49 Al-Hujurât

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[49:1]

মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও রসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় করনিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন

[49:2]

মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো নাএতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না

[49:3]

যারা আল্লাহর রসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে শিষ্টাচারের জন্যে শোধিত করেছেনতাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার

[49:4]

যারা প্রাচীরের আড়াল থেকে আপনাকে উচুস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই অবুঝ

[49:5]

যদি তারা আপনার বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত সবর করত, তবে তা-ই তাদের জন্যে মঙ্গলজনক হতআল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু

[49:6]

মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও

[49:7]

তোমরা জেনে রাখ তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রসূল রয়েছেনতিনি যদি অনেক বিষয়ে তোমাদের আবদার মেনে নেন, তবে তোমরাই কষ্ট পাবেকিন্তু আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ঈমানের মহব্বত সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা হৃদয়গ্রাহী করে দিয়েছেনপক্ষান্তরে কুফর, পাপাচার ও নাফরমানীর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দিয়েছেনতারাই সৎপথ অবলম্বনকারী

[49:8]

এটা আল্লাহর কৃপা ও নিয়ামতঃ আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়

[49:9]

যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবেঅতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসেযদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবেনিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন

[49:10]

মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও

[49:11]

মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করেকেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করেকেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো নাকেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহযারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম

[49:12]

মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাকনিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহএবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করেতোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই করআল্লাহকে ভয় কর নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু

[49:13]

হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হওনিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগারনিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন

[49:14]

মরুবাসীরা বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছিবলুনঃ তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করনি; বরং বল, আমরা বশ্যতা স্বীকার করেছিএখনও তোমাদের অন্তরে বিশ্বাস জন্মেনিযদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর, তবে তোমাদের কর্ম বিন্দুমাত্রও নিস্ফল করা হবে নানিশ্চয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান

[49:15]

তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন-সম্পদ দ্বারা জেহাদ করেতারাই সত্যনিষ্ঠ

[49:16]

বলুনঃ তোমরা কি তোমাদের ধর্ম পরায়ণতা সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে ভূমন্ডলে এবং যা কিছু আছে নভোমন্ডলেআল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত

[49:17]

তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করেবলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো নাবরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক

[49:18]

আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের অদৃশ্য বিষয় জানেন, তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন