে দেবে।
[26:13]
এবং
আমার মন হতবল হয়ে
পড়ে এবং আমার
জিহবা অচল হয়ে
যায়। সুতরাং
হারুনের কাছে বার্তা
প্রেরণ করুন।
[26:14]
আমার
বিরুদ্ধে তাদের
অভিযোগ আছে। অতএব
আমি আশংকা করি
যে, তারা আমাকে
হত্যা করবে।
[26:15]
আল্লাহ
বলেন, কখনই নয় তোমরা উভয়ে যাও আমার
নিদর্শনাবলী নিয়ে। আমি তোমাদের
সাথে থেকে শোনব।
[26:16]
অতএব
তোমরা ফেরআউনের
কাছে যাও এবং বল, আমরা
বিশ্বজগতের পালনকর্তার
রসূল।
[26:17]
যাতে
তুমি বনী-ইসরাঈলকে
আমাদের সাথে
যেতে দাও।
[26:18]
ফেরাউন
বলল, আমরা কি তোমাকে শিশু অবস্থায়
আমাদের মধ্যে লালন-পালন
করিনি? এবং তুমি আমাদের
মধ্যে জীবনের বহু বছর কাটিয়েছ।
[26:19]
তুমি
সেই-তোমরা অপরাধ
যা করবার করেছ। তুমি
হলে কৃতঘ্ন।
[26:20]
মূসা
বলল, আমি সে অপরাধ
তখন করেছি, যখন আমি
ভ্রান্ত ছিলাম।
[26:21]
অতঃপর
আমি ভীত হয়ে তোমাদের কাছ থেকে পলায়ন
করলাম। এরপর
আমার পালনকর্তা
আমাকে প্রজ্ঞা
দান করেছেন এবং
আমাকে পয়গম্বর
করেছেন।
[26:22]
আমার
প্রতি তোমার যে
অনুগ্রহের কথা বলছ, তা এই
যে, তুমি বনী-ইসলাঈলকে
গোলাম বানিয়ে
রেখেছ।
[26:23]
ফেরাউন
বলল, বিশ্বজগতের পালনকর্তা আবার
কি?
[26:24]
মূসা
বলল, তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল
ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী
সবকিছুর পালনকর্তা
যদি তোমরা বিশ্বাসী
হও।
[26:25]
ফেরাউন
তার পরিষদবর্গকে
বলল, তোমরা কি শুনছ
না?
[26:26]
মূসা
বলল, তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং
তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও
পালনকর্তা।
[26:27]
ফেরাউন
বলল, তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের
রসূলটি নিশ্চয়ই
বদ্ধ পাগল।
[26:28]
মূসা
বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী
সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা
বোঝ।
[26:29]
ফেরাউন
বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে
উপাস্যরূপে গ্রহণ
কর তবে আমি অবশ্যই
তোমাকে কারাগারে
নিক্ষেপ করব।
[26:30]
মূসা
বলল, আমি তোমার
কাছে কোন স্পষ্ট
বিষয় নিয়ে আগমন
করলেও কি?
[26:31]
ফেরাউন
বলল, তুমি সত্যবাদী
হলে তা উপস্থিত
কর।
[26:32]
অতঃপর
তিনি লাঠি নিক্ষেপ
করলে মুহূর্তের
মধ্যে তা সুস্পষ্ট
অজগর হয়ে গেল।
[26:33]
আর
তিনি তার হাত বের
করলেন, তৎক্ষণাৎ
তা দর্শকদের কাছে
সুশুভ্র প্রতিভাত
হলো।
[26:34]
ফেরাউন
তার পরিষদবর্গকে
বলল, নিশ্চয় এ
একজন সুদক্ষ জাদুকর।
[26:35]
সে
তার জাদু বলে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে
বহিস্কার করতে
চায়। অতএব তোমাদের
মত কি?
[26:36]
তারা
বলল, তাকে ও তার
ভাইকে কিছু
অবকাশ দিন এবং
শহরে শহরে ঘোষক
প্রেরণ করুন।
[26:37]
তারা
যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ
জাদুকর কে উপস্থিত
করে।
[26:38]
অতঃপর
এক নির্দিষ্ট দিনে জাদুকরদেরকে
একত্রিত করা হল।
[26:39]
এবং
জনগণের মধ্যে ঘোষণা
করা হল, তোমরাও
সমবেত হও।
[26:40]
যাতে
আমরা জাদুকরদের
অনুসরণ করতে
পারি-যদি তারাই
বিজয়ী হয়।
[26:41]
যখন
যাদুকররা আগমণ
করল, তখন ফেরআউনকে
বলল, যদি আমরা বিজয়ী
হই, তবে আমরা পুরস্কার
পাব তো?
[26:42]
ফেরাউন
বলল, হঁ্যা এবং
তখন তোমরা
আমার নৈকট্যশীলদের
অন্তর্ভুক্ত হবে।
[26:43]
মূসা
(আঃ) তাদেরকে বললেন, নিক্ষেপ
কর তোমরা যা নিক্ষেপ
করবে।
[26:44]
অতঃপর
তারা তাদের রশি
ও লাঠি নিক্ষেপ
করল এবং বলল, ফেরাউনের
ইযযতের কসম, আমরাই
বিজয়ী হব।
[26:45]
অতঃপর
মূসা তাঁর লাঠি
নিক্ষেপ করল, হঠাৎ তা তাদের অলীক
কীর্তিগুলোকে
গ্রাস করতে লাগল।
[26:46]
তখন
জাদুকররা সেজদায়
নত হয়ে গেল।
[26:47]
তারা
বলল, আমরা রাব্বুল আলামীনের প্রতি
বিশ্বাস স্থাপন
করলাম।
[26:48]
যিনি
মূসা ও হারুনের
রব।
[26:49]
ফেরাউন
বলল, আমার অনুমতি
দানের পূর্বেই
তোমরা কি তাকে
মেনে নিলে? নিশ্চয়
সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদেরকে
জাদু শিক্ষা
দিয়েছে। শীঘ্রই
তোমরা পরিণাম জানতে
পারবে। আমি অবশ্যই
তোমাদের হাত ও
পা বিপরীত
দিক থেকে কর্তন
করব। এবং তোমাদের
সবাইকে শূলে চড়াব।
[26:50]
তারা
বলল, কোন ক্ষতি
নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার
কাছে প্রত্যাবর্তন
করব।
[26:51]
আমরা
আশা করি, আমাদের পালনকর্তা আমাদের
ক্রটি-বিচ্যুতি
মার্জনা করবেন। কারণ, আমরা
বিশ্বাস স্থাপনকারীদের
মধ্যে অগ্রণী।
[26:52]
আমি
মূসাকে আদেশ করলাম
যে, আমার বান্দাদেরকে
নিয়ে রাত্রিযোগে
বের হয়ে যাও, নিশ্চয়
তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।
[26:53]
অতঃপর
ফেরাউন শহরে শহরে সংগ্রাহকদেরকে
প্রেরণ করল,
[26:54]
নিশ্চয়
এরা (বনী-ইসরাঈলরা) ক্ষুদ্র একটি
দল।
[26:55]
এবং
তারা আমাদের ক্রোধের উদ্রেক করেছে।
[26:56]
এবং
আমরা সবাই সদা
শংকিত।
[26:57]
অতঃপর
আমি ফেরআউনের দলকে
তাদের বাগ-বাগিচা
ও ঝর্ণাসমূহ থেকে
বহিষ্কার করলাম।
[26:58]
এবং
ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।
[26:59]
এরূপই
হয়েছিল এবং বনী-ইসলাঈলকে
করে দিলাম এসবের
মালিক।
[26:60]
অতঃপর
সুর্যোদয়ের সময়
তারা তাদের
পশ্চাদ্ধাবন করল।
[26:61]
যখন
উভয় দল পরস্পরকে
দেখল, তখন মূসার
সঙ্গীরা বলল, আমরা
যে ধরা পড়ে গেলাম।
[26:62]
মূসা
বলল, কখনই নয়, আমার
সাথে আছেন আমার
পালনকর্তা। তিনি
আমাকে পথ বলে দেবেন।
[26:63]
অতঃপর
আমি মূসাকে আদেশ
করলাম, তোমার লাঠি
দ্বারা সমূদ্রকে
আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ
হয়ে গেল এবং প্রত্যেক
ভাগ বিশাল
পর্বতসদৃশ হয়ে
গেল।
[26:64]
আমি
সেথায় অপর দলকে
পৌঁছিয়ে দিলাম।
[26:65]
এবং
মূসা ও তাঁর সংগীদের সবাইকে বাঁচিয়ে
দিলাম।
[26:66]
অতঃপর
অপর দলটিকে নিমজ্জত কললাম।
[26:67]
নিশ্চয়
এতে একটি নিদর্শন
আছে এবং তাদের
অধিকাংশই বিশ্বাসী
ছিল না।
[26:68]
আপনার
পালনকর্তা অবশ্যই পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:69]
আর
তাদেরকে ইব্রাহীমের বৃত্তান্ত শুনিয়ে
দিন।
[26:70]
যখন
তাঁর পিতাকে এবং
তাঁর সম্প্রদায়কে
বললেন, তোমরা কিসের
এবাদত কর?
[26:71]
তারা
বলল, আমরা প্রতিমার
পূজা করি এবং
সারাদিন এদেরকেই
নিষ্ঠার সাথে আঁকড়ে
থাকি।
[26:72]
ইব্রাহীম
(আঃ) বললেন, তোমরা যখন আহবান কর, তখন তারা
শোনে কি?
[26:73]
অথবা
তারা কি তোমাদের
উপকার কিংবা
ক্ষতি করতে পারে?
[26:74]
তারা
বললঃ না, তবে আমরা
আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে
পেয়েছি, তারা
এরূপই করত।
[26:75]
ইব্রাহীম
বললেন, তোমরা কি তাদের সম্পর্কে
ভেবে দেখেছ, যাদের
পূজা করে আসছ।
[26:76]
তোমরা
এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষেরা
?
[26:77]
বিশ্বপালনকর্তা
ব্যতীত তারা সবাই আমার শত্রু।
[26:78]
যিনি
আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর
তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন
করেন,
[26:79]
যিনি
আমাকে আহার এবং
পানীয় দান করেন,
[26:80]
যখন
আমি রোগাক্রান্ত
হই, তখন তিনিই
আরোগ্য দান করেন।
[26:81]
যিনি
আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর
পুনর্জীবন দান
করবেন।
[26:82]
আমি
আশা করি তিনিই
বিচারের দিনে
আমার ক্রটি-বিচ্যুতি
মাফ করবেন।
[26:83]
হে আমার পালনকর্তা, আমাকে
প্রজ্ঞা দান কর
এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের
অন্তর্ভুক্ত কর
[26:84]
এবং
আমাকে পরবর্তীদের
মধ্যে সত্যভাষী
কর।
[26:85]
এবং
আমাকে নেয়ামত
উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত
কর।
[26:86]
এবং
আমার পিতাকে ক্ষমা
কর। সে তো পথভ্রষ্টদের
অন্যতম।
[26:87]
এবং
পূনরুত্থান দিবসে
আমাকে লাঞ্ছিত
করো না,
[26:88]
যে
দিবসে ধন-সম্পদ
ও সন্তান সন্ততি
কোন উপকারে আসবে
না;
[26:89]
কিন্তু
যে সুস্থ অন্তর
নিয়ে আল্লাহর
কাছে আসবে।
[26:90]
জান্নাত
আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা
হবে।
[26:91]
এবং
বিপথগামীদের সামনে উম্মোচিত করা
হবে জাহান্নাম।
[26:92]
তাদেরকে
বলা হবেঃ তারা
কোথায়, তোমরা যাদের
পূজা করতে।
[26:93]
আল্লাহর
পরিবর্তে? তারা
কি তোমাদের
সাহায্য করতে পারে, অথবা
তারা প্রতিশোধ
নিতে পারে?
[26:94]
অতঃপর
তাদেরকে এবং পথভ্রষ্টদেরকে
আধোমুখি করে নিক্ষেপ
করা হবে জাহান্নামে।
[26:95]
এবং
ইবলীস বাহিনীর
সকলকে।
[26:96]
তারা
তথায় কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়ে বলবেঃ
[26:97]
আল্লাহর
কসম, আমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে
লিপ্ত ছিলাম।
[26:98]
যখন
আমরা তোমাদেরকে বিশ্ব-পালনকর্তার
সমতুল্য গন্য করতাম।
[26:99]
আমাদেরকে
দুষ্টকর্মীরাই
গোমরাহ করেছিল।
[26:100]
অতএব
আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।
[26:101]
এবং
কোন সহৃদয় বন্ধু
ও নেই।
[26:102]
হায়, যদি কোনরুপে
আমরা পৃথিবীতে
প্রত্যাবর্তনের
সুযোগ পেতাম, তবে আমরা
বিশ্বাস স্থাপনকারী
হয়ে যেতাম।
[26:103]
নিশ্চয়, এতে নিদর্শন
আছে এবং তাদের
অধিকাংশই বিশ্বাসী
নয়।
[26:104]
আপনার
পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:105]
নূহের
সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যারোপ করেছে।
[26:106]
যখন
তাদের ভ্রাতা নূহ
তাদেরকে বললেন, তোমাদের
কি ভয় নেই?
[26:107]
আমি
তোমাদের জন্য বিশ্বস্ত বার্তাবাহক।
[26:108]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:109]
আমি
তোমাদের কাছে এর
জন্য কোন প্রতিদান
চাই না, আমার প্রতিদান
তো বিশ্ব-পালনকর্তাই
দেবেন।
[26:110]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:111]
তারা
বলল, আমরা কি তোমাকে
মেনে নেব যখন
তোমার অনুসরণ করছে
ইতরজনেরা?
[26:112]
নূহ
বললেন, তারা কি কাজ
করছে, তা জানা আমার
কি দরকার?
[26:113]
তাদের
হিসাব নেয়া আমার পালনকর্তারই
কাজ; যদি তোমরা
বুঝতে!
[26:114]
আমি
মুমিনগণকে তাড়িয়ে
দেয়ার লোক নই।
[26:115]
আমি
তো শুধু একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
[26:116]
তারা
বলল, হে নূহ যদি
তুমি বিরত না
হও, তবে তুমি নিশ্চিতই
প্রস্তরাঘাতে
নিহত হবে।
[26:117]
নূহ
বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমার
সম্প্রদায় তো
আমাকে মিথ্যাবাদী
বলছে।
[26:118]
অতএব, আমার
ও তাদের মধ্যে
কোন ফয়সালা
করে দিন এবং আমাকে
ও আমার সংগী মুমিনগণকে
রক্ষা করুন।
[26:119]
অতঃপর
আমি তাঁকে ও তাঁর সঙ্গিগণকে বোঝাই
করা নৌকায় রক্ষা
করলাম।
[26:120]
এরপর
অবশিষ্ট সবাইকে
নিমজ্জত করলাম।
[26:121]
নিশ্চয়
এতে নিদর্শন আছে
এবং তাদের
অধিকাংশই বিশ্বাসী
নয়।
[26:122]
নিশ্চয়
আপনার পালনকর্তা
প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:123]
আদ
সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[26:124]
তখন
তাদের ভাই হুদ
তাদেরকে বললেনঃ
তোমাদের কি ভয়
নেই?
[26:125]
আমি
তোমাদের বিশ্বস্ত
রসূল।
[26:126]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:127]
আমি
তোমাদের কাছে এর
জন্যে প্রতিদান
চাই না। আমার
প্রতিদান তো পালনকর্তা
দেবেন।
[26:128]
তোমরা
কি প্রতিটি উচ্চস্থানে অযথা নিদর্শন
নির্মান করছ?
[26:129]
এবং
বড় বড় প্রাসাদ
নির্মাণ করছ, যেন তোমরা
চিরকাল থাকবে?
[26:130]
যখন
তোমরা আঘাত হান, তখন জালেম ও নিষ্ঠুরের মত
আঘাত হান।
[26:131]
অতএব, আল্লাহকে
ভয় কর এবং আমার অনুগত্য
কর।
[26:132]
ভয়
কর তাঁকে, যিনি
তোমাদেরকে সেসব বস্তু দিয়েছেন, যা তোমরা
জান।
[26:133]
তোমাদেরকে
দিয়েছেন চতুষ্পদ জন্তু ও পুত্র-সন্তান,
[26:134]
এবং
উদ্যান ও ঝরণা।
[26:135]
আমি
তোমাদের জন্যে
মহাদিবসের শাস্তি আশংকা
করি।
[26:136]
তারা
বলল, তুমি উপদেশ
দাও অথবা উপদেশ
নাই দাও, উভয়ই
আমাদের জন্যে সমান।
[26:137]
এসব
কথাবার্তা পূর্ববর্তী লোকদের অভ্যাস
বৈ নয়।
[26:138]
আমরা
শাস্তিপ্রাপ্ত
হব না।
[26:139]
অতএব, তারা
তাঁকে মিথ্যাবাদী বলতে লাগল এবং
আমি তাদেরকে নিপাত
করে দিলাম। এতে অবশ্যই
নিদর্শন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাসী নয়।
[26:140]
এবং
আপনার পালনকর্তা, তিনি
তো প্রবল
পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:141]
সামুদ
সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[26:142]
যখন
তাদের ভাই সালেহ, তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয়
কর না?
[26:143]
আমি
তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[26:144]
অতএব, আল্লাহকে
ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:145]
আমি
এর জন্যে তোমাদের
কাছে কোন প্রতিদান
চাই না। আমার
প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই
দেবেন।
[26:146]
তোমাদেরকে
কি এ জগতের ভোগ-বিলাসের মধ্যে
নিরাপদে রেখে দেয়া
হবে?
[26:147]
উদ্যানসমূহের
মধ্যে এবং ঝরণাসমূহের মধ্যে
?
[26:148]
শস্যক্ষেত্রের
মধ্যে এবং মঞ্জুরিত খেজুর
বাগানের মধ্যে
?
[26:149]
তোমরা
পাহাড় কেটে জাঁক
জমকের গৃহ নির্মাণ
করছ।
[26:150]
সুতরাং
তোমরা আল্লাহকে
ভয় কর এবং আমার
অনুগত্য কর।
[26:151]
এবং
সীমালংঘনকারীদের
আদেশ মান্য
কর না;
[26:152]
যারা
পৃথিবীতে অনর্থ
সৃষ্টি করে এবং
শান্তি স্থাপন
করে না;
[26:153]
তারা
বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্থুরেদ
একজন।
[26:154]
তুমি
তো আমাদের মতই
একজন মানুষ বৈ নও। সুতরাং
যদি তুমি সত্যবাদী
হও, তবে কোন নিদর্শন
উপস্থিত কর।
[26:155]
সালেহ
বললেন এই উষ্ট্রী, এর জন্যে আছে পানি
পানের পালা এবং
তোমাদের জন্যে
আছে পানি পানের
পালা নির্দিষ্ট এক-এক দিনের।
[26:156]
তোমরা
একে কোন কষ্ট দিও
না। তাহলে
তোমাদেরকে মহাদিবসের
আযাব পাকড়াও করবে।
[26:157]
তারা
তাকে বধ করল ফলে, তারা অনুতপ্ত হয়ে
গেল।
[26:158]
এরপর
আযাব তাদেরকে পাকড়াও করল। নিশ্চয়
এতে নিদর্শন আছে। কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাসী নয়।
[26:159]
আপনার
পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:160]
লূতের
সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[26:161]
যখন
তাদের ভাই লূত
তাদেরকে বললেন, তোমরা
কি ভয় কর না ?
[26:162]
আমি
তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[26:163]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:164]
আমি
এর জন্যে তোমাদের
কাছে কোন প্রতিদান
চাই না। আমার
প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তা
দেবেন।
[26:165]
সারা
জাহানের মানুষের
মধ্যে তোমরাই
কি পুরূষদের সাথে
কুকর্ম কর?
[26:166]
এবং
তোমাদের পালনকর্তা
তোমাদের জন্যে
যে স্ত্রীগনকে
সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে
বর্জন কর? বরং তোমরা
সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।
[26:167]
তারা
বলল, হে লূত, তুমি
যদি বিরত না
হও, তবে অবশ্যই
তোমাকে বহিস্কৃত
করা হবে।
[26:168]
লূত
বললেন, আমি তোমাদের
এই কাজকে
ঘৃণা করি।
[26:169]
হে
আমার পালনকর্তা, আমাকে
এবং আমার পরিবারবর্গকে
তারা যা করে, তা থেকে
রক্ষা কর।
[26:170]
অতঃপর
আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে
রক্ষা করলাম।
[26:171]
এক
বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের
অন্তর্ভুক্ত।
[26:172]
এরপর
অন্যদেরকে নিপাত
করলাম।
[26:173]
তাদের
উপর এক বিশেষ বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। ভীতি-প্রদর্শিত
দের জন্যে এই বৃষ্টি
ছিল কত নিকৃষ্ট।
[26:174]
নিশ্চয়ই
এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাসী নয়।
[26:175]
নিশ্চয়ই
আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:176]
বনের
অধিবাসীরা পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
[26:177]
যখন
শো’আয়ব তাদের
কে বললেন, তোমরা
কি ভয় কর না?
[26:178]
আমি
তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
[26:179]
অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য
কর।
[26:180]
আমি
তোমাদের কাছে এর
জন্য কোন প্রতিদান
চাই না। আমার
প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই
দেবেন।
[26:181]
মাপ
পূর্ণ কর এবং যারা
পরিমাপে কম দেয়, তাদের
অন্তর্ভুক্ত হয়ো
না।
[26:182]
সোজা
দাঁড়ি-পাল্লায়
ওজন কর।
[26:183]
মানুষকে
তাদের বস্তু কম
দিও না এবং পৃথিবীতে
অনর্থ সৃষ্টি করে
ফিরো না।
[26:184]
ভয়
কর তাঁকে, যিনি
তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তী
লোক-সম্প্রদায়কে
সৃষ্টি করেছেন।
[26:185]
তারা
বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্তদের
অন্যতম।
[26:186]
তুমি
আমাদের মত মানুষ
বৈ তো নও। আমাদের
ধারণা-তুমি মিথ্যাবাদীদের
অন্তর্ভুক্ত।
[26:187]
অতএব, যদি সত্যবাদী
হও, তবে আকাশের
কোন টুকরো আমাদের
উপর ফেলে দাও।
[26:188]
শো’আয়ব
বললেন, তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে
আমার পালনকর্তা
ভালরূপে অবহিত।
[26:189]
অতঃপর
তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে দিল। ফলে তাদেরকে
মেঘাচ্ছন্ন দিবসের
আযাব পাকড়াও করল। নিশ্চয়
সেটা ছিল এক মহাদিবসের আযাব।
[26:190]
নিশ্চয়
এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু
তাদের অধিকাংশই
বিশ্বাস করে না।
[26:191]
নিশ্চয়
আপনার পালনকর্তা
প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
[26:192]
এই
কোরআন তো বিশ্ব-জাহানের পালনকর্তার নিকট
থেকে অবতীর্ণ।
[26:193]
বিশ্বস্ত
ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছে।
[26:194]
আপনার
অন্তরে, যাতে আপনি
ভীতি প্রদর্শণকারীদের
অন্তর্ভুক্ত হন,
[26:195]
সুস্পষ্ট
আরবী ভাষায়।
[26:196]
নিশ্চয়
এর উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।
[26:197]
তাদের
জন্যে এটা কি নিদর্শন নয় যে, বনী-ইসরাঈলের
আলেমগণ এটা অবগত
আছে?
[26:198]
যদি
আমি একে কোন ভিন্নভাষীর প্রতি অবতীর্ণ
করতাম,
[26:199]
অতঃপর
তিনি তা তাদের
কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা
তাতে বিশ্বাস স্থাপন
করত না।
[26:200]
এমনিভাবে
আমি গোনাহগারদের অন্তরে অবিশ্বাস
সঞ্চার করেছি।
[26:201]
তারা
এর প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন করবে
না, যে পর্যন্ত
প্রত্যক্ষ না করে
মর্মন্তুদ আযাব।
[26:202]
অতঃপর
তা আকস্মিকভাবে
তাদের কাছে
এসে পড়বে, তারা
তা বুঝতে ও পারবে
না।
[26:203]
তখন
তারা বলবে, আমরা
কি অবকাশ পাব না?
[26:204]
তারা
কি আমার শাস্তি
দ্রুত কামনা
করে?
[26:205]
আপনি
ভেবে দেখুন তো, যদি আমি তাদেরকে বছরের
পর বছর ভোগ-বিলাস
করতে দেই,
[26:206]
অতঃপর
যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া
হত, তা তাদের কাছে
এসে পড়ে।
[26:207]
তখন
তাদের ভোগ বিলাস
তা তাদের কি কোন
উপকারে আসবে?
[26:208]
আমি
কোন জনপদ ধ্বংস
করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায়
যে, তারা সতর্ককারী
ছিল।
[26:209]
স্মরণ
করানোর জন্যে, এবং আমার কাজ অন্যায়াচরণ
নয়।
[26:210]
এই
কোরআন শয়তানরা
অবতীর্ণ করেনি।
[26:211]
তারা
এ কাজের উপযুক্ত
নয় এবং তারা
এর সামর্থ?ও রাখে
না।
[26:212]
তাদেরকে
তো শ্রবণের জায়গা থেকে দূরে রাখা
রয়েছে।
[26:213]
অতএব, আপনি
আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান
করবেন না। করলে
শাস্তিতে পতিত
হবেন।
[26:214]
আপনি
নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।
[26:215]
এবং
আপনার অনুসারী
মুমিনদের প্রতি সদয় হোন।
[26:216]
যদি
তারা আপনার অবাধ্য
করে, তবে বলে দিন, তোমরা
যা কর, তা থেকে আমি
মুক্ত।
[26:217]
আপনি
ভরসা করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর
উপর,
[26:218]
যিনি
আপনাকে দেখেন যখন
আপনি নামাযে
দন্ডায়মান হন,
[26:219]
এবং
নামাযীদের সাথে
উঠাবসা করেন।
[26:220]
নিশ্চয়
তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
[26:221]
আমি
আপনাকে বলব কি
কার নিকট শয়তানরা
অবতরণ করে?
[26:222]
তারা
অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, গোনাহগারের
উপর।
[26:223]
তারা
শ্রুত কথা এনে
দেয় এবং তাদের
অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
[26:224]
বিভ্রান্ত
লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে।
[26:225]
তুমি
কি দেখ না যে, তারা
প্রতি ময়দানেই
উদভ্রান্ত হয়ে
ফিরে?
[26:226]
এবং
এমন কথা বলে, যা তারা
করে না।
[26:227]
তবে
তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন
করে ও সৎকর্ম
করে এবং আল্লাহ
কে খুব স্মরণ করে
এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ
গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা
শীঘ্রই জানতে পারবে
তাদের গন্তব্যস্থল
কিরূপ।